‘আজ আমার একটিই উপলব্ধি-এদেশ ভালো মানুষের জন্য নয়’


সর্বনিম্ন দরদাতাকে কাজ দিয়ে সরকারের ১০০ কোটি টাকা সাশ্রয় করা হয়েছে ।। কন্টেনার টার্মিনাল সংক্রান্ত অভিযোগের জবাবে সাবেক উপদেষ্টা মতিন ।। ‘আজ আমার একটিই উপলব্ধি-এদেশ ভালো মানুষের জন্য নয়’


চট্টগ্রাম কন্টেনার টার্মিনাল পরিচালনায় উন্মুক্ত টেন্ডার প্রক্রিয়ায় নির্বাচিত সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে। এতে করে সরকারের বিগত তিন বছরে প্রায় ১০০ কোটি টাকার সাশ্রয় হয়েছে বলে দাবি করেছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) এম এ মতিন। গতকাল চট্টগ্রামে এক মতবিনিময় সভায় সংবাদকর্মীদের সাথে তিনি এই কথা বলেন। তার বিরুদ্ধে উঠা দুর্নীতির অভিযোগ মিথ্যা ভিত্তিহীন উদ্দেশ্যমূলক আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরকে ওয়ান ইলেভেনের আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে এবং লুটপাটের রাজস্ব কায়েম করতে একটি স্বার্থান্বেষী চক্র উঠে পড়ে লেগেছে। এই চক্রটি বন্দরের সব অর্জন বানচাল করতে চাচ্ছে এবং এরাই আমাকে আসামির কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সবচেয়ে প্রভাবশালী এই উপদেষ্টার বিরুদ্ধে সম্প্রতি নানা অভিযোগ উত্থাপিত হয়। এর প্রেক্ষিতে একটি সংসদীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা আগামী এক মাসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিদায়ের পর এই প্রথম কোন উপদেষ্টা তার বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগ সম্পর্কে সংবাদ সম্মেলন করলেন। উপদেষ্টা এম. এ. মতিন খুবই করুণ সুরে বলেন, আমার চাকরিজীবন এবং উপদেষ্টা থাকাকালীন সর্বত্রই নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেছি। কিন্তু জীবনের শেষ পর্যায়ে কেন জানি মনে হচ্ছে সব অর্জন হারাতে বসেছি। সার্বিক অবস্থার প্রেক্ষিতে আজ আমার একটিই উপলব্ধি- এদেশ ভালো মানুষের জন্য নয়। তিনি বলেন, সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, পিপিআর এর সকল নিয়মনীতি পুরোপুরি অনুসরণ করে উন্মুক্ত টেন্ডার প্রক্রিয়ায় সর্বনিম্ন দরদাতা নির্বাচিত হয়েছে এছাক ব্রাদার্স। তারপরও টেন্ডারের মধ্যে কিছু ত্রুটি থাকায় পর পর দুবার টেন্ডার আহ্বান করা হয় যাতেও এছাক ব্রাদার্স নির্বাচিত হয়। এরপরই টেন্ডার কমিটি তাকে কার্যাদেশ প্রদান করে। সম্প্রতি সংবাদপত্রে প্রকাশিত তাড়াহুড়ো করে অনভিজ্ঞ প্রতিষ্ঠানকে কন্টেনার হ্যান্ডলিংয়ের কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে শীর্ষক অভিযোগের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, টেন্ডার শর্তাবলী অনুযায়ী দরদাতার যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা মূল্যায়ন এবং রেসপনসিভ বা নন রেসপনসিভ করার দায়িত্ব মূলত এবং প্রধানত টেন্ডার কমিটির। টেন্ডার কমিটির মূল্যায়ন প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে প্রেরণের পর তার কার্যাদেশ দেয়া হয়। তড়িঘড়ি করে ফাইল স্বাক্ষর করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তড়িঘড়ি করে নয়, স্বাভাবিক পদ্ধতি অনুসরণ করেই পিপিআর এর সকল নিয়মনীতি মেনে, বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রস্তাব এবং মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে যথাযথভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষাপূর্বক কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে। তিনি বলেন, বন্দরে বর্তমানে কর্মরত সাইফ পাওয়ার টেকেরও কোন অভিজ্ঞতা ছিল না। তাদের ফ্লিটে ছিল না কোন ভারি যন্ত্রপাতি। বন্দরের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে তারা কাজ চালিয়েছে। এছাক ব্রাদার্স অফডক পরিচালনাকারী শীর্ষস্থানীয় পুরনো প্রতিষ্ঠান। কার্যাদেশ প্রদানে তৎকালীন উপদেষ্টার প্রভাব খাটানোর অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অভিযোগটি সঠিক নয়। ৬ জানুয়ারি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ শেষ হচ্ছে জেনেও একজন উপদেষ্টার কোন অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত আদেশ মন্ত্রণালয়ের বা বন্দরের কোন কর্মকর্তা সজ্ঞানে সুবোধ বালকের মত তামিল করবেন ণ্ডতা কি সম্ভব? সাবেক এই উপদেষ্টা বন্দরের এইসব ঘটনা তদন্তে সংসদীয় কমিটি গঠনের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, তারা ডাকলে আমি অবশ্যই যাব, তারা তদন্তে করে প্রকৃত ঘটনা উদ্‌ঘাটন করে দেশবাসীকে জানিয়ে দিক। নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকাকালীন বন্দর সংস্কারের নানা কার্যক্রম তুলে ধরে তিনি বলেন, সর্বক্ষেত্রে সততা, নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেছি।

সাতকানিয়ায় গণপিটুনিতে পাঁচ গরু চোর নিহত ।। এলজি, গুলি ও চোরাই গরুর মাংস উদ্ধার

সাতকানিয়া উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের চাঁদর পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় জনতার গণপিটুনিতে ৫ গরু চোর নিহত হয়েছে। ঘটনাস'লের পার্শ্ববর্তী বিল থেকে দুটি এল জি ও ৪ রাউন্ড কার্তুজের গুলি উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল রবিবার সকাল ৬টায় উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের চাঁদরপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গত ৩০মে শনিবার রাতে উপজেলার খাগরিয়া ইউনিয়নের মৈশামুড়া এলাকার জনৈক নুরুল আলমের দুটি ও আব্দুস ছবুরের একটি গরু চুরি করে নিয়ে যায় সংঘবদ্ধ চোরের দল। ঘটনাস'ল থেকে দুই কিলোমিটার দূরে চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়কের পাঠানিপুল এলাকায় গরুগুলো নিয়ে আসে। সংঘবদ্ধ চোরের দল গরু ৩টিকে রাস্তার পূর্ব পাশে জবাই করে নিয়ে যাওয়ার সময় হাঙ্গর খালে মাছ ধরতে আসা কালিয়াইশ ইউনিয়নের রিক্সা চালক বশির আহম্মদ দেখে ফেলে। এসময় চোরের দল বশিরকে তাড়া করলে সে কালিয়াইশের মাষ্টার হাটের দিকে চোর চোর চিৎকার করে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে কালিয়াইশ থেকে জনতার ধাওয়া খেয়ে চোরের দল ধর্মপুর ইউনিয়নের চাঁদরপাড়া এলাকায় পৌঁছলে স'ানীয় জনগণ ৫ চোরকে ধরে পশ্চিম ধর্মপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে নিয়ে এসে গণপিটুনি দিলে ঘটনাস'লে ৫ গরু চোর নিহত হয়। নিহতরা হল বরিশালের রিপন (৩৫) প্রকাশ (বড় মিয়া), তার আপন সহোদর বশির আহমদ (৩২), কক্সবাজার চকরিয়া এলাকার সুমন (৩০), একই জেলার চকরিয়ার ছনখোলার জোবাইর (৩০), ও একই জেলার চকরিয়া খুরুলিয়া গ্রামের সৈয়দ আলম (৩০)। এদিকে গনপিটুনিতে মারা যাওয়ার আধ ঘন্টা পূর্বে গরু চোর চকরিয়ার সুমন এ প্রতিবেদককে জানায় গত দেড় মাস আগে থেকে আমরা এ কাজে নেমেছি। কক্সবাজার জেলার মাংস বিক্রেতা জলিল সওদাগরের কাছে জবাইকৃত গরুর মাংস আমরা বিক্রি করি। আমাদের মত আরো ৪/৫টি সংঘবদ্ধ গরু চোরের দল জলিল সওদাগরের রয়েছে। সে কক্সবাজার বাস টার্মিনাল ও বড় বাজারে মাংস বিক্রি করে। চোরাই মাংস নিয়ে যাওয়ার কাজে ব্যবহৃত পিকআপ (চট্ট-মেট্রো-ট-১১-২৬২৭) সঙ্গীয় চোর কাইছার (৩০) ও ড্রাইভার জসিম উদ্দীন গাড়ি নিয়ে পালিয়ে গেছে বলে সুমন জানায়। উল্লেখ্য গত ২ মাসে সাতকানিয়া খাগরিয়ার মৈশামুড়া, কালিয়াইশের হিন্দু পাড়া, কেঁওচিয়ার নয়া পাড়া, মাদার বাড়ী, তেমুহনী এলাকা থেকে সংঘবদ্ধ চোরের দল এ তিনটি গরু সহ ১৪টি গরু জবাই করে মাংস নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এব্যাপারে সাতকানিয়ার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসলাম হোসেন জানান, এরা সংঘবদ্ধ চোরের দল। গত দেড় মাস আগে থেকেই সাতকানিয়ায় এ সংঘবদ্ধ চোরের দলই এরকম কান্ড ঘটাচ্ছে। এ ব্যাপারে হত্যা ও অস্ত্র আইনে সাতকানিয়া থানায় দুইটি পৃথক মামলা হয়েছে। ঘটনাস'লের পাশ থেকে দুটি এলজি, ৪ রাউন্ড কার্তুজের গুলি ও ৩টি গরুর জবাইকৃত মাংস উদ্ধার করা হয়েছে। লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।

সাতক্ষীরায় শিবিরের রেডিও ট্রান্সমিশন সেন্টারের সন্ধান সরঞ্জামসহ দুই শিবির কর্মী আটক


সাতক্ষীরা জেলা শহরের শিবির নিয়ন্ত্রিত এক ছাত্রাবাসে অভিযান চালিয়ে পুলিশ একটি মিনি রেডিও ট্রান্সমিশন সেন্টারের সন্ধান পেয়েছে। শনিবার গভীর রাতে ওই রেডিও ট্রান্সমিশন সেন্টার থেকে বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ করার সময় হাতেনাতে কামরুল হাসান সুমন নামের এক ছাত্রশিবির কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে গ্রেপ্তার করা হয় আরো একজনকে। খবর ইউএনবির। পুলিশ জানায়, শনিবার রাতে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের জিয়া হলের সামনে আলম ছাত্রাবাসে এই অভিযান চালানো হয়। এ সময় ওই ছাত্রাবাসের ১৪ নং কক্ষে একটি রেডিও ট্রান্সমিশন সেন্টারের সন্ধান পায় তারা। ওই ট্রান্সমিটার দিয়ে ৪ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে এফএম সম্প্রচার চালানো হতো। এ সময় ট্রান্সমিটারের যন্ত্রপাতি ছাড়াও বেশ কিছু জেহাদি বইপত্র, শিবিরের রাজনৈতিক প্রকাশনা ও সিডি উদ্ধার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত কামরুল হাসান সুমন পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জানায় রেডিও ট্রান্সমিশন স্টেশনটি জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি রোকনুজ্জামান চালিয়ে আসছে। পরে সুমনের দেয়া তথ্য অনুযায়ী তার সহযোগী শিবির নেতা জাহিদুল ইসলামকেও আটক করে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে তথ্য পাচার ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানোর অভিযোগ আনা হয়েছে। পুলিশ জানায়, সাতক্ষীরা পুলিশের ওয়্যারলেস যোগাযোগ ব্যবস'া বিগড়ে যাওয়ার কারণ খুঁজতে গিয়েই ধরা পড়ে এই অবৈধ এফএম রেডিও স্টেশনের কার্যক্রম। সিগন্যালের উৎস খুঁজে রাত ২টায় সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের জিয়া হলের সামনে আলম ছাত্রাবাসে অভিযান চালায় পুলিশ। পুলিশ সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের ছাত্র কামরুল হাসান সুমনকে (২২) প্রথমে গ্রেপ্তার করে। এ সময় এই ছাত্রাবাস থেকে একটি রেডিও ট্রান্সমিটার ছাড়াও নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের বই, কম্পিউটার সরঞ্জাম, একটি কম্পিউটার মনিটর, একটি বৈদ্যুতিক মিটার উদ্ধার করে। গ্রেপ্তারকৃত সুমন সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার কুলিয়া গ্রামের ডা. এম. এ. সবুরের ছেলে। জিজ্ঞাসাবাদে সুমন জানিয়েছে সে শিবিরকর্মী এবং ছাত্রাবাসে থেকে পড়াশুনার করে। সে এক কিলোমিটারের মধ্যে গান শোনা যাবে- এ রকম যন্ত্র আবিষ্কারের চেষ্টা করছেন বলেও পুলিশকে জানায়। সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মনির-উজ-জামান জানান, গ্রেফতারকৃত কামরুল হাসান সুমন জঙ্গি কানেকশনে জড়িত। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। পুলিশ এসব তথ্য খতিয়ে দেখছে। তিনি বলেন, গত কয়েক মাস ধরে সুমন জেলা শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে তথ্য সংগ্রহ করে তা তার নেতাদেরকে সাপ্লাই দিয়ে থাকে। সে যে এলাকায় রেডিও সেন্টারটি স'াপন করেছে সে এলাকায় ওয়ারলেস এবং মোবাইল নেটওয়ার্ক কাজ করে না। ওই রেডিও সেন্টারটি বেশ শক্তিশালী। এ ব্যাপারে পুলিশ বাদী হয়ে সাতক্ষীরা সদর থানায় মামলা দায়ের করেছে।


দশ ট্রাক অস্ত্র মামলা ।। লিয়াকত ও শাহাবুদ্দিনকে আবারো রিমান্ডে নেয়া হচ্ছে

আলোচিত দশ ট্রাক অস্ত্র মামলার গ্রেপ্তারকৃত আসামি এনএসআই এর সাবেক উপপরিচালক মেজর (অব.) লিয়াকত হোসেনের চারদিনের রিমাণ্ড শেষ হয়েছে গতকাল রোববার। আজ সোমবার তাকে আদালতে হাজির করে দ্বিতীয় দফায় ১০ দিনের রিমাণ্ড আবেদন করা হবে বলে জানা গেছে। এদিকে এই মামলার আলোচিত আসামি এনএসআই এর পরিচালক (নিরাপত্তা) মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন আহাম্মদকে আবারও রিমান্ডে নেয়া হচ্ছে। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় ১০ দিনের রিমাণ্ড আবেদন আদালতে জমা দিয়েছেন সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান চৌধুরী। আগামী ৩ জুন রিমাণ্ড আবেদনের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। প্রসঙ্গত: এর আগে শাহাবুদ্দিন আহমদকে দুই দফায় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিআইডি পুলিশ। ঢাকায় টিএফআই সেলে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পর আদালতে তার ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী নেয়া হয়। অন্যদিকে চট্টগ্রাম কারাগারে আটক অপর আসামি মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরীকে আজ সোমবার অথবা কাল মঙ্গলবার দু’দিনের যে কোনদিন ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ঢাকায় তাকে টিএফআই সেলে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। রেজ্জাকুলকে ৬ দিনের রিমাণ্ডে রেখে এই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। আদালত সূত্র ও সিআইডি থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, ৪দিনের রিমাণ্ডে মেজর লিয়াকত হোসেনও অস্ত্রের সাথে নিজের সম্পৃক্ততা এড়িয়ে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ওপর দোষ চাপিয়েছেন। একইভাবে শাহাবুদ্দিন ও দোষ চাপিয়ে ছিলেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ওপর। এর সূত্র ধরে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম ও মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দারকে। প্রসঙ্গত: মেজর লিয়াকতকেও ঢাকায় টিএফআই সেলে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এদিকে সিআইডি সূত্র জানায়, রিমাণ্ডে শাহাবুদ্দিন যে ধরনের বক্তব্য দিয়েছিলেন একই বক্তব্য লিয়াকত ও দিয়েছেন। একারণে শাহাবুদ্দিনের তৃতীয় দফায় রিমাণ্ড চাওয়া হয়েছে। এবার দু’জনকে মুখোমুখি করে উভয়ের বক্তব্য মিলিয়ে দেখা হবে বলে জানা গেছে। প্রসঙ্গত: গত মঙ্গলবার ঢাকার ধানমন্ডির বাসা থেকে লিয়াকতকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার তাকে চারদিনের রিমাণ্ডে নেয়া হয়।

ইভটিজিং-এর ঘটনা অভিযুক্ত ছাত্রকে গ্রেফতারে র‌্যাব-পুলিশকে চবি কর্তৃপক্ষের অনুরোধ

ইভটিজিং-এর প্রতিবাদ করায় মাস্টার্সের এক ছাত্রীকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগে অভিযুক্ত জুনিয়র ওই শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তারের জন্য র‌্যাব ও পুলিশকে অনুরোধ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এদিকে অভিযুক্ত ছাত্রের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে স্মারকলিপি পেশ করেছে মেয়েটি। পাশাপাশি ওই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি প্রদান করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন রাজনৈতিক এ সাংস্কৃতিক সংগঠন। গত শনিবার সন্ধ্যার পর পর বেগম খালেদা জিয়া হল থেকে প্রীতিলতা হলে যাওয়ার পথে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী রায়হান মারজানকে টিজ (উত্ত্যক্ত) করে ব্যবস্থাপনা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রাজু (বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, ওই শিক্ষার্থীর প্রকৃত নাম শামসুল ইসলাম রাজু)। এর প্রতিবাদ করলে তা নিয়ে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে রাজু ওই মেয়েটির ওপর চড়াও হয়। তাকে পিটিয়ে আহত করে। উপস্থিত অন্যান্য শিক্ষার্থী পরে তাকে উদ্ধার করে। গতকাল রোববার ওই ছাত্রের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানিয়ে রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা একটি দরখাস্তে স্বাক্ষর করে তা কর্তৃপক্ষের কাছে পেশ করেছে। জানতে চাইলে চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবু ইউসুফ বলেন, ক্যাম্পাসে এ ধরনের জঘন্য কর্মকাণ্ড কখনোই বরদাশত করা হবে না। একই ব্যাপারে সহকারী প্রক্টর চন্দন কুমার পোদ্দারের সাথে গতকাল রাত ৯ টায় যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, অভিযুক্ত ছাত্রটির খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালানো হয়েছে কিন্তু তাকে পাওয়া যায়নি। তাকে গ্রেপ্তারের জন্য ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাবব ও পুলিশকে অনুরোধ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওই ব্যাপারে জানতে চাইলে গতকাল রাত সাড়ে নয়টার দিকে হাটহাজারী থানার উপ-পরিদর্শক মো. আলাউদ্দিন বলেন, রাজুকে দায়ি করে কিছুক্ষণ আগে মেয়েটি হাটহাজারী থানায় এজাহার দায়ের করেছে।অন্যদিকে, মাস্টার্সের ওই ছাত্রীর উপর হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অভিযুক্ত ছাত্র রাজুর বিচার চেয়ে সভা সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, সাংস্কৃতিক ইউনিয়ন, প্রগতিশীল ছাত্রজোট, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবির এবং চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র।

রাজনৈতিক বিবেচনায় মামলা ।। হাসিনার মামলা প্রত্যাহারে সুপারিশ : খালেদার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়নি

বিগত সরকারের সময়ে রাজনৈতিক হয়রানির উদ্দেশ্যে দায়ের করা প্রতিহিংসামূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের আবেদনের সময় শেষ হয়েছে রোববার। সারাদেশে ১৬ হাজার ৭শ’ ২৬টি আবেদন জমা পড়েছে। এর মধ্যে শুধু মাত্র ঢাকায় আবেদন জমা হয়েছে ২ হাজার ৭শ’ ৮১টি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রত্যাহারের সুপারিশ করেছে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বাধীন কমিটি। তবে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তার ছেলেদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার ব্যাপারে এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি কমিটি। ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আবদুল্লাহ আবু একথা জানিয়েছেন। খবর ফোকাস বাংলার।
বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়াসহ শীর্ষ রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও আমলাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং তথ্য গোপনের অভিযোগে ৬৬৭টি মামলা দায়ের করা হয়। এগুলোসহ বিএনপি জোট সরকারের সময় দায়ের করা রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহার করতে ২২ ফেব্রুয়ারি প্রত্যেক জেলায় ও মন্ত্রণালয় পর্যায়ে কমিটি গঠন করে সরকার। এ সুবিধা পেতে দু’নেত্রীসহ শীর্ষ রাজনৈতিক নেতারা আবেদন করেছেন। ঢাকা মহানগর পিপি আবদুল্লাহ আবু জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের করা ১১টি মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করেছে কমিটি। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যে মামলাগুলো হয়েছে, সে মামলাগুলোর কাগজপত্র আমি দেখেছি। সেগুলো রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলকভাবে ও হয়রানি করার জন্য করা হয়েছে। তাতে সুপারিশ করেছি প্রত্যাহার করার জন্য। তবে বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়ার মামলার ব্যাপারে এখনও কোন সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানান তিনি। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, আমি শুনেছি মামলাগুলো এখানে এসেছে। আমার এখানে এলে অবশ্যই সেগুলো দেখব।

পিন্টুকে গ্রেপ্তার না করতে রিট ।। সাঈদ ইস্কান্দারকে বিদেশ যেতে বাধা না দেয়ার নির্দেশ

বিএনপি নেতা ও বিরোধী দলীয় নেত্রী খালেদা জিয়ার ভাই সাঈদ ইস্কান্দারকে তিন মাসের জন্য দেশের বাইরে যেতে ও ফিরে আসতে বাধা না দিতে সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। গতকাল রোববার বিচারপতি তারিক-উল-হাকিম ও বিচারপতি আজিজুল হকের বেঞ্চ সাঈদ ইস্কান্দারের দায়ের করা রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেয়। খবর বিডিনিউজের।
রিটের শুনানিতে অংশ নিয়ে ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন বলেন, সাঈদ ইস্কান্দারকে এর আগে বিদেশ যাওয়ার সময় বাধা দেওয়া হয়েছে। আবারও বিদেশ যেতে চাইলে তাকে বাধা দেওয়া হবে। তাই আদালতের আদেশ প্রয়োজন।এছাড়া হাইকোর্টের একই বেঞ্চ সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরীকে বিদেশ যেতে বাধা না দেওয়ার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না তার কারণ দর্শানোর জন্য সরকারের প্রতি রুলনিশি জারি করেছে। আলতাফ হোসেনের দায়ের করা রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এ আদেশ দেন। তার পক্ষেও শুনানিতে অংশ নেন ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন। সরকার পক্ষে আবেদন দুটির বিরোধিতা করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এম কে রহমান ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার খুরশিদ আলম সরকার।অন্যদিকে হাইকোর্টের একই বেঞ্চে রোববার বিএনপির সাবেক সাংসদ নাসিরুদ্দিন আহমেদ পিন্টুকে গ্রেপ্তার বা হয়রানি না করার জন্য সরকারের প্রতি নির্দেশ চেয়ে একটি রিট আবেদন করা হয়েছে। আবেদনে বলা হয়েছে, পিলখানা হত্যাকাণ্ডের তদন্ত প্রতিবেদনে পিন্টুর নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তিনি বিদ্রোহী বিডিআর সদস্যদের পালাতে সহায়তা করেছেন বলে তাতে উল্লেখ করা হয়েছে। তাই এ মামলায় তাকে গ্রেপ্তার বা হয়রানি করা হতে পারে। আজ সোমবার এ রিটটির শুনানি হতে পারে বলে জানিয়েছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল খুরশিদ আলম সরকার।

৪ জুন চট্টগ্রাম ক্লাবে আদিত্য ও আসমার মিউজিক্যাল নাইট

চিটাগাং ক্লাবের মেগা মিউজিক্যাল নাইট আগামী বৃহস্পতিবার। ভারতের জি টিভির সা-রে-গা-মা-পা’র এই সময়কার জনপ্রিয় সংগীত তারকা আদিত্য এবং আসমা এতে সংগীত পরিবেশন করবেন। আগামী ৪ জুন বৃহস্পতিবার রাত আটটায় চিটাগাং ক্লাবের টেনিস গ্রাউন্ডে জমকালো এই আসর বসছে। এতে চিটাগাং ক্লাবের সদস্য তাদের পরিবার এবং অতিথিরা সংগীত উপভোগ করার সুযোগ পাবেন। আদিত্য এবং আসমার সংগীতানুষ্ঠানকে ঘিরে ক্লাবের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।

পাহাড়তলী আবদুপাড়া পাঁচদিন ধরে বিদ্যুৎবিহীন

গত পাঁচদিন ধরে বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন পাহাড়তলীর সরাইপাড়া এলাকার আবদুপাড়াবাসী। এ ব্যাপারে স্থানীয় পিডিবি অফিসে ফোন করেও কোন সমাধান পাচ্ছে না এলাকাবাসী। গতকাল এলাকার বেশ কয়েকজন অধিবাসী দৈনিক আজাদী অফিসে ফোন করে এই ক্ষোভের কথা জানান। তারা জানান, গতমাসেও একবার এরকম পরিসি'তির সম্মুখীন হয় আবদুপাড়াবাসী। সেবার সবাই মিলে প্রায় পঁচিশ হাজার টাকা তুলে পিডিবি অফিসে জমা দিয়ে সমস্যার সমাধান পায় এলাকাবাসী। এবারও স্থানীয় পিডিবি কর্তৃপক্ষ একই ধরনের টালবাহানা করছে বলে অভিযোগ করেন ওই এলাকার একাধিক বাসিন্দা।

অর্থ ফেরত দেয়া প্রশ্নে কয়েক মিনিটের মধ্যে মত পাল্টালেন আব্দুস শহীদ

কয়েক মিনিট যেতে না যেতেই মত পাল্টালেন চিফ হুইপ আব্দুস শহীদ। ব্যাংককে চিকিৎসার জন্য এমপি ক্লাব থেকে নেওয়া টাকা ফেরত দিতে রাজি হওয়ার কিছু সময় পরেই একে প্রাপ্য সুবিধা আখ্যা দিয়ে মত বদল করেন এ সাংসদ।তার কথিত অর্থ ‘আত্মসাতের’ বিষয়টি সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে আব্দুস শহীদ তার কার্যালয়ে গতকাল রোববার এক সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে বলেন, ২০০১-২০০৬ সংসদে বিরোধী দলের চিফ হুইপ হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ব্যাংককে হৃদযন্ত্রের চিকিৎসার জন্য যে এক লাখ টাকা নিয়েছিলেন তা তিনি প্রয়োজনে ফেরত দেবেন। খবর বিডিনিউজের।
বিতর্ক থেকে বেরিয়ে আসার জন্য তিনি অর্থ ফেরত দেবেন কিনা, এই প্রশ্নের জবাবে শহীদ বলেন, প্রয়োজনে আমি অবশ্যই টাকা ফেরত দেবো।কিন্তু কয়েক মিনিটের মধ্যে চিফ হুইপ দৃশ্যত তার মত পাল্টে ফেলেন।সংবাদ সম্মেলন শেষ হওয়ার পরই তিনি বিডিনিউজকে এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, না, আমি টাকা ফেরত দেবো না। আর কেনই বা আমি টাকা ফেরত দেবো? আমার প্রাপ্ত সুবিধাগুলোর মধ্যে এটি একটি। টাকা ফেরত দেওয়ার কথা ছিল কথার কথা মাত্র, বলেন তিনি।অনেক সংসদ সদস্যই ক্লাবের কল্যাণ তহবিল থেকে অর্থ নিয়েছেন বলে জানিয়ে চিফ হুইপ শহীদ বলেন, আমি তহবিলের জন্য আবেদন করেছিলাম। আর ক্লাব কমিটি তা মঞ্জুর করেছে।আগের সংসদের চিফ হুইপ পদাধিকার বলে ক্লাবের সভাপতি খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন চিকিৎসার জন্য ১৮ লাখ টাকা নিয়েছেন। এছাড়া ক্লাবের সম্পাদক বিএনপি হুইপ ওয়াহিদুল আলম নিয়েছেন ৪ লাখ টাকা। দুজনেই হৃদযন্ত্রের চিকিৎসায় এই অর্থ নিয়েছেন।সাবেক স্পিকার বিএনপি নেতা জমিরউদ্দিন সরকারের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে নিয়োজিত একটি সংসদীয় প্যানেল গত বৃহস্পতিবার এ তথ্য প্রকাশ করেছে যে, শহীদও ক্লাব থেকে টাকা নিয়েছেন।প্যানেল জানায়, ক্লাবের পুরো আয় ৬৪ লাখেরও বেশি টাকা বিদায়ী কমিটি খরচ করে ফেলেছে।

টুয়েন্টি টুয়েন্টি বিশ্বকাপে শিরোপা জিততে চায় দক্ষিণ আফ্রিকা

ওয়ানডে র্যাং কিংয়ের শীর্ষস্থান দখলের পর আমাদের লক্ষ্য টুয়েন্টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপ শিরোপাণ্ড কোনোরকম রাখঢাক না করে এভাবেই নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেন দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়ক গ্রায়েম স্মিথ। ১২ মাস ধরে দারুণ ক্রিকেট খেলছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ওয়ানডে র্যাং কিংয়ের শীর্ষস্থান দখলের পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট সিরিজ জয় করে প্রোটিয়াসরা। ২১ জুন ইংল্যান্ডে শুরু হবে আইসিসি-২০০৯ টুয়েন্টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপ। সেই শিরোপা ঘরে তোলার স্বপ্নের কথা জানিয়ে জোহানেসবার্গে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে স্মিথ বলেছেন, আমরা ১২ মাস ধরে দারুণ ক্রিকেট খেলছি। ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়াকে টেস্ট সিরিজে হারিয়েছি। ঘরে-বাইরে দু’জায়গায় অস্ট্রেলিয়াকে ওয়ানডে সিরিজে হারিয়ে রিলায়েন্স মোবাইল আইসিসি ওয়ার্ল্ড র্যাং কিংয়ের শীর্ষস্থান দখল করেছি। আমাদের টার্গেট এখন আইসিসি’র দুটি গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্টণ্ড আইসিসি টুয়েন্টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপ ও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। খেলোয়াড়রা সবাই ফর্মে রয়েছেন। এবার আমরা টি-২০ শিরোপা জয় করতেই চাই। কাপ্তান স্মিথের মতো প্রোটিয়াস কোচ মাইক আর্থারও টি-২০ বিশ্বকাপ শিরোপা জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।

রোনালদোর মাথায় এখন পর্তুগাল

কোথায় যাবেন শেষ পর্যন্ত ছোট রোনালদো? কেউ জানেন না। সম্ভবত তিনি নিজেও না। তবে এটুকু জানেন, ফুটবল-জীবনের গুরুত্বপূর্ণ এই সময়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়াটা হয়ত খেলার থেকেও কঠিন। তাই, এখন আর ক্লাব ফুটবল নিয়ে ভাবছেন না ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। তাঁর ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠলে বলেছেন, ‘এখন শুধু জাতীয় দল নিয়ে ভাবছি। ভাবছি, বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বের খেলাগুলো নিয়ে। এখন ক্লাব নিয়ে কথা বলতে চাই না। আপাতত বিশ্রাম নিতে চাই। আমি অত্যন্ত ক্লান্ত। তাই, এখন ছুটি কাটাব। সারা বছর প্রচুর ম্যাচ খেলতে হয়েছে। প্রচুর চাপ নিতে হয়েছে। আর ভবিষ্যৎ? দেখা যাক কী হয়।!’ কিন্তু, তিনি আদৌ ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে থাকবেন কি না তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠেছে। কোচ অ্যালেক্স ফার্গুসনের সমালোচনা করেই বলেছেন, ‘এমনিতে আমরা তো ভাল খেলতে পারিনি। তার ওপর আমাদের ট্যাকটি ‘ও একেবারেই ভাল ছিল না। সবকিছুতেই ভুল হয়েছে।’ কোচের এ রকম খুল্লামখুল্লা সমালোচনার পর ম্যানচেস্টার সমর্থকেরা ধরেই নিয়েছেন, ক্রিশ্চিয়ানো আর তাঁদের ক্লাবে খেলবেন না।


স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন বলেছেন, স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল গঠন করে এ দেশের মাটিতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা হবে। দেশে জঙ্গিবাদ, মৌলবাদ সর্বোপরি সন্ত্রাস আমাদের সর্বত্র বিচরণ করছে। এদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। দেশের সুশাসন ও ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। তাহলে আমাদের সব প্রচেষ্টা সার্থক হবে।তিনি গতকাল ফটিকছড়ি উপজেলার ভূজপুর ন্যাশনাল উচ্চ বিদ্যালয়ে ভূজপুর থানার নতুন ভবনের ভিত্তি প্রস্তর ও ফটিকছড়ি উপজেলা সদর এলাকায় ফায়ার স্টেশনের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন শেষে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেছেন।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা কবির আহাম্মদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, উপজেলা চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দিন চৌধুরী, মোছলেহ উদ্দিন, এম.এ. ছালাম, অধ্যাপক হুমায়ুন উদ্দিন আহাম্মদ, মীরসরাই উপজেলা চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন, ড. মাহমুদ হাসান, ইঞ্জিনিয়ার হারুন, মুজিবুল হক, এহছানুল হায়দার বাবুল, মজহারুল হক শাহ চৌধুরী, চেয়ারম্যান হাছান সরওয়ার আজম চৌধুরী, এম শাহ আলম সিকদার, মোঃ ইব্রাহীম, মাহাবুবুল আলম, গোলাফর রহমান, আবু তৈয়ব, ফজল আহাম্মদ, মোঃ লোকমান ইব্রাহীম মেম্বার প্রমুখ।
মন্ত্রী বলেন, নিজের জীবনবাজি রেখে পিলখানায় গিয়েছি। সেদিন আমার মরণ হতে পারতো। কিন্তু আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর আমার একটাই শপথ যে দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করে দেব। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন আরো বলেন, দেশে কাউকে বিশৃংখলার সুযোগ দেওয়া হবে না। যদি কেউ দলের নাম ভাঙিয়ে দেশ ও জাতির ক্ষতি করে এবং সন্ত্রাস করে সে আমার দলের হলেও তাদেরকেও ছাড় দেওয়া হবে না। এর আগে মন্ত্রী নাজিরহাট ঝংকার মোড় ও মাইজভান্ডার দরবার শরিফ এলাকায় পৃথক কয়েকটি পথসভায় যোগ দেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে নগর ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দের সাক্ষাৎ
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এডভোকেট সাহারা খাতুনের সাথে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগ গত শুক্রবার রাতে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউস মিলনায়তনে মতবিনিময় করেন। এ সময় তিনি ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দের উদ্দেশে বলেন, সন্ত্রাস আর জঙ্গিবাদ নির্মূল করে আগামীতে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে ছাত্রলীগকে এগিয়ে আসতে হবে। কারণ সন্ত্রাস আর জঙ্গিবাদ নির্মূল করতে পারলে বাংলাদেশ একটি সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে।এ সময় উপস্থিত ছিলেন ছাত্রলীগ মহানগর কমিটির সভাপতি এম.আর আজিম, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, এস.এম. আলম, সাখাওয়াত হোসেন বাবুল, জামালউদ্দিন আহমেদ, মোহাম্মদ ওয়াসিম উদ্দিন, আরশেদুল আলম বাচ্চু, খোরশেদ আহমেদ জুয়েল, ফজলুল কবির সোহেল, জসিম উদ্দিন আহমেদ, এনামুল হক মিলন, জামালউদ্দিন, নাসির উদ্দিন, জাহাঙ্গীর হোসেন শান্ত, শিবু প্রসাদ চৌধুরী, মেসবাহ উদ্দিন মোর্শেদ, কফিলউদ্দিন, মোসলেহ উদ্দিন শিবলী, রফিকুল মান্নান জুয়েল, আজিজুর রহমান প্রমুখ।

চট্টগ্রামে বিভিন্ন সরকারি সংস্থার ১০ হাজার কোটি টাকার জমি বেদখল


বাংলাদেশ রেলওয়ে, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, সড়ক ও জনপথ বিভাগসহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থার প্রায় দশ হাজার কোটি টাকা দামের জায়গা ভূমিদস্যুদের দখলে আটকে আছে। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের কয়েকশ’ কোটি টাকার ভূমি বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত ভূমিগুলোর মধ্যে বেশ কিছু আবারো বেদখল হয়েছে। বন্দর কর্তৃপক্ষের মতো অভিযান চালাতে পারে নি অন্যান্য সংস্থা। এতে করে সরকারি অন্য সংস্থার মালিকাধীন শত শত কোটি টাকার ভূমি দিনে দিনে বেহাত হয়ে যাচ্ছে।
সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশ রেলওয়ে এবং চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ হচ্ছে চট্টগ্রামের সবচেয়ে বেশি ভূ-সম্পত্তির মালিক। এক সময় দুইটি প্রতিষ্ঠান একই সংস্থার অধীনে থাকলেও পৃথক হয়ে যাওয়ার পর এদের ভূ-সম্পত্তিও পৃথক হয়েছে। বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের মালিকানায় বেশি ভূমি রয়েছে। এই দুইটি সরকারি সংস্থার বাইরে পানি উন্নয়ন বোর্ড, সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং বন বিভাগ বহু ভূসম্পত্তির মালিক। নিজেদের প্রয়োজন মিটানোর পরও বহু ভূমি এদের রয়েছে। বর্তমানে ব্যবহার না হলেও ভবিষ্যতে ব্যবহারের জন্য অনেক ভূমি সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে বন্দর কর্তৃপক্ষের বেশ কিছু ভূমি গত কবছরের মধ্যে নানা উন্নয়ন কর্মকান্ডের আওতায় নিয়ে আসা হলেও অন্যান্য সংস্থার সম্পত্তিগুলোর কোন উন্নয়ন কাজে লাগে নি। রেলওয়ের জমি আগের মতোই পড়ে আছে। এরমধ্যে বহু ভূমি ভাগ বাটোয়ারা হয়েছে। বৈধতার আড়ালে নানা অবৈধ কর্মকাণ্ড চলেছে। শত শত কোটি টাকার ভূসম্পত্তি নানা পন্থায় হজম করে নেয়া হয়েছে। বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নিকট নানা শর্তে ইজারা দেয়া হয়েছে হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি।বাংলাদেশ রেলওয়ের বহু সম্পত্তি সিএনজি স্টেশনসহ নানা প্রতিষ্ঠানের নিকট ইজারা দেয়া হয়। অনেক সময় কোন ধরনের আইন কানুনের তোয়াক্কা না করে ভূমি ইজারা দেয়া হয়েছে। ক্ষমতার জোরে সম্পত্তি ইজারা নেয়ার বহু ঘটনাও ঘটেছে। কেবল রেলওয়েরই নয়, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের মালিকানাধীন বিপুল পরিমাণ ভূমি বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নিকট ইজারা দেয়া হয়েছে। বন্দর সহায়ক শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার নিমিত্তে কেবল বিভিন্ন ব্যক্তিই নয় সরকারি এবং আধা সরকারি সংস্থার কাছে ভূুমি বরাদ্দ দেয়া হয়। বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নিকটও বন্দর কর্তৃপক্ষের বিপুল পরিমান ভূমি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বছরের পর বছর ধরে এই সব ভূমি ইজারার নামে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে বরাদ্দ থাকলেও অনেকেই বন্দর সহায়ক প্রতিষ্ঠান না করে অন্য লাভজনক প্রতিষ্ঠান করেছে। বিশেষ করে মূল্যবান ভূমিগুলোতে নানা ধরনের বাণিজ্যিক অবকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে। চট্টগ্রামের বিভিন্ন ভূমিদস্যুরা প্রভাবশালী মহলের সহায়তায় দিনের পর দিন ভূমি দখল করে রেখেছে। ভূমি ইজারার নামে উক্ত ভূমি দখল করে রাখার বাইরে একেবারে অবৈধভাবেও বন্দরের কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি দখল করে রাখা হয়েছে। এক কাজের জন্য ভূমি বরাদ্দ নিয়ে অন্য কাজ করছে এমন ব্যক্তির তালিকায় প্রভাবশালী সাবেক মন্ত্রী, সাবেক এমপিও রয়েছেন। প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী এবং শিল্পপতিদের দখলে রয়েছে শত শত কোটি টাকার ভূমি। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাবেক ম্যাজিষ্ট্রেট মোহাম্মদ মুনীর চৌধুরী অবৈধ দখলদারদের কবল থেকে শত শত কোটি টাকার সম্পত্তি উদ্ধার করলেও আইনের মারপ্যাঁচে পড়ে এখনো বিপুল পরিমান ভূমি অবৈধ দখলদারদের কবজায় রয়েছে।
ভূমি নিয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের অবস্থা শোচনীয়। বন্দর কর্তৃপক্ষ ম্যাজিষ্ট্রেট দিয়ে উচ্ছেদ অভিযান চালালেও রেলওয়ের ভূমি অনেকটা লাওয়ারিশভাবে বেদখল হয়ে রয়েছে। রেলওয়ের শত শত কোটি টাকার সম্পত্তি নিয়ে হরিলুট চলছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের কোটি কোটি টাকার সম্পত্তিরও কোন মা-বাপ নেই। বন বিভাগের ভূমির ক্ষেত্রেও চলছে একই ধরনের বেহাল অবস্থা। যে যেদিকে পেরেছে ভূমি দখল করে রেখেছে। ভূমিদস্যুদের দাপট ক্রমে বৃদ্ধি পাচ্ছে বলেও বিভিন্ন সূত্র মন্তব্য করেছে।

কাস্টমসের যুগ্ম কমিশনার বেলাল হোসাইনকে বদলি ॥ অন্যদের শোকজ ।। রড আমদানিতে শুল্ক ফাঁকির ঘটনা

ফিনিশড রড আমদানিতে শুল্ক ফাঁকি ও এসআরও ধামাচাপা দেয়ার ঘটনায় কাস্টমসের যুগ্ম কমিশনার বেলাল হোসাইন চৌধুরীকে অবশেষে বদলি করা হয়েছে। কাস্টমস কমিশনার শাহ আলম খানকে বদলির ১২ দিন পর তাকে শাস্তিমূলক বদলি করা হলো। এই ঘটনার সাথে জড়িত অন্য কর্মকর্তাদের শুধুমাত্র শোকজ নোটিশ জারি করেই ক্ষান্ত কাস্টমস।ফিনিশড রড আমদানিতে সরকারের জারি করা এসআরও কে ধামাচাপা দিয়ে শুল্ক ফাঁকি দেয়ার ঘটনায় ইতোমধ্যে কাস্টমস কমিশনার শাহ আলম খানকে বদলি করা হয়েছে। তিনি কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট প্রশিক্ষণ একাডেমীতে এখন প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। শাহ আলম খান সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান সমূহকে শুল্ক ফাঁকি দেয়ার ক্ষেত্রে অনৈতিক সুবিধা দিয়ে ছিলেন বলে জানা যায়। এছাড়া ৩১০ মার্কিন ডলারের ফিনিশড রডকে ২৭৪ ডলারে শুল্কায়ন করে ২০ কোটি টাকা শুল্ক ফাঁকিতে সহায়তা দেয়ার অভিযোগে তাকে এই বদলি করা হয়। ইতোমধ্যে ঘটনা তদন্তে সেন্ট্রাল ইনভেস্টিগেশন সেলের যুগ্ম পরিচালক মুবিনুল করিমকে দিয়ে যে কমিটি গঠন করা হয়েছিল তারা প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। এই তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের শাস্তিমূলক বদলি করা হচ্ছে বলে জানান জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের এক কর্মকর্তা। এরই অংশ হিসেবে যুগ্ম কমিশনার বেলাল হোসাইন চৌধুরীকে বদলি করে ঢাকার শুল্ক রেয়াত ও প্রত্যর্পণ পরিদপ্তরের যুগ্ম মহাপরিচালক পদে বদলি করা হয়েছে। এই স'লে নতুন যুগ্ম কমিশনার হচ্ছেন কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট ট্রেনিং একাডেমীর পরিচালক মোয়াজ্জেম হোসেন। আগামীকালের মধ্যেই তিনি যোগদান করবেন বলে জানা গেছে।অটোমেশন কার্যক্রম চালুর প্রথমভাগ থেকে যুগ্ম কমিশনার বেলাল হোসাইন চৌধুরী নেপথ্যে থেকে এর বিরুদ্ধে নানা কলকাঠি নাড়েন বলে অভিযোগ আছে। তার বিশাল সম্পদের খোঁজে দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা মামলায় তিনি এখনো অভিযুক্ত।গত ১৫মে দৈনিক আজাদীতে প্রকাশিত শুল্ক ফাঁকি ও এসআরও ধামাচাপা দেয়ার ঘটনার প্রথম প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরই সূত্র ধরে তদন্ত কমিটি গঠন, প্রতিবেদন প্রদান ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া শুরু হয়। তবে বাকি সব অভিযুক্তদের শুধুমাত্র নোটিশ জারিতেই সীমাবদ্ধ থেকেছে কাস্টমস।

আট দিনের রিমান্ডে দাউদ মার্চেন্ট ।। ‘পুলিশের এনকাউন্টারের ভয়ে ভারত থেকে পালিয়ে আসি’



মুম্বাইয়ের মাফিয়া ডন দাউদ ইব্রাহীমের ‘সহযোগী’ আব্দুর রউফ ওরফে দাউদ মার্চেন্ট ও তার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে সন্দেহে গ্রেপ্তার হওয়া অপর দু’জনকে আট দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।গতকাল গতকাল শনিবার বিকেল পৌনে চারটার দিকে মহানগর হাকিম সাইফুর রহমান সিদ্দিকের আদালতে তাদেরকে হাজির করা হয়। আদালত মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদনের পরিপ্রক্ষিতে এই তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। খবর বিডিনিউজের।
রিমান্ড আবেদনের শুনানির সময় দাউদ মার্চেন্ট ও অন্য দুজনের পক্ষে কোনো আইনজীবী আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।রিমান্ড মঞ্জুর শেষে বিকেল ৩টা ৫৪ মিনিটে গোয়েন্দা পুলিশ একটি সাদা মাইক্রোবাসে করে তাদের নিয়ে চলে যায়।এর আগে দুপুরে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে তাদেরকে আনা হয় এবং কোর্ট হাজতে রাখা হয়।ওই আদালতের পুলিশের প্রসিকিউশন বিভাগের সহকারি কমিশনার আনিসুর রহমান ও পুলিশের জেনারেল রেকর্ডিং কার্যালয়ের উপ-পরিদর্শক আখের উজ জামান বলেন, দাউদ মার্চেন্ট এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে গ্রেপ্তারকৃত তার বাড়িওয়ালা কামাল মিয়া ও জাহিদ শেখের বিরুদ্ধে আদাবর থানায় পাসপোর্ট অ্যাক্ট ও ফরেনার’স অ্যাক্ট এ একটি মামলা হয়েছে।মঙ্গলবার গ্রেফতারের পর দাউদ মার্চেন্টকে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায় পুলিশ। দাউদকে গ্রেফতারের পর তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তার বাড়িওয়ালা কামাল মিয়া এবং মোহাম্মদপুরের শেখেরটেক থেকে জাহিদ শেখকে গ্রেফতার করা হয়। জাহিদ ভারতের নাগরিক বলে পুলিশের সন্দেহ। জাহিদের কাছ থেকে একটি পরিচয়পত্র ও শেখেরটেকের ওই ভাড়া বাসা থেকে মোবাইল ফোন সেট, একটি ড্রাইভিং লাইসেন্স ও ভারতীয় মোবাইল অপারেটর এয়ারটেলের দুটি সিম উদ্ধার করা হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মো. আশরাফ হোসেন রিমান্ড আবেদনে বলেন, “প্রথমোক্ত দু’জন (দাউদ মার্চেন্ট ও জাহিদ শেখ) নিজেদের ভারতীয় নাগরিকের পরিচয় গোপন করে বাংলাদেশী নাগরিক কামাল মিয়ার সহায়তায় বাংলাদেশে ভুয়া ঠিকানায় পাসপোর্ট তৈরি করেছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। দাউদ মার্চেন্ট ভারতীয় মাফিয়া ডন দাউদ ইব্রাহীম ও ছোট্টা শাকিলের সহযোগী।”ওই আবেদনে আরও বলা হয়, “ দাউদ মার্চেন্ট ভারতীয় সঙ্গীত পরিচালক গুলশান কুমার হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত এবং ওই মামলায় সে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্ত। ওই মামলায় মহারাষ্ট্রের আওরঙ্গবাদ কারাগারে আট বছর চারমাস কারাভোগের পর এ বছরের এপ্রিলে ১৪ দিন প্যারোলে মুক্তি পায় দাউদ। ওই সময় সে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে।”দাউদ মার্চেন্ট বাংলাদেশে কোনো ধরনের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনার পরিকল্পনা করছেন কিনা সে বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন বলে আবেদনে উল্লেখ করা হয়।গ্রেফতারের তিনদিন পর শনিবার আব্দুর রউফ ওরফে দাউদ মার্চেন্টকে গ্রেফতারের কথা স্বীকার করে বাংলাদেশ পুলিশ। তাকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ সংবাদ সম্মেলনও করে।
দাউদ মার্চেন্ট সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, এনকাউন্টারের ভয়ে তিনি ভারত থেকে পালিয়ে আসেন। গুলশান কুমার হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তিনি জড়িত নন। শনিবার গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে আয়োজিত ওই সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার এএসএম শহীদুল হক বলেন, “দাউদ মার্চেন্টকে মঙ্গলবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর থানার ঝুমুর হোটেলের সামনে থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রথমে তিনি নিজেকে ভারতীয় নাগরিক সমির শেখ বলে পরিচয় দেন। পরে জিজ্ঞাসাবাদে নিজের আসল পরিচয় স্বীকার করেন।”দাউদ মার্চেন্ট সাংবাদিকদের বলেন, “অসুস' মাকে দেখতে আমি প্যারোলে মুক্তি পাই। কিন' মুম্বাই পুলিশ আমাকে এনকাউন্টারে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে, এমন খবর পেয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসি।” ভারতীয় মিউজিক কোম্পানি টি-সিরিজের মালিক গুলশান কুমার হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত দাউদ মার্চেন্ট।

হাসিনাসহ আ’লীগ নেতাকর্মীদের ১৫০ মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক হয়রানির উদ্দেশ্যে দায়ের করা ১৫০ হামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করেছে মামলা প্রত্যাহার সংক্রান্ত জেলা কমিটি। ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জমা পড়া রাজনৈতিকভাবে হয়রানি মামলা প্রত্যাহারের ২৪৩২টি আবেদনের মধ্যে গতকাল পর্যন্ত ১ হাজার ৮০০ আবেদনের ওপর মতামত চেয়ে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি)’র কাছে পাঠানো হয়েছে। আজ পর্যন্ত মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করা যাবে। এতে বলা হয়েছে, ঢাকার জেলা প্রশাসক মো. জিল্লুর রহমান বলেছেন, ১৫০টি মামলা আমরা প্রত্যাহারের সুপারিশ করেছি। আমাদের সুপারিশ বিবেচনার জন্য কাগজপত্রসহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। রিপোর্টে বলা হয়, সুপারিশের ১৫০টি মামলার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের করা ১৩টি মামলা ছাড়াও আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল আহমেদ, সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিম, ড. মহিউদ্দীন খান আলমগীর, ওবায়দুল কাদের, জাহাঙ্গীর কবীর নানকসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের আবেদন রয়েছে। তবে গতকাল দুপুর পর্যন্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, তার ২ ছেলে তারেক রহমান এবং আরাফাত রহমান কোকোর বিরুদ্ধে দায়ের করা ২০টি মামলার আবেদন যাচাই-বাছাই করা হয় নি। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনসহ বিএনপি’র শীর্ষ নেতাদের মামলাগুলো যাচাই-বাছাই চলছে। জেলা প্রশাসক মো. জিল্লুর রহমান জানিয়েছেন, মামলা যাচাই-বাছাইয়ের সময় দলীয় পরিচয় বিবেচনা করা হচ্ছে না।

বাজেটের পর দাম বাড়ার আশঙ্কায় গাড়ি কেনার হিড়িক

বাজেটের পর দাম বাড়ার আশঙ্কায় গাড়ি কেনার হিড়িক পড়েছে বলে দাম ও মডেল ও সিসি ভেদে গত কয়েকদিনে ৫০ থেকে ৭৫ হাজার টাকা বেড়ে গেছে।গাড়ি ব্যবসায়ী ও কাস্টম কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বন্দরের শেডগুলোতে গাড়ি পছন্দ করতে সম্ভাব্য ক্রেতার ভিড় বাড়ছে প্রতিদিন। কাস্টম হাউজে গাড়ি শুল্কায়নের জন্য দলিলপত্র দাখিলেরও চাপ বেড়েছে। কিছুদিন ধরেই বলাবলি হলেও গত ২৬ মে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বারভিডা) নেতাদের সাক্ষাতের পর বিলাস সামগ্রী হিসেবে আসন্ন বাজেটে প্রাইভেট কারের ওপর অধিক হারে শুল্ক বা করারোপের গুঞ্জন বেড়ে যায়। সেদিন অর্থমন্ত্রী বিলাস দ্রব্যে শুল্ক বাড়ার ইঙ্গিত দিলে সাংবাদিকরা তাকে প্রশ্ন করেন গাড়ির শুল্ক বাড়বে কিনা। সরাসরি জবাব না দিয়ে মন্ত্রী তাদের গাড়ি বিলাসদ্রব্য কিনা ভেবে দেখতে বলেন।খবর বিডিনিউজের।
বারভিডার সদ্য প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক ও গাড়ি ব্যবসায়ী এস এম শরিফ বলেন, বাজেট ঘোষণার পর প্রতিটি রিকন্ডিশন্ড প্রাইভেট কারের দাম মডেল ও সিসিভেদে এক লাখ থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে। তিনি বলেন, এতে আগামীতে গাড়ির ব্যবসা মার খাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। শরিফ বলেন, গ্যাট চুক্তির কারণে সরকার সরাসরি গাড়ির ট্যাক্স বাড়াতে পারবেন না। তবে সম্পূরক শুল্ক বর্তমান ২০ শতাংশ থেকে ৬০ শতাংশের মধ্যবর্তী যেকোন স্তরে উন্নীত করতে পারেন। ক্রেতা সাধারণের মধ্যে এরূপ একটি আশঙ্কা থেকে এখন বাজারে গাড়ি কেনার হিড়িক পড়েছে। শরিফ জানান, চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে ৩০ মে পর্যন্ত তার ৮০টি গাড়ি বিক্রি হয়ে গেছে। বারভিডা নেতৃবৃন্দ মন্ত্রীর কাছ থেকে আমদানিকৃত গাড়ির শুল্ক কমানোর আশ্বাস আদায় করতে না পারায় সংগঠনের বর্তমান নেতৃত্বের ‘দুর্বলতা ও অদক্ষতা’-কে দায়ী করেন শরিফ। এ প্রসঙ্গে তিনি শনিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বারভিডার নতুন নেতৃত্ব দুর্বল ও অদক্ষ। তারা গাড়ির বাজার পরিসি'তি সম্পর্কে প্রথমে গণমাধ্যমের কাছে না গিয়ে সরাসরি সরকারের কাছে চলে যান এবং এ ব্যাপারে অর্থমন্ত্রীকে বোঝাতে ব্যর্থ হন। এতে বর্তমানে গাড়ির বাজার অস্থির হয়ে পড়েছে।”
চট্টগ্রামের শাহরিয়ার শিপিং এজেন্সির মালিক মোশাররফ হোসেন বাহার জানান, প্রচুর গাড়ি বেচাকেনা হচ্ছে। প্রতিদিনই দেড় থেকে দুই হাজার লোক গেট পাশ নিয়ে বন্দরে গাড়ি দেখতে যাচ্ছে। গাড়ি খালাসও হচ্ছে প্রচুর। এসবই বাজেটে গাড়ির দাম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে ঘটছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।গাড়ির মূল্য প্রসঙ্গে মোশাররফ হোসেন বলেন, ২০০৩ সালে জাপানে তৈরি একটি ১৫শ সিসি’র করোলা এক্স রিকন্ডিশন্ড গাড়ি সাড়ে ৯ লাখ এবং ২০০৪ সালে সাড়ে দশ লাখ টাকায় বিক্রি হত। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এ ধরণের গাড়ির দাম বেড়ে গেছে ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত। তবে এ ব্যবসায়ীর ধারণা, বাজেটে সম্পূরক কর বাড়লেও প্রাইভেট কারের দাম এখনকার চাইতে আকাশ-পাতাল পার্থক্য হবে না। সম্পূরক শুল্ক বর্তমানের চাইতে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ বাড়তে পারে বলে তিনি মনে করেন। এ প্রসঙ্গে বারভিডার বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল হক চৌধুরী বাবর এর সঙ্গে আলাপকালে রিকন্ডিশন্ড গাড়ি কোন বিলাসী দ্রব্যের বিবেচনায় পড়ে না বলে দাবি করেন। তার মতে, এজন্য ট্যাক্স বাড়ানোরও কোন সুযোগ নেই। তিনি অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বারভিডার বৈঠকের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, অর্থমন্ত্রীও সরাসরি গাড়িকে বিলাসী দ্রব্য হিসেবে চিহ্নিত করেন নি এবং গাড়ির ওপর অধিক শুল্ক আরোপের কথা বলেন নি। গাড়ির দাম এখনই বাড়িয়ে দেওয়ার সমালোচনা করে মাহবুবুল হক চৌধুরী বলেন, এমনটি হলে বাজেটের পরবর্তী তিনমাস গাড়ি বিক্রেতারা কোন ক্রেতা খুঁজে পাবে না।
বারভিডা সম্পাদক অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে তাদের দাবি-দাওয়ার কথা উল্লেখ করে বলেন, আমরা ১৫শ’ সিসি ও ২ হাজার সিসি’র গাড়ির সমন্বয় করার কথা বলেছি। এটি করা হলে সরকারের কমপক্ষে ৫শ’ কোটি টাকা রাজস্ব আয় বাড়বে। তাছাড়া গাড়ির জন্য শুল্কায়ন বিধিমালা স্থির ও দীর্ঘমেয়াদী করার দাবি জানানো হয়েছে। অর্থমন্ত্রী বারভিডার এ প্রস্তাবে সায় দিয়ে আগামীতে বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন। বারভিডার বর্তমান নেতৃত্বের অদক্ষতার সমালোচনা প্রত্যাখান করে তিনি বলেন, এ কমিটি প্রথম গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত এবং প্রতিটি সিদ্ধান্ত গ্রহণও হয় কমিটির সবার মতামতের ভিত্তিতে যা আগে কখনো ছিল না। এদিকে, বাজেটকে সামনে রেখে চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানিকৃত গাড়ির ঢল নেমেছে। কাস্টম সূত্র জানায়, বর্তমানে প্রায় পাঁচ হাজার গাড়ি বিভিন্ন শেডে রয়েছে। আরও দুইটি জাহাজ কয়েকদিনের মধ্যেই প্রায় দুই হাজার গাড়ি নিয়ে বন্দরে ভিড়বে। গত শুক্রবার এমভি স্টেট ভেঞ্চার নামে একটি গাড়ির জাহাজ (রো রো ভেসেল) সাড়ে নয়শ’ গাড়ি নিয়ে বন্দরে ভেড়ে। জাহাজটি থেকে এখন গাড়ি খালাস করা হচ্ছে। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের সহকারী কমিশনার ফজলুল হক শনিবার বলেন, প্রতিটি বাজেটের আগে আগে গাড়ি আমদানি বেড়ে যায়। এখনো তাই হচ্ছে।নতুন যে দুটি জাহাজ গাড়ি নিয়ে বন্দরে ভিড়ছে তার প্রতিটিতে এক হাজার ইউনিট বা তার বেশি গাড়ি রয়েছে বলে সহকারী কমিশনার জানান। তিনি জানান, এ মুহূর্তে বন্দর থেকে গাড়ি খালাসের জন্য অন্য সময়ের চাইতে অনেক বেশি হারে ডকুমেন্ট দাখিল ও গাড়ি খালাস হচ্ছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে পরিসংখ্যান দিতে পারেননি ফজলুল হক ।

ডাকাতিতে বাধা দেওয়ায় বিয়ে বাড়িতে এক মেহমানকে গুলি করে হত্যা ।। আরও দুই মহিলা গুলিবিদ্ধ ॥ আটক ২

ভূজপুরে ডাকাতিতে বাধা দেওয়ায় ডাকাতরা বিয়ে বাড়িতে আগত এক মেহমানকে গুলি করে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় আরো দুই মহিলা গুলিবিদ্ধ হয়েছে। তন্মধ্যে গুরুতর আহত অবস্থায় একজনকে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে সন্দেহভাজন দুইজনকে আটক করেছে। স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্র জানায়, ফটিকছড়ি উপজেলার ভূজপুর থানাধীন পশ্চিম ভূজপুর গ্রামের চৌকিদার টিলার রজি আহম্মদের ঘরে ৮/১০ জনের সশস্ত্র মুখোশধারী ডাকাত দল হানা দেয়। ডাকাতরা ঘরে ঢুকে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে বিয়ের অনুষ্ঠানে আসা মেহমানদের স্বর্ণালংকার ও সঙ্গে থাকা টাকা পয়সা নিয়ে ব্যাপক লুটতরাজ শুরু করে। এতে মেহমান জসিম (২৩) ডাকাতদের লুটপাটে বাধা দেয়। এ সময় ডাকাতরা তার ওপর চড়াও হয়ে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এতে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়। ডাকাতদের ছোঁড়া গুলিতে নূর নাহার বেগম (৩৫) ও বিবি জয়নব নামে অপর দুই মহিলা গুরুতর আহত হয়। তন্মধ্যে এলাকাবাসী নুর নাহার বেগমকে উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করে। সে বোয়ালখালী থেকে উক্ত বিয়ের অনুষ্ঠানে এসেছিল বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। তার স্বামীর নাম জহির আহাম্মদ। নিহত জসিম উপজেলার ভূজপুর ইউনিয়নের রোসাইংগা ঘোনা গ্রামের জনৈক মোহাম্মদ শাহ আলমের পুত্র। এদিকে পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সন্দেহভাজন হিসেবে দুই ব্যক্তিকে আটক করেছে। পুলিশ তাদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে।

ঢাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আব্বাস-খোকা গ্রুপে সংঘর্ষ ।। খালেদার প্রেস সচিবসহ আহত ২৫

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমানের ২৮তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠন দিনব্যাপী আয়োজন করে নানা কর্মসূচি। এর মধ্যে দেশব্যাপী গরিব ও দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ, দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। বিএনপির চেয়ারপারসন ও বিরোধী দলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে এই কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এদিকে খাবার বিতরণকে কেন্দ্র করে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বিএনপির দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে বেগম খালেদা জিয়ার প্রেস সচিব মারুফ কামাল খানসহ প্রায় ২৫ জন নেতাকর্মী আহত ও বেশ কয়েকজন লাঞ্ছিত হয়েছে। আহতদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এদিকে, নগরীসহ ঢাকার বাইরে খালেদা জিয়ার আগমনকে কেন্দ্র করে রাস্তায় টানানো ব্যানার, ফেস্টুন ও তোরণ সরকার সমর্থকরা ভেঙ্গে ফেলেছে বলে বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গতকাল শনিবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনস্থ বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মির্জা আব্বাস ও ঢাকার মেয়র সাদেক হোসেন খোকার সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ঘটনার সময় খাবার বিতরণকে কেন্দ্র করে আব্বাস ও খোকা গ্রুপের সমর্থরা উত্তপ্ত বাক বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। এরপরই শুরু হয় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ। এসময় বিএনপি জ্যেষ্ঠ নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী তাদেরকে থামানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। এক পর্যায়ে মির্জা আব্বাস ও খোকা তাদের নিজ সমর্থিত উত্তেজিত নেতাকর্মীদের শান্ত করেন।

ইভটিজিং-এর প্রতিবাদ করায়

ইভটিজিং-এর প্রতিবাদ করায় মাস্টার্সের এক ছাত্রীকে পিটিয়ে আহত করেছে জুনিয়র এক ছাত্র। গতকাল শনিবার সন্ধ্যার দিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ওই ঘটনা ঘটে। আহত ছাত্রীর নাম রায়হান মার্জান। বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। অভিযুক্ত শিক্ষার্থী রাজু বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের ছাত্র। জানা যায়, বেগম খালেদা জিয়া হলের ছাত্রী রায়হান মার্জান গতকাল সন্ধ্যার পর হল থেকে বের হয়ে পার্শ্ববতী ঝুপড়ির দোকানে যাচ্ছিলেন। এমন সময় রাজু নামের ব্যবস্থাপনা বিভাগের ওই শিক্ষার্থী তাকে টিজ করে। এর প্রতিবাদ করলে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে ছেলেটি মেয়েটির ওপর চড়াও হয়। তাকে কিল-ঘুষি, লাথি মেরে চুল টেনে পিটিয়ে আহত করে। খবর পেয়ে পরে সেখানে উপসি'ত হন সহকারী প্রক্টর চন্দন কুমার পোদ্দার। তার কাছে গতকাল রাত ৯টায় জানতে চাইলে ওই ব্যাপারে তিনি বলেনণ্ড মেয়েটিকে আমি প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যাচ্ছি। অভিযুক্ত ছেলেটির ব্যাপারে তিনি বলেন, সে ব্যবস্থাপনা বিভাগের ১ম বা ২য় বর্ষের ছাত্র। তাকে রাতের ভেতরে আটক করতে র্যাবব, পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অনুরোধ করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অবশ্যই একাডেমিক্যালি শাস্তির ব্যবস্থাসহ অন্যান্য শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কারণ, ছেলেটির বিরুদ্ধে আগেও অনেক অভিযোগ আমাদের কাছে এসেছে।

বিশ্ব মন্দার মধ্যেও দেশে সাড়ে ৯শ’ কোটি ডলার রেমিটেন্স আসবে - গভর্নর

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমান বলেছেন, বিশ্বমন্দার মধ্যেও চলতি বছর ৯ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থাৎ ৯৫০ কোটি ডলার রেমিটেন্স দেশে আসবে। তিনি আশা প্রকাশ করে আরো বলেন,আমাদের প্রবাসীদের পাঠানো এই রেমিটেন্স সময়ে খুবই কাজে আসবে। বিশেষ করে বিশ্বমন্দার এই সময়ে এটা খুব কাজ দেবে। প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাঠানো এই অর্থ লেনদেনের ভারসাম্য রক্ষাসহ বিশ্বমন্দা মোকাবেলায় বাংলাদেশকে বেশ সহায়তা করবে। বিশ্বমন্দার প্রেক্ষাপটে প্রবাসী বাংলাদেশিদের (এনআরবি) দেশে বিনিয়োগ করারও আহবান জানিয়েছেন গভর্নর। গতকাল শনিবার দুপুরে রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে বিশ্বমন্দার ওপর আয়োজিত এক সংলাপে তিনি এ সব কথা বলেন। ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স-বাংলাদেশ (আইসিসি-বি) এ সংলাপের আয়োজন করে। আতিউর রহমান বলেন, বিশ্বমন্দার প্রভাব বাংলাদেশের ওপর এখনও তেমন পড়েনি। উন্নত দেশের ব্যাংক ও আর্থিক খাত বিশ্বমন্দার প্রভাবে তছনছ হয়ে হয়ে গেলেও বাংলাদেশে এর কোনো ধরনের ছোঁয়া লাগেনি। আমাদের ব্যাংক ও আর্থিক খাত এখনও মজবুত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে। অন্যদিকে রপ্তানি আয় ও রেমিটেন্সের ওপরও এর কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি। তিনি বলেন, গত বছর ৯ বিলিয়ন ডলারের রেমিটেন্স দেশে এসেছে। মন্দা সত্ত্বেও চলতি বছর এই রেমিটেন্স ৯ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছি।

মামলা জরিমানা কোনো কিছুই রুখতে পারছে না সিটিবাস ও হিউম্যান হলার চালকদের ।। বেপরোয়া গাড়ি চালনা বৃদ্ধি, ঘটছে একের পর এক দুর্ঘটনা

একের পর এক প্রতিশ্রুতি প্রদান ও পরবর্তীতে সে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করাটা যেন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে সিটি বাস ও হিউম্যান হলার চালকদের ক্ষেত্রে।অভিযান, মামলা, জরিমানা কোন কিছুই রুখতে পারছে না এ সব যানবাহন চালকদের। রাস্তায় নামলে ট্রাফিক আইন নয়, নিজের মনমতো চলাটাই হয়ে পড়ে তাদের কাছে আইন। ট্রাফিক নীতিমালা মানাতে সিটি বাস ও হিউম্যান হলার চালকদের নিয়ে চারদিন ব্যাপী এক প্রশিক্ষণের আয়োজন করেছিল ট্রাফিক বিভাগ। প্রশিক্ষণের ফল আশাব্যঞ্জক নয় বলে স্বীকার করলেন খোদ উপপুলিশ কমিশনার (যানবাহন) মোঃ মইনুল ইসলাম। তিনি হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, এটি বিরাট এক সমস্যা। আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করে চলেছি। যাত্রীবেশে গাড়িতে উঠে অভিযুক্ত চালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। কিন্তু পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে, বলা যাবে না।
জানা গেছে যাত্রী সুবিধার কথা বলে ২০০২ সালে সিটি সার্ভিস বাসের যাত্রা শুরু হয়। অন্যদিকে হিউম্যান হলারের যাত্রা শুরু একই লক্ষ্যে ২০০১ সালে। বছরের পর বছর অতিবাহিত হচ্ছে। কিন্তু যাত্রী সাধারণের প্রত্যাশা আর প্রাপ্তির মধ্যে রয়ে গেছে বিস্তর ব্যবধান। নিতান্ত বাধ্য হয়ে তবু সিটি বাস অথবা হিউম্যান হলারে উঠতে হচ্ছে নগরবাসীকে। যন্ত্রণাক্লিষ্ট নগরবাসীর কাছে এখন সিটি সার্ভিস হয়ে গেছে চিটিং সার্ভিস এবং হিউম্যান হলার পরিচিতি পেয়েছে হিউম্যান মার্ডারার হিসেবে। এমন কোন দিন নেই, যেদিন কোন না কোন স্থানে যাত্রীদের সাথে চালক-হেলপারের বচসা কিংবা হাতাহাতি হয় নি। এ ধরনের ঘটনা যখন মাত্রাতিরিক্ত পর্যায়ে চলে যায়, তখন উপপুলিশ কমিশনার (যানবাহন) কার্যালয়ে ডাক পড়ে সংশ্লিষ্ট মালিক-শ্রমিক নেতৃবৃন্দের। অনুষ্ঠিত সভায় ডিসি ট্রাফিক, এসি ট্রাফিকদের দেয়া নির্দেশাবলীর সাথে একমত পোষণ করে নেতৃবৃন্দ। অভিযোগ রয়েছে, এসব নীতিমালা মেনে চলা হবে বলে নেতৃবৃন্দ বারে বারে প্রতিশ্রুতি দিয়ে এলেও সেসব প্রতিশ্রুতি রাস্তায় আর বাস্তবায়িত হয় না।
সূত্র মতে, সিএমপির ট্রাফিক বিভাগ সিটি বাস সার্ভিস প্রসঙ্গে গত ৭ বছরে ৩১ বার বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশ সময়েই সিদ্ধান্তের মূল বিষয় ছিল সুষ্ঠু ট্রাফিক নীতিমালা মেনে চলা প্রসঙ্গে। সর্বশেষ চলতি মে মাসের প্রথম দিকে ট্রাফিক বিভাগ সিটি বাস ও হিউম্যান হলার নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠক শেষে কতিপয় সিদ্ধান্ত নেয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, যেখানে সেখানে যাত্রী ওঠানামা করা যাবে না, নির্দিষ্ট স্টপেজেই কেবল গাড়ি দাঁড়াবে। আবার একটি বাস দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় পেছনে অন্য আরেকটি বাস এসে দাঁড়ালে, সাথে সাথেই প্রথম বাসটিকে চলে যেতে হবে। যখন তখন রুট পরিবর্তন করা যাবে না। ভুয়া লাইসেন্স কিংবা রুট পারমিট দিয়ে বাস/হিউম্যান হলার চালানো যাবে না। বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোর ওপরও বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। এ বিষয়ে চলতি মাসে সিটি বাস ও হিউম্যান হলার চালক, বদলি চালক ও মালিকদের জন্য চারদিনব্যাপী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ডিসি ট্রাফিক, এসি ট্রাফিক দ্বয়, মালিক-শ্রমিক নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। প্রশিক্ষণ কর্মশালা ট্রাফিক সিস্টেম মেনে চলার ক্ষেত্রে চালকদের যথেষ্ট উদ্বুদ্ধ করবে বলে আশা করা হলেও সে আশায় গুঁড়ে বালি। গত ২৭, ২৮, ২৯ মে তিনদিন নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড় সরেজমিনে প্রদক্ষিণ করে দেখা যায়, আগের নিয়মেই আছে সিটি বাস ও হিউম্যান হলার চালকরা। ২৭ মে বিকেল সাড়ে ৫টায় বক্সিরহাট পুলিশ ফাঁড়ির সামনে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। পেছনে আটকে পড়া অন্যান্য যানবাহন একের পর এক হর্ণ বাজিয়ে গেলেও দাঁড়িয়ে থাকা সিটি বাসের চালকের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। দায়িত্বরত ট্রাফিক কনস্টেবল একের পর এক বাঁশি বাজালে নিতান্ত অনিচ্ছা সত্ত্বেও বাস স্টার্ট দেয় চালক। বাসটি টেরীবাজারের মুখ থেকে জেনারেল হাসপাতাল পর্যন্ত যেতে আরো ছয় মিনিট ব্যয় করে। একই চিত্র আন্দরকিল্লা মোড়ে। ২৯ মে ছুটির দিন হলেও লালদীঘির পাড়ে যানজট বাঁধিয়ে বসে এলোপাথারি দাঁড়িয়ে থাকা সিটি বাস। গত ২৮ মে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে নিউমার্কেট মোড় থেকে স্টেশন রোডে যেতে তীব্র যানজট পরিলক্ষিত হয়। রাস্তা দখল করে ঠাঁই দাঁড়িয়ে আছে দুটি বাস। যাত্রী উঠানোর আশায় একটি হিউম্যান হলারের মুখ দুই বাসের মাঝে ঢুকিয়ে দিয়েছে চালক। শুরু হয়ে গেছে বচসা। পেছনে শত শত যানবাহন হর্ণ বাজিয়েই চলেছে। একই অবস্থা নিউমার্কেট থেকে রেয়াজউদ্দিন বাজারের দিকে আসা সড়কটিতেও। সিটি বাস সার্ভিস ও হিউম্যান হলারের চালকের বিরুদ্ধে গত এক সপ্তাহে ৩০০টি মামলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (উত্তর) অভিজিৎ চাকমা। আরো কঠোর শাস্তির চিন্তা ভাবনাও চলছে বলে জানালেন তিনি।উপ পুলিশ কমিশনার (যানবাহন) মইনুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে বলেন, এ সমস্যাটার ব্যাপকতা এতটাই যে, ট্রাফিক পুলিশের একার পক্ষে সমাধান সম্ভব নয়। মোটরযান অধ্যাদেশ অনুযায়ী এখন শাস্তি দেয়া হচ্ছে। আগামী আরটিসি মিটিংয়ে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে। আমাদের ইচ্ছা আছে রুট পারমিটেই নিয়মগুলো বেঁধে দেয়ার। এভাবে চলতে পারে না। জানি সবাইকে নিয়মে আনা যাবে না। তবে যতোটা সম্ভব আমরা চেষ্টা করে যাবো।

টিকুরিয়াকে দেশের প্রথম বায়োগ্যাস ভিলেজ ঘোষণা


ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার প্রত্যন্ত টিকুরিয়া গ্রামকে দেশের প্রথম ‘বায়োগ্যাস ভিলেজ’ ঘোষণা করা হয়েছে।শুক্রবার টিকুরিয়ার কুতিকুড়া করুয়াপাড়া উচ্চবিদ্যালয় মাঠে ‘বায়োগ্যাস সপ্তাহ-২০০৯’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী এ ঘোষণা দেন।বায়োগ্যাসের প্রতি গ্রামাঞ্চলের মানুষের আগ্রহ আরো বাড়ানোর উদ্দেশ্যে এখন থেকে প্লা্যন্ট প্রতি সরকারিভাবে ৯ হাজার টাকা করে ভর্তুকি দেওয়ারও ঘোষণা দেন তিনি।দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনগণের জ্বালানি চাহিদা মেটানো, জমির উর্বরতা বৃদ্ধি এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় ‘জাতীয় বায়োগ্যাস ও জৈবসার কর্মসূচি’ তৃণমূল পর্যায়ে ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে ২৯ মে থেকে ৫ জুন পর্যন্ত ‘বায়োগ্যাস সপ্তাহ-২০০৯’ পালন করা হচ্ছে। ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড (ইডকল) দেশের বিভিন্ন জেলার ১২ টি গ্রামের প্রতিটিতে ২০টিরও বেশি বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট নির্মাণ করেছে। প্রতিষ্ঠানটি বিশ্ব্যব্যাংক ও এডিবিসহ বিভিন্ন দাতা সংস্থার অর্থায়নে ‘সোলার হোম সিস্টেম’ প্রকল্পের আওতায় ৩ লাখ সোলার হোম সিস্টেম স্থাপন এবং পৃথক অপর একটি প্রকল্পের আওতায় এ পর্যন্ত সাড়ে সাত হাজার বায়োগ্যাস প্ল্যান্টে অর্থায়ন করেছে। এছাড়া সারা দেশে বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় প্রায় ৬০ হাজার বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট স্থাপনের জন্য কাজ করে যাচ্ছে ইডকল। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে স্থানীয় সাংসদ প্রমোদ মানকিন, ইডকলের নির্বাহী পরিচালক ইসলাম শরীফ, গ্রামীণ শক্তির ব্যবস্থাপনা পরিচালক দীপাল চন্দ্র বড়ুয়া এবং ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক এএন সামছুদ্দিন আজাদ চৌধুরী বক্তব্য রাখেন। ইডকল চেয়ারম্যান ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মোশারফ হোসেন ভূইঞা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।

কপিরাইট: ২০০৮, দৈনিক আজাদী কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

চট্টগ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদানের নয়া সময়সূচি শীঘ্রই কার্যকর হচ্ছে

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদানের সরকার ঘোষিত সময়সূচি চট্টগ্রাম অঞ্চলে শীঘ্রই কার্যকর হতে যাচ্ছে। চট্টগ্রামের ১৪টি উপজেলার উপজেলা শিক্ষা অফিসাররা এ বিষয়ে মতৈক্যে পৌঁছলেই প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে পাঠদানের সময়সূচি হবে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকেল সোয়া ৩টা পর্যন্ত। এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার দেবেশ চন্দ্র সরকার।
গতকাল দৈনিক আজাদীকে বলেন, সরকার ঘোষিত সময়সূচি এখনো কার্যকর হয়নি। উপজেলা শিক্ষা অফিসাররা বৈঠকে বসে সময়সূচি কার্যকর করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।উল্লেখ্য, দেশের সরকারি, রেজিষ্টার্ড বেসরকারি ও কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়সমূহের জন্য সরকার গত ৩ মে হতে পাঠদানের নতুন সময়সূচি নির্ধারণ করে। আঞ্চলিক পরিবেশ ও জলবায়ু, স'ানীয় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড, জনগণের জীবন-জীবিকা ও কৃষ্টির সাথে সঙ্গতি রেখেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদানের সময়সূচি নির্ধারণের পরামর্শ দেওয়া হয়। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব জিয়া হাসান ইবনে আহমদ স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত চিঠি সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরগুলোতে পাঠানো হয়। তবে এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের সম্মতিক্রমে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার পাঠদানের অন্য কোন সময়সূচি প্রণয়ন করতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে সময়সূচি সমগ্র উপজেলার জন্য প্রযোজ্য হতে হবে।

সিআইডির রিপোর্ট পেলেই পিলখানা হত্যাকাণ্ডের বিচার শুরু হবে : আইনমন্ত্রী ।। বিএনপির সংসদীয় তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি নাকচ

পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিএনপির সংসদীয় তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি নাকচ করে দিয়েছেন আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ।তিনি বলেন, “বিডিআরের ঘটনা তদন্তে সংসদীয় কমিটি গঠনের দাবি অযৌক্তিক। কারণ, বিডিআরের এ ঘটনাটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)ও পুলিশ তদন্ত করছে। তাদের ওপর আমাদের যথেষ্ট আস্থা রয়েছে। তাদের তদন্ত রিপোর্ট পেলেই এর বিচার শুরু হবে। এ অবস্থায় অন্য কোন ধরনের সন্দেহ থাকা উচিত হবে না।”শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ শিশুস্বাস্থ্য ফাউন্ডেশন লটারির ড্র অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী এসব কথা বলেন। খবর বিডিনিউজের।
তিনি বলেন, বিডিআরের ঘটনার যথাযথ তদন্ত হচ্ছে। সিআইডি ও পুলিশ এর তদন্ত করছে। শিগগিরই এ তদন্তের প্রতিবেদন দেওয়া হবে। এরপরই সরকার এ ঘটনার বিচার শুরু করবে। কোন আইনে এর বিচার হবে, তা তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর চূড়ান্ত করা হবে। তবে সত্যিকার অর্থে যারা এ নারকীয় হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, তাদের চিহ্নিত করে বিচারের সম্মুখীন করা হবে।এ তদন্ত রিপোর্ট জাতীয় সংসদে প্রকাশ করা হবে কিনা- এ প্রশ্নের জবাবে শফিক আহমেদ জানান, এ ব্যাপারে এখনই কিছু বলা যাবে না। তবে সংসদ চাইলে প্রতিবেদনটি সেখানে উপস্থাপন ও এ নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে। পুরো ঘটনাটিই এখন তদন্তাধীন। তাই এ নিয়ে আর কোন সংসদীয় তদন্ত কমিটি গঠনের কোনো যৌক্তিকতা নেই।বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থান সত্ত্বেও এ ধরনের ঘটনা কেন ঘটছে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, “আমি ব্যক্তিগতভাবে কখনোই এ ধরনের হত্যাকাণ্ডকে সঠিক বলি না। কোনো বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডই সরকার সমর্থন করে না। প্রত্যেকটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায়ই মামলা দায়ের করা হচ্ছে এবং তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত শেষ হওয়ার আগে এ ব্যাপারে মতামত দেয়া উচিত হবে না।”এর আগে লটারির ড্র’য়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আইন মন্ত্রী ছাড়াও বক্তব্য রাখেন ফাউন্ডেশনের সভাপতি ডা. এম আর খান, এশিয়াটিক সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মাহফুজা আহমেদ এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি মফিজুল ইসলাম পাটোয়ারি।
ড্র’তে প্রথম পুরস্কার বিজয়ী হয়েছে, জ-০২৫৭৩০২ নম্বরের টিকেট। এছাড়া ঞ-০১৮৫৬৬৬ নম্বর টিকেট দ্বিতীয়, জ-০১০২৯৫৬ নম্বর টিকেট তৃতীয় এবং ঞ-০২০১১২৬ ও গ-০৪৭১০৬৫ নম্বর টিকেট দুটি চতুর্থ পুরস্কার পেয়েছে।

হাটহাজারীতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ।। পঁচাত্তরের পর এদেশে সন্ত্রাসের শুরু, জঙ্গিবাদ তারই ধারাবাহিকতা

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এডভোকেট সাহারা খাতুন বলেছেন সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, জঙ্গিবাদ দমন এবং আইনশৃঙ্খলা উন্নয়নের জন্য সকলকে ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। কারণ দেশের উন্নয়নের পূর্বশর্ত হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা উন্নয়ন। আইনশৃঙ্খলার উন্নয়নে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। মন্ত্রী গতকাল শনিবার সকালে ফটিকছড়ি যাওয়ার পথে হাটহাজারী বাস স্টেশন চত্বরে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠন আয়োজিত পথ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ অভিমত ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন স্বাধীনতার পর এদেশে যখন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে অর্থনৈতিক মুক্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল, তখন স্বাধীনতা বিরাধী চক্র এদেশী পাকিস্তানী এজেন্টগণ বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করেছে। এরপর থেকে দেশে সন্ত্রাসের রাজত্ব শুরু হয়। আইনশৃঙ্খলা পরিসি'তির অবনতি হতে থাকে। হত্যা, খুন, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী তৎপরতা বাড়তে থাকে। সবশেষ শুরু হয় জঙ্গি তৎপরতা। সকাল সাড়ে আটটায় সভা শুরু হলে শত শত লোকজন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তৃতা শোনার জন্য বাসস্টেশন চত্বরে জমা হতে থাকে। ২৯ ডিসেম্বর মহাজোট সরকার গঠনের পর এটাই প্রথম হাটহাজারীতে কোন মন্ত্রীর পথ জনসভা। থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম বাবুলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম.এ সালাম, হাটহাজারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মোহাম্মদ ইসমাইল। প্রধান অতিথি বলেন, একটি মহল পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার চেষ্টা করছে। এ ব্যাপারে তিনি দেশবাসীকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সীমিত সংখ্যক পুলিশ দিয়ে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা দুরুহ কাজ বলে উল্লেখ করেন।

আইপিএলের উপেক্ষার জবাব দিতে প্রস্তুত মাশরাফি


দীর্ঘ এক মাসের অধিক সময় কলকাতা নাইট রাইডার্সের সাইডবেঞ্চে বসে থাকতে থাকতে বিরক্ত হয়ে উঠেছিলেন মাশরাফি। আর মাঠের বাইরে থাকতে রাজি নন বাংলাদেশী সহ-অধিনায়ক। তার দৃষ্টিতে এখন শুধুই আইসিসি-২০০৯ টুয়েন্টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপ। মাঠে নেমে দলের জন্য ভালো কিছু করার জন্য মুখিয়ে আছেন দেশসেরা ফাস্ট বোলার মাশরাফি মর্তুজা। সদ্য সমাপ্ত দ্বিতীয় আইপিএলে মাত্র একটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পান মাশরাফি। যদিও কলকাতা নাইট রাইডার্স দল তাকে নিলামে ৬ লাখ ডলার দিয়ে এক প্রকার লড়াই করেই কিনে নেয়। কোচ জন বুকাননের উদাসীনতায় মাত্র এক ম্যাচে মাশরাফিকে খেলতে নামানো হয়। ম্যাচটিতে ৫৮ রান খরচ করলেও একটি উইকেটও পাননি মাশরাফি। তবে বিভিন্ন দলের সেরা ক্রিকেটারদের সঙ্গে থাকায় দারুণ অভিজ্ঞতা হয়েছে আপাতত এটাই মনে করছেন মাশরাফি।
আন্তর্জাতিক একটি বার্তা সংস্থাকে মাশরাফি বলেছেন, আমি মাঠে নামার জন্য প্রস্তুত। দেশের জন্য ভালো কিছু করতে চাই। আমার মাথায় শুধু এটাই ঘুরপাক খাচ্ছে। টুয়েন্টি টুয়েন্টি বিশ্বকাপের গত আসরে অষ্টম স্থান পায় বাংলাদেশ। ওই অবস্থান থেকে উন্নতি করতে হলে মাশরাফির পারফরমেন্স খুবই গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল। আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে আশরাফুল বলেন, মাশরাফি এমন এক খেলোয়াড় যিনি দলের বিপদের সময় জ্বলে ওঠেন। ব্যাট কিংবা বল হাতে উভয় ক্ষেত্রেই তিনি দলের ভাগ্য বদলে দিতে পারেন। পুরো দলই তার ওপর আস্থা রাখে। তিনিই আমাদের দলের সুপারস্টার। অধিনায়কের মতো কোচ জেমি সিডন্সও আস্থা রাখছেন এই ফাস্ট বোলারের ওপর। তার মতে, ইংল্যান্ডের কন্ডিশন মাশরাফির বোলিংয়ের জন্য ফেভারিট। সিডন্স বলেন, মাশরাফি আমাদের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়। ৬ জুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারতের বিরুদ্ধে টেন্টব্রিজে টুয়েন্টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। একই ভেন্যুতে দু’দিন পর আয়ারল্যান্ডকে মোকাবেলা করবে টাইগাররা। ইতিমধ্যে তিনটি প্রস্তুতি ম্যাচের মধ্যে দুটিতে জয়লাভ করেছে টাইগাররা। নেদারল্যান্ডসকে ৬৪ রানে এবং স্কটল্যান্ডকে ছয় উইকেটে হারালেও নিউজিল্যান্ডের কাছে চার উইকেটে হেরে গেছে বাংলাদেশ। ম্যাচগুলোতে মাশরাফি ৫৪ রান খরচ করে তুলে নেন তিন উইকেট।

দুর্নীতিবাজ কাস্টমস ও বন্দর কর্মকর্তাদের তালিকা হবে এক মাসের মধ্যে - মেয়র


চট্টগ্রাম কাস্টমস, বন্দরসহ শীর্ষ দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের একটি তালিকা আগামী এক মাসের মধ্যে প্রণয়নের ঘোষণা দিয়েছেন সিটি মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী। এসব কর্মকর্তাদের অন্যায়, দুর্নীতি, জুলুম আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বন্ধ করার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন তিনি। এর ব্যতয় ঘটলে প্রয়োজনে কাস্টমস হাউজ ঘেরাও করার ঘোষণা দেন তিনি। গতকাল নগরীর লালদীঘি ময়দানে আয়োজিত চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের জনসভায় তিনি সভাপতির বক্তব্য রাখছিলেন।
মেয়র বলেন, চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে বিদেশ ফেরত যাত্রীরা পদে পদে কাস্টমস কর্মকর্তাদের হয়রানির সম্মুখীন হচ্ছেন। এসব জুলুম আগামী ৭ দিনের মধ্যে বন্ধ করুন, অন্যথায় কাউকেই রেহাই দেয়া হবে না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, নৌ-পরিবহন মন্ত্রী ডা. আফসারুল আমীনসহ আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যসহ নেতৃবৃন্দ এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
সিটি মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, দলের ভেতর অনেকেই মীর জাফরী (বেঈমানী) করছেন। সরকারের মধ্যে থেকে সরকারের উদ্দেশ্য ভণ্ডুল করার ষড়যন্ত্র করছেন, তাদেরকে চিহ্নিত করতে হবে। তারপর প্রতিরোধ। আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন ছাত্রলীগ, যুবলীগ নেতাকর্মীদেরকেও তিনি সতর্ক করে দেন যাতে ষড়যন্ত্রে না জড়ায়।
সিটি মেয়র জনসভায় উপসি'ত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে শুধুমাত্র জনসভায় শ্লোগান দিলে চলবে না, সবাইকে বাধ্যতামূলকভাবে কম্পিউটার শিখতে হবে। মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, খাতুনগঞ্জে যেসব ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট পণ্যের দাম ইচ্ছে করে বাড়িয়ে দিচ্ছেন তাদের প্রতি আমাদের নীরব ভূমিকা আর থাকবে না। চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। সিটি মেয়র বলেন, যে সব কর্মকর্তা সরকারের মধ্যে থেকে সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন আগামী এক মাসের মধ্যে বৈঠক ডেকে তাদের চিহ্নিত করা হবে। তাদের কাউকে রেহাই দেয়া হবে না।

কুমিরা পর্যন্ত বিস্তৃতি লাভ করেছে জাহাজ ভাঙা শিল্প। বাড়ছে লোহা উৎপাদন, রাজস্ব আয় ও কর্মসংস্থান


চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে গড়ে ওঠা দেশের একমাত্র জাহাজ ভাঙা শিল্প ফৌজদারহাট-বারআউলিয়ার সীমানা ছাড়িয়ে এখন কুমিরা পর্যন্ত বিস্তৃতি লাভ করেছে। বিগত এক বছরে বারআউলিয়া এবং কুমিরা অঞ্চলে গড়ে উঠেছে ৬টি শিপইয়ার্ড। প্রক্রিয়াধীন রয়েছে আরো ৭টি। আর শিপইয়ার্ডের সংখ্যা বাড়তে থাকায় লোহা উৎপাদন বেড়ে দেশের নির্মাণ শিল্পে গতিশীলতা ফিরে আসার পাশাপাশি সরকারের রাজস্ব আয় বাড়ছে, আর ঘটেছে ব্যাপক কর্মসংস'ানও। ফলে জাহাজ ভাঙা শিল্প দিন দিন দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। তবে উন্নয়নে প্রতিবন্ধক হয়ে রয়েছে উপকূলীয় বনবিভাগ।
সূত্রে জানা যায়, ৬০ এর দশকে সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট সমুদ্র উপকূলে ঝড়ে আটকে যাওয়া জাহাজ কুইন আল পাইন ভেঙে স্স্থানীয় কয়েকজন পুঁজিপতি এখানে জাহাজ ভাঙা শিল্পের সূচনা করেন। তারপর এ ব্যবসায় ব্যাপক লাভ এবং জাহাজের প্রতিটি সামগ্রীর চাহিদার কথা বিবেচনা করে ব্যবসায়ীরা গড়ে তুলতে থাকে শিপইয়ার্ড। ফলে মাত্র দুই দশক অর্থাৎ ৮০ এর দশকের মধ্যে উপজেলার ফৌজদারহাট থেকে বারআউলিয়া পর্যন্ত দীর্ঘ ২০ কি. মি. এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে জাহাজ ভাঙা শিল্প।
বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স এসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট মোঃ কামাল উদ্দিন এ প্রতিবেদককে জানান ইয়ার্ডগুলো থেকে বার্ষিক প্রায় ১৭ থেকে ১৮ লক্ষ টন লোহা পাওয়া যাচ্ছে এবং সরকার পেয়ে আসছে প্রায় ৮শ কোটি টাকা বার্ষিক রাজস্ব । এছাড়া প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে পাঁচলক্ষ লোকের কর্মসংস'ান করছে এ শিল্প। এদিকে দীর্ঘদিন ধরে এখানে ইয়ার্ড সংখ্যা অপরিবর্তিত থাকলেও বিগত এক বছর সময়ে বারআউলিয়া এবং কুমিরা এলাকায় নতুন করে গড়ে উঠেছে ৬টি শিপইয়ার্ড। এ সময়ে জাহাজ ভাঙা শিল্পের দীর্ঘদিনের ফৌজদারহাট-বারআউলিয়া মানচিত্রের পরিবর্তন ঘটিয়ে কুমিরা এলাকাতেও ছড়িয়ে পড়ে শিপব্রেকিং শিল্প। সরকার এক ঘোষণাপত্রে বড়কুমিরা ইউনিয়নের উত্তর সীমানা পর্যন্ত শিপইয়ার্ড এলাকা ঘোষণা করে, এই ঘোষণার আলোকে কুমিরা এলাকায় বেশ কয়েকটি শিপইয়ার্ড প্রতিষ্ঠা হয়। বড়কুমিরায় রাজা কাশেমের মালিকানায় রাজা শিপব্রেকিং ইয়ার্ড এবং মোজাহের সওদাগরের মালিকানায় নিউ সিক্স স্টারটিও এখন পুরোদমে চলছে। ফলে বর্তমানে সীতাকুণ্ডে শিপব্রেকিং ইয়ার্ডের সংখ্যা ৪২টিতে দাঁড়িয়েছে। অপরদিকে শুধু নতুন ৬টি ইয়ার্ড চালু হওয়া নয়, একই এলাকাতে কমপক্ষে আরো ৭টি ইয়ার্ড খুব শীঘ্রই নির্মাণের প্রক্রিয়া চলছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। আর শিপব্রেকিং ইয়ার্ডের সংখ্যা বাড়তে থাকায় দেশের অর্থনীতিতে তা ইতিবাচক ভূমিকাও রাখছে। নতুন গড়ে উঠা এই ৬টি শিপইয়ার্ডে কর্মসংস'ান হবে আরো প্রায় ৩ হাজার লোকের। তাছাড়া এই ইয়ার্ডগুলো থেকে দেশ পাবে প্রতিবছর আরো ৩ লক্ষ টন লৌহ সহ তামা, পিতল, ফার্নিচারসহ বিভিন্নরকম সামগ্রী। আর সরকার পাবে পৌনে ২শ কোটি টাকা রাজস্ব। প্রক্রিয়াধীন আরো ৭টি ইয়ার্ড গড়ে উঠলে আনুপাতিক হারে লৌহ উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি বাড়বে কর্মসংস'ান এবং রাজস্ব আয়। মো. কামাল উদ্দিন জানান, বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে আমদানি উন্মুক্ত করার ফলে দেশের ভাসমান খনি খ্যাত একমাত্র শিপব্রেকিং শিল্পের প্রসার ঘটেছে খুবই দ্রুত। যার সুফল পাচ্ছে ভোক্তারা। তবে সরকারকে কঠোর তত্ত্বাবধানের মাধ্যমে এ ব্যবসাকে সিন্ডিকেট মুক্ত রাখতে হবে। তা না হলে গুটিকয়েকজন ব্যবসায়ীর কাছে দেশের নির্মাণ শিল্প জিম্মি হয়ে পড়বে।
এদিকে নতুন করে শিপ ইয়ার্ড নির্মাণ করতে কিছু কেওড়া গাছ কাটতে বাধ্য হচ্ছে ইয়ার্ড কর্তৃপক্ষ। কারণ, কেওড়া গাছের মালিক উপকূলীয় বন বিভাগ হলেও ভূমিগুলো ব্যক্তি মালিকানাধীন। ইয়ার্ড কর্তৃপক্ষ জমিগুলো ব্যক্তি মালিকদের কাছ থেকে ক্রয় করেছেন। ঐ জায়গায় বনবিভাগের বপন করা কেওড়া গাছ থাকায় ইয়ার্ড নির্মাণে একটি বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯১ সালের প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ে সীতাকুণ্ড উপকূলীয় এলাকায় বহু লোক প্রাণ হারায়। সে সময় বেড়ি বাঁধ এলাকায় কেওড়া বন না থাকায় এই এলাকার ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়েছে বলে অভিজ্ঞ মহল মতামত প্রদান করায় বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠান ও বন বিভাগ বেড়ি বাঁধ এলাকায় কেওড়া বন গড়ে তোলার জন্য পরিকল্পনা হাতে নেন এবং বন বিভাগ কেওড়া গাছের চারা সরবরাহ করে আর এলাকার লোকজন, সামাজিক সংগঠন বিশেষ করে চক্রবাক ক্লাব, ফুটন্ত গোলাপ, বারআউলিয়াস' একটি ক্লাব সেচ্ছাশ্রমে সে চারাগুলো রোপণ করে। বেড়ি বাঁধের ভিতর জমির মালিকানার উৎস জানতে গিয়ে জানা যায়, ১৯৬৫, ১৯৮৬, ১৯৯১ সালসহ বিভিন্ন সময়ে জলোচ্ছ্বাসে সোনাইছড়ী, কুমিরা উপকূলীয় এলাকায় অনেক বাড়ি ঘর সাগরে ভাসিয়ে নেয়। এর পর এ সব এলাকায় প্রাণের ভয়ে কেউ বাড়ি ঘর করে নি।তারা আরো পূর্ব দিকে এসে বসবাস গড়ে তোলে। পূর্বের ভিটা বাড়ি একবার সাগরে তলিয়ে যায় আবার চর জাগে এভাবেই কেটে যায় যুগ যুগ। এই পরিত্যক্ত জায়গায় বন বিভাগ কেওড়া গাছ লাগানোর সময় জমির মালিকের কাছ থেকে অনুমোদন নেননি। সেই এক সময়ের পরিত্যক্ত জায়গায় শিপইয়ার্ড নির্মাণ করতে চাইলে বাধা হয়ে দাঁড়ায় উপকূলীয় বন বিভাগ। তারা এসব গাছ কাটতে বাধা দিচ্ছে, ইয়ার্ডের মালিকদের বিরুদ্ধে গাছকাটার অপরাধে মামলা দিচ্ছে। পরিবেশ বাদী সংগঠনগুলো বিশেষ করে “বেলা” পরিবেশ বিঘ্ন সৃষ্টির অভিযোগ এনে হাই কোর্টে মামলা দিচ্ছে। এসব জুট ঝামেলায় পড়ে ভূমি মন্ত্রণালয়, ইয়ার্ড নির্মাণে সরকারি জলাশয় ভূমি লিজ প্রদান বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে শিপইয়ার্ড উন্নয়ন, জনবলের কর্ম সংস'ান ও রাজস্ব আহরণের পথে একটি বড় বাধা সৃষ্টি হয়েছে। সীতাকুণ্ড সহকারি কমিশনার (ভূমি) গাউসুল আজম এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি তার অফিসের রেকর্ড পত্র যাচাই করে জানান মধ্য সোনাইছড়ী মৌজার (জে,এল নং ৪৮) বন বিভাগের নামে কোন রেকর্ড প্রচারিত হয়নি এবং মালিকানাও নেই। এই মৌজার ব্যক্তি মালিকানাধীন ভূমি সাগর গর্ভে শুধু বিলীন হয়েছে, নতুন চর জেগে উঠেনি। ফলে বন বিভাগকে সরকারিভাবে মধ্য সোনাইছড়ী মৌজায় (জে এল নং-৪৮-এ) কোন জমি হস্তান্তর করা হয়নি ।
অপরদিকে সীতাকুণ্ড উপকূলীয় বন কর্মকর্তা জান মোহাম্মদ খানের সাথে তার মোবাইলে (০১৭১২-১০১০১৮) যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ে ব্যাপক জান মালের ক্ষতি হলে সকল উপকূলীয় এলাকায় বনায়ন করার জন্য সরকার নির্দেশ দেন। তাছাড়া চট্টগ্রাম কোস্টাল এরিয়ায় ১ লাখ ৯৫ হাজার একর জমি হুকুম দখল করার জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয় যা এখনো প্রক্রিয়াধীন আছে। সেই প্রস্তাবনার আলোকে তখনকার উপকূলীয় জলাশয়ে কেওড়া গাছ লাগানো হয়। সেই বন কর্তনের অভিযোগে ১১টি মামলা হয়েছে।
এলাকাবাসী জানায়, দেশের উন্নয়ন স্বার্থে শিপইয়ার্ড নির্মাণে সকল বাধা নিরসন করা জরুরি। তবে তা আইনের মধ্যে এবং পরিবেশ বান্ধব হতে হবে।

সুন্দরবন থেকে জলোচ্ছ্বাসে ভেসে গেছে ৬১ টি কুমির ও ৫টি হরিণ


ঘূর্ণিঝড় আয়লায় জলোচ্ছ্বাসে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে রাখা লবণ পানির প্রজাতির ছোট-বড় ৬১টি কুমির এবং পাঁচটি চিত্রল হরিণ ভেসে গেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে সংরক্ষণ কেন্দ্রে থাকা পশু ও সরীসৃপ গণনা শেষে এই তথ্য জানিয়েছেন বনকর্মকর্তারা। খবর বিডিনিউজের। পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা (ডিএফও) মিহির কুমার দে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বলেন, আজ সকালে চাঁদপাই রেঞ্জের একমাত্র বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্র করমজলে সরজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে বন্যপ্রাণীর খোঁজ খবর নিয়েছি। তখন বন কর্মীরা বিভিন্ন চৌবাচ্চায় নেমে লবণ পানির কুমিরগুলো ঠিক আছে কিনা দেখতে গিয়ে ছোট-বড় ৬১টি কুমির পাননি।
ভেসে যাওয়া এই কুমিরগুলোর বয়স এক থেকে চার বছরের মধ্যে বলে তিনি জানান। এছাড়া করমজল কেন্দ্রে রাখা চিত্রল হরিণের মধ্যে পাঁচটি হরিণ পাওয়া যায়নি। মিহির কুমার জানান, ঝড়ের আগে করমজলে লবণ পানির প্রজাতির ছোট-বড় ১৩৩টি এবং মিঠা পানির প্রজাতির ৩টি কুমির ছিল। এছাড়া সেখানে অন্তত বারোটি হরিণ, কয়েকটি গুইসাপ ও কিছু বানর ছিল। পরিদর্শনের সময় তার সঙ্গে সুন্দরবনের বন সংরক্ষক মো. আকবর হোসেনও ছিলেন বলে বিভাগীয় বনকর্তা মিহির কুমার জানান।

রাঙ্গুনিয়ায় আদিবাসী মহিলার ক্ষত-বিক্ষত লাশ উদ্ধার


রাঙ্গুনিয়া উপজেলার দুর্গম পাহাড়ি এলাকা বড়খোলা পল্লী থেকে এক আদিবাসী মহিলার ক্ষত-বিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল ২৯ মে শুক্রবার সকালে রাঙ্গুনিয়া থানা পুলিশ এ লাশ উদ্ধার করে। এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার দুর্গম এলাকা জঙ্গল সরফভাটার বড়খোলা আদিবাসী পল্লীর বাসিন্দা ওয়াতুমা মার্মা (৪০) গত বুধবার সকালে জুম চাষের জন্যে ঘর থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি। তার পরিবারের সদস্যগণ বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও তার কোন হদিস পায়নি। এদিকে গতকাল শুক্রবার আদিবাসী পল্লী বড়খোলার দূরবর্তী একটি ছড়া থেকে দুর্গন্ধ বের হলে এলাকাবাসী ওয়াতুমা মার্মার লাশের সন্ধান পায়। পরে খবর পেয়ে থানা পুলিশ উক্ত ছড়া থেকে তার লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্যে মর্গে প্রেরণ করে। পুলিশ জানায় লাশের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এছাড়া পচে যাওয়ার কারণে লাশ ছিল ক্ষত-বিক্ষত। ধারণা করা হচ্ছে তাকে ধর্ষণ শেষে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। তবে এলাকাবাসী বলছে জায়গা জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে তাকে হত্যা করা হতে পারে।

ব্যবসায়ীদের বেসুমার মুনাফা রোধে সরকার তৎপর। রমজানের আগেই টিসিবিকে বাজারে নামানো হচ্ছে


প্রতিবছর রমজান মাস শুরু হলেই নানা অজুহাতে দেশে জিনিষপত্রের দাম বাড়ানো শুরু হয়। সেদিক থেকে রমজান সংযমের মাস হলেও সার্বিকভাবে ব্যবসায়ীদের কাছে এ মাসটি হয়ে যায় বেসুমার মুনাফার মাস। এসব কারণে নানা সংকট মাথায় নিয়ে রমজানের আগেই ব্যবসায়ীর ভূমিকায় নামছে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। পণ্যের কৃত্রিম সংকট তৈরি ও দাম বাড়িয়ে কালোবাজারি ব্যবসায়ীদের মুনাফা করার পথ বন্ধ করতে সরকার এই উদ্যোগ নিয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় বাজারে সিন্ডিকেটের একচেটিয়া ব্যবসা বন্ধে এই কৌশল নেয়া হচ্ছে। সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৫টি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি করবে টিসিবি। রমজানে সরকারি এই প্রতিষ্ঠানটির ভূমিকা হবে ব্যবসায়ীর মতো। বাজারে সরবরাহ ও পণ্যের দাম ঠিক রাখতে সরকার এসব পণ্য বিক্রি করবে সাধারণ ব্যবসায়ীদের মতো। ইতিমধ্যে ভোজ্যতেল, পেঁয়াজ, ছোলা, চিনিসহ বেশ কিছু পণ্য সরাসরি টিসিবির মাধ্যমে আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও কী পরিমাণ পণ্য আনা হচ্ছে, কবে এলসি খোলা হবে সে ব্যাপারে স্পষ্ট কোনো দিকনির্দেশনা দেয়া হয়নি। এসব সিদ্ধান্ত নিতে দেরি হলে সরকারের উদ্দেশ্য সফল হবে না বলে মন্তব্য করেছেন সংশ্লিষ্টরা। এ ছাড়াও টিসিবির রয়েছে নানামুখী সমস্যা। টিসিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলেছেন, সরকারকে পুরোনো ধ্যানধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। দ্রুত নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত নিতে না পারলে টিসিবির কাজে গতি আসবে না। টিসিবির চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন বলেন, রমজানে কী পরিমাণ পণ্য আনা হবে তার কোনো দিকনির্দেশনা সরকারের কাছ থেকে এখনো আমরা পাইনি। এসব বিষয় নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। নেয়া হচ্ছে ব্যাপক প্রস'তি। আশা করা হচ্ছে, দু-একদিনের মধ্যেই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত আসবে। ৩১ মে সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এসব ব্যাপারে আলোচনার কথা ছিল। সংসদীয় কমিটির বৈঠক পিছিয়ে গেছে। খবর এনএনবির।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, টিসিবিকে আধুনিকায়নের জন্য কাজ করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এদিকে টিসিবিকে কোম্পানি করা হবে নাকি সরকারের একটি বিভাগে পরিণত করা হবেণ্ড তা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছে সরকার। টিসিবিকে শক্তিশালী করার বিষয়ে সরকার নীতিগতভাবে সম্মত হলেও কোন প্রক্রিয়ায় সেটি করা হবে তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে দায়িত্বশীল সূত্র থেকে জানা গেছে, টিসিবিকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তরের প্রস্তাবই উঠেছে জোরেশোরে। টিসিবি পুনর্গঠন সংক্রান্ত কমিটি প্রস্তাবটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছে।

ঢাকায় বিপুল পরিমাণ জাল টাকা ও সরঞ্জাম উদ্ধার ॥ গ্রেপ্তার ৫

র‌্যাব সদস্যরা পুরান ঢাকার একটি ফ্লাটে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ জাল টাকা ও জাল টাকা তৈরীর সরঞ্জামাদি উদ্ধার করেছে। এসময় জাল টাকা তৈরীর সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। খবর ফোকাস বাংলা নিউজের। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে পুরান ঢাকার নবাবগঞ্জ রোডের একটি আবাসিক ফ্ল্যাটে র‌্যাব-১০ এর একটি দল অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে।
র‌্যাব সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে জালটাকাসহ এক ব্যক্তিকে কেরানীগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করে র‌্যাব-১০-এর সদস্যরা। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে জাল টাকা তৈরীর কারখানার সন্ধান পায় র‌্যাব। ওই রাতেই গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির তথ্য মতো র‌্যাব-১০ এর একটি দল নবাবগঞ্জ রোডের একটি আবাসিক ফ্লাটে অভিযান চালায়। র‌্যাব সদস্যরা সেখান থেকে গ্রেফতার করে পাঁচ জনকে। র‌্যাব সদস্যরা ফ্লাটটিতে অভিযান চালিয়ে জাল টাকা ছাড়াও অর্ধ লক্ষাধিক টাকা মূল্যমানের জাল ডলার, রুপি, রিংগিত, গুলট্রাম, সৌদি রিয়াল উদ্ধার করে।
জাল টাকা তৈরি চক্রটির অন্যতম হোতা গ্রেফতারকৃত সাজ্জাদ হোসেন রবিন র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, তারা স্থানীয় উপকরণ ব্যবহার করেই কম্পিউটারে স্ক্যানিং করে জাল টাকা তৈরী করে। এক্ষেত্রে সূক্ষ্মভাবে জলছাপ ব্যবহার করা হয়। এসব জাল নোট সচরাচর বড় বড় বান্ডিলের মধ্যে গুঁজিয়ে দিয়ে ব্যবসায়ীদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। দশ হাজার টাকার একটি জাল টাকার বান্ডিল তারা মাত্র দেড় হাজার টাকায় বিক্রি করতো বলে গ্রেফতারকৃতরা জানায়।

১৪১ রানে স্কটল্যান্ডকে গুড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ

নেদারল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের সুখস্মৃতি নিয়ে গতকাল টুয়েন্টি টুয়েন্টি বিশ্বকাপ প্রস্তুতির তৃতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে খেলতে নেমেছে। শুরুতেু অবশ্য টসে জয় পায় বাংলাদেশ অধিনায়ক। আর টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার আমন্ত্রণ জানায় প্রতিপক্ষকে। আর বাংলাদেশের বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের মুখে স্কটিশরা নির্ধারিত ২০ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে সংগ্রহ করে ১৪১ রান। সর্বোচ্চ ৫০ রান করেন ম্যাককালাম। এছাড়া হ্যামিল্টনের ব্যাট থেকে আসে ৪৪ রান। দ্বিতীয় প্রস্তুতি ম্যাচে ৪ উইকেট পাওয়া রুবেল গতকালও বাংলাদেশের হয়ে আগুন ঝড়ানো বোলিং করেন। গতকাল মাত্র ১৬ রান দিয়ে নেন ৫ উইকেট। এছাড়া রিয়াদ এবং মাশরাফি নেন ১টি করে উইকেট। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ ৩ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে সংগ্রহ করেছে ২৫ রান।

এবারের সোনার বল মেসির : পেলে

এই মুহূর্তে তাঁর থেকে খুশি বোধহয় আর কেউ নেই। ফাইনালের আগে ‘নির্ভীক’ ম্যানচেস্টারকে এগিয়ে রেখেছিলেন। বার্সিলোনা রক্ষণে আলভেস, আবিদাল, ফ্লেচারের না-থাকাই কারণ। কিন্তু, প্রিয় দল ট্রফি জেতায় উচ্ছ্বাস যেন আর চেপে রাখতে পারছেন না। ইয়োহান ক্রুয়েফ। ‘ফল কেমন হবে মৌসুমের শুরুতে বোঝা যায় না। তবে, আমরা জানি বার্সেলোনা ভাল ফুটবল খেলে। বুধবারও সে-ভাবেই খেলেছে। এই দলটা অনেক দূর এগোবে। যোগ্য দল হিসেবেই ট্রফিগুলো জিতেছে।’ কোচ গার্দিওলাকে দেখেও মুগ্ধ ক্রুয়েফ। যদিও রাইকার্ডের সঙ্গে তাঁর তুলনা করতে চান না। ‘রাইকার্ডের নিন্দে করার মানে হয় না। এই দলের ফুটবলারদের জন্য অনেক কিছু করেছে। তবে গার্দিওলা একটু অদল-বদল করতেই দলটা দুর্দান্তভাবেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে।’ ফাইনালের প্রথম ১০ মিনিট বার্সেলোনা যে কিছুটা চাপে ছিল, জানাতে ভোলেননি কিংবদন্তি তারকা। ‘হ্যাঁ, শুরুতে দল কিছুটা চাপে ছিল। কিন্তু, সমস্যা কাটিয়ে উঠতেই ছবিটা বদলে গেল। বাকি সময়টা তো বার্সেলোনাই শাসন করল।’ তবে, পেলে অবশ্য বেশি উচ্ছ্বসিত বার্সেলোনার জয়ের নায়ক মেসিকে নিয়েই। এবার ফিফার বর্ষসেরার পুরস্কারটা মেসিরই পাওয়া উচিত, এমন দাবিও তুলে ফেললেন ফুটবল সম্রাট। ‘ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো নয়, এবার সোনার বলটা মেসিরই প্রাপ্য। ওর নির্বাচন নিয়ে সংশয়ের কোনও জায়গাই নেই। রোনালদিনহো, কাকার পর গত বছর রোনালদোর হাতে পুরস্কারটা তুলে দিয়েছি আমি। প্রতিবারই দ্বিতীয় স্থান ছিল মেসি। এবার কিন্তু নিশ্চিতভাবেই পুরস্কারটা ওর হাতেই ওঠা উচিত।’

হুমকির মুখে অটোমেশন ।। আগের মতো আইজিএম ইজিএম কপি কাস্টমসে জমার নির্দেশ, চেম্বারের প্রতিবাদ

হুমকির মুখে পড়েছে চট্টগ্রাম কাস্টমসের স্বয়ংক্রিয় শুল্কায়ন পদ্ধতি। সম্প্রতি কাস্টমসে গিয়ে আগের মতো আইজিএম এবং ইজিএমের কাগজ জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। সংশ্লিষ্টরা আশঙ্কা করেছেন, এ অবস্থায় কাস্টমস আগের পদ্ধতিতে ফিরে যাবে। চট্টগ্রাম চেম্বার এর প্রতিবাদ করেছে।
শুল্ক ফাঁকি রোধ, রাজস্ব আয় বাড়ানো এবং আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য চট্টগ্রাম কাস্টমসে স্বয়ংক্রিয় শুল্কায়ন পদ্ধতি (অটোমেশন) চালু করা হয়েছিল গত বছরের আগস্টে। এতে ঘরে বসে শুল্কায়ন সম্পন্ন করা যেত এবং কাস্টমসের কাজে গতিও এসেছিল। ডিজিটাল বাংলাদেশের বাস্তবায়নের স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে সরকার যখন নানামুখী পদক্ষেপ নিচ্ছে তখন কাস্টমস কর্তৃপক্ষের এই ধরনের নির্দেশ সরকারের লক্ষ্য অর্জনের পথে একটি বড় অন্তরায় হবে। চেম্বারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে যে, চট্টগ্রাম কাস্টমসকে আবারো দুর্নীতির আখড়া বানানোর জন্যই এই ধরনের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের প্রবেশদ্বার চট্টগ্রাম বন্দর। এই বন্দরের মাধ্যমে প্রতিবছর গড়ে প্রায় ষাট হাজার কোটি টাকার পণ্য আমদানি করা হয়। বিপুল এই কর্মযজ্ঞ দেশের রাজস্ব আয়ের বড় অংশের জোগান দেয়। ২০০২ সাল থেকে এসাইকোডা প্লাস প্লাস সিস্টেমের মাধ্যমে চট্টগ্রাম কাস্টমসে শুল্কায়ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। এই সিস্টেম চালু রাখার পেছনে প্রতি বছর প্রায় তিন কোটি টাকা খরচ হতো। এসাইকোডা প্লাস প্লাস সিস্টেমে শুল্কায়ন করা হলেও এতে নানা ধরনের ফাঁক ফোকর থেকে যায়। কোটি কোটি টাকার শুল্ক ফাঁকির ঘটনাও ঘটতে থাকে। বিদেশ থেকে আমদানিকৃত পণ্যের চালানের ব্যাপারে কাস্টমস কী করছে তা সিএন্ডএফ এজেন্ট জানে না। আবার সিএন্ডএফ কী করছে তা আমদানিকারক জানেন না। ফলে নানা ধরনের অনিয়ম এবং অব্যবস্থাপনায় সরকারের কোটি কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছিল সাধারণ ভোক্তাদেরকেও নানাভাবে চড়া মূল্য পরিশোধ করতে হতো।
এসব অব্যবস'া ঠেকানোর পাশাপাশি রাজস্ব আয় বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে যৌথবাহিনীর উদ্যোগে অটোমেশন পদ্ধতি চালু (৮ আগস্ট, ২০০৮) করা হয়। এই পদ্ধতির ফলে ঘরে বসে আইজিএম ইজিএম দাখিল করার সুযোগ সৃষ্টি হয়। এই পদ্ধতির ফলে বিল অব এন্ট্রি দাখিল করার সাথে সাথে পুরো তথ্য কম্পিউটার নেটওয়ার্কে চলে যায়। এতে সংশ্লিষ্ট সকলেই যখন ইচ্ছে তখনি চালানটির ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে পারেন। কত টাকা ট্যাক্স আসলো বা কত টাকা পরিশোধ করা হলো সেই সব তথ্য নিমিষেই জানা যায়। ১৯৯৩ সাল থেকে এই পদ্ধতি চালুর জন্য নানাভাবে চেষ্টা করেও সরকার ব্যর্থ হয়েছিল। যৌথবাহিনী এবং চট্টগ্রাম চেম্বার মাত্র তিন কোটি টাকা খরচ করে এই পদ্ধতি চালু করে। প্রযুক্তিগত কিছু সমস্যা সৃষ্টি হলেও গত দশ মাস ধরে অটোমেশন পদ্ধতিতে শুল্কায়ন কার্যক্রম চলে আসছিল। এতে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে অনেক বেশি স্বচ্ছতা নিশ্চিত হয়েছিল। কিন' সম্প্রতি চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ অনলাইনে আইজিএম দাখিল করার পাশাপাশি দুই কপি হার্ড কপি কাস্টমস অফিসে জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে। অনলাইনে আইজিএম দাখিলের সুবিধার জন্য বহুল প্রত্যাশিত অটোমেশন চালু করা হয়েছে। যদি কাস্টমস অফিসে গিয়ে কাগজ জমা দিতে হয় তাহলে আর অটোমেশনের দরকার কি ছিল। এই প্রশ্ন করেছেন চট্টগ্রাম চেম্বারের প্রেসিডেন্ট এম এ লতিফ এমপি। চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনারের কাছে লিখিত একটি পত্রে সংঘবদ্ধ একটি চক্র কাস্টমসকে আবারো দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করার জন্যই এমন নির্দেশ জারি করেছেন বলেও তিনি মন্তব্য করেন। পত্রের কপি অর্থমন্ত্রী এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ শীর্ষ পর্যায়ে প্রেরণ করা হয়েছে। চট্টগ্রাম চেম্বারের পক্ষ থেকে প্রেরিত চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রযুক্তির এই উৎকর্ষের যুগে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজ কর্তৃক জারি করা এই নির্দেশকে নৈরাজ্য আর দুর্নীতির পূর্বাবস'ায় ফিরে যাওয়ার প্রথম ধাপ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যকে জিম্মি করার জন্য এমনটি করা হচ্ছে বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। সরকার যেখানে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির জন্য আমলাতান্ত্রিক ধাপ কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে সেখানে নতুন জটিলতা সৃষ্টি করার যে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে তাতে স্টেকহোল্ডারেরা শংকিত বলেও পত্রটিতে উল্লেখ করা হয়।

দাউদ ইব্রাহীমের সহযোগী দাউদ মার্চেন্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গ্রেপ্তার



গোয়েন্দা পুলিশ ভারতীয় শীর্ষ সন্ত্রাসী আব্দুল রউফ দাউদ মার্চেন্টকে বুধবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। মাফিয়া ডন দাউদ ইব্রাহীমের সহযোগী আব্দুল রউফ দাউদ মার্চেন্ট মোহাম্মদপুরে জাহিদ নামে আরেক ভারতীয় নাগরিকের সঙ্গে বাসা ভাড়া নেন। বাংলাদেশী পাসপোর্টও যোগাড় করে সে। তার মোবাইলের কল লিস্টে পাকিস্তান ও দুবাইয়ে কথা বলার রেকর্ড মিলেছে।
বিখ্যাত ভারতীয় মিউজিক কোম্পানি টি-সিরিজের মালিক গুলশান কুমার হত্যা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত আবদুর রউফ ওরফে দাউদ মার্চেন্টকে মামলায় তাকে দশ বছরের কারাদণ্ড দেয় মুম্বাইয়ের একটি আদালত। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল মঙ্গলবার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশের সহায়তায় শহরের মৌড়াইল মহল্লার কামাল মিয়ার বাড়ি থেকে তাকে আটক করে। খবর ইউএনবি ও বিডিনিউজের।
আবদুর রউফ ওরফে দাউদ মার্চেন্টের সঙ্গে কুখ্যাত মাফিয়া ডন দাউদ ইব্রাহীমের ‘যোগাযোগ’ রয়েছে বলে পুলিশ তার মোবাইল কল লিস্ট পরীক্ষা করে ধারণা করছে। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশকে উদ্ধৃত করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট মুখলেছুর রহমান গতকাল বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের জানান, দাউদ মার্চেন্ট সম্প্রতি আখাউড়া সীমান্ত দিয়ে গোপনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে এসে বসবাস শুরু করে। এরই মধ্যে বাংলাদেশি পাসপোর্টও তৈরি করে ফেলেছে সে।
গোপনে সংবাদ পেয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি বিশেষ দল মঙ্গলবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আসে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা জেলা পুলিশের সহায়তায় শহরের মৌড়াইল এলাকার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে দাউদ মার্চেন্টকে গ্রেপ্তার করে। তাকে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে বাড়ির মালিক কামাল মিয়াকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
মুখলেছুর রহমান জানান, আটকের পরপরই দাউদ মার্চেন্টকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদ এবং মোবাইল ফোনের কললিস্ট পরীক্ষা করে পুলিশ ধারণা করছে তার সঙ্গে মাফিয়া ডন দাউদ ইব্রাহীমসহ আরো অনেক ‘কুখ্যাত’ ব্যাক্তির যোগাযোগ রয়েছে।
দাউদ মার্চেন্টকে আশ্রয় দেওয়া বাড়ির মালিক কামালের স্ত্রী ফেরদৌসী জানান, ৩/৪ দিন আগে দাউদ মার্চেন্ট তাদের বাসায় ওঠে। নিজেকে মোজাহিদ নামে পরিচয় দিয়ে সে ঢাকায় গাড়ির যন্ত্রাংশের ব্যবসা করে বলে জানায়। ফেরদৌসী জানান, আখাউড়ার জনৈক বিল্লাল মিয়ার মাধ্যমে তার স্বামী কামালের সঙ্গে মোজাহিদের পরিচয় হয়। মার্চেন্টের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সম্পর্কে তারা কিছুই জানতেন না।
এদিকে ঢাকা মহানগর পুুলিশ এবং গোয়েন্দা পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা দাউদ মার্চেন্টকে গ্রেপ্তার করার ব্যাপারে কোন মন্তব্য করেননি। তবে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সহকারী কমিশনার (এসি) খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, ১৯৯৭ সালের ১২ আগস্ট খুন হন গুলশান কুমার। সঙ্গীত পরিচালক নাদিম সাইফি তাকে হত্যা করার জন্য আবু সালেমকে ভাড়া করে। অবশেষে আবু সালেমের সহযোগী দাউদ মার্চেন্ট তাকে হত্যা করে। হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই পলাতক রয়েছে নাদিম সাইফি।
নাদিম সাইফি বিখ্যাত সঙ্গীত পরিচালক যুগল নাদিম-শ্রাবণ এর একজন। আবু সালেম দাউদ ইব্রাহিমের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত। গুলশান কুমার হত্যা মামলায় ২০০১ সালে দাউদ মার্চেন্টকে দশ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ভারতীয় আইন অনুযায়ী, গত মাসে স্বজনদের সঙ্গে দেখা করার জন্য তাকে এক পক্ষের (১৫ দিন) জন্য সাময়িক মুক্তি দেওয়া হয়।
এরপর থেকে মার্চেন্ট মুম্বা থানায় নিয়মিত হাজিরা দিত। কিন' এক সপ্তাহ পরই থানায় রিপোর্ট করা বন্ধ করে দেয় দাউদ মার্চেন্ট।
কে এই দাউদ মার্চেন্ট
দাউদ মার্চেন্ট আব্দুর রউফ নামে পরিচিত। মুম্বাইয়ের অপরাধ জগৎ নিয়ন্ত্রণকারী দাউদ ইব্রাহিমের পরিবারে তার জন্ম। বেড়ে ওঠার পর থেকেই তিনি অপরাধ জগতের সাথে পরিচিত হন। মুম্বাইয়ের বস্তি থেকে শুরু করে চলচ্চিত্র পুরোটাই নিয়ন্ত্রণ করতো দাউদ পরিবার। এর সঙ্গে যুক্ত হন মুম্বাইয়ের অপরাধ জগতের দুই ডন আবু সালেম আর ছোটা শাকিল। শাকিলের নেটওয়ার্ক ভারতের দিল্লী, মুম্বাই, কলকাতা, ব্যাঙ্গালোর, নেপালের কাঠমান্ডু, বাংলাদেশের ঢাকা, পাকিস্তানের করাচি আর মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশেও রয়েছে।
অডিও ব্যবসায়ী গুলশান কুমার হত্যার ঘটনায় দাউদ মার্চেন্টের নাম অপরাধ জগতে প্রকাশ হয়ে পড়ে। ২০০১ সালের ৮ জানুয়ারি কলকাতায় ছোটা শাকিলের ঘাঁটি থেকে পুলিশ দাউদ মার্চেন্টকে গ্রেপ্তার করে। জিজ্ঞাসাবাদে দাউদ মার্চেন্ট সঙ্গীত পরিচালক গুলশান কুমার হত্যার পুরো ঘটনা স্বীকার করেন। প্রকাশ ভারতের হিন্দু উগ্রবাদী শিব সেনা ব্যাল থ্যাকারের সংগঠন আরএসএস’কে বিলিয়নিয়ার গুলশান কুমার আর্থিকভাবে সহযোগিতা করতেন। তাই দাউদ ইব্রাহিম তখন গুলশান কুমারকে খুন করার পরিকল্পনা নেয়।

অস্ত্র চোরাচালানের বিষয়টি লিয়াকত ভালোভাবেই জানেন : পিপি ।। চার দিনের রিমান্ডে মেজর (অব.) লিয়াকত ।। জিজ্ঞাসাবাদ শুরু দশ ট্রাক অস্ত্র মামলা

দশ ট্রাক অস্ত্র মামলায় জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস'ার (এনএসআই) গ্রেপ্তারকৃত সাবেক উপ পরিচালক (টেকনিক্যাল) মেজর (অব.) লিয়াকত হোসেনকে চারদিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে সিআইডি পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট এম আসাদুজ্জামান খানের আদালতে শুনানি শেষে তাকে রিমান্ডে নেয়া হয়। বিকেলে দামপাড়াস' সিআইডি কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে লিয়াকতকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে সিআইডি।
এদিকে চট্টগ্রাম কারাগারে থাকা এই মামলার অপর আসামি মেজর জেনারেল (অবঃ) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরীকে আগামী রোববার টিএফআই সেলে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঢাকায় নেয়া হবে। রেজ্জাকুল হায়দার বর্তমানে ৬ দিনের রিমান্ডে রয়েছেন। আদালত থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী গতপরশু বুধবার বিকেলে লিয়াকতের পাঁচদিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন জানান তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির সিনিয়র এএসপি মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান চৌধুরী।
জবাবে আদালতের বিচারক তাকে চারদিনের রিমান্ডে দিয়ে সতর্কতার সাথে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেন। এর আগে রিমান্ড আবেদনের উপর বিস্তারিত শুনানিতে অংশ নিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলী মহানগর পিপি কামাল উদ্দিন আহম্মেদ আদালতকে বলেন, অস্ত্র ধরা পড়ার কয়েক ঘণ্টাপর মেজর লিয়াকত তার ঊর্ধ্বতন অফিসার এনএসআইএর পরিচালক মোহাম্মদ শাহাবুদ্দীন আহমেদকে (গ্রেপ্তারকৃত) জানান।
তিনি আরো বলেন, অস্ত্র ধরা পড়ার আগের দিন লিয়াকত শাহাবুদ্দীনের মোবাইল নিয়ে শাহাবুদ্দীনের নাম্বারগুলো নিজের নাম্বারে ডাইভার্ট করেছেন বলে তথ্য রয়েছে। আর শাহাবুদ্দীনের জবানবন্দীতেও এই লিয়াকতের নাম এসেছে। সুতরাং অস্ত্র চোরাচালানের বিষয়টি লিয়াকত ভালভাবেই জানেন। তাই তাকে রিমান্ডে নিয়ে অস্ত্র চোরাচালানের বিস্তারিত তথ্য উদঘাটন করা এদেশের নিরাপত্তার স্বার্থে জরুরি।
এসময় মেজর লিয়াকতের আইনজীবী এডভোকেট মোহাম্মদ আবুল হাসান আদালতে যুক্তি উপস'াপন করে বলেন, শাহাবুদ্দীনের চেয়ে জুনিয়র অফিসার হয়েও লিয়াকত কিভাবে তার মোবাইল নাম্বার ডাইভার্ট করলেন তা আমাদের বোধগম্য নয়। তাছাড়া দুজনের কাজের ক্ষেত্রও ভিন্ন। অতএব নির্যাতন ও সম্মানহানি করতেই তাকে রিমাণ্ডে নেয়ার আবেদন করা হয়েছে। তিনি রিমাণ্ড আবেদন বাতিল করার আবেদন জানান। কিন্তু আদালত তার আবেদন অগ্রাহ্য করেন। কারাগারে ডিভিশন ও চিকিৎসা চেয়ে করা আবেদনের প্রেক্ষিতে কারাবিধি অনুযায়ী ব্যবস'া নেয়ার নির্দেশ দেন বিচারক।
এসময় মেজর লিয়াকতের জামিনের আবেদন জানিয়ে এডভোকেট হাসান বলেন, এই মামলায় ৩৬ জন আসামী বর্তমানে জামিনে আছেন। সুতরাং আমার মক্কেলকেও জামিন দেয়া হোক। জামিন পেলে তিনি পালিয়ে যাবেন না। জবাবে বিচারক জামিনের আবেদন নাকচ করেছেন। এদিকে একইভাবে রেজ্জাকুল হায়দারেরও জামিন এবং ডিভিশন চাওয়া হয়েছে। বিচারক জামিন না মঞ্জুর এবং কারাবিধি অনুযায়ী ডিভিশন নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন। এসময় তার আইনজীবী এডভোকেট তারিক আহমেদ আদালতকে জানান, গত ২০ মে রেজ্জাকুল হায়দারকে আবদুর রহিমের সাথে ৬ দিনের রিমাণ্ডে নেয়া হয়। কিন' তাকে আজও জিজ্ঞাসাবাদ না করে কারাগারে রাখা হয়েছে। এটা নিয়মনীতির লংঘন। অথচ মামলার এজাহার ও আসামীদের জবানবন্দীর কোথাও রেজ্জাকুলের নাম আসেনি।
বিচারক এম আসাদুজ্জামান তদন্ত কর্মকর্তা মনিরুজ্জামানকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বিচারককে জানান, রেজ্জাকুলকে আগামী রোববার থেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এদিকে আদালতের অনুমতি নিয়ে রিয়াকতের আইনজীবী এডভোকেট হাসান কোর্ট ইন্সপেক্টরের কামরায় তার সাথে আধঘন্টা কথা বলেন। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, অস্ত্র আটকের সময় লিয়াকত লন্ডনস' বাংলাদেশ দূতাবাসে ছিলেন।

অফিসার সেজে আসামী ধরার নামে ছিনতাইকালে পুলিশ কনস্টেবল আটক



পুলিশ অফিসার সেজে আসামী ধরার নাটক করে ছিনতাইকালে সেনাসদস্যদের হাতে ধরা পড়েছে পুলিশের মো: মাসুদ নামের এক কনস্টেবল। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটায় হাটহাজারী থানাধীন কাপ্তাই রাস্তার কুয়াইশ-বুড়িশ্চর সংযোগ সড়কে এই ঘটনা ঘটেছে।
জানা যায়, গতকাল দুপুরে রাউজান নোয়াপাড়া পথের হাটের ব্যবসায়ী নুরুল আবছার সিএনজি যোগে চট্টগ্রাম শহরে আসছিলেন। দুপুর আড়াইটার দিকে সিএনজিটি কুয়াইশ-বুড়িশ্চর সংযোগ সড়ক এলাকা অতিক্রম করার সময় একটি মাইক্রোবাস (চট্ট মেট্রো চ-১১-৪১১২) এর গতিরোধ করে। মাইক্রোবাসে অবস'ানরত থাকা তিন ব্যক্তি নিজেদের পুলিশ কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে নুরুল আবছারকে সিএনজি থেকে জোর করে নামানোর চেষ্টা করে। নুরুল আবছারের বিরুদ্ধে মামলা ও ওয়ারেন্ট আছে বলে তাকে জোর করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে পুলিশ পরিচয়দানকারী ব্যক্তিরা। নুরুল আবছারের সাথে কনস্টেবল মাসুদের হাতাহাতির সময় ব্যস্ত কাপ্তাই সড়কের উভয় দিকে যানজটের সৃষ্টি হয়। এই সময় কাপ্তাই থেকে ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের দিকে আসা সেনাবাহিনীর একটি গাড়িও যানজটে আটকা পড়ে। গাড়িতে থাকা সেনাবাহিনীর সার্জেন্ট মোফাজ্জল হোসেন ও ওয়ারেন্ট অফিসার ওয়াহিদুর রহমান ঘটনাস'লে গিয়ে কনস্টেবল মাসুদকে আটক করে। এ সময় মাইক্রোবাসে থাকা অন্য ছিনতাইকারীরা পালিয়ে যায়। সেনাসদস্যরা মাসুদকে প্রথমে র্যা ব-৭ এর চান্দগাঁও কেন্দ্রে নিয়ে আসে। পরবর্তীতে তাকে চান্দগাঁও থানা পুলিশে সোপর্দ করা হয়। চান্দগাঁও পুলিশ মাসুদকে হাটহাজারী থানায় হস্তান্তর করে। রাতে এ ব্যাপারে মামলার প্রক্রিয়া চলছিল বলে হাটহাজারী থানা সূত্রে জানা যায়।

ঢাকায় র‌্যাবের গুলিতে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ২ ছাত্র নিহত

বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউতে র্যা বের গুলিতে মারা গেছে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের দুই ছাত্র। নিহতরা হলো ফাইনাল ইয়ারের ছাত্র মোঃ আলী জিন্নাহ (২২) এবং মোঃ মহসীন (২৩)। এদের মধ্যে মহসীনের বাড়ি ফরিদপুরে এবং জিন্নাহর বাড়ি ভোলায়। খবর ইউএনবির।
র্যা ব জানায়, র্যা ব-২ এর একটি দল বৃহস্পতিবার রাতে আসাদ গেট এলাকায় চেক পোস্ট বসিয়ে সন্দেহভাজনদের তল্লাশী করছিল। এ সময় রিকশায় চড়ে দুই যুবক যাওয়ার সময় তাদেরকে র্যা বের সন্দেহ হলে যুবককে থামতে বলা হয়। কিন' এ সময় মহসীন ও জিন্নাহ র্যা বকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়লে র্যা বও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি ছুঁড়ে। এতে র্যা বের সাথে ওই দুই যুবকের বন্দুক যুদ্ধ শুরু হয়। এ গোলাগুলির সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে মহসীন ও জিন্নাহ ঘটনাস'লেই মারা যায় বলে র্যা ব সূত্রে জানানো হয়। গোলাগুলি থেমে যাওয়ার পর ঘটনাস'ল থেকে দুটি রিভলবার এবং ৪ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে র্যা ব। ময়না তদন্তের জন্য মৃতদেহ দুটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

সিরাজগঞ্জে বাস-ট্রাক সংঘর্ষে ১৫ জন নিহত

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার পাচালিয়া এলাকায় সিরাজগঞ্জ-ঢাকা মহাসড়কে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে বাস ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ১৫ জন মারা গেছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন। নিহতদের মধ্যে ১২ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। এরা হলেন- তাড়াশ উপজেলার আনোয়ার (৩০), লেবু (৪৫), নজরুল (৩৬), অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান তাড়াশী (৫০), সীমা খাতুন (৪), হাবিব (২) ও সাইফুল (৩৫), বাসচালক সিরাজগঞ্জ সদরের রেজা (৪০) ও তার সহকারী বাবু (৩০), সানোয়ার (৩৩), শাজাহান (৪০), শহীদুল (৩৫)। খবর বিডিনিউজের।
নিহতদের মধ্যে অধিকাংশই বাসযাত্রী বলে জানিয়েছেন হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীনবন্ধু দাস। তিনি জানান, বিকেল ৫টার দিকে হাটিকুমরুল গোলচত্বর থেকে আধ কিলোমিটার পূর্বদিকে পাচালিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বাসটি যাত্রী নিয়ে সিরাজগঞ্জ থেকে নাটোর যাচ্ছিল। অপরদিকে পোল্ট্রি ফিড নিয়ে ট্রাকটি যাচ্ছিল উল্লাপাড়া থেকে ঢাকা। ওসি জানান, বাসচালক ও তার সহকারীসহ ১৩ জন ঘটনাস্থলে মারা গেছেন। দুজন মারা গেছেন সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে।

দ্বিতীয় প্রস্তুতি ম্যাচে বাংলাদেশের জয়

টুয়েন্টি টুয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরুর পুর্বে গতকাল দ্বিতীয় প্রস্তুতি ম্যাচে জয় পেয়েছে বাংলাদেশে ক্রিকেট দল। ইংল্যান্ডের ক্যান্টাবুরি মাঠে ৬৪ রানের ব্যবধানে গতকাল তারা পরাজিত করেছে নেদারল্যান্ডকে। নিউজিল্যন্ডের বিপক্ষে প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচে হারের পরও সেই ম্যাচ থেকে আত্মবিশ্বাস খুঁজে পেয়েছিলেন অধিনায়ক আশরাফুল। আর সেই প্রাপ্ত আত্মবিশ্বাসকে কাজি লাগিয়ে গতকাল দ্বিতীয় প্রস্তুতি ম্যাচে নেদারল্যান্ডের বিপক্ষে বড় স্কোর গড়েছে বাংলাদেশ। নেদারল্যান্ডের অধিনায়ক জেমস স্মিত টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে আমন্ত্রণ জানান বাংলাদেশকে। আর ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ দল সংগ্রহ করে ২০৬ রান। অবশ্য শুরুটা ভাল ছিল না বাংলাদেশের। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই মাত্র ২ রান করা ওপেনার তামিম ইকবালকে ফিরিয়ে দেন নিজমান। এরপর লেফট আর্ম স্পিনার সিলার ফিরিয়ে দেন জুনায়েদ সিদ্দিকী (১৭ রান) এবং সাকিব আল হাসানকে (৪ রান)। একপর্যায়ে ১০ ওভারে বাংলাদেশ দলের সংগ্রহ ছিল ৩ উইকেট হারিয়ে ৭৮ রান। আর পরের ১০ ওভারে বাংলাদেশের ইনিংসে আসে ১২৮ রান। মূল অধিনায়ক আশরাফুল এবং মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের অর্ধশতকের উপর ভর করে দু’শর উপরে চলে যায় বাংলাদেশের ইনিংস। আশরাফুল করেন ৬৮ আর রিয়াদের ব্যাট থেকে আসে ৫৪ রান। এছাড়া রকিবুল ২৭ ও মুশফিকুর ২৪ রান করেন। প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচ খেলা মো. মিঠুনের পরিবর্তে গতকাল মাঠে নামেন রকিবুল আর সৈয়দ রাসেলের পরিবর্তে খেলতে নামেন রুবেল হোসেন।
২০৭ রানের বিশাল লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ব্যাট করতে নামা নেদারল্যান্ডের ইনিংস থেমে গেছে ১৪২ রানে। ফলে ৬৪ রানের পরাজয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় তাদেরকে। বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে রুবেল হোসেন ১৯ রান দিয়ে ৪টি উইকেট নেন।

টুয়েন্টি টুয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতই শিরোপা ধরে রাখবে : টেন্ডুলকার

কে হবে এবারের টুয়েন্টি টুয়েন্টি বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন? প্রশ্নটার উত্তর দেয়া ভীষণ কঠিন। ক্রিকেটের আধুনিকতম সংস্করণ টুয়েন্টি টুয়েন্টিতে কোনো দলকে ফেভারিট মনে করা বেশ ঝুুঁকিপূর্ণই বটে! তবে শচীন টেন্ডুলকারের মনে এ সম্পর্কে কোনো সন্দেহ নেই। তার দৃঢ় বিশ্বাস ইংল্যান্ডে ভারতের শিরোপা অক্ষুণ্ন রাখতে তেমন সমস্যা হবে না। মহেন্দ্র ধোনির দলের ভারসাম্য, চাপের মধ্যে অবিচল থাকার দৃঢ়তা আর দুর্দান্ত পেস আক্রমণই এই বিশ্বাসের ভিত গড়ে দিয়েছে সর্বকালের সফলতম ব্যাটসম্যানের মনে। “ভারতই এখন বিশ্বের সবচেয়ে ভারসাম্যপূর্ণ দল। এবং আমরা যে (টুয়েন্টি টুয়েন্টি বিশ্বকাপের) শিরোপা ধরে রাখতে যাচ্ছি সে ব্যাপারে কোনো সন্দেহই নেই। আমাদের দলে অনেক ভালো ক্রিকেটার আছে। আমরা প্রমাণ করেছি যে এই কম্বিনেশনটাই সবচেয়ে ভয়ঙ্কর”ণ্ড ‘ডিএনএ’ পত্রিকার সঙ্গে কথা বলার সময় টেন্ডুলকারের দৃঢ়তা ভরা উচ্চারণ। খবর বিডিনিউজের।
‘লিটল জিনিয়াস’ নিজে অবশ্য ইংল্যান্ডে যাচ্ছেন না। তরুণদের জায়গা করে দিতে তিনি নিজেই সরে দাঁড়িয়েছেন ভারতের টুয়েন্টি টুয়েন্টি দল থেকে। এবং সেই তরুণদের নিয়ে গড়া ‘টিম ইন্ডিয়া’র চাপের সময় লড়াই করার মানসিকতা দেখে টেন্ডুলকার রীতিমতো মুগ্ধ, “আমাদের দলের সবচেয়ে বড় গুণ হলো আমরা যে কোনো ধরনের চাপ সামলে ভালো পারফর্ম করতে পারি। টিম ইন্ডিয়া আসলেই চাপের মুখে অনমনীয়। আমরা এক ধরনের প্যাকেজের মধ্যে দিয়ে এসেছি। আর আমি নিশ্চিত এই প্যাকেজ এই মুহূর্তের সেরা ব্যবসা। এই প্যাকেজটাই সবকিছু। আমাদের আবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য এটাই সবচেয়ে প্রয়োজনীয়।”
টেন্ডুলকারের দৃষ্টিতে জহির খান, ইশান্ত শর্মা, রুদ্র প্রতাপ সিংদের নিয়ে গড়া পেস আক্রমণও ভারতের জন্য এক বিশাল সম্পদ, “সবকিছুর বিচারে এটাই সেরা (পেস আক্রমণ)। জহির, ইশান্ত, রুদ্র প্রতাপ সিং দুর্দান্ত এক কম্বিনেশন গড়েছে। বিশেষ করে ইংলিশ কন্ডিশনের ক্ষেত্রে। আমাদের সিম আক্রমণে অনেক বৈচিত্র্য আছে এবং এ ধরনের কন্ডিশনে তা উপযোগীই হবে। নিজেদের দিনে যে কোনো ব্যাটিং লাইনআপকে ধ্বংস করে দিতে পারি আমরা।”

পিলখানা হত্যাকাণ্ড : প্রধান কারণ বিডিআর জওয়ানদের ক্ষোভ ।। জঙ্গি সম্পৃক্ততার প্রমাণ মিলেনি ।। সেনা আইনে বিচারসহ তদন্ত কমিটির ২৩ সুপারিশ



বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় গঠিত সরকারি তদন্ত কমিটি সরকারের বিবেচনা ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আটটি স্বল্পমেয়াদী ও ১৫টি দীর্ঘ মেয়াদী সুপারিশ প্রস্তাব করেছে। সুপারিশগুলোর মধ্যে সেনা আইনে অনতিবিলম্বে পিলখানা ঘটনার বিচার কাজ সম্পন্ন করা এবং বিডিআর বিদ্রোহের মূল কুশীলবদের শনাক্তকরণে আরো তদন্তের ব্যবস্থা করার প্রস্তাব দিয়েছে কমিটি।
বিডিআর জওয়ানদের ক্ষোভ কাজে লাগিয়ে পিলখানা হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। এতে কোন জঙ্গি সম্পৃক্ততা নেই বলে মত দিয়েছে তদন্ত কমিটি।
গতকাল বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সরকার গঠিত এই তদন্ত কমিটির চেয়ারম্যান সাবেক সচিব আনিসুজ্জামান খান সাংবাদিকদের সামনে তদন্ত প্রতিবেদনের সার সংক্ষেপ তুলে ধরেন। এ সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ, বিডিআর মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মইনুল ইসলাম উপসি'ত ছিলেন।
রিপোর্টে বলা হয় বিদ্রোহের সময় বিডিআর সদস্যদের দমনে সেনা অভিযান চালালে দেশে গৃহযুদ্ধের মত পরিসি'তি সৃষ্টি হতে পারত। পিলখানা হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগে ২৪ জন বিডিআর কর্মকর্তা ও পরে ঘটনা প্রবাহে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টুসহ একাধিক ব্যক্তির নাম তদন্তে উল্লেখ করা হয়েছে।
গত ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি বিডিআর সদর দপ্তর পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় সরকার গঠিত ১২ সদস্যের তদন্ত কমিটির চেয়ারম্যান সাবেক সচিব আনিসুজ্জামান খান ৩০৯ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন। তদন্ত প্রতিবেদনে বিদ্রোহের ঘটনায় জঙ্গি সম্পৃক্ততা ও অন্য কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের ইন্ধনের তথ্য পাওয়া যায়নি বলে উল্লেখ করা হয়। প্রতিবেদনে বিদ্রোহের পটভূমি,বিদ্রোহে চলমান ঘটনাপ্রবাহ, বিদ্রোহের কারণ এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে। তদন্ত কমিটির চেয়ারম্যান বলেন, বিডিআর বাহিনীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই সেনা নেতৃত্ব মেনে না নেয়ার মানসিকতা, ডালভাত কর্মসূচির অস্বচ্ছতা, সেনা কর্মকর্তাদের বিলাসবহুল জীবনযাপন ও বিডিআর জওয়ানদের অহেতুক শাস্তি দেয়ায় সাধারণ বিডিআর সদস্যদের মনে অসন্তোষের সৃষ্টি করে। তবে এসব বিষয় বিদ্রোহের মূল কারণ কিনা তা নিশ্চিতভাবে জানাতে পারেনি তদন্ত কমিটি।
আনিসুজ্জামান আরো বলেন, বিডিআর সদস্যদের এসব দাবি-দাওয়া সামনে রেখে কিছু ষড়যন্ত্রকারী দেশের সি'তিশীলতা নষ্ট করতে পিলখানার ঘটনা ঘটিয়েছে। সেই সাথে পিলখানা হত্যাযজ্ঞের পর সদস্যদের পালিয়ে যেতে স্থানীয় সন্ত্রাসী লেদার লিটন, বিএনপির ওয়ার্ড কমিশনার ও সাবেক এমপি নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টুসহ আরো কয়েকজন সহায়তা করেছে।
এদিকে তদন্ত রিপোর্টে বলা হয় বিডিআর জওয়ানরা ৯ম সংসদ নির্বাচনের পর তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নুর তাপস ও ফজলুল করিম সেলিমের সাথে সাক্ষাৎ করে ছিলেন। রিপোর্টে বলা হয়, রাজনৈতিকভাবে দাবি-দাওয়া পূরণে ব্যর্থ হয়ে বিডিআর জওয়ানরা নিজেরাই ২৪ ফেব্রুয়ারি রাতে বিদ্রোহের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে। সে অনুযায়ী ডিএডি তৌহিদ, জলিল, হাবিব ও মাসুদসহ কতিপয় সৈনিক ২৫ ফেব্রুয়ারি সকালে পিলখানায় সেনা কর্মকর্তাদের হত্যা করে এবং লাশ গুমের চেষ্টা চালায়। বিডিআর বিদ্রোহে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা ও ৯ জন বিডিআর সদস্য নিহত হয়। তদন্ত প্রতিবেদনে ইলেট্রনিক মিডিয়ার ভূমিকা নিয়েও সমালোচনা করা হয়।

চট্টগ্রাম পলিটেকনিকে ছাত্রলীগ-শিবির দফায় দফায় সংঘর্ষ : আহত ২০



ছাত্রলীগ ও ছাত্রশিবিরের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের পর চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেল তিনটা থেকে শুরু হওয়া এ সংঘর্ষের ঘটনায় দুই ছাত্র সংগঠনের অন্তত বিশজন কর্মী কমবেশি আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে প্রকাশ শিকদার নামে এক ছাত্রের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহতদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করতে আজ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করবে কর্তৃপক্ষ। ঘটনার পর গতকাল রাতে শিবির কর্মীরা ষোলশহর, মুরাদপুর, নাসিরাবাদ ও এর আশপাশের এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে। মিছিলে কয়েকশ শিবির কর্মী অংশ নেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
জানা গেছে, শিবির কর্মীরা বিকেল তিনটার দিকে সিরাজদ্দৌলা হোস্টেলে ‘বায়তুল মাল’ সংগ্রহ করার সময় ছাত্রলীগের কয়েক কর্মী তাতে বাধা দেয়। এতে দু পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি এবং ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে এই সংঘর্ষ পাশের নজরুল হোস্টেলে এবং পর্যায়ক্রমে পুরো ক্যাম্পাসেই ছড়িয়ে পড়ে। লাঠিসোটা ও ইটপাটকেল নিয়ে দু পক্ষ পরস্পরের প্রতি হামলা চালায়। প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে চলে সংঘর্ষ। উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে ছাত্রশিবির অবস'ানগত কারণে কিছুটা সুবিধা পায়। সংঘর্ষের একপর্যায়ে ছাত্রশিবির কর্মীরা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থান নেয়। এ সময় তাদের হাতে লাঠিসোটাসহ অস্ত্রশস্ত্র দেখা যায়।
খবর পেয়ে পুলিশের কোতোয়ালী জোনের সহকারী (এসি) কমিশনার বাবুল আক্তার ঘটনাস'লে যান। এসি বাবুল জানান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিসি'তি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। পরিসি'তি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছে বলে জানান তিনি।
সংঘর্ষের ঘটনায় ইনস্টিটিউট কর্তপক্ষ দু দিনের জন্য ক্লাস বন্ধ ঘোষণার পাশাপাশি অনির্দিষ্টকালের জন্য ছাত্রাবাস বন্ধ ঘোষণা করেছে। গতকাল রাত সাড়ে আটটার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হোস্টেল ছাড়তে বলা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ আব্দুল মালেক গতকাল রাতে দৈনিক আজাদীকে বলেন, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুটি ছাত্র সংগঠনের কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের কারণে ইনস্টিটিউটের ক্লাস দুদিনের জন্য বন্ধ করা হয়েছে। এছাড়া অনির্দিষ্টকালের জন্য হোস্টেল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, ইনস্টিটিউটের তিনটি হোস্টেল থেকে শিক্ষার্থীদের রাত সাড়ে আটটার মধ্যে চলে যেতে বলা হয়। ইতোমধ্যে অধিকাংশ শিক্ষার্থী হোস্টেল থেকে চলে গেছে। অধ্যক্ষ মালেক বলেন, সংঘর্ষের সময় হোস্টেলে এবং খাবার কক্ষে হামলা চালানো হয়েছে। এতে বেশ ক্ষতি সাধিত হয়েছে। তদন্ত কমিটি আজ ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করবে।
ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ জানায়, আগামী দু দিন ক্লাস বন্ধ থাকলেও পূর্বঘোষিত পরীক্ষাসমূহ যথারীতি অনর্ুষ্ঠিত হবে। নতুন করে সংঘর্ষ এড়াতে এবং পরিসি'তি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ক্যাম্পাসে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থী ও পুলিশ জানায়, আহত ছাত্রদের মধ্যে আটজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি প্রকাশের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তার মাথায় প্রচণ্ড আঘাত লেগেছে। আহতদের মধ্যে অপর কয়েকজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। এরা হলেন রিপন, জাহিদুল আলম, শিপন, দসুত, অসীম, সজীব, রুবেল, ইকবাল, বাবুল, জয়, মিজান ও সায়েম।
খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইফতেখার হাসান জানান, ইনস্টিটিউটের কাজী নজরুল এবং সিরাজদ্দৌলা হোস্টেলে ছাত্রলীগ ও ছাত্রশিবিরের কর্মীদের মধ্যে কথাকাটাকাটি ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার জের ধরে কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়। উভয় সংগঠনের কর্মীরা ইটপাটকেল ও লাঠিসোটা নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।
বায়েজীদ বোস্তামী থানা যুবলীগের সহ-সভাপতি মাকসুদ চৌধুরী এ ঘটনার জন্য শিবিরকে দায়ী করে বলেন, তারা বিনা উস্কানিতে, বিনা কারণে ছাত্রলীগের নিরীহ কর্মীদের ওপর হামলা চালায়। তিনি ছাত্র নামধারী শিবির ক্যাডারদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
এদিকে সংঘর্ষের ঘটনায় ছাত্রলীগ ও ছাত্রশিবির পরস্পরকে দায়ী করেছে। হামলার ঘটনায় মহানগর ছাত্রলীগ আজ সকাল ১১টায় দারুল ফজল মার্কেটস্থ কার্যালয়ে প্রতিবাদ সভার আয়োজন করেছে। ছাত্রলীগ নেতা শিবপ্রসাদ দাশ শিবু গতকালের ওই ঘটনায় তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন। ছাত্রশিবির দাবি করেছে, ছাত্রাবাস দখল করার লক্ষ্যে ছাত্রলীগ পরিকল্পিতভাবে বহিরাগতদের নিয়ে নিরীহ ছাত্রদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালায়। এ ঘটনায় এক বিবৃতিতে চট্টগ্রাম মহানগর (উত্তর) ছাত্রশিবিরের সভাপতি মু. কলিম উল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান তীব্র নিন্দা জানান। তারা দোষীদের বিচার দাবি করে অবিলম্বে ছাত্রাবাস খুলে দেওয়ারও দাবি জানান।

খালেদা জিয়ার বাড়ি ছাড়ার নোটিশের কার্যকারিতা ৩ মাসের জন্য স্থগিত ।। তিন সপ্তাহের মধ্যে কারণ দর্শানোর জন্য রুল জারি

খালেদা জিয়ার সেনানিবাসের বাড়ি ছাড়ার নোটিশের কার্যকারিতা তিন মাসের জন্য স্থগিত করে দিয়েছে হাইকোর্ট। পাশাপাশি বাড়িটি ছাড়ার নোটিশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে নাণ্ড আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে তার কারণ দর্শানোর জন্য সরকারের প্রতি রুলনিশি জারি করেছে আদালত।
গতকাল দুপুরে বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ প্রায় সোয়া দুই ঘণ্টার শুনানি গ্রহণ করে এই আদেশ দেন। সরকারের প্রতিরক্ষা সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, সামরিক ভূ-সম্পত্তি ও সেনানিবাস অধিদপ্তরের পরিচালক, সেনা ভূমি প্রশাসক ও সেনা ভূ সম্পত্তি কর্মকর্তাকে এ নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে। আদেশের আগে শুনানিতে আদালত বলেছেন, রিটটিতে গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক ও আইনি প্রশ্ন জড়িত। তাই বিষয়টি পরীক্ষা প্রয়োজন। খবর বিডিনিউজের।
শুনানিতে খালেদার আইনজীবী মওদুদ আহমদ বলেন, “বাড়িটি বরাদ্দের ক্ষেত্রে খালেদা জিয়া কোনোভাবেই জড়িত ছিলেন না। জেনারেল জিয়াউর রহমান যখন সেনা কর্মকর্তা, সেনাবাহিনীর উপ-প্রধান, সেনাবাহিনী প্রধান, এমনকি রাষ্ট্রপতি ছিলেন তখনও এ বাড়িতে ছিলেন। রাষ্ট্রপতি হলেও বঙ্গভবনে ছিলেন না তিনি। যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ায় খালেদা জিয়াকে এই বাড়িটি দেওয়া হয়েছে। একবার কোনো ব্যক্তিকে ভুলভাবে দেওয়া হলেও সরকার সে সম্পত্তি কেড়ে নিতে পারে না।
খালেদার প্রধান কৌঁসুলী টিএইচ খান শুনানিতে উচ্চ আদালতের বিভিন্ন মামলার নজির উপস'াপন করে বলেন, কারও মৌলিক অধিকার কেড়ে নেওয়া যায় না। এর আগে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, চার জাতীয় নেতা, সাত বীর শ্রেষ্ঠ, ভাষা শহীদ ও শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের অবদানের কথা উল্লেখ করে বলেন, “এইসব শহীদদের পরিবারগুলোকে কী দেওয়া হয়েছে। আর খালেদা জিয়াকে বেআইনিভাবে রাজনৈতিক প্রভাবে প্রায় সোয়া আট বিঘা জমি দেওয়া হয়েছে। এভাবে একজনের নামে এত বেশি জমি আইনের প্রক্রিয়া অনুসরণ না করেই কি দেওয়া যায়?
সামরিক ভূমি প্রশাসন আইনের বিভিন্ন ধারা উল্লেখ করে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, বাড়িটি সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা ব্যবহার করতেন। এই জমি আইন অনুযায়ী কোনো বেসামরিক ব্যক্তিকে দেওয়া যায় না। গতকাল দুপুর সোয়া ২টার দিকে এ শুনানি শুরু হয়। এর আগে রিটটি নিয়ে শুনানি মঙ্গলবার দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলার পর বুধবার দুপুর পর্যন্ত মুলতবি করেছিল এ বেঞ্চ।
বাড়ি ছাড়ার নোটিশ চ্যালেঞ্জ করে খালেদা জিয়া গত ৩ মে হাইকোর্টে রিট করেন। পর পর চারটি বেঞ্চ অপারগতা প্রকাশ করার পর গত ১২ মে পঞ্চম এ বেঞ্চ রিটটির শুনানিতে সম্মত হয়। মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়াকে সরকার গত ২০ এপ্রিল ১৫ দিনের সময় দিয়ে বাড়িটি ছেড়ে দিতে প্রথম নোটিশ দেয়। এরপর গত ৭ মে একটি সম্পূরক এবং ২৪ মে তৃতীয় আরেকটি নোটিশ পাঠানো হয় তাকে।