পরিবেশবান্ধব নীতিমালা অনুসরণ করতে বন্দর ও ওয়াসাকে নোটিশ দেবে পরিবেশ অধিদপ্তর ।। কর্ণফুলীর চর দখল করে গড়ে তোলা হচ্ছে আবাসিক এলাকা ও শিল্প-কারখানা



কর্ণফুলীকে রক্ষা করতে বন্দর কর্তৃপক্ষ ও চট্টগ্রাম ওয়াসাকে পরিবেশবান্ধব নীতিমালা অনুসরণ করে নদী ব্যবহারের জন্য নোটিশ প্রদান করবে পরিবেশ অধিদপ্তর। এদিকে, ভরাট হওয়া চর দখল করে আবাসিক এলাকা ও শিল্প-কারখানা গড়ে তোলা হচ্ছে। পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিশেষজ্ঞরা কর্ণফুলীর দূষণ ও ভরাট হওয়ার তিনটি কারণ চিহ্নিত করেছেন। তাঁরা বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের কারণে কর্ণফুলী নদীতে প্রতিবছর গড়ে দুই হাজার বিদেশী জাহাজ ঢোকে। প্রতিমাসে গড়ে দেড় হাজার ইনল্যান্ড জাহাজ কর্ণফুলীতে চলাচল করে। এসব জাহাজ ব্যাপকভাবে কর্ণফুলীকে দূষিত করছে। দেশী-বিদেশী জাহাজ মেরামতের সময় ধাতব পদার্থ যেমন জিংক, সীসা, ক্যাডমিয়াম পানিতে ফেলা, জাহাজে সঞ্চিত আবর্জনা ও বর্জ্য-তেল নিঃসরণ, বন্দরে ক্লিংকার, জিপসাম, সোডা-এ্যাশ খালাসকালে পানি ও বাতাসে ছড়িয়ে যাওয়া ইত্যাদি দূষণের কারণ। দ্বিতীয়ত, স্যুয়ারেজ প্লান্ট না থাকায় প্রতিদিন কর্ণফুলীতে ১ হাজার ৪৯ দশমিক ৩৫ মেট্রিক টন বর্জ্য মেট্রোপলিটন এলাকার ৫ খাল দিয়ে কর্ণফুলীতে পড়ছে। সে সমস্ত বর্জ্যের মধ্যে রয়েছে শিল্প, ট্যানারি, তেল শোধনাগার, সিমেন্ট কারখানা, জাহাজ নৌযান থেকে নিসৃত তেল, খোলা ল্যাট্রিনের মলমূত্র। মহানগরীতে কোন প্রকার আন্ডারসুয়্যারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট না থাকার কারণে ঐ সমস্ত দূষিত বর্জ্য সরাসরি কর্ণফুলীতে এসে পড়ছে। ঐ সমস্ত দূষিত বর্জ্য কর্ণফুলী নদীর পানি ব্যাপকভাবে দূষিত করার পাশাপাশি নদী ভরাট হয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করছে। তৃতীয়ত, বর্তমানে বৃহত্তর মহানগরীতে ব্যাপক হারে পাহাড় কাটা এবং গাছপালা কেটে ফেলার কারণে প্রতিবছর লক্ষাধিক টন পলিমাটি বর্ষাকালীন ঢলে কর্ণফুলীতে গিয়ে পড়ছে। সূত্রমতে-গত আট বছরে কর্ণফুলীতে পলি জমা হওয়ার পরিমাণ তিনগুণের অধিক বেড়ে গেছে। এছাড়াও কর্ণফুলীর শাখা -হালদা নদী, শিকলবাহা খাল, চানখালিখাল, শিলক খাল, ইছামতি খাল, গশ্চি খালসহ আটটি শাখা প্রশাখা দিয়ে বর্ষা মৌসুমসহ সারা বছর লক্ষাধিক টন পলি এসে কর্ণফুলী নদীর মোহনায় জমা হচ্ছে। যে কারণে বর্তমানে কর্ণফুলীর মোহনা এলাকা শাহ আমানত সেতুর উপরে নীচে, বাংলা বাজার, শিকলবাহা, সদরঘাট, ফিরিঙ্গী বাজার ব্রীজ ঘাটা ও বাকলিয়া এলাকায় ধুধু চর জেগে উঠেছে। চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক আবদুস সোবহান বলেন, কর্ণফুলীকে রক্ষা করতে সম্মিলিত প্রচেষ্টা এখন সময়ের দাবি। বন্দর কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম ওয়াসা, সিটি কর্পোরেশন, শিল্প কারখানা মালিক, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও পরিবেশ অধিদপ্তর একযোগে কাজ করলে কর্ণফুলী দূষণমুক্ত হবে।

ম্যাজিস্ট্রেট ও লোকবল সংকট বকেয়া বিল আদায়ে হিমশিম খাচ্ছে চট্টগ্রাম পিডিবি

গত দুই বছর ধরে চট্টগ্রাম বিদ্যুৎ ভবনে কোন ম্যাজিস্ট্রেট না থাকায় অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ ও বকেয়া বিদ্যুৎ বিল আদায়ে হিমশিম খাচ্ছে পিডিবি কর্তৃপক্ষ। বকেয়া বিল আদায় ঝিমিয়ে পড়ায় বিদ্যুৎ বিতরণ দক্ষিণাঞ্চলে প্রায় ১৪২ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। গত এপ্রিল পর্যন্ত ৬৩৪ কোটি ৫৫ লাখ টাকা বকেয়া বিল আদায় করা হয়েছে। এছাড়াও অসংখ্য অবৈধ সংযোগের কারণে পিডিবির ব্যাপক রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে। জনবল সংকটের কারণে বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকলেও এসব বকেয়া বিল আদায়ে তেমন কোন উদ্যোগ নিতে পারছেনা পিডিবি কর্তৃপক্ষ। চট্টগ্রাম পিডিবি সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত পিডিবি চট্টগ্রাম দক্ষিণাঞ্চলে অভিযান চালিয়ে প্রায় ৭ হাজার খেলাপী বিদ্যুৎ গ্রাহকের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে। সংযোগ বিচ্ছিন্ন এসব গ্রাহকের কাছে প্রায় ৯ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। খেলাপী এসব গ্রাহকদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ২ কোটি ৯ লাখ টাকা আদায় করা হয়েছে। পুনরায় সংযোগ দেয়া হয়েছে ২ হাজার ২ শ’ জন গ্রাহককে। চট্টগ্রাম পিডিবির জনসংযোগ বিভাগ থেকে জানা গেছে, গত দুই বছর ধরে চট্টগ্রাম পিডিবিতে ম্যাজিষ্ট্রেট না থাকায় খেলাপী বড়-বড় শিল্পকারখানায় বকেয়া বিলসহ অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করণের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা যাচ্ছেনা। ২০০৮ সালের জুলাই থেকে ২০০৯ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত গ্রাহকদের মাঝে বকেয়া বিলের পরিমাণ ছিল ১৪১ কোটি ৫৭ লাখ ১২ হাজার টাকা। জানা গেছে, চট্টগ্রাম পিডিবির বিল তৈরি ও বিল আদায়ের সাথে জড়িত অসংখ্য পদ খালি রয়েছে। চট্টগ্রাম মহানগর ও আশপাশের এলাকায় পিডিবির লক্ষ-লক্ষ গ্রাহকের বিল পৌঁছে দেয়ার জন্য ১১৩ জন মিটার রিডারের মাঝে এখন কাজ করছে মাত্র ৭০ জন। প্রযোজনের তুলনায় অপ্রতুল মিটার রিডারের কারণে মিটার পরিদর্শন করে বিল তৈরি করা সম্ভব হচ্ছেনা। গ্রাহকদের মাঝে গড় বিল প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়াও সিনিয়র মিটার পরিদর্শক পদে ৯ জনের বিপরীতে মাত্র তিন জন কর্মরত রয়েছে। ৬ জনের পদ খালি রয়েছে। মিটার পরিদর্শকের ৯টি পদের মধ্যে কর্মরত রয়েছে মাত্র ৩জন। এখানেও ৬টি পদ খালি রয়েছে।জুনিয়র সুপারভাইজার ডাটা পদে তিন জনের মধ্যে ১ জন কর্মরত রয়েছে। ২ জনের পদ খালি। সহকারী সুপার ভাইজারের ৯টি পদের মধ্যে ৩টি পদ খালি রয়েছে। চট্টগ্রাম পিডিবির প্রধান প্রকৌশলী জানান, নিজস্ব ম্যাজিস্ট্রেট না থাকায় খেলাপী বিল আদায়ে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। আমরা এখন জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে অভিযান চালাতে হচ্ছে। গড় বিলের ব্যাপারে তিনি বলেন, গড় বিলের অভিযোগ থাকতে পারে। বিভিন্ন কারণে গড় বিল হয়ে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে মিটার না দেখে বিল করা , অনেক ক্ষেত্রে মিটার খারাপ থাকার কারণে গড় বিল হয়ে থাকে। ম্যাজিস্ট্রেট না থাকার কারণে খেলাপী বিল আদায়ে কিছুটা বিঘ্ন ঘটলেও এখন আমরা নিজস্ব লোক দিয়ে খেলাপী গ্রাহকদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছি।

দেশের নদ-নদীগুলোকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হবে বিশ্ব পরিবেশ দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী

দেশের নদ-নদীগুলোকে যে কোনও মূল্যে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে গতকাল শুক্রবার জাতীয় পরিবেশ পদক-২০০৯ বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি পরিবেশ বিপর্যয় মোকাবেলায় নানামুখী গবেষণার জন্য সরকারের সহযোগিতার আশ্বাসও দেন। খাদ্য নিরাপত্তার অংশ হিসেবে অন্তত ২/৩ বছরের খাদ্য মজুত করার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে সবাইকে তৈরি থাকারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে পরিবেশ অধিদপ্তর, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় সবার অংশগ্রহণের আহ্বানকে সামনে রেখে শুক্রবার সারা বিশ্বে পালিত হচ্ছে পরিবেশ দিবস।এবারের পরিবেশ দিবসের মূল প্রতিপাদ্যণ্ড ‘জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় তোমার পৃথিবী, তোমাকেই চায়’। খবর বিডিনিউজের। প্রধানমন্ত্রী বলেন, পানি ধারণ ক্ষমতা কমে যাওয়া এবং দখল হয়ে যাওয়ায় নদীগুলো প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে। এগুলোকে আগের অবস'ায় ফিরিয়ে আনতে হবে। এটা বিশাল একটা প্রজেক্ট হবে, সময় লাগবে অনেক। কিন্তু এটা আমাদের করতেই হবে। এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক সংস'াগুলোর সহযোগিতা চেয়ে ভালো সাড়া পেয়েছি। সবগুলো নদী এ প্রজেক্টের আওতায় আনা হবে। যমুনা নদী দিয়ে কাজ শুরু হবে। যত টাকাই লাগুক আমাদের এটা করতেই হবে, মানুষকে বাঁচাতে হবে। নদী বাঁচাতে ড্রেজিং, নদী শাসন এবং ভাঙন রোধের ওপর জোর দেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “নদী ভরাট হয়ে যাওয়ায় বর্ষায় পানি এলে নদী ভরে যায়, বন্যা হয়। ড্রেজিং করতে পারলে বন্যা কম হতো। উষ্ণায়নের ফলে বাংলাদেশে যে ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে, ড্রেজিং করে নদীর গভীরতা বাড়াতে পারলে আমরা তা কমাতে পারব। শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বের জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশ চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ঘন ঘন বন্যা, জলোচ্ছ্বাস সহ নানা ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়ে প্রতি বছর ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের মানুষ। বিপর্যয়ের কারণে পরিবর্তিত পরিবেশ, হাইব্রিড ফসল আর জৈব সার নিয়ে নিবিড় গবেষণার আহ্বান জানালেন তিনি। দুর্যোগ মোকাবেলায় খাদ্যের মজুত বাড়ানোর কথাও বললেন প্রধানমন্ত্রী। খাদ্য সমস্যার বিষয়ে তিনি বলেন, বন্যা হবে, ঝড়-বৃষ্টি হবে, ফসলহানি হবেণ্ড এসব মানতেই হবে। তারপরও খাদ্যের অভাব যাতে না হয় তার ব্যবস্থা করতে হবে। ২-৩ বছরের খাদ্য মজুদ রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। যাতে একটা বছর ফসল নষ্ট হলেও কোনো সমস্যা না হয়। জনসংখ্যা বাড়বেই। এর সঙ্গে খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে হবে। নতুন নতুন খাদ্যশস্য উৎপাদনে গবেষণার ওপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, “আশা করছি যে কোনো ধরনের পরিবেশে যাতে ফসল উৎপাদন করা যায় সে জন্য আমাদের বিজ্ঞানীরা গবেষণা করবেন। তবে যাই করা হবে তা যেন পরিবেশবান্ধব হয়। কীটনাশক ব্যবহার না করেই যাতে অধিক ফসল উৎপাদন করা যায় সে বিষয়ে গবেষণার আহ্বান জানান তিনি। পরিবেশ দূষণকারী কল কারখানাগুলোর প্রতি হুঁশিয়ার করে দিয়ে নগরায়নের ক্ষেত্রে পরিবেশগত দিক বিবেচনায় রাখার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান শেখ হাসিনা। শিল্পায়নের ফলে ঢাকার আশপাশের নদী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রতিটি কলকারখানা পরিবেশবান্ধব করার চিন্তা করছি আমরা। এ বিষয় যারা মানবে না তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, “সবুজ বেষ্টনীর সৃষ্টি করতে হবে। সবুজ বেষ্টনী দিয়ে দেশকে সাজাতে পারলে পরিবেশ রক্ষা হবে। ঢাকাসহ দেশের অনেক এলাকায় পানির অভাব রয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। কিন্তু আমরা এ পানি ব্যবহার করতে পারি না। এ পানি ধরে রাখার ব্যবস্থা করতে পারলে পানির অভাব কম হবে।” জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে প্রস্তুত থাকার জন্যও সবার প্রতি আহ্বান জানান তিনি। বিশ্ব পরিবেশ দিবসে এবারই প্রথম জাতীয় পরিবেশ পদক প্রদান করা হয়। একজন ব্যক্তি ও ৩টি প্রতিষ্ঠানকে পদক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এ বছর যে চারটি বিষয়ে পরিবেশ পদক দেওয়া হয় তা হলোণ্ড পরিবেশ সংরক্ষণ, পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ, পরিবেশ বিষয়ক গবেষণা ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং পরিবেশগত শিক্ষা ও প্রচারণা। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি মূলত জনগণকে পরিবেশবান্ধব কাজ করতে সচেতন ও উৎসাহী করতেই করা হচ্ছে। এরপর প্রধানমন্ত্রী পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত দু’দিনব্যাপী পরিবেশ মেলার উদ্বোধন করেন। সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এতে অংশ নিচ্ছে।

বিএনপির আহবায়ক কমিটি ২৫ জনের তালিকা পাঠিয়েছেন তারেক, বিপাকে হাইকমান্ড


অবসর নেয়া বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব ও চেয়ারপারসন বেগম জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান ২৫টি জেলায় দলের আহ্বায়ক করতে তার আশীর্বাদপুষ্ট নেতাদের নামের একটি তালিকা দলের হাইকমান্ডের কাছে পাঠিয়েছেন। আর এ তালিকা নিয়ে বিএনপিতে সৃষ্টি হয়েছে নতুন জটিলতা। বিএনপির হাইকমান্ড তারেকের এই তালিকার কারণে জেলা আহ্বায়কদের নাম ঘোষণা করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছে। এর ফলে শিগগিরই আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছে একটি সূত্র। খবর ফোকাস বাংলার। দলের একজন সিনিয়র নেতা জানান, চেয়ারপারসনের বড় ছেলে, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব (অবসর নেয়া) লন্ডনে চিকিৎসাধীন তারেক রহমান তার অনুসারী ও একসময়কার হাওয়া ভবনের প্রভাবশালী ২৫ নেতার নামের একটি তালিকা পাঠিয়েছেন। তাদেরকে ২৫ জেলায় আহ্বায়ক কমিটির দায়িত্ব দেয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এ নিয়ে স্থায়ী কমিটির সদস্যরা বিপাকে পড়েছেন। ইতোমধ্যে দলের মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন ওই তালিকার বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছেন। কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেছেন, তালিকায় অন্তর্ভুক্তরা প্রায় সবাই দলে নানা কারণে বিতর্কিত। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, মূলত তারেক রহমানের এই তালিকার কারণেই খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন আহ্বায়ক কমিটি নিয়ে এখন আর তেমন মাথা ঘামাচ্ছেন না। এ নিয়ে চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সঙ্গেও তার কিছুটা দূরত্ব তৈরি হয়েছে। সূত্র জানায়, বর্তমান মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের মহাসচিব পদ নিয়েও তারেক রহমানের আপত্তি রয়েছে। তবে দলের সিনিয়র বেশ কিছু নেতা তারেকের এই ধরনের তদারকিকে ভাল ভাবে নিচ্ছেন না। তারেকের এ তালিকার ব্যাপারে কয়েক জন বিএনপি নেতার কাছে জানতে চাইলে তারা এ বিষয় পুরো অস্বীকার করে বলেন, এ বিষয় আমরা জানি না। যদি তিনি (তারেক) তালিকা পাঠান সেটা আমাদের বিষয় নয়, এটা মা-ছেলের ব্যাপার। এ ব্যাপারে তার (তারেক) মতামত থাকতেই পারে। এটা তার রাজনৈতিক অধিকার। তারেক রহমানের তালিকা অনুসরণ করা হবে কিনা জানতে চাইলে নেতারা বলেন, এটা দলের সিদ্ধান্ত। যদি পাঠায় তবে বিবেচনা করা হতে পারে।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা বলেন, দলের মধ্যে কিছু লোক আছে তারা নিজেদের সুবিধা ভোগ করার জন্য তাকে (তারেক) কান পড়া দিচ্ছে। তারেক যদি তালিকা দিয়ে থাকে তবে সে ঠিক করেনি।

মহিলা বাস সার্ভিস বন্ধ হওয়ার পর এবার সিটি কর্পোর নিরাপদ যাত্রী সেবা কাউন্টার ১৫টি গাড়ি নিয়ে আজ উদ্বোধন ॥ কাউন্টার ২৮টি

মহিলা বাস সার্ভিস, মহিলা ও শিশুদের জন্য বাস সার্ভিস, নিরাপদ যাত্রীসেবা নামক সার্ভিস বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর এবার চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন চালু করতে যাচ্ছে নিরাপদ যাত্রীসেবা কাউন্টার সার্ভিস। আজ থেকে নগরীর বহদ্দারহাট বাস টার্মিনালের সামনে থেকে এই সার্ভিস শুরু হবে। চান্দগাঁও পুরাতন থানার সামনে থেকে কাঠগড় পর্যন্ত ১০ নম্বর রুটে এই বাস চলাচল করবে। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন সূত্র জানায়, নিরাপদ যাত্রীসেবা কাউন্টার সার্ভিস নাম ধারণ করেই বাসগুলো পুনরায় চলাচল শুরু করবে। এজন্য পুরনো বাসসহ নতুন বাসসমূহকে চলাচলের উপযোগী করে তোলা হয়েছে। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র এস এম ইকবাল হোসেন গতকাল দৈনিক আজাদীকে বলেন, ১০ নম্বর রুট দিয়েই এই বাস চলাচল শুরু করবে, এজন্য উক্ত রুটে ২৮টি কাউন্টার নির্মাণ করা হয়েছে। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের এই সার্ভিসের তদারকি কর্মকর্তা তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আবুল হাসনাত গতকাল দৈনিক আজাদীকে বলেন, চান্দগাঁও থানার সামনে থেকে কাটগড় পর্যন্ত মোট ভাড়া ২৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সব ভাড়া সরকার নির্ধারিত দামেই ধার্য করা হয়েছে, এজন্য ২৫৪ ধরনের টিকেট ছাপানো হয়েছে। তিনি বলেন, টিকেটে তিনটি অংশ থাকবে। একটি যাত্রীর কাছে, একটি কাউন্টারে, একটি হেলপারের কাছে। যাতে ভাড়ার টাকা সমন্বয় করা যায়। জানা যায়, আদায়কৃত মোট ভাড়ার ৪০ শতাংশ পাবেন পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান, ৬০ শতাংশ পাবেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন। মোট ১৫টি গাড়ি এই সার্ভিসে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চলাচল করবে। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন সূত্র জানায়, ১০ নম্বর রুটের ২৮টি স'ানে যাত্রী নামানো হবে। যাওয়ার সময় ১৪টি এবং আসার সময় ১৪টি কাউন্টারে বাসসমূহ থামবে। নিরাপদ যাত্রীসেবা কাউন্টার সার্ভিস চালু করার আগে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন ডাক ঢোল পিটিয়ে ২০০৭ সালে চালু করেছিল মহিলা বাস সার্ভিস। কিছুদিন চলার পর ভাড়া বেশি হওয়ায় তা বন্ধ হয়ে যায়। এর কিছুদিন পর একই সার্ভিসকে সংকুচিত করে চালু করা হয় মহিলা ও শিশুদের জন্য নিরাপদ বাস সার্ভিস। এরপর নিরাপদ যাত্রী সেবা দিয়ে চলাচল শুরু করার কিছুদিন পর তাও বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘ দুই বছর বিরতির পর আজ শনিবার থেকে পুনরায় চালু হচ্ছে নিরাপদ যাত্রীসেবা কাউন্টার সার্ভিস।

কোন উপলক্ষ নেই, তবুও বেড়েছে মরিচ মসলা ও হলুদের দাম



সাধারণত ঈদ বা কোন পালাপার্বণের আগে মসলার দাম বাড়ার রেওয়াজ ছিল। কিন্তু বছরের এ সময়টাতে কোন কারণ ছাড়াই বিভিন্ন ধরনের মসলার দাম বেড়ে গেছে কেজিপ্রতি দশ থেকে দেড় শ টাকা পর্যন্ত। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে হলুদের দাম। পাইকারি বাজারে দেশি হলুদের দাম কেজিপ্রতি বেড়েছে ৩০ টাকা। এলাচির দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি দেড় শ টাকা। আদা-রসুন, ধনিয়া, মরিচসহ অন্যান্য মসলার দামদরেরও একই অবস্থা। ব্যবসায়ীরা জানান, আমদানি-মূল্য বেড়ে যাওয়ায় মসলার দাম বেড়ে যাচ্ছে। ভারত ও চীনে বুকিংরেট বেড়েছে, তাই দেশীয় বাজারে এর প্রভাব পড়ছে। এ ছাড়া প্যাকেটজাত মসলা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের দৌরাত্ম্যে হঠাৎ মসলার দাম বেড়েছে। মসলা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বছরের এ সময়টাতে একযোগে মসলা সংগ্রহের কাজে নামে। তাই বাজারে বাড়তি চাপ পড়ায় মসলার দাম বেড়েছে বলে মন্তব্য করেন ব্যবসায়ীরা। এ প্রসঙ্গে পাহাড়তলী রেলওয়ে বাজারের ব্যবসায়ী মো. মোজাহের আলম দৈনিক আজাদীকে বলেন, রাঙ্গামাটিতে হলুদের বাম্পার ফলন হয়। সেখানে খোঁজ নিয়ে জেনেছি, মসলা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো সেখান থেকে হলুদ সংগ্রহ করছে। এবার হলুদ সংগ্রহের মাত্রা বেশি হওয়ায় দাম বাড়ছে হলুদের। পাইকারি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এলাচি বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১১শ টাকা করে। খুচরা বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ১২শ টাকা পর্যন্ত। পাইকারি বাজারে ১৫/১৬ দিন আগেও এলাচি বিক্রি হয়েছে সাড়ে ৯শ থেকে এক হাজার টাকা দরে। দেশি হলুদের পাইকারি দর দু সপ্তাহ ধরে চড়া। দেশি হলুদ ৬০ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯০ টাকায়। ভারতীয় হলুদ ৮০ টাকা থেকে বেড়ে গতকাল ১০৫ টাকা দরে বিক্রি হয়। খুচরা বাজারে ১১৫ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরের নিচে কোন হলুদ নেই। বেড়েছে মরিচের দামও। নাজিরহাট বা হাটহাজারীর মরিচের কদর যেমনি বেশি তেমনি নিত্যপ্রয়োজনীয় এ পণ্যটির দামও বেড়েছে বেশ। আগে যেখানে খুচরা বাজারে ১২০ টাকা দিয়ে হাটহাজারীর এক কেজি মরিচ পাওয়া যেত এখন সেক্ষেত্রে লাগছে ১৬০ টাকা। এ ছাড়া রায়পুর বা লক্ষ্মীপুরের মরিচের দামও কেজিপ্রতি ৮-১০ টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯০ থেকে ৯৫ টাকা দরে। পাইকারি বাজারের পাশাপাশি খুচরা বাজারেও আদা, রসুন ও ধনিয়ার দাম বেড়েছে। পাইকারি বাজারে ৩০-৩২ টাকা দরের চায়নিজ আদা এখন বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৪৮ টাকা দরে। খুচরা বাজারে তা গিয়ে ঠেকছে ৬০ টাকায়। ৪৫ টাকা দরের ফরিদপুরী ধনিয়ার দর কেজিপ্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়ে গেছে। খুচরা বাজারে ধনিয়া এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা দরে। রসুনের দাম পাইকারি বাজারে মাত্র ১৩ টাকায় নেমে এসেছিল। সেই রসুনের দাম বেড়ে এখন দাঁড়িয়েছে ২৮ থেকে ৩০ টাকায়। খুচরা বাজারে রসুন বিক্রি হচ্ছে ৩২ থেকে ৩৬ টাকা দরে। কোন উপলক্ষ ছাড়া হঠাৎ করে মসলার দাম বাড়ায় ক্রেতারা ক্ষুব্ধ। এ প্রসঙ্গে একটি বেসরকারি কলেজের শিক্ষক সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়া দিপু বলেন, কোন পণ্যের দাম যদি কোন কারণ ছাড়া হঠাৎ করে কেজিপ্রতি ৪০/৫০ টাকা বেড়ে যায় তাহলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তিও যে বাড়ে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এ ব্যাপারে তিনি সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। মসলাজাত পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি প্রসঙ্গে খাতুনগঞ্জের মেসার্স জনতা ট্রেডার্সের মালিক হাজি মুহাম্মদ মুসা বলেন, আগে বুকিংরেট কম থাকার পাশাপাশি আমদানি বেশি ছিল, তাই রসুনের দাম কমে গিয়েছিল। কিন' সম্প্রতি ভারত ও চীনে আদা এবং রসুনের বুকিংরেট বেড়ে যাওয়ায় এ দুটি পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। এদিকে বাজারে মসলাজাত পণ্যের মধ্যে জিরা ও পেঁয়াজের দাম বাড়ে নি। গতকাল পাইকারি ও খুচরা বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ ১৪ থেকে ১৫ টাকা এবং সিরিয়া-আফগানিস্তানের জিরা ২৪০-২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়।

পাকিস্তানে হলব্রুকের সফরকালে বোমা হামলায় নিহত ৪০

পাকিস্তানের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলের প্রত্যন্ত এলাকার একটি মসজিদে শুক্রবার জুমার নামাজের সময় বোমা হামলায় ৪০ জন নিহত হয়েছে। ওই অঞ্চলের একজন ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা রয়টার্সকে এই তথ্য জানিয়েছেন। পাকিস্তান ও আফগানিস্তান বিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত রিচার্ড হলব্রুকের ইসলামাবাদ সফরকালে এ হামলার ঘটনা ঘটল। উত্তর পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশে সোয়াত উপত্যকার কাছে আপার দির জেলার শীর্ষ কর্মকর্তা আতিফ-উর-রহমান রয়টার্সকে বলেছেন, “নিহতের সংখ্যা ৪০। কতজন আহত হয়েছেন তা এখনো জানি না।” ইসলামাবাদের ২০০ কিলোমিটার উত্তরপশ্চিমে হায়াগাই গ্রামের অধিবাসী উমর রেহমান বলেছেন, “৩০ টি মৃতদেহ সনাক্ত করা হয়েছে। তিনি জানান, মসজিদে লোকজনের ছিন্নবিচ্ছিন্ন দেহ ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকতে দেখা গেছে। দেহের বিচ্ছিন্ন অংশগুলো যারা সনাক্ত হয়েছে তাদের নাকি অন্যদের তা বলতে পারছেন না বলে জানান রেহমান। খবর বিডি নিউজের। প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানি বলেছেন, এ ধরনের ঘটনা সরকারকে সন্ত্রাস নির্মূল করার প্রচেষ্টা থেকে নিবৃত্ত করতে পারবে না। শুক্রবার সকালের দিকে পুলিশ ইসলামাবাদ ও পার্শ্ববর্তী রাওয়ালপিণ্ডি থেকে কয়েকজন আত্মঘাতী বোমাহামলাকারীকে গ্রেপ্তার করে। হলব্রুক এসময় পাকিস্তানের নেতাদের সঙ্গে সোয়াত উপত্যকা থেকে তালেবান নির্মূলে আরো কী করণীয় তা নিয়ে আলোচনা করছিলেন। বৈঠকে গিলানি যুক্তরাষ্ট্রকে পাকিস্তানের ১ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন ডলারের ঋণ মওকুফ করে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মিলিটারি হার্ডঅয়্যার সরবরাহে সহায়তা করা উচিত বলে হলব্রুককে জানিয়েছেন। পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রেহমান মালিক সাংবাদিকদের বলেছেন, ইসলামাবাদ ও রাওয়ালপিন্ডিতে আত্মঘাতী জ্যাকেটসহ কয়েকজন বোমা হামলাকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের সংখ্যা কত তা জানাতে পারেননি রেহমান। তবে দ্য নিউজ ডেইলি এদের সংখ্যা ৪ জন বলে জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার হলব্রুক মারদান জেলায় শরণার্থী শিবির পরিদর্শনের কয়েকঘন্টা পর তালেবান জঙ্গিরা ৫ পুলিশ ও এক সেনাকে হত্যা করে। সেনাবাহিনী জানিয়েছে, এপ্রিলের শেষ দিক থেকে শুরু করা তালেবান বিরোধী অভিযানে এ পর্যন্ত ১২০০ রও বেশি জঙ্গি নিহত এবং ৯০ সেনা নিহত হয়েছে। অন্যদিকে, অভিযান চলার মাঝেই জঙ্গিরা লাহোর, পেশোয়ার ও দেরা ইসমাইল খানে বোমা হামলা চালিয়েছে। ফিন্যান্সিয়াল টাইমস পত্রিকায় শুক্রবার এক সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি বলেছেন, “এটি আমাদের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই। এতে আমরা ব্যর্ত হলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আমাদেরকে মাফ করবে না। আমরা এই যুদ্ধে হারতে পারি না। পরাজয় আমাদের বিকল্প হতে পারে না।”

বান্দরবান সীমান্তে নাসাকা-বিডিআর পতাকা বৈঠক

বান্দরবানের থানছি উপজেলার বড় মদক এলাকায় মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী নাসাকা ও বিডিআরের মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সীমান্তের ৭০নং পিলারের কাছে উভয় দেশের কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে উভয় দেশের সীমান্তে সন্ত্রাসী তৎপরতা দমন, মাদক চোরাচালান বন্ধ ও সীমান্তে কাটাতারের বেড়া নির্মাণ নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে। খবর ফোকাস বাংলার। বলিপাড়া বিডিআর সূত্র জানায়, এদেশের ভূখণ্ডে যাতে মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদিরা তৎপরতা চালাতে না পারে সে জন্য অভিযান পরিচালনা ও বান্দরবান থানছি সীমান্তে মিয়ানমার যাতে কোনো কাটাতারের বেড়া নির্মাণ না করে সেজন্য বিডিআরের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। জবাবে নাসাকা বাহিনী প্রতিনিধিরা বান্দরবান থানছি সীমান্তে আপাতত তাদের কাটাতারের বেড়া নির্মাণের পরিকল্পনা নেই বলে জানায়। বৈঠকে উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী সীমান্তে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তৎপরতা চালিয়ে যাবে বলে অঙ্গীকার করেন। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন বিডিআরের সুবেদার আবুল কাশেম। বিডিআরের ১০ জন ও নাসাকার ৮ জন এ বৈঠকে অংশ নেয়।

কক্সবাজারে আ.লীগের নামে সদর সাব রেজিস্টার অফিস দখল

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয় সংলগ্ন সদর সাব রেজিস্টার অফিস দখল করে সেখানে শহর আওয়ামীলীগের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। গত বৃস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় ২৫/৩০ জনের একদল লোক লাঠিসোটা নিয়ে হাজির হয়ে অফিস দখল করে সেখানে মিষ্টি বিতরণও করে। এসময় সেখানে আগে থেকে অবস্থানকারী কয়েকজন দলিল লেখককেও মারধর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। কক্সবাজার সদর উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের মাসুদ আজাদীকে জানান, তিনিসহ কয়েকজন দলিল লেখক গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পেশাগত কাজে সদর সাব রেজিস্টার অফিসে ছিলেন। সন্ধ্যা ৭টার দিকে অতর্কিতভাবে শহর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট ফখরুল ইসলাম গুন্দুর নেতৃত্বে ২৫/৩০ জন লোক লাঠিসোটা নিয়ে হাজির হয়ে রেকর্ডরুমের দলিল ও ফাইল তছনছ করে বাইরে ছুঁড়ে ফেলে দেয় । এসময় কয়েকজন দলিল লেখককেও মারধর করা হয়। তিনি দাবী করেন, আওয়ামীলীগ নেতা নামধারীরা এসময় সহস্রাধিক দলিল নষ্ঠ করে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও দলিল লেখক সহকারী সমিতির নেতা মোর্শেদুল আলম আজাদীকে বলেন, আমি আওয়ামীলীগ নামধারী সন্ত্রাসীদের বাধা দিতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছি। আমি আওয়ামী পরিবারের লোক হওয়ার পরও তারা আমার উপর হাত তুলতে দ্বিধা করেনি। ঘটনার ব্যাপারে শহর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট ফখরুল ইসলাম গুন্দুর বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি আজাদীকে বলেন, সরকারের পরিত্যক্ত ভবন হিসাবে আওয়ামীলীগ অফিস করার জন্য আমরা সরকারের কাছে এই ভবনটি বরাদ্দ চেয়েছি এবং গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর অনুমতি নিয়ে তা দখল করে নিয়েছি। এব্যাপারে গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী গাজী শওকত আলীর বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি আজাদীকে বলেন, আমি ভবন দখলের জন্য তাদেরকে কোন অনুমতি দেইনি। আমি বলেছি বরাদ্দ নিতে হলে মন্ত্রী পরিষদের অনুমোদন নিতে হবে। আপনারা সেখানে চেষ্টা করুন। তাছাড়া উক্ত ভবনটির মালিক রেজিস্টার অফিস, গণপূর্ত বিভাগ নয়।

সহপাঠীরাই নির্মমভাবে খুন করেছে স্কুল ছাত্র হৃদয়কে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ৩ হত্যাকারীর স্বীকারোক্তি




তিন বোনের একটা মাত্র ভাই হৃদয়। নামের মতো সেও তাদের হৃদয় মণি-ই ছিল। মৃত্যুর ২৬ দিন পেরিয়ে গেছে, পুরো বাড়ি জুড়ে নিস্তব্ধতা রয়ে গেছে একই রকম। গতকাল জানাজানি হলো যে, তারই তিন সহপাঠী নির্মমভাবে তাকে হত্যা করে লাশ ভাসিয়ে দিয়েছিল সাগরে। এ সংবাদ শুনে হৃদয়ের পরিবারের সদস্যরা এখনো বিশ্বাস করতে পারছে না যে, ক্লাস এইটে পড়া কোন ছেলে যে, খুনী হতে পারে। তাই গতকাল পাহাড়তলী থানায় হৃদয়ের বাবা শাহজাহান তাঁর পুত্রের খুনী শুভ, পারভেজ ও ফরহাদকে বার বার জড়িয়ে ধরে বলছিলেন, ‘‘এদের বিরুদ্ধে আমি কী করবো এরাইতো আমার ছেলের মতোন। উল্লেখ্য, গত ১০মে হৃদয়ের এই তিন সহপাঠী সামান্য একটি এমপি সিক্স প্লেয়ারের জন্য খুন করে তাকে। গতকাল এ প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে গ্রেপ্তারকৃত তিন খুনী ভাবলেশহীনভাবেই খুনের লোমহর্ষক বিবরণ দেয়। পাহাড়তলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. কামরুল হাসান খুনের এ ঘটনাকে সামাজিক অবক্ষয় হিসেবে মনে করেন। তিনি বলেন, ক্যাবল টিভির কু প্রভাব কোমলমতি শিশুদের এভাবে ভয়ংকর অপরাধের দিকে ধাবিত করছে। ঘটনার বিবরণে জানা যায়, হৃদয়, শুভ, পারভেজ ও ফরহাদ আলহাজ্ব মোস্তফা হাকিম উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র। হৃদয়ের কাছে একটা এমপি সিক্স প্লেয়ার ছিল। ঘটনার ১৫ দিন আগে শুভ এটি চেয়ে নিয়েছিল হৃদয় থেকে। আবার ফিরিয়েও দিয়েছিল গত ৮মে। ৯মে হৃদয় ও তার জমজ বোন তন্বি স্কুলে যাওয়ার উদ্দেশ্যে সকালে বাসা থেকে বের হয়। তন্বি স্কুলে ঢুকে গেলেও হৃদয় একটু পরে আসছি বলে স্কুল গেইট থেকে চলে যায়। স্কুল ছুটির পর হৃদয়কে দেখতে না পেয়ে তন্বি অপেক্ষা করে কিছুক্ষণ। পরে বাসায় চলে আসে। কিন্তু দুপুর গড়িয়ে বিকেল নামে, সন্ধ্যা আসে। তবুও হৃদয় আসে না। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও তাকে না পেয়ে তার মা বাদী হয়ে পাহাড়তলী থানায় একটি জিডি করেন। পরদিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উত্তর কাট্টলীস্থ বেড়ী বাঁধ এলাকা থেকে হৃদয়ের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়। খুনের রহস্য উদঘাটন যেভাবে :- পাহাড়তলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুল হাসান ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনের দায়িত্ব দেন সাবইন্সপেক্টর বিপ্লবকে। ঘটনার অনুসন্ধান করতে গিয়ে তিনি আকাশ মন্ডল নামে হৃদয়ের এক সহপাঠীর খোঁজ পান। আকাশের সাথে গত ৭মে একটি মেমোরী কার্ড নিয়ে ঝগড়া হয়েছিল হৃদয়ের। পরে তাদের স্কুলের এক শিক্ষিকা বিষয়টি জেনে দু’জনকে ডেকে মিলিয়ে দেন। এস আই বিপ্লব আকাশের কাছে সেই ঝগড়া সম্পর্কে জানতে গেলে সে এ ধরনের কোন ঘটনার কথা অস্বীকার করে। এরপর সেই স্কুল শিক্ষিকাকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি মিমাংসা করে দেয়ার কথা স্বীকার করেন। শিক্ষিকার মুখোমুখি করা হয় এবার আকাশকে। এবার আর সে অস্বীকার করতে পারেনি। এসআই বিপ্লবের ধারণা হয়, খুনের ঘটনার সাথে কোন না কোন যোগসূত্র থাকতে পারে আকাশের। তাকে ভয় দেখানো হয়, হৃদয়ের খুনের মামলায় সেও জড়িয়ে যেতে পারে। এতে কাজ হয়। সে বলে, ‘‘সাগরে, হৃদয়ের লাশ পাওয়ার পরদিন একটি ছাদে আড্ডা দিচ্ছিল শুভ, পারভেজ ও ফরহাদ। কিছুক্ষণ পরে সে ছাদে যাওয়ার সময় সিঁড়িতে থাকতে শুনতে পায়, পারভেজ বলছে, আমরা কেউ ঘটনা সম্পর্কে কাউকে বলবো না।’ আরো দুই এক মিনিট অবস্থান করে আকাশ চলে আসে বলে জানায়। আকাশের এ তথ্যের পর এসআই বিপ্লবের ধারণা আরো বদ্ধমূল হয়। গত ৪মে বিশ্ব কলোনীস্থ জি ব্লকের ২১০ নং হোল্ডিং থেকে মোহাম্মদ আলমের ছেলে ফরহাদ (১৪), মোস্তফা হাকিম স্কুল সংলগ্ন বশির আহমদের বাড়ি থেকে এনামুল হকের ছেলে পারভেজ (১৪) এবং উত্তর কাট্টলীস্থ হাবিব উল্লাহর বিল্ডিং থেকে আশীষ চৌধুরীর ছেলে শুভ চৌধুরী (১৩)কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়। দুপুর থেকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়। কিস্তু কিছুতেই তারা মুখ খুলছে না। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুল হাসান, তদন্ত কর্মকর্তা এস আই বিপ্লব নাছোড়বান্দা। রাত ৩টার দিকে শুভ প্রথম মুখ খোলে। খুলে বলে খুনের ঘটনা, কারণসহ সব কিছু। পারভেজ ও ফরহাদও স্বীকার করে, একটি এমপি সিক্স প্লেয়ারের জন্যই মূলতঃ খুন করা হয়েছে হৃদয়কে। বন্ধু ভেবেই হৃদয় ঘুরতে গিয়েছিল :- শুভ জানায়, স্কুল পালিয়ে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলেই কৌশলে হৃদয়কে বেড়ী বাঁধ এলাকায় নিয়ে যায়। পারভেজ এমপি সিক্সের প্রসঙ্গ তুলে সেটি শুভকে দিয়ে দিতে বলে। এছাড়া সে হৃদয়কে তার বাবার কাছ থেকে দুই লাখ টাকা এনে দিতে চাপ দেয়। সে বলে, এ টাকা দিয়ে একটি মুরগীর ফার্ম করা হবে। তারা চারজন পার্টনার হিসেবে থাকবে, স্বাবলম্বী হবে। হৃদয় তাদের প্রস্তাব দুটির একটিতেও সাড়া দেয়নি। শুরু হয় কথা কাটাকাটি। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে পারভেজ ও ফরহাদ সামনে-পেছনে হৃদয়ের গলা চেপে ধরে। এভাবে ১৫/২০ মিনিট পার হলে নিথর হয়ে পড়ে হৃদয়। তার লাশ সাগরে ছুঁড়ে ফেলা হয়। স্কুল ব্যাগটি মাটি চাপা দেয়া হয় সেখানেই। এমপি সিক্সটা শুভ নেয়। তাদের ধারণা ছিল লাশটা আর পাওয়া যাবে না। কিন্তু ভাটার টানে সেটি যে ফিরে আসবে তা ভাবেনি তারা। এ পর্যায়ে শুভ এ প্রতিবেদকে জানায়, খুনের দৃশ্য দেখে সে পালিয়ে যেতে দৌঁড় দেয়। কিন্তু অর্ধেক যেতে না যেতেই তাকে ধরে ফেলে পারভেজ ও ফরহাদ। তারা শাসায়, এ ঘটনা কাউকে জানালে হৃদয়ের মতো তোকেও মেরে ফেলা হবে। তাদের হাতে পায়ে ধরে ঘটনার কথা কাউকে জানাবে না জানিয়ে সে বাসায় চলে আসে। তবে এস আই বিপ্লব জানিয়েছেন, পুলিশী জিজ্ঞাসাবাদে শুভ স্বীকার করে যে, হৃদয়কে হত্যার সময় সে পা চেপে ধরেছিল। তাদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক শুভর বাসা থেকে উদ্ধার করা হয় হৃদয়ের এমপি সিক্স প্লেয়ার। গতকাল তিনজনকে ঘটনাস্থলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাদের দেখানো মতে মাটি খুঁড়ে উদ্ধার করা হয় হৃদয়ের স্কুল ব্যাগ। হৃদয়ের পরিবারের মুখে কথা নেই :- হৃদয়ের বাবা মো. শাহজাহান দুবাই থাকেন। মা স্কুল শিক্ষিকা। তিন বোনের একজনের বিয়ে হয়ে গেছে। দ্বিতীয় জন অনার্স পড়ণ্ডয়া। সর্বশেষ তন্বি হৃদয়ের সাথেই পড়ে। হৃদয় ছিল তাদের চোখের মণি। তার বাবা জানায়, ‘‘এত ছোট বয়সেও বেশ গোছানো ছিল হৃদয়। ফোনে তার সাথে শেষ কথা হয়। সে বলেছিল, ‘‘আব্বু কেমন আছো তুমি? খাওয়া দাওয়া করছো তো ঠিকমতো?” এ কথা বলতে বলতে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, হৃদয় চলে যাওয়ার পর থেকে ফজরের নামাজের সময় ঘন্টা দুই ঘুমানো ছাড়া সারা রাত জেগে থাকি। তার মা ও জমজ তন্বিকে নিয়ে বেশি ভয়। তিনি কাঁদতে কাঁদতে বলেন, মেয়েরা হঠাৎ হঠাৎ ঘুমের ঘোরে চিৎকার করে জেগে উঠে। আমি কী করবো? তাদের কীভাবে শান্তনা দেবো? না পারছি সইতে, না পারছি কাঁদতে। আমার সাজানো সংসারটা তছনছ হয়ে গেছে। প্রয়োজন সামাজিক দায়বদ্ধতা :- পাহাড়তলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুল হাসান এ অবক্ষয় রোধে তিনটি বিষয়ের উপর জোর দেন। বাবা-মাকে সচেতন করতে হবে। স্কুলের শিক্ষকদের সচেতন হতে হবে। সামাজিকভাবে কাউন্সিলিংয়ের ব্যবস্থা করা যায়। তিনি বলেন, আমি আমার নিজের সন্তানকে নিয়ে ভাবছি। ক্যাবল চ্যানেল দেখে দেখে শিশুরা অন্ধভাবে অনুকরণ করছে সব কিছু। তাদের মানসিকতার পরিবর্তন ঘটাতে আমাদেরকেই এগিয়ে আসতে হবে।

মাঠে গড়াল টি টুয়েন্টি বিশ্বকাপ ক্রিকেট

কদিন আগে শেষ হওয়া আইপিএলের জমকালো সমাপনী অনুষ্ঠান উপভোগ করেছিল সারা বিশ্ব। আইপিএলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানও ছিল নজর কাড়া। কিন' ইংল্যান্ডের মাটিতে টুয়েন্টি টুয়েন্টি বিশ্বকাপের আসর বসছে। অথচ জমকালো কোন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের কর্মসূচি ছিল না। সাদামাটা যেটুকু ছিল তাও পন্ড করে দিয়েছে বেরসিক বৃষ্টি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের কর্মসূচি বলতে যা ছিল সে ইংলিশ গায়িকা এ্যালিশা ডিক্সনও গান গাইতে পারেনি। ১২টি দলের অধিনায়কেরও মাঠে নামা হয়নি। সাদা-মাটা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটা বৃষ্টির কারণে ভেস্তে গেলেও ম্যাচটা যথাসময়ে শুরু হতে পেরেছে। ক্রিকেটের মক্কা খ্যাত লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে পর্দা উঠেছে টুয়েন্টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপ ক্রিকেটের। আগামী ২১ জুন এ মাঠে টুর্নামেন্টের পর্দা নামবে। টসে হেরে ব্যাটিং এ আমন্ত্রিত ইংল্যান্ডের শুরুটা ছিল অসাধারণ। একদিন আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে দেওয়া ইংল্যান্ডের উদ্বোধনী জুটি গতকালও দারুণভাবে শুরু করে। রবি বোপারা এবং লুক রাইট ইংল্যান্ডকে উড়ন্ত সূচনাই এনে দেয়। মাত্র ১১.২ ওভারে দলকে ১০২ রানে পৌঁছে দিয়ে বিচ্ছিন্ন হয় স্বাগতিকদের উদ্বোধনী জুটি। নিজের হাফ সেঞ্চুরি থেকে চার রান দূরে থাকতে রায়ানের বলে পিটারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন বোপারা। উদ্বোধনী জুটি ভাঙার পর অবশ্য ইংলিশরা দ্রুত আরো দুটি উইকেট হারায়। তবে অপর ওপেনার রাইট রীতিমত ঝড় তুলেছিলেন ব্যাট হাতে। চমৎকার উদ্বোধনী জুটির পর অবশ্য মিডল অর্ডারের ব্যাটসম্যানরা তা কাজে লাগাতে পারেনি। ফলে নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৬২ রানেই থামতে হয় ইংল্যান্ডকে। আর এই ১৬২ রান তুলতে সবচাইতে বড় ভূমিকাটা পালন করেছেন ওপেনার লুক রাইট। ৪৯ বলে ৮টি চারের সাহায্যে ৭১ রান করে রায়ানের বলে বোরেনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন। শেষ দিকে অধিনায়ক কলিংউডের ১০ বলে ১১ এবং রবার্ট কী এর ৮ বলে ১০ রানের বদৌলতে ১৬২ রান জড়ো করতে সক্ষম হয় ইংল্যান্ড। হল্যান্ডের বোলারদের মধ্যে স্পট লাইটটা নানেসকে ঘিরে থাকলেও সফল হতে পারেননি তিনি। চার ওভার বল করে ৩০ রান দিলেও কোন উইকেট পাননি আইপিএল মাতানো নানেস। ৩৫ রানে ২ উইকেট নিয়ে হল্যান্ডের সফল বোলার রায়ান। ১৬৩ রানের টার্গেট। সে টার্গেট তাড়া করতে নেমে প্রথম ওভারেই ওপেনার কারভিজিকে ফিরিয়ে দেন এন্ডারসন। দ্বিতীয় উইকেটে রেকারস এবং জুইডারেন্ট মিলে ২১ রান যোগ করতে সক্ষম হয়। তৃতীয় উইকেটে জুইডারেন্ট এবং গ্রুথ মিলে ভালই এগিয়ে যাচ্ছিল। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত হল্যান্ড ৮ ওভারে ৬২ রান সংগ্রহ করে ২ উইকেট হারিয়েছে।

অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন ৩ মাসের মধ্যে সংশোধন হচ্ছে

ভূমি মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ২০০১ সালের অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন সংশোধন হচ্ছে। আগামী তিন মাসের মধ্যে এটি সংসদে পাশ করা হবে এবং ডিসেম্বরের মধ্যেই নিষ্পত্তি করা হবে এই আইনের আওতায় ভূমি সংক্রান্ত সকল দাবী। ১৯৬৫ সাল থেকে ২০০৬ পর্যন্ত অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইনের মারপ্যাচে পড়ে ১২ লাখ হিন্দু পরিবার ২৬ লাখ একর ভূমি হারিয়েছে। এই তথ্য দিয়েছেন অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন-২০০১ এর বাস্তবায়ন শীর্ষক সেমিনারণ্ডএ মূল প্রবন্ধের উপস্থাপক অধ্যাপক আবুল বারকাত। এসোসিয়েশেন ফর ল্যান্ড রিফর্ম এন্ড ডেভেলপমেন্ট ণ্ডএএলআরডি এবং নিজেরা করির উদ্যোগে গতকাল এই সেমিনারে ছিলেন ভূমি সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির সভাপতি আ ক ম মোকাম্মেল হক। তিনি জানান, এই সমস্যা সমাধানের সর্বশেষ উদ্যোগের কথা। সেমিনারে উন্মোচন করা হয় অধ্যাপক আবুল বারকাত ও তার হগবেষকদের বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের বঞ্চনা : অর্পিত সম্পত্তির সাথে বসবাস গ্রন'। সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।

নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে চট্টগ্রামে বিশ্ব পরিবেশদিবস পালিত


পরিবেশ রক্ষায় বিভিন্ন জনসচেতনামূলক অনুষ্ঠান, র্যা লী, আলোচনা সভা ইত্যাদি আয়োজনের মাধ্যমে উদযাপিত হয়েছে বিশ্ব পরিবেশ দিবস। দিবসটি পালন উপলক্ষ্যে গতকাল সকাল থেকে বিভিন্ন কর্মসূচীর আয়োজন করে বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তর। সকাল আটটায় এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে সমাবেশ শেষে মুসলিম ইনস্টিটিউট হলে এসে শেষ হয়। র্যা লীতে পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, স্কাউট, রোভার, গালর্স গাইড এবং বিভিন্ন এনজিও কর্মকর্তা ও সদস্যরা অংশ গ্রহন করেন। সকাল নয়টা থেকে মুসলিম হলে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিটি কর্পোরেশন মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, সারা পৃথিবী জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে হুমকীর সম্মুখীন। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধিই পরিবেশ বিপর্যয়ে অন্যতম কারণ। এটার এখন আর কোন অনুমান নির্ভর বিষয় নয়। তিনি আরো বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন ও সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে বন্যা, খরা, ঘূর্ণিঝড়ের প্রকোপ ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের আগামী প্রজন্মের জন্য এ পৃথিবীকে বাসযোগ্য করে তোলার জন্য তিনি পরিবেশবিদদের প্রতি আহবান জানান। পরিবেশ অধিদপ্তর পরিচালক আবদুস সোবহানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মোঃ সাইফুল্লাহ। এবারের পরিবেশ দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় ‘জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় তোমার পৃথিবী তোমাকেই চায়’ বিষয়ের তাৎপর্য তুলে ধরে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ ও ভূগোল বিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ আবদুল হক। পরিচালক আবদুস সোবহান বলেন, বিজ্ঞানীদের মতে পৃথিবীর তাপমাত্রা দেড় হতে আড়াই ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেলে পৃথিবীর প্রাণী ও উদ্ভিদ প্রজাতির ৩০ শতাংশ হুমকির মুখে পড়বে। ২০৫০ সালের মধ্যে এশিয়ায় গ্রীস্ম অঞ্চলে ১০০ কোটিরও বেশি মানুষ বড় ধরণের বিপর্যয়ের সম্মুখীন হবে। বাংলাদেশসহ এশিয়া অঞ্চলের অনেক দেশে ভয়াবহ বন্যা খরা, খাদ্যাভাব ও পানি সংকট সৃষ্টি হবে। তিনি আরও বলেন, পৃথিবীর তাপমাত্র ১ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেলে বাংলাদেশের ১৭.৫ শতাংশ উপকূলীয় ভূমি তলিয়ে যাবে। যে কারণে প্রায় আড়াই কোটি মানুষ ঘরবাড়ি, জমি হারিয়ে নিঃস্ব পরিণত হবে। আলোচনা সভায় বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।

কন্টেনার হ্যান্ডলিংয়ে অপারেটর নিয়োগে আবারো অনিশ্চয়তা ।। দ্বিতীয় দফা টেন্ডারের কার্যক্রম ১ মাসের জন্য স্থগিত নির্দেশনা চেয়ে মন্ত্রণালয়ে বন্দর চেয়ারম্যা

চট্টগ্রাম বন্দরের কন্টেনার হ্যান্ডলিং কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অপারেটর নিয়োগের লক্ষ্যে দ্বিতীয় দফা আহূত টেন্ডারের কার্যক্রমও ঝুলে পড়ছে। এতে করে আগামী ১৫ জুন থেকে এছাক ব্রাদার্স নামের প্রতিষ্ঠান কন্টেনার হ্যান্ডলিং করার কথা থাকলেও শেষতক তা কোথায় গিয়ে ঠেকছে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স'ায়ী কমিটি দ্বিতীয় টেন্ডারের কার্যক্রম এক মাসের জন্য স'গিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে। এই নির্দেশের প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কি করবেন সেই নির্দেশনা চেয়ে মন্ত্রণালয়ের সচিবের নিকট পত্র পাঠিয়েছেন। সূত্র জানিয়েছে, চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে বছরে বর্তমানে দশ লাখ টিইইউএস-এর চেয়ে বেশি কন্টেনার হ্যান্ডলিং হচ্ছে। বছরে দশ লাখ টিইইউএস কন্টেনার হ্যান্ডলিংকারী মিলনিয়ার পোর্টের তালিকায় চট্টগ্রাম বন্দরের অন্তর্ভুক্তিকে বেশ সম্মানজনক বলেও বন্দর কর্তৃপক্ষ মনে করছে। কিন' সেই কন্টেনার হ্যান্ডলিং নিয়ে বন্দরে নানা তেলেসমাতি কারবার শুরু হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরে গত প্রায় চার বছর ধরে কন্টেনার হ্যান্ডলিং করছে সাইফ পাওয়ারটেক নামের বেসরকারি একটি কোম্পানি। ২০০৪ সালে বন্দরে গ্যান্ট্রিক্রেন চালু করার সময় থেকে সাইফ পাওয়ারটেক বন্দরে কাজ করছে। পরবর্তীতে তারা গ্যান্ট্রিক্রেন অপারেশন থেকে শুরু করে কন্টেনার হ্যান্ডলিং কার্যক্রমের পুরোটা পরিচালনা করতে থাকে। ২০০৮ সালে প্রতিযোগিতামূলক টেন্ডারের মাধ্যমে অপারেটর নিয়োগের জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ টেন্ডার আহ্বান করে। সেই টেন্ডার নিয়ে অভিযোগ উঠলে মন্ত্রণালয় থেকে টেন্ডার বাতিল করে দেয়া হয়। ২০০৮ সালের শেষদিকে এসে দ্বিতীয় দফায় টেন্ডার আহ্বান করা হয়। এতে এছাক ব্রাদার্স সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে কাজ পায়। কিন' এই টেন্ডার প্রক্রিয়া নিয়েও ইতোমধ্যে অভিযোগ উঠেছে। চট্টগ্রাম বন্দরের কোটি কোটি টাকার এই টেন্ডার হ্যান্ডলিং কার্যক্রমের অপারেটর নিয়োগের জন্য গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে নানা প্রক্রিয়া চললেও শেষতক কোনকিছু চূড়ান্ত করা যাচ্ছে না। দ্বিতীয় দফা টেন্ডারের প্রেক্ষিতে এছাক ব্রাদার্স আগামী ১৫ জুন থেকে বন্দরে কার্যক্রম শুরু করার কথা ছিল। ইতোমধ্যে সাইফ পাওয়ারটেকের সাথে বন্দর কর্তৃপক্ষের লেনদেনও সুরাহা হয়েছে। কিন' শেষ মুহূর্তে এসে আবারো সংকট সৃষ্টি হয়েছে। নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স'ায়ী কমিটি এই টেন্ডার প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন ধরনের অনিয়মের অভিযোগ পেয়েছে। এসব অভিযোগ খতিয়ে দেখার জন্য নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি একটি সাব কমিটিও গঠন করেছে। সংসদীয় কমিটি সম্প্রতি বৈঠক করে পুরো বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত অনুসন্ধান এবং কোন অনিয়ম পেলে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে প্রথম টেন্ডার নিয়ে আলোচনা হয়। তাতে এভারেস্ট শিপিং নামের প্রতিষ্ঠান সর্বনিম্ন দরদাতা হলেও তাদের কাজ না দেয়ার কারণ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এবং উক্ত টেন্ডারের পর এভারেস্টকে কাজ না দেয়ায় সরকারের কত টাকার ক্ষতি হয়েছে তারও হিসাব নিকাশ করা হচ্ছে। এই ক্ষতির সাথে কারা জড়িত এবং পরবর্তী টেন্ডারে এছাক ব্রাদার্স নামের প্রতিষ্ঠান যে অভিজ্ঞতা সনদ দিয়েছে তা সঠিক কিনা এছাড়া এই টেন্ডারে অন্য কোন অনিয়ম হয়েছে কিনা সেই সব খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংসদীয় কমিটি। আর পুরো বিষয়টি তদন্ত করার জন্য চার সদস্যের যে সাব কমিটি করা হয়েছে তাদেরকে এক মাসের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। একই সাথে এছাক ব্রাদার্সের নিয়োগ স'গিত রেখে উক্ত এক মাস আগের নিয়মেই কন্টেনার হ্যান্ডলিং কার্যক্রম পরিচালনা করানোরও সিদ্ধান্ত হয়েছে। নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স'ায়ী কমিটি এই ব্যাপারে নৌ পরিবহন সচিব এবং বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ারও নির্দেশ দিয়েছে। এদিকে এই নির্দেশের প্রেক্ষিতে বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান পরবর্তী করণীয়ের ব্যাপারে নির্দেশনা চেয়ে গতকাল নৌ পরিবহন সচিবের নিকট জরুরি পত্র পাঠিয়েছেন। নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা পাওয়ার পর বন্দর কর্তৃপক্ষ পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন বলেও সংশ্লিষ্ট একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানিয়েছেন। তবে অপর একটি সূত্র জানিয়েছে , নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স'ায়ী কমিটির একজন সদস্য হচ্ছেন খোদ নৌ পরিবহন মন্ত্রী। এতে করে উক্ত কমিটি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাতে মন্ত্রীরও সম্মতি রয়েছে। এক্ষেত্রে নতুন করে সচিব কোন নির্দেশনা দেবেন না বা দিতে পারেন না। আর এর মাধ্যমেই আবারো ঝুলে যাচ্ছে বন্দরের কন্টেনার হ্যান্ডলিং এর অপারেটর নিয়োগ প্রক্রিয়া। অবশ্য বন্দর কর্তৃপক্ষের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ঠিকাদার নিয়োগ না হলে বন্দর কর্তৃপক্ষ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কন্টেনার হ্যান্ডলিং কার্যক্রমেও কোন সমস্যা হবে না।

কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ে দেয়া ভাষণে ওবামা যুক্তরাষ্ট্র মুসলিম বিশ্বের সাথে নতুন সূচনার ভিত গড়তে চায়


মমুসলিম বিশ্বের সাথে সম্পর্কের নতুন সূচনার ডাক দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। তিনি বলেছেন, মুসলিম দেশ এবং আমেরিকার মধ্যে সন্দেহ, অবিশ্বাস ও দ্বন্দ্ব অবশ্যই দূর হতে হবে। যুক্তরাষ্ট্র এবং মুসলিম বিশ্বের মধ্যে বিরাজমান দূরত্ব কমিয়ে আনার উদ্দেশ্যে মধ্যপ্রাচ্য সফররত ওবামা গতকাল বৃহস্পতিবার কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রান্ড হলে দেয়া ভাষণে একথা বলেন। বক্তৃতার শুরুতেই বারাক হুসেন ওবামা বলেন, আস্‌সালামু আলাইকুম। আসুন আমরা নতুন করে শুরু করি। আমি এখানে এসেছি গোটা বিশ্বের মুসলমানদের সঙ্গে নতুন সূচনার ভিত গড়তে। যুক্তরাষ্ট্র ও মুসলমান কেউ কারো প্রতিযোগী নয়। আমরা পরস্পরকে সম্মান করব। পরস্পরের স্বার্থ দেখব। উগ্র পন'ায় বিশ্বাসীরা আমাদের সু-সম্পর্কে ধীরে ধীরে ভয় ঢুকিয়ে দিচ্ছে। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট এও স্বীকার করেন যে, সন্দেহ এবং অবিশ্বাসের জন্ম একদিনে সৃষ্টি হয়নি এবং এটি দূর করতে উভয় পক্ষকে যথোপযুক্ত উদ্যোগ গ্রহন করতে হবে। একের প্রতি অন্যের শ্রদ্ধা ফিরিয়ে আনতে হবে এবং উভয় পক্ষের মধ্যকার মূল ভিত্তিগুলো খুঁজে বের করতে হবে। মধ্যপ্রাচ্য এবং ইউরোপ সফরের অংশ হিসাবে কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ে এই ভাষণ দেন ওবামা। এর আগে সৌদি আরব সফর করেন ওবামা। মিসরের পর গন্তব্য জার্মানি ও ফ্রান্স। বারাক ওবামা বলেন, মুসলিম ও আমেরিকার মধ্যে একটি নতুন সূচনার লক্ষ্যে এবং পারস্পরিক স্বার্থ ও শ্রদ্ধাবোধকে ত্বরান্বিত করতে আমি এখানে এসেছি। এজন্য সন্ত্রাসী কার্যক্রম, অযথা ভীতি এবং সন্দেহ ও দ্বন্দ্বের ঘূর্ণিপাক থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। যুগ যুগ ধরে চলা সন্দেহ ও দ্বন্দ্ব তার একটি মাত্র ভাষণেই যে দূর হয়ে যাবে এমনটিও মনে করেন না মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, উভয় পক্ষকেই না বলা মনের কথা খুলে বলতে হবে এবং সেই সাথে আমাদের পেছনের বন্ধ দরজাও খুলে দিতে হবে। এই ভাষণের মধ্য দিয়ে ওবামা বিশ্বের মুসলমানদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের হৃত ভাবমূর্তি ফেরানোর চেষ্টা নিয়েছেন। তবে মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে তিনি তার ভাষণে নতুন কোনও প্রস্তাব দেননি। ওবামা কেবল বলেন, ফিলিস্তিনিদেরকে সহিংসতা পরিহার করতে হবে। একই সঙ্গে তিনি তাদের প্রতি ইসরায়েলের অস্তিত্বের অধিকার স্বীকার করে নেওয়ার আহবান জানান। ইসরায়েল প্রসঙ্গে ওবামা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের ইহুদি বসতি স'াপন বৈধ বলে মানতে রাজি না। এই পদক্ষেপ পূর্ববর্তী চুক্তিগুলোর লঙ্ঘন এবং শান্তি প্রতিষ্টার চেষ্টায় বিঘ্ন ঘটাচ্ছে। এখন এ সমস্ত বসতি স'াপন বন্ধ করার সময়। ভাষণের আগে ওবামা মিসরের প্রেসিডেন্ট হোসনি মুবারকের সঙ্গে দেখা করেন। মুবারকের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এ অঞ্চলের মানুষের জন্য শান্তি ও সমৃদ্ধি বয়ে আনতে কিভাবে গঠনমূলক পথে এগিয়ে যেতে হয় তা নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। তিনি আরো বলেন, মুসলমানরা সবসময় যুক্তরাষ্ট্রের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসাবে ছিল। অভিন্ন অভিজ্ঞতা আমাদের আরো কাছে নিয়ে এসেছে। ওবামা নিজের মুসলিম শিকড়ের কথাও তুলে ধরে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রকে আজকের অবস'ানে আনতে মুসলিম সম্প্রদায়ও বড় ভূমিকা পালন করেছে। মুসলমানদের চমৎকার সব উদ্ভাবন পৃথিবীকে এগিয়ে নিতে অনেক বড় ভূমিকা রেখেছে। শৈশবে ইন্দোনেশিয়ায় থাকাকালে ভোরে আজানের মধুর শব্দ শুনে ঘুম ভাঙ্গার স্মৃতির কথাও তিনি ভাষণে উল্লেখ করেন। এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা মুসলিম বিশ্বের প্রতি যে ভাষণ দিয়েছেন তাতে ইসরাইল-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বিরাজমান টানা পোড়েনকে আরো তীব্র করবে বলে মনে করছেন ইসরাইলের কর্মকর্তারা। মতাঁর এই পদক্ষেপ এরই মধ্যে ইসরাইলের জন্য উৎকণ্ঠা এবং বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ওয়াশিংটনের সাথে বিরাজমান সম্পর্কের অবনতি ঘটতে পারে আশঙ্কা করে তেল আবিব এ ব্যাপারে সরকারীভাবে কোনো মন্তব্য করতে রাজী হয়নি। যুক্তরাষ্ট্র এর আগে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব মেনে নেয়ার এবং অধিকৃত ফিলিস্তিনে ইহুদিবাদীদের অবৈধ বসতি বন্ধের আহ্বান জানানোর ফলে ওয়াশিংটন- তেল আবিবের সম্পর্কের মধ্যে টানাপোড়েন শুরু হয়।

রোববার বিকেল পর্যন্ত মুলতবি বাজেট অধিবেশন শুরু বিরোধী দলের বয়কট

বিরোধী দলের অনুপস্তিতিতে নবম জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় অর্থাৎ বাজেট অধিবেশন শুরু হয়েছে। আসন নিয়ে সমঝোতা না হওয়ায় গতকাল বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া সংসদ অধিবেশনে যোগ দেয়নি বিরোধী দল। চলতি সংসদের নির্বাচিত সংসদ সদস্য মমতাজ ইকবালের মৃত্যুতে রেওয়াজ অনুযায়ী শোক প্রস্তাব গ্রহণের পর মাত্র ৩৫ মিনিটের মধ্যেই সংসদ অধিবেশন আগামী রোববার ৭ জুন বিকাল ৪টা পর্যন্ত মুলতবি করা হয়। খবর এনএনবির। বিকাল ৩টা ২৫ মিনিটে স্পিকার এডভোকেট আবদুল হামিদের সভাপতিত্বে দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হয়। উদ্বোধনী ভাষণে স্পিকার সংসদকে কার্যকর করতে সরকার ও বিরোধী দল ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এরপর সদ্য প্রয়াত সংসদ সদস্য মমতাজ ইকবাল, বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনার স্বামী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া, ভারতের রাষ্ট্রপতি শ্রী আর ভেঙ্কটারমনসহ মোট ১৬ জন নানা শ্রেণী-পেশার ব্যক্তিত্ব এবং ঘূর্ণিঝড় আইলার তাণ্ডবে নিহতদের স্মরণে আনা শোক প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। শোক প্রস্তাব গ্রহণের আগে নিহতদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে ১ মিনিট নীরবতা পালন শেষে মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য বজলুল হক হারুন। শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নেন আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, শেখ ফজলুল করিম সেলিম ও জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার। তারা প্রয়াত নেতাদের দীর্ঘ কর্মময় জীবনের ওপর আলোকপাত ছাড়াও শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। পরে সংসদ সদস্য মমতাজ ইকবালের সম্মানে সংসদের অধিবেশন আগামী ৭ জুন বিকেল ৪টা পর্যন্ত মুলতবি করা হয়। শোক প্রস্তাবের আগে স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের অনুপসি'তিতে সংসদ পরিচালনার জন্য ৫ সদস্যের সভাপতিমণ্ডলীর প্যানেল নির্বাচন করেন স্পিকার এডভোকেট আবদুল হামিদ। সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যরা হলেনণ্ড সাবেক আইনমন্ত্রী আবদুল মতিন খসরু, সাবেক প্রতিমন্ত্রী এইচ এন আশিকুর রহমান, জাতীয় পার্টির এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, বিএনপির এ কে এম হাফিজুর রহমান ও আওয়ামী লীগের সাবেক প্রতিমন্ত্রী জিনাতুন্নেছা তালুকদার। সংসদ কক্ষে আসন পুনর্বন্টন বিরোধী দল মেনে না নিলেও স্পিকার এডভোকেট আবদুল হামিদ তার ক্ষমতাবলে কয়েকটি আসন পুনর্বন্টন করেছেন। বিএনপির প্রধান খালেদা জিয়ার আসনের পাশে চারটি আসন রাখা হয়েছে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী, এম কে আনোয়ার, উপনির্বাচনে বিজয়ী সাবেক স্পিকার ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার ও ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের জন্য। প্রধানমন্ত্রীর পাশের আসনটি পেয়েছেন সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী। সামনের প্রথম ট্রেজারি বেঞ্চের শেষ আসনটি জাপার চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের ছিল। ওই আসনটি এখন পেয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা দেওয়ান ফরিদ গাজী। সামনের সারির দ্বিতীয় অংশের প্রথম দুটি আসন বরাদ্দ দেয়া হয়েছে এইচ এম এরশাদ এবং তার স্ত্রী জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম রওশন এরশাদকে। এজন্য অবশ্য জাপার অপর প্রেসিডিয়াম সদস্য ও বিমানমন্ত্রী জি এম কাদেরকে সামনের সারি থেকে দ্বিতীয় সারিতে যেতে হয়েছে। উদ্বোধনী ভাষণে স্পিকার এডভোকেট আবদুল হামিদ বলেন, ২৯ ডিসেম্বর অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত এ সংসদে এটাই প্রথম বাজেট। সরকারের নির্বাচনী ওয়াদা পূরণে বাজেট একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। আর জাতীয় জীবনে বাজেট একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল। আগামী এক বছরে সরকার জনকল্যাণে যেসব কর্মকাণ্ড পরিচালনা করবে তারই রূপরেখা থাকবে এ বাজেটে। স্পিকার বলেন, সংসদীয় গণতন্ত্রে সংসদই হচ্ছে সকল কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু। সংসদকে কার্যকর করতে হলে সরকারি ও বিরোধী দলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, জনগণ তাদের ভাগ্যোন্নয়নের লক্ষ্যে তাদের পছন্দমত প্রতিনিধিকে সংসদে পাঠিয়েছেন। তাই সংসদ সদস্যদের দায়িত্ব ও কর্তব্য হচ্ছে সে লক্ষ্যে কাজ করা। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, সরকারি ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্যদের গঠনমূলক দিকনির্দেশনা বাজেটকে বাস্তবমুখী, উন্নয়নবান্ধব এবং দলমত নির্বিশেষে সকলের ভাগ্যোন্নয়নের দলিলে পরিণত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তিনি সংসদ সদস্যদের কাজের সুবিধার জন্য সংসদ ভবনে অফিস রুম, নির্বাচনী এলাকায় কার্যালয়, সংসদ থেকে গাড়ির ব্যবস'া করার ঘোষণা দেন। এ সময় টেবিল চাপড়িয়ে সংসদ সদস্যরা স্পিকারের এমন ঘোষণাকে অভিনন্দিত করেন।
সংসদে বিরোধী দলের ব্রিফিং

সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশনের প্রথম দিন যোগ না দেয়ার কারণ ব্যাখ্যা করেন বিরোধী দলের চিফ হুইপ জয়নাল আবেদীন ফারুক। সংসদ ভবনের মিডিয়া সেলে আয়োজিত ব্রিফিংকালে তিনি বলেন, স্পিকার আমাদের আসন বন্টনের ব্যাপারে সম্মানজনক সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু এ বিষয়ে স্পিকার যে প্রস্তাব দিয়েছেন তা মোটেও সম্মানজনক নয়। তাই আজ (বৃহস্পতিবার) আমরা সংসদ অধিবেশনে যাচ্ছি না। আগামী সপ্তাহে সংসদীয় দলের বৈঠকে এ বিষয়ে পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন বলেন, স্পিকার আসন বন্টন নিয়ে তার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে এর সম্মানজনক সমাধান করবেন। কেননা আমরা সংসদকে কার্যকর করতে চাই, গঠনমূলক ভূমিকা রাখতে চাই।

নগর বিএনপিতে অস্থিরতা ভেঙে গেছে চেইন অব কমান্ড


চট্টগ্রামে বিএনপিতে অস্তিরতা শুরু হয়েছে। ভেঙে গেছে দলীয় চেইন অব কমান্ড। ভিন্ন-ভিন্ন ভাবে পালিত হচ্ছে দলীয় কর্মসূচি। মহানগর বিএনপির দলীয় কর্মসূচিতে অনেকে উপস্থিত না থেকে নিজেদের উদ্যোগে আলাদাভাবে কর্মসূচি পালন করছে। নগর বিএনপির কর্মসূচিতে না এসে আলাদা ভাবে কর্মসূচি পালন করায় বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতার উপর নগর বিএনপির আহবায়কসহ সিনিয়র নেতারা ক্ষুব্ধ। যারা আলাদাভাবে কর্মসূচি পালন করছেন তাদের কঠোর সমালোচনা করেছেন নগর বিএনপি নেতারা। নগর বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতা জানান, মহানগরীর দলীয় কর্মসূচিতে উপসি'ত না থেকে আলাদাভাবে কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করা হচ্ছে। নগর কমিটি থাকতে আলাদাভাবে কর্মসূচি পালন করে নগর কমিটিকে অবজ্ঞা করা হচ্ছে। সাম্প্রতিক শহীদ জিয়ার শাহাদাত বার্ষিকী অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামে একাধিক নেতার উদ্যোগে পৃথক কর্মসূচি পালিত হয়েছে। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব, সাবেক মন্ত্রী আবদুল্লাহ আল নোমানের নেতৃত্বে মহানগর বিএনপি শহীদ জিয়ার মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করলেও বিএনপি নেতা মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিনের নেতৃত্বে আলাদা কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। অপরদিকে বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর নেতৃত্বে পৃথক কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। একইসাথে বিগত জাতীয় নির্বাচনে কোতোয়ালী আসনের বিজিত নেতা মোঃ শামসুল আলম এবং বিএনপি নেতা ডাঃ শাহদাত হোসেনের নেতৃত্বে পৃথক কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। চান্দগাঁও-বোয়ালখালী এলাকায় বিএনপি নেতা মোঃ এরশাদ উল্লাহ’র নেতৃত্বেও পালিত হয়েছে পৃথক কর্মসূচি। জাতীয় নির্বাচনের পর থেকে নগর বিএনপিতে অসি'রতা শুরু হয়েছে। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব, সাবেক মন্ত্রী আবদুল্লাহ আল নোমানের নেতৃত্বে মহানগর বিএনপির কর্মসূচি চললেও চান্দগাঁও-বোয়ালখালী আসন থেকে বিজিত প্রার্থী মোঃ এরশাদ উল্লাহ’র নেতৃত্বে বহদ্দারহাট থেকে চান্দগাঁও এলাকায়, অপরদিকে কোতোয়ালী আসনের বিজিত প্রার্থী মোঃ শামসুল আলমের নেতৃত্বে কোতোয়ালী-বাকলিয়া এলাকায় দলীয় কর্মসূচি পালিত হয়ে আসছে। আলহাজ্ব মোঃ শামসুল আলমের সাথে রয়েছেন বাকলিয়া থানা বিএনপির সদস্য সচিব ডাঃ শাহাদাত হোসেন। এই দুই নেতা কোতোয়ালী আসন এলাকা দিন-রাত চষে বেড়াচ্ছেন। তাদের তৎপরতায় নাখোশ চট্টগ্রামের বিএনপির সিনিয়র নেতারা। ডাঃ শাহাদাত হোসেন এবং মোঃ শামসুল আলমের ঘনিষ্ঠ কয়েকটি সূত্র জানায়, কেন্দ্রের নির্দেশে তারা দলীয় কর্মসূচি পালন করছেন।

টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপ ক্রিকেট আজ শুরু

মহিটলার নাকি তার দেশে ক্রিকেটকে নিষিদ্ধ করেছিল দীর্ঘ সময় ধরে খেলতে হয় বলে। ইংল্যাণ্ডে বুড়োরা নাকি সময় কাটানোর মাধ্যম হিসেবে বেছে নেয় ক্রিকেট ম্যাচকে। টেস্ট ক্রিকেটকে তো ঘুম পাড়ানি মাসি-পিসির গান হিসেবে অভিহিত করে অনেকেই। কিন' কালের পরিক্রমায় ক্রিকেটে পরিবর্তন এসেছে। টেস্ট ক্রিকেট থেকে ৬০ ওভারের ম্যাচ। তারপর ৫৫ ওভার এবং যা শেষ পর্যন্ত ৫০ ওভারে এসে ঠেকে। যাকে ওয়ানডে ক্রিকেট হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। দীর্ঘদিন ধরে ৫০ ওভারের ম্যাচকে বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে দেখে আসছিল ক্রিকেটপ্রেমীরা। সেই ওয়ানডে ক্রিকেটেও নানাসময় নানা পরিবর্তন এসেছে। লক্ষ্য ছিল একটাই ক্রিকেটকে বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা। দীর্ঘ দিন ৫০ ওভারের ম্যাচ দেখতে দেখতে ক্রিকেটকে আরো কম দৈর্ঘ্যের করা যায় কিনা তা নিয়ে ভাবছিলেন বিশ্ব ক্রিকেটের কর্তা ব্যক্তিরা। শেষ পর্যন্ত বেরিয়ে এল একটি নতুন ধারণা। ক্রিকেটের ক্ষুদ্র পরিসর টুয়েন্টি টুয়েন্টি ক্রিকেট। ক্রিকেটের এই ধারা প্রবর্তনের স্বল্প সময়ের মধ্যে বিশ্বকাপও হয়ে গেল একটি। আজ শুরু হচ্ছে আরো একটি। আজ ক্রিকেটের মক্কা খ্যাত ইংল্যাণ্ডের লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে পর্দা ওঠবে টুয়েন্টি টুয়েন্টি ক্রিকেট বিশ্বকাপের দ্বিতীয় আসরের। আজ টুয়েন্টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপে ক্রিকেটের উদ্বোধনী ম্যাচে মুখোমুখি হবে হল্যাণ্ড এবং স্বাগতিক ইংল্যাণ্ড। বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে দশটায় স্টার ক্রিকেট সরাসরি সম্প্রসার করবে এ ম্যাচ। নয়টি টেস্ট খেলুড়ে দেশের বাইরে এবারের টুয়েন্টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপে অংশ নিচ্ছে হল্যাণ্ড, আয়ারল্যাণ্ড এবং স্কটল্যাণ্ড। তবে টেস্ট ক্রিকেটের সাবেক সদস্য জিম্বাবুয়ে এবং ওয়ান ডে ক্রিকেটের নিয়মিত সদস্য কেনিয়া এবারের টুয়েন্টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপে অংশ নেওয়ার সুযোগ পায়নি। এই দুটি দল গত আসরে খেলেছিল। ১২ দল, ১৬ দিন এবং ২৭ ম্যাচের এই টুর্নামেন্টের পর্দা নামবে ২১ জুন লর্ডসেই। সেদিন অনুষ্ঠিত হবে টুর্নামেন্টের ফাইনাল। ১২ দলের এই টুর্নামেন্টের গত আসরের চ্যাম্পিয়ন ভারত রয়েছে ‘এ’ গ্রুপে। আর রানার্স আপ পাকিস্তান রয়েছে ‘বি’ গ্রুপে। টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় দিন মাঠে নামবে বাংলাদেশ, আর বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারতের বিরুদ্ধে। এটি ভারতেরও প্রথম ম্যাচ। বর্তমান রানার্স আপ পাকিস্তান তাদের প্রথম ম্যাচ খেলতে নামবে ইংল্যাণ্ডের বিপক্ষে ৭ জুন। এবারের টুর্নামেন্টের ১২টি দল ৪টি গ্রুপে ভাগ হয়ে খেলছে। প্রতিটি গ্রুপ থেকে ২টি করে দল সুপার এইট পর্বে উন্নীত হবে। টুর্নামেন্টের মূল লড়াইটা জমবে আসলে সুপার এইট পর্বে। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারত, রানার্স আপ পাকিস্তান ছাড়াও এবারের টুয়েন্টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপের অন্যতম দাবিদার অষ্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলংকা সহ অন্যান্যরাও। আর নিজেদের কন্ডিশনে স্বাগতিক ইংল্যাণ্ডও ছেড়ে কথা বলবে না। দীর্ঘ দিনের বিশ্বকাপ স্বপ্নপূরণ করতে ইংল্যাণ্ড এবার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। অপর দিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স সন্তোষজনক না হলেও তাদের চোখ ও শিরোপার দিকে। ফলে টুর্নামেন্টের সুপার এইট পর্বটি যে জমজমাট হবে সেটা বলাই যায়। কারণ সেমিফাইনালে পৌঁছতে হলে সুপার এইট পর্বেই আসল লড়াইটা করতে হবে। ক্রিকেটের নতুন এবং স্বল্পতম সংস্করণ টুয়েন্টি-টুয়েন্টি ক্রিকেট এখন জনপ্রিয়তার তুঙ্গে। ক’দিন আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় শেষ হয়েছে আইপিএল। আর বাংলাদেশের চট্টগ্রামে শেষ হয়েছে পিসিএল। বিশ্বব্যাপী টুয়েন্টি-টুয়েন্টি ক্রিকেটের জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগাতে আইসিসি দুই বছর পরপর বিশ্বকাপের আয়োজন করছে। ক্রিকেটকে বলা হয় গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলা। আর টুয়েন্টি টুয়েন্টি ক্রিকেট তো আরো অনিশ্চয়তার খেলা। কারণ এ ধরনের ক্রিকেটে যে কোন দল যে কোন সময় হেরে বসতে পারে। আবার জিতেও যেতে পারে। আর সেই কারণেই টুয়েন্টি টুয়েন্টি ক্রিকেটে উত্তেজনাটা একটু বেশি। আর সে উত্তেজনার রসদ যোগাতে আজ থেকে মাঠে গড়াচ্ছে। টুয়েন্টি-টুয়েন্টি ক্রিকেট বিশ্বকাপ। বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টা সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা এবং রাত সাড়ে দশটায় শুরু হওয়া ম্যাচগুলো সরাসরি সম্প্রচার করবে স্যাটেলাইট চ্যানেল স্টার ক্রিকেট এবং ইএসপিএন।

ডা জাকির হোসেন হোমিওপ্যাথিক কলেজ কোনো ক্যাম্পাস নেই, ৩ দাবিতে আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা


আবারও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে ডা. জাকির হোসেন সিটি কর্পোরেশন হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে অধ্যয়নরত এক হাজার ছাত্রছাত্রীর ভবিষ্যৎ। চট্টগ্রামে ঐতিহ্যবাহী এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির এক হাজার ছাত্রছাত্রী গত ২৮ মে থেকে আন্দোলন করছে স্থায়ী বা অস্থায়ী একটি ক্যাম্পাসের দাবিতে। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেছেন, পূর্বের ক্যাম্পাস ভাঙার সময় সিটি কর্পোরেশন ও কলেজ অধ্যক্ষের রহস্যজনক ভূমিকা ছিল। মেমন হাসপাতালের অস্থায়ী ক্যাম্পাসে ক্লাস বন্ধের ঘোষণা দেওয়ার পরও সিটি মেয়র ও অধ্যক্ষের ভূমিকা রহস্যজনক। অস্থায়ী ক্যাম্পাসে ক্লাস করার সুযোগ দানের পাশাপাশি স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের দাবিতে শিক্ষার্থীরা গতকাল ৪ জুন থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত মানববন্ধন, জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান, মতবিনিময় সভা, সংহতি সমাবেশ, সংবাদ সম্মেলন ও প্রতীকী অনশন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। জানা যায়, ১৯৩০ সালে সদরঘাট রোডে স্থাপিত জাকির হোসেন হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল ক্যাম্পাস আদালতের নির্দেশে গত ১৯ মার্চ ভেঙ্গে ফেলা হয়। আদালতের নির্দেশে পুলিশ ও জায়গার প্রকৃত মালিকগণ ভাঙ্গার সময় হাসপাতালের বিভিন্ন যন্ত্রপাতির ব্যাপক ক্ষতি করে। পরবর্তীতে সিটি কর্পোরেশন নগরীর সদরঘাট রোডস্থ মেমন হাসপাতাল ক্যাম্পাসে জাকির হোসেন কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম অস'ায়ীভাবে পরিচালনার নির্দেশ দেয়। উক্ত ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রম দুই মাস পরিচালিত না হতেই বিকল্প ক্যাম্পাস নির্ধারণ ছাড়া গত ২৮ মে থেকে মেমন হাসপাতালে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করার নির্দেশ দেন মেয়র। ক্যাম্পাসে অধ্যয়নরত এক হাজার শিক্ষার্থী ওইদিন থেকে সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত প্রতিদিন মেমন হাসপাতাল ভবনে অবস্থান ধর্মঘট করতে থাকে। ছাত্রদের আন্দোলনের পরও শিক্ষা কার্যক্রম চালুর ব্যাপারে সিটি কর্পোরেশন নীরব থাকায় আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। তিন দফা বাস্তবায়নের দাবিতে গতকাল প্রেস ক্লাবের সামনে কলেজের ছাত্রছাত্রীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে। তিন দফা দাবি হচ্ছেণ্ড ১. কলেজের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্ধারণ করে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল উপযোগী ভবন নির্মাণ করা। ২. দায়িত্বহীন, অযোগ্য ও দুর্নীতিবাজ অধ্যক্ষের পদত্যাগ। ৩. স্থায়ী ক্যাম্পাস না হওয়া পর্যন্ত বর্তমান অস্থায়ী ক্যাম্পাস মেমন হাসপাতাল ইউনিট-২ এ শিক্ষা কার্যক্রম চালানোর সুযোগ দান। গতকাল প্রেস ক্লাব চত্বরে ছাত্রছাত্রীদের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে মানববন্ধন কর্মসূচিতে বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র ফেডারেশন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন, যুব ইউনিয়ন প্রমুখ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন। মানববন্ধন কর্মসূচি পালন শেষে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করে প্রেস ক্লাব থেকে জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে গিয়ে জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেন। এ ব্যাপারে ডা. জাকির হোসেন হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. রাশেদা আকতার গতকাল দৈনিক আজাদীকে বলেন, সিটি কর্পোরেশনের নির্দেশে এখানে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে। পরবর্তীতে কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

লে. জেনারেল মুবিন নতুন সেনাপ্রধান


সরকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল আব্দুল মুবিন চৌধুরীকে নতুন সেনাপ্রধান নিয়োগ দিয়েছে। আগামী ১৫ জুন বর্তমান সেনাপ্রধান জেনারেল মইন উ আহমেদের মেয়াদ শেষ হলে মুবিন তার স'লাভিষিক্ত হবেন। খবর বিডিনিউজ ও এনএনবির। ২০০৫ সালের ১৫ জুন ৩ বছরের জন্য মইন উ আহমেদকে সেনাপ্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এরপর ২০০৮ সালে ৬ এপ্রিল তার চাকরির মেয়াদ তৎকালীন তত্ত্বাবাবধায়ক সরকার এক বছর বাড়ায়। যা গত বছরের ১৫ জুন থেকে কার্যকর হয়। ২০০৭ সালের ২৪ মে মইন জেনারেল পদে পদোন্নতি পান। লে. জেনারেল মুবিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, মুবিনের পরিবারের সদস্য ও তার বন্ধুরা ফোনে তাকে অভিনন্দন জানাচ্ছে। মুবিন ১৯৭৩ সালের ৩০ নভেম্বর বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি থেকে কমিশন লাভ করেন। এদিকে সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল মইন উ আহমেদ, বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার মার্শাল এস এম জিয়াউর রহমান এবং ট্রাস্ট ব্যাংক পরিচালক ইকবাল ইউ আহমেদ প্রধানমন্ত্রীর তেজগাঁও কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেন।

হাধুরখীলে নলকূপ দিয়ে গ্যাস উঠছে


হাটহাজারীর ২নং ধলই ইউনিয়নের হাধুরখীল গ্রামের পূর্ব শরীফ বাড়ির জনৈক মোঃ ইউসুফ শরীফের রান্না ঘরের নলকূপে গ্যাস উঠছে। দিয়াশলাইয়ের কাঠি জ্বালালে তাতে আগুন জ্বলে উঠে। এই ঘটনা দেখার জন্য অসংখ্য উৎসুক মানুষ ওই বাড়িতে ভিড় করছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ওই বাড়িতে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়। মোঃ ইউসুফ শরীফের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, চার বছর আগে ওই বাড়ির রান্না ঘরে পানীয় জলের জন্য একটি নলকূপ স্থাপন করা হয়। স্থাপনের পর থেকে ওই পরিবারের লোকজন নলকূপটি ব্যবহার করে আসছে। মাস দুয়েক আগে মোঃ ইউসুফ শরীফের মেয়ে নাসরিন আকতার শরীফ রাত্রে নলকূপটি থেকে পানি তুলতে যায়। ঘরে বিদ্যুৎ না থাকায় নাসরিন নলকূপের মাথায় জ্বলন্ত মোমবাতি রেখে নলকূপে চাপ দিলেই হঠাৎ ধপ করে আগুন জ্বলে উঠে। জানা যায়, চার পাঁচ মাস আগ থেকেই নলকূপটি দিয়ে খুব কম পানি উঠতে থাকে। ওই ঘটনার পর থেকে পরিবারটি পার্শ্ববর্তী ঘর থেকে পানি ব্যবহার করতে থাকে। গত ৬/৭ দিন পূর্বে পুনরায় নলকূপটিতে পানি উঠানোর জন্য চাপ দিলে গ্যাসের গন্ধ পাওয়া যায়। পরে তারা দিয়াশলাইয়ের কাঠি জ্বালিয়ে নলকূপের মাথায় নিলে আগুন জ্বলে উঠে। এই সংবাদ দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে এলাকার উৎসুক লোকজন ঘটনা দেখতে ছুটে আসে। গত বুধবার (৩ জুন) ২নং ধলই ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ হারুন অর-রশীদ ওই বাড়িতে গিয়ে ঘটনা পর্যবেক্ষণ করেন। নলকূপটিতে আগুন জ্বালিয়ে দিলে এক-দেড় মিনিট পর্যন্ত আগুন স'ায়ী হয়। এই ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। হাটহাজারী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আবদুল খালেক বিষয়টি অনুসন্ধানের জন্য পেট্রো বাংলার ব্যবস্থাপককে জানাবেন বলে জানান।

অফিস করেছেন সোহেল তাজ, পদত্যাগের কথা অস্বীকার

পদত্যাগপত্র দেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ। পদত্যাগের গুঞ্জনের বিষয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার নিজ কার্যালয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, যা এক্সিস্ট (অস্তিত্ব) করে না। তা বাস্তবায়িত হবে কীভাবে? তানজিম জানান, ছুটি মঞ্জুর হলেও সংসদে বাজেট অধিবেশন শুরু হওয়ায় আপাতত তিনি ছুটিতে যাচ্ছেন না। কয়েকদিন পর গতকাল নিজের কার্যালয়ে গেলেন তানজিম। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যান। এর পরপরই প্রতিমন্ত্রীর একান্ত সচিব মোজাক্কের আলীকে কিছু ফাইল-পত্র নিয়ে তানজিম আহমেদের কক্ষে ঢুকতে দেখা যায়। এরপর তার কক্ষে ঢোকেন স্বরাষ্ট্র সচিব আব্দুস সোবহান সিকদার। খবর বিডিনিউজের। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তানজিম সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তানজিম বলেন, অসুস'তার কারণে কয়েকদিন অফিস করতে পারিনি। এখন কিছুটা সুস' বোধ করায় অফিসে এসেছি। পদত্যাগের গুঞ্জনের বিষয়ে তানজিম বলেন, পদত্যাগের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। এ ধরনের খবর প্রকাশে আমি হতাশ হয়েছি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন মঙ্গলবার জানান, প্রতিমন্ত্রী ৬ থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত ছুটিতে যাচ্ছেন। এ বিষয়ে তানজিম বলেন, ছুটি মঞ্জুর হয়েছে। তবে সংসদ অধিবেশন শুরু হচ্ছে। মন্ত্রণালয়েও কাজ আছে। তাই এখন ছুটিতে যাচ্ছি না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কোনো ধরনের বিরোধ নেই দাবি করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, উনাকে আমি শ্রদ্ধা করি। আমাদের কোনো বিরোধ নেই। এটা আমি উপলব্ধি করি। মন্ত্রণালয়ে কেউ অসহযোগিতা করছে কিনা- প্রশ্ন করা হলে তানজিম বলেন, না এ ধরনের কোনো ঘটনা নেই। তবে সব ক্ষেত্রেই প্রতিবন্ধকতা আসতে পারে। তা কাটিয়ে উঠতে হবে। আমরা দিন বদলের জন্য কাজ করছি। পরিবর্তন আনতে চাইলে নিজেদের পরিবর্তিত করতে হবে। ত্যাগের মনোভাব নিয়ে কাজ করতে হবে। বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে সরকারের নীতি-নির্ধারকদের সঙ্গে প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে বিরোধ ছিল বলে সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়। তবে তানজিম বলেন, বিচার বহির্ভূত কোনো কর্মকাণ্ড এ সরকারের সময়ে ঘটেনি, ঘটবেও না। কোনো অনিয়ম হলে আমরা তদন্ত করে দেখব। গত রোববার থেকে তানজিম অফিসে অনুপস্থিত ছিলেন। সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকেও তিনি যাননি। এরপর থেকেই তার পদত্যাগের গুঞ্জন শুরু হয়। বুধবার সন্ধ্যায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে যান। এরপর রাতে তানজিমের নির্বাচনী এলাকা কাপাসিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন সাংবাদিকদের জানান, বৃহস্পতিবার থেকে প্রতিমন্ত্রী নিয়মিত অফিস করবেন।

সংসদে প্রশ্নোত্তরে অর্থমন্ত্রী জোট সরকার তারেকের ১২ কোটি টাকার সুদ মওকুফ করে

বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় আসার ছয় দিনের মাথায় ২০০১ সালের ১৬ অক্টোবর বিএনপির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব তারেক রহমানের মালিকানাধীন ড্যান্ডি ডাইংয়ের নামে ১২ কোটি ১৬ লাখ ৮৩ হাজার ১১৯ টাকা সুদ মওকুফ করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে সাংসদ মহিবুর রহমান মানিকের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত একথা জানান। খবর এনএনবির। ড্যান্ডি ডাইংয়ের নামে বর্তমানে ৪০ কোটি ৬৪ লাখ টাকা ব্যাংক ঋণ রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের চলতি বছরের ঋণ তথ্য ব্যুরোর (সিআইবি) গত মার্চ মাসে পাওয়া তথ্য থেকে একথা জানা গেছে।জানা গেছে, ২০০১ সালে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসার সময় ড্যান্ডি ডাইংয়ের নামে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকে ৩৬ কোটি টাকা খেলাপী ঋণ ছিল। ক্ষমতায় আসার ছয় দিনের মাথায় ১ কোটি ৮৩ লাখ টাকা এককালীন জমা দিয়ে তারা ১২ কোটি টাকা সুদ মওকুফ করিয়ে নেন। একই সঙ্গে ২০০৮ সাল পর্যন্ত তারা ঋণের টাকা পরিশোধের মেয়াদ বাড়িয়ে নেন। জানা যায়, ১৯৯০ সালে ড্যান্ডি ডাইংয়ের নামে প্রথমে সোনালী ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া হয়। পরবর্তীতে চলতি মূলধন হিসেবে ঋণ নেওয়া হতে থাকে। ওই সময় তাদের খেলাপী ঋণের মধ্যে সাড়ে ১৫ কোটি টাকা ছিল মূল ঋণ। আর বাকিটা সুদ।

বিশ্ব পরিবেশ দিবস আজ


আজ বিশ্ব পরিবেশ দিবস। শিল্প কারখানা থেকে নির্গত কার্বন ডাই অক্সাইড ও ক্ষতিকারক বায়ুকণা প্রতিরোধ করে আধুনিক বাসযোগ্য পৃথিবী গড়তে বিশ্ব পরিবেশ দিবসে এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় তোমার পৃথিবী, তোমাকেই চায়। মানুষের ক্রমাগত চাহিদা বৃদ্ধি, শিল্প উন্নয়ন ইত্যাদি কারণে বিশ্ব আজ বিপর্যস্ত। বিশ্ব পরিবেশ রক্ষায় ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দের জুনে সুইডেনের স্টকহোমে মানব পরিবেশের উপর প্রথম জাতিসংঘের সম্মেলনে বিশ্ব পরিবেশ রক্ষায় ব্যাপক আলোচনা করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বব্যাপী জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ২৭তম অধিবেশনে প্রতিবছর ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। পরিবেশ দিবস উপলক্ষ্যে চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তর ১ জুন থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে। আজ দিবসটি পালন উপলক্ষ্যে সকাল দশটা থেকে মুসলিম ইনস্টিটিউটে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। সকাল আটটায় এম এ আজিজ স্টেডিয়াম জিমনেসিয়াম প্রাঙ্গণ থেকে সমাবেশ শেষে পদযাত্রার আয়োজন করা হয়েছে। পদযাত্রা মুসলিম ইনস্টিটিউটে এসে সমাপ্ত হবে। পদযাত্রায় শিশু-কিশোর সংগঠন, এনজিও, গার্লস গাইড, স্কাউট, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করবেন। পদযাত্রা সমাবেশে প্রধান অতিথি থাকবেন বিভাগীয় কমিশনার এম এ এন ছিদ্দিক। মুসলিম ইনস্টিটিউট সমাবেশে প্রধান অতিথি থাকবেন সিটি মেয়র আলহাজ্ব এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী। বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষ্যে খেলাঘর চট্টগ্রাম মহানগর ডি সি হিল প্রাঙ্গণে দিনব্যাপী দেশীয় ফল উৎসবের আয়োজন করেছে। এ উৎসব সকাল সাড়ে ৯ টায় উদ্বোধন করবেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদ উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী। বিকাল ৪ টায় আলোচনা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এডভোকেট সুলতানা কামাল। উৎসবে অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে থাকবে ফল চেনা ও চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, ফল ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী, লোকজ বাদন, কবিগান, লোকগান, নৃত্য, আবৃত্তি। এছাড়া সকল শিশুর জন্য লোক উৎসব ও পুরাতনী মেলা পরিষদ মক্ত খাই যঅ (বিনামূল্যে খেয়ে যাও) এবং পরিবেশ আন্দোলন / চট্টগ্রাম মক্ত লই যঅন্‌ (বিনামূল্যে নিয়ে যান) নামে দুটি স্টল প্রদান করবে।