হুমকির মুখে অটোমেশন ।। আগের মতো আইজিএম ইজিএম কপি কাস্টমসে জমার নির্দেশ, চেম্বারের প্রতিবাদ

হুমকির মুখে পড়েছে চট্টগ্রাম কাস্টমসের স্বয়ংক্রিয় শুল্কায়ন পদ্ধতি। সম্প্রতি কাস্টমসে গিয়ে আগের মতো আইজিএম এবং ইজিএমের কাগজ জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। সংশ্লিষ্টরা আশঙ্কা করেছেন, এ অবস্থায় কাস্টমস আগের পদ্ধতিতে ফিরে যাবে। চট্টগ্রাম চেম্বার এর প্রতিবাদ করেছে।
শুল্ক ফাঁকি রোধ, রাজস্ব আয় বাড়ানো এবং আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য চট্টগ্রাম কাস্টমসে স্বয়ংক্রিয় শুল্কায়ন পদ্ধতি (অটোমেশন) চালু করা হয়েছিল গত বছরের আগস্টে। এতে ঘরে বসে শুল্কায়ন সম্পন্ন করা যেত এবং কাস্টমসের কাজে গতিও এসেছিল। ডিজিটাল বাংলাদেশের বাস্তবায়নের স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে সরকার যখন নানামুখী পদক্ষেপ নিচ্ছে তখন কাস্টমস কর্তৃপক্ষের এই ধরনের নির্দেশ সরকারের লক্ষ্য অর্জনের পথে একটি বড় অন্তরায় হবে। চেম্বারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে যে, চট্টগ্রাম কাস্টমসকে আবারো দুর্নীতির আখড়া বানানোর জন্যই এই ধরনের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের প্রবেশদ্বার চট্টগ্রাম বন্দর। এই বন্দরের মাধ্যমে প্রতিবছর গড়ে প্রায় ষাট হাজার কোটি টাকার পণ্য আমদানি করা হয়। বিপুল এই কর্মযজ্ঞ দেশের রাজস্ব আয়ের বড় অংশের জোগান দেয়। ২০০২ সাল থেকে এসাইকোডা প্লাস প্লাস সিস্টেমের মাধ্যমে চট্টগ্রাম কাস্টমসে শুল্কায়ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। এই সিস্টেম চালু রাখার পেছনে প্রতি বছর প্রায় তিন কোটি টাকা খরচ হতো। এসাইকোডা প্লাস প্লাস সিস্টেমে শুল্কায়ন করা হলেও এতে নানা ধরনের ফাঁক ফোকর থেকে যায়। কোটি কোটি টাকার শুল্ক ফাঁকির ঘটনাও ঘটতে থাকে। বিদেশ থেকে আমদানিকৃত পণ্যের চালানের ব্যাপারে কাস্টমস কী করছে তা সিএন্ডএফ এজেন্ট জানে না। আবার সিএন্ডএফ কী করছে তা আমদানিকারক জানেন না। ফলে নানা ধরনের অনিয়ম এবং অব্যবস্থাপনায় সরকারের কোটি কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছিল সাধারণ ভোক্তাদেরকেও নানাভাবে চড়া মূল্য পরিশোধ করতে হতো।
এসব অব্যবস'া ঠেকানোর পাশাপাশি রাজস্ব আয় বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে যৌথবাহিনীর উদ্যোগে অটোমেশন পদ্ধতি চালু (৮ আগস্ট, ২০০৮) করা হয়। এই পদ্ধতির ফলে ঘরে বসে আইজিএম ইজিএম দাখিল করার সুযোগ সৃষ্টি হয়। এই পদ্ধতির ফলে বিল অব এন্ট্রি দাখিল করার সাথে সাথে পুরো তথ্য কম্পিউটার নেটওয়ার্কে চলে যায়। এতে সংশ্লিষ্ট সকলেই যখন ইচ্ছে তখনি চালানটির ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে পারেন। কত টাকা ট্যাক্স আসলো বা কত টাকা পরিশোধ করা হলো সেই সব তথ্য নিমিষেই জানা যায়। ১৯৯৩ সাল থেকে এই পদ্ধতি চালুর জন্য নানাভাবে চেষ্টা করেও সরকার ব্যর্থ হয়েছিল। যৌথবাহিনী এবং চট্টগ্রাম চেম্বার মাত্র তিন কোটি টাকা খরচ করে এই পদ্ধতি চালু করে। প্রযুক্তিগত কিছু সমস্যা সৃষ্টি হলেও গত দশ মাস ধরে অটোমেশন পদ্ধতিতে শুল্কায়ন কার্যক্রম চলে আসছিল। এতে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে অনেক বেশি স্বচ্ছতা নিশ্চিত হয়েছিল। কিন' সম্প্রতি চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ অনলাইনে আইজিএম দাখিল করার পাশাপাশি দুই কপি হার্ড কপি কাস্টমস অফিসে জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে। অনলাইনে আইজিএম দাখিলের সুবিধার জন্য বহুল প্রত্যাশিত অটোমেশন চালু করা হয়েছে। যদি কাস্টমস অফিসে গিয়ে কাগজ জমা দিতে হয় তাহলে আর অটোমেশনের দরকার কি ছিল। এই প্রশ্ন করেছেন চট্টগ্রাম চেম্বারের প্রেসিডেন্ট এম এ লতিফ এমপি। চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনারের কাছে লিখিত একটি পত্রে সংঘবদ্ধ একটি চক্র কাস্টমসকে আবারো দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করার জন্যই এমন নির্দেশ জারি করেছেন বলেও তিনি মন্তব্য করেন। পত্রের কপি অর্থমন্ত্রী এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ শীর্ষ পর্যায়ে প্রেরণ করা হয়েছে। চট্টগ্রাম চেম্বারের পক্ষ থেকে প্রেরিত চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রযুক্তির এই উৎকর্ষের যুগে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজ কর্তৃক জারি করা এই নির্দেশকে নৈরাজ্য আর দুর্নীতির পূর্বাবস'ায় ফিরে যাওয়ার প্রথম ধাপ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যকে জিম্মি করার জন্য এমনটি করা হচ্ছে বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। সরকার যেখানে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির জন্য আমলাতান্ত্রিক ধাপ কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে সেখানে নতুন জটিলতা সৃষ্টি করার যে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে তাতে স্টেকহোল্ডারেরা শংকিত বলেও পত্রটিতে উল্লেখ করা হয়।

দাউদ ইব্রাহীমের সহযোগী দাউদ মার্চেন্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গ্রেপ্তার



গোয়েন্দা পুলিশ ভারতীয় শীর্ষ সন্ত্রাসী আব্দুল রউফ দাউদ মার্চেন্টকে বুধবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। মাফিয়া ডন দাউদ ইব্রাহীমের সহযোগী আব্দুল রউফ দাউদ মার্চেন্ট মোহাম্মদপুরে জাহিদ নামে আরেক ভারতীয় নাগরিকের সঙ্গে বাসা ভাড়া নেন। বাংলাদেশী পাসপোর্টও যোগাড় করে সে। তার মোবাইলের কল লিস্টে পাকিস্তান ও দুবাইয়ে কথা বলার রেকর্ড মিলেছে।
বিখ্যাত ভারতীয় মিউজিক কোম্পানি টি-সিরিজের মালিক গুলশান কুমার হত্যা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত আবদুর রউফ ওরফে দাউদ মার্চেন্টকে মামলায় তাকে দশ বছরের কারাদণ্ড দেয় মুম্বাইয়ের একটি আদালত। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল মঙ্গলবার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশের সহায়তায় শহরের মৌড়াইল মহল্লার কামাল মিয়ার বাড়ি থেকে তাকে আটক করে। খবর ইউএনবি ও বিডিনিউজের।
আবদুর রউফ ওরফে দাউদ মার্চেন্টের সঙ্গে কুখ্যাত মাফিয়া ডন দাউদ ইব্রাহীমের ‘যোগাযোগ’ রয়েছে বলে পুলিশ তার মোবাইল কল লিস্ট পরীক্ষা করে ধারণা করছে। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশকে উদ্ধৃত করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট মুখলেছুর রহমান গতকাল বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের জানান, দাউদ মার্চেন্ট সম্প্রতি আখাউড়া সীমান্ত দিয়ে গোপনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে এসে বসবাস শুরু করে। এরই মধ্যে বাংলাদেশি পাসপোর্টও তৈরি করে ফেলেছে সে।
গোপনে সংবাদ পেয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি বিশেষ দল মঙ্গলবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আসে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা জেলা পুলিশের সহায়তায় শহরের মৌড়াইল এলাকার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে দাউদ মার্চেন্টকে গ্রেপ্তার করে। তাকে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে বাড়ির মালিক কামাল মিয়াকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
মুখলেছুর রহমান জানান, আটকের পরপরই দাউদ মার্চেন্টকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদ এবং মোবাইল ফোনের কললিস্ট পরীক্ষা করে পুলিশ ধারণা করছে তার সঙ্গে মাফিয়া ডন দাউদ ইব্রাহীমসহ আরো অনেক ‘কুখ্যাত’ ব্যাক্তির যোগাযোগ রয়েছে।
দাউদ মার্চেন্টকে আশ্রয় দেওয়া বাড়ির মালিক কামালের স্ত্রী ফেরদৌসী জানান, ৩/৪ দিন আগে দাউদ মার্চেন্ট তাদের বাসায় ওঠে। নিজেকে মোজাহিদ নামে পরিচয় দিয়ে সে ঢাকায় গাড়ির যন্ত্রাংশের ব্যবসা করে বলে জানায়। ফেরদৌসী জানান, আখাউড়ার জনৈক বিল্লাল মিয়ার মাধ্যমে তার স্বামী কামালের সঙ্গে মোজাহিদের পরিচয় হয়। মার্চেন্টের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সম্পর্কে তারা কিছুই জানতেন না।
এদিকে ঢাকা মহানগর পুুলিশ এবং গোয়েন্দা পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা দাউদ মার্চেন্টকে গ্রেপ্তার করার ব্যাপারে কোন মন্তব্য করেননি। তবে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সহকারী কমিশনার (এসি) খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, ১৯৯৭ সালের ১২ আগস্ট খুন হন গুলশান কুমার। সঙ্গীত পরিচালক নাদিম সাইফি তাকে হত্যা করার জন্য আবু সালেমকে ভাড়া করে। অবশেষে আবু সালেমের সহযোগী দাউদ মার্চেন্ট তাকে হত্যা করে। হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই পলাতক রয়েছে নাদিম সাইফি।
নাদিম সাইফি বিখ্যাত সঙ্গীত পরিচালক যুগল নাদিম-শ্রাবণ এর একজন। আবু সালেম দাউদ ইব্রাহিমের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত। গুলশান কুমার হত্যা মামলায় ২০০১ সালে দাউদ মার্চেন্টকে দশ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ভারতীয় আইন অনুযায়ী, গত মাসে স্বজনদের সঙ্গে দেখা করার জন্য তাকে এক পক্ষের (১৫ দিন) জন্য সাময়িক মুক্তি দেওয়া হয়।
এরপর থেকে মার্চেন্ট মুম্বা থানায় নিয়মিত হাজিরা দিত। কিন' এক সপ্তাহ পরই থানায় রিপোর্ট করা বন্ধ করে দেয় দাউদ মার্চেন্ট।
কে এই দাউদ মার্চেন্ট
দাউদ মার্চেন্ট আব্দুর রউফ নামে পরিচিত। মুম্বাইয়ের অপরাধ জগৎ নিয়ন্ত্রণকারী দাউদ ইব্রাহিমের পরিবারে তার জন্ম। বেড়ে ওঠার পর থেকেই তিনি অপরাধ জগতের সাথে পরিচিত হন। মুম্বাইয়ের বস্তি থেকে শুরু করে চলচ্চিত্র পুরোটাই নিয়ন্ত্রণ করতো দাউদ পরিবার। এর সঙ্গে যুক্ত হন মুম্বাইয়ের অপরাধ জগতের দুই ডন আবু সালেম আর ছোটা শাকিল। শাকিলের নেটওয়ার্ক ভারতের দিল্লী, মুম্বাই, কলকাতা, ব্যাঙ্গালোর, নেপালের কাঠমান্ডু, বাংলাদেশের ঢাকা, পাকিস্তানের করাচি আর মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশেও রয়েছে।
অডিও ব্যবসায়ী গুলশান কুমার হত্যার ঘটনায় দাউদ মার্চেন্টের নাম অপরাধ জগতে প্রকাশ হয়ে পড়ে। ২০০১ সালের ৮ জানুয়ারি কলকাতায় ছোটা শাকিলের ঘাঁটি থেকে পুলিশ দাউদ মার্চেন্টকে গ্রেপ্তার করে। জিজ্ঞাসাবাদে দাউদ মার্চেন্ট সঙ্গীত পরিচালক গুলশান কুমার হত্যার পুরো ঘটনা স্বীকার করেন। প্রকাশ ভারতের হিন্দু উগ্রবাদী শিব সেনা ব্যাল থ্যাকারের সংগঠন আরএসএস’কে বিলিয়নিয়ার গুলশান কুমার আর্থিকভাবে সহযোগিতা করতেন। তাই দাউদ ইব্রাহিম তখন গুলশান কুমারকে খুন করার পরিকল্পনা নেয়।

অস্ত্র চোরাচালানের বিষয়টি লিয়াকত ভালোভাবেই জানেন : পিপি ।। চার দিনের রিমান্ডে মেজর (অব.) লিয়াকত ।। জিজ্ঞাসাবাদ শুরু দশ ট্রাক অস্ত্র মামলা

দশ ট্রাক অস্ত্র মামলায় জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস'ার (এনএসআই) গ্রেপ্তারকৃত সাবেক উপ পরিচালক (টেকনিক্যাল) মেজর (অব.) লিয়াকত হোসেনকে চারদিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে সিআইডি পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট এম আসাদুজ্জামান খানের আদালতে শুনানি শেষে তাকে রিমান্ডে নেয়া হয়। বিকেলে দামপাড়াস' সিআইডি কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে লিয়াকতকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে সিআইডি।
এদিকে চট্টগ্রাম কারাগারে থাকা এই মামলার অপর আসামি মেজর জেনারেল (অবঃ) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরীকে আগামী রোববার টিএফআই সেলে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঢাকায় নেয়া হবে। রেজ্জাকুল হায়দার বর্তমানে ৬ দিনের রিমান্ডে রয়েছেন। আদালত থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী গতপরশু বুধবার বিকেলে লিয়াকতের পাঁচদিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন জানান তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির সিনিয়র এএসপি মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান চৌধুরী।
জবাবে আদালতের বিচারক তাকে চারদিনের রিমান্ডে দিয়ে সতর্কতার সাথে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেন। এর আগে রিমান্ড আবেদনের উপর বিস্তারিত শুনানিতে অংশ নিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলী মহানগর পিপি কামাল উদ্দিন আহম্মেদ আদালতকে বলেন, অস্ত্র ধরা পড়ার কয়েক ঘণ্টাপর মেজর লিয়াকত তার ঊর্ধ্বতন অফিসার এনএসআইএর পরিচালক মোহাম্মদ শাহাবুদ্দীন আহমেদকে (গ্রেপ্তারকৃত) জানান।
তিনি আরো বলেন, অস্ত্র ধরা পড়ার আগের দিন লিয়াকত শাহাবুদ্দীনের মোবাইল নিয়ে শাহাবুদ্দীনের নাম্বারগুলো নিজের নাম্বারে ডাইভার্ট করেছেন বলে তথ্য রয়েছে। আর শাহাবুদ্দীনের জবানবন্দীতেও এই লিয়াকতের নাম এসেছে। সুতরাং অস্ত্র চোরাচালানের বিষয়টি লিয়াকত ভালভাবেই জানেন। তাই তাকে রিমান্ডে নিয়ে অস্ত্র চোরাচালানের বিস্তারিত তথ্য উদঘাটন করা এদেশের নিরাপত্তার স্বার্থে জরুরি।
এসময় মেজর লিয়াকতের আইনজীবী এডভোকেট মোহাম্মদ আবুল হাসান আদালতে যুক্তি উপস'াপন করে বলেন, শাহাবুদ্দীনের চেয়ে জুনিয়র অফিসার হয়েও লিয়াকত কিভাবে তার মোবাইল নাম্বার ডাইভার্ট করলেন তা আমাদের বোধগম্য নয়। তাছাড়া দুজনের কাজের ক্ষেত্রও ভিন্ন। অতএব নির্যাতন ও সম্মানহানি করতেই তাকে রিমাণ্ডে নেয়ার আবেদন করা হয়েছে। তিনি রিমাণ্ড আবেদন বাতিল করার আবেদন জানান। কিন্তু আদালত তার আবেদন অগ্রাহ্য করেন। কারাগারে ডিভিশন ও চিকিৎসা চেয়ে করা আবেদনের প্রেক্ষিতে কারাবিধি অনুযায়ী ব্যবস'া নেয়ার নির্দেশ দেন বিচারক।
এসময় মেজর লিয়াকতের জামিনের আবেদন জানিয়ে এডভোকেট হাসান বলেন, এই মামলায় ৩৬ জন আসামী বর্তমানে জামিনে আছেন। সুতরাং আমার মক্কেলকেও জামিন দেয়া হোক। জামিন পেলে তিনি পালিয়ে যাবেন না। জবাবে বিচারক জামিনের আবেদন নাকচ করেছেন। এদিকে একইভাবে রেজ্জাকুল হায়দারেরও জামিন এবং ডিভিশন চাওয়া হয়েছে। বিচারক জামিন না মঞ্জুর এবং কারাবিধি অনুযায়ী ডিভিশন নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন। এসময় তার আইনজীবী এডভোকেট তারিক আহমেদ আদালতকে জানান, গত ২০ মে রেজ্জাকুল হায়দারকে আবদুর রহিমের সাথে ৬ দিনের রিমাণ্ডে নেয়া হয়। কিন' তাকে আজও জিজ্ঞাসাবাদ না করে কারাগারে রাখা হয়েছে। এটা নিয়মনীতির লংঘন। অথচ মামলার এজাহার ও আসামীদের জবানবন্দীর কোথাও রেজ্জাকুলের নাম আসেনি।
বিচারক এম আসাদুজ্জামান তদন্ত কর্মকর্তা মনিরুজ্জামানকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বিচারককে জানান, রেজ্জাকুলকে আগামী রোববার থেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এদিকে আদালতের অনুমতি নিয়ে রিয়াকতের আইনজীবী এডভোকেট হাসান কোর্ট ইন্সপেক্টরের কামরায় তার সাথে আধঘন্টা কথা বলেন। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, অস্ত্র আটকের সময় লিয়াকত লন্ডনস' বাংলাদেশ দূতাবাসে ছিলেন।

অফিসার সেজে আসামী ধরার নামে ছিনতাইকালে পুলিশ কনস্টেবল আটক



পুলিশ অফিসার সেজে আসামী ধরার নাটক করে ছিনতাইকালে সেনাসদস্যদের হাতে ধরা পড়েছে পুলিশের মো: মাসুদ নামের এক কনস্টেবল। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটায় হাটহাজারী থানাধীন কাপ্তাই রাস্তার কুয়াইশ-বুড়িশ্চর সংযোগ সড়কে এই ঘটনা ঘটেছে।
জানা যায়, গতকাল দুপুরে রাউজান নোয়াপাড়া পথের হাটের ব্যবসায়ী নুরুল আবছার সিএনজি যোগে চট্টগ্রাম শহরে আসছিলেন। দুপুর আড়াইটার দিকে সিএনজিটি কুয়াইশ-বুড়িশ্চর সংযোগ সড়ক এলাকা অতিক্রম করার সময় একটি মাইক্রোবাস (চট্ট মেট্রো চ-১১-৪১১২) এর গতিরোধ করে। মাইক্রোবাসে অবস'ানরত থাকা তিন ব্যক্তি নিজেদের পুলিশ কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে নুরুল আবছারকে সিএনজি থেকে জোর করে নামানোর চেষ্টা করে। নুরুল আবছারের বিরুদ্ধে মামলা ও ওয়ারেন্ট আছে বলে তাকে জোর করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে পুলিশ পরিচয়দানকারী ব্যক্তিরা। নুরুল আবছারের সাথে কনস্টেবল মাসুদের হাতাহাতির সময় ব্যস্ত কাপ্তাই সড়কের উভয় দিকে যানজটের সৃষ্টি হয়। এই সময় কাপ্তাই থেকে ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের দিকে আসা সেনাবাহিনীর একটি গাড়িও যানজটে আটকা পড়ে। গাড়িতে থাকা সেনাবাহিনীর সার্জেন্ট মোফাজ্জল হোসেন ও ওয়ারেন্ট অফিসার ওয়াহিদুর রহমান ঘটনাস'লে গিয়ে কনস্টেবল মাসুদকে আটক করে। এ সময় মাইক্রোবাসে থাকা অন্য ছিনতাইকারীরা পালিয়ে যায়। সেনাসদস্যরা মাসুদকে প্রথমে র্যা ব-৭ এর চান্দগাঁও কেন্দ্রে নিয়ে আসে। পরবর্তীতে তাকে চান্দগাঁও থানা পুলিশে সোপর্দ করা হয়। চান্দগাঁও পুলিশ মাসুদকে হাটহাজারী থানায় হস্তান্তর করে। রাতে এ ব্যাপারে মামলার প্রক্রিয়া চলছিল বলে হাটহাজারী থানা সূত্রে জানা যায়।

ঢাকায় র‌্যাবের গুলিতে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ২ ছাত্র নিহত

বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউতে র্যা বের গুলিতে মারা গেছে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের দুই ছাত্র। নিহতরা হলো ফাইনাল ইয়ারের ছাত্র মোঃ আলী জিন্নাহ (২২) এবং মোঃ মহসীন (২৩)। এদের মধ্যে মহসীনের বাড়ি ফরিদপুরে এবং জিন্নাহর বাড়ি ভোলায়। খবর ইউএনবির।
র্যা ব জানায়, র্যা ব-২ এর একটি দল বৃহস্পতিবার রাতে আসাদ গেট এলাকায় চেক পোস্ট বসিয়ে সন্দেহভাজনদের তল্লাশী করছিল। এ সময় রিকশায় চড়ে দুই যুবক যাওয়ার সময় তাদেরকে র্যা বের সন্দেহ হলে যুবককে থামতে বলা হয়। কিন' এ সময় মহসীন ও জিন্নাহ র্যা বকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়লে র্যা বও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি ছুঁড়ে। এতে র্যা বের সাথে ওই দুই যুবকের বন্দুক যুদ্ধ শুরু হয়। এ গোলাগুলির সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে মহসীন ও জিন্নাহ ঘটনাস'লেই মারা যায় বলে র্যা ব সূত্রে জানানো হয়। গোলাগুলি থেমে যাওয়ার পর ঘটনাস'ল থেকে দুটি রিভলবার এবং ৪ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে র্যা ব। ময়না তদন্তের জন্য মৃতদেহ দুটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

সিরাজগঞ্জে বাস-ট্রাক সংঘর্ষে ১৫ জন নিহত

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার পাচালিয়া এলাকায় সিরাজগঞ্জ-ঢাকা মহাসড়কে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে বাস ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ১৫ জন মারা গেছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন। নিহতদের মধ্যে ১২ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। এরা হলেন- তাড়াশ উপজেলার আনোয়ার (৩০), লেবু (৪৫), নজরুল (৩৬), অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান তাড়াশী (৫০), সীমা খাতুন (৪), হাবিব (২) ও সাইফুল (৩৫), বাসচালক সিরাজগঞ্জ সদরের রেজা (৪০) ও তার সহকারী বাবু (৩০), সানোয়ার (৩৩), শাজাহান (৪০), শহীদুল (৩৫)। খবর বিডিনিউজের।
নিহতদের মধ্যে অধিকাংশই বাসযাত্রী বলে জানিয়েছেন হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীনবন্ধু দাস। তিনি জানান, বিকেল ৫টার দিকে হাটিকুমরুল গোলচত্বর থেকে আধ কিলোমিটার পূর্বদিকে পাচালিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বাসটি যাত্রী নিয়ে সিরাজগঞ্জ থেকে নাটোর যাচ্ছিল। অপরদিকে পোল্ট্রি ফিড নিয়ে ট্রাকটি যাচ্ছিল উল্লাপাড়া থেকে ঢাকা। ওসি জানান, বাসচালক ও তার সহকারীসহ ১৩ জন ঘটনাস্থলে মারা গেছেন। দুজন মারা গেছেন সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে।

দ্বিতীয় প্রস্তুতি ম্যাচে বাংলাদেশের জয়

টুয়েন্টি টুয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরুর পুর্বে গতকাল দ্বিতীয় প্রস্তুতি ম্যাচে জয় পেয়েছে বাংলাদেশে ক্রিকেট দল। ইংল্যান্ডের ক্যান্টাবুরি মাঠে ৬৪ রানের ব্যবধানে গতকাল তারা পরাজিত করেছে নেদারল্যান্ডকে। নিউজিল্যন্ডের বিপক্ষে প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচে হারের পরও সেই ম্যাচ থেকে আত্মবিশ্বাস খুঁজে পেয়েছিলেন অধিনায়ক আশরাফুল। আর সেই প্রাপ্ত আত্মবিশ্বাসকে কাজি লাগিয়ে গতকাল দ্বিতীয় প্রস্তুতি ম্যাচে নেদারল্যান্ডের বিপক্ষে বড় স্কোর গড়েছে বাংলাদেশ। নেদারল্যান্ডের অধিনায়ক জেমস স্মিত টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে আমন্ত্রণ জানান বাংলাদেশকে। আর ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ দল সংগ্রহ করে ২০৬ রান। অবশ্য শুরুটা ভাল ছিল না বাংলাদেশের। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই মাত্র ২ রান করা ওপেনার তামিম ইকবালকে ফিরিয়ে দেন নিজমান। এরপর লেফট আর্ম স্পিনার সিলার ফিরিয়ে দেন জুনায়েদ সিদ্দিকী (১৭ রান) এবং সাকিব আল হাসানকে (৪ রান)। একপর্যায়ে ১০ ওভারে বাংলাদেশ দলের সংগ্রহ ছিল ৩ উইকেট হারিয়ে ৭৮ রান। আর পরের ১০ ওভারে বাংলাদেশের ইনিংসে আসে ১২৮ রান। মূল অধিনায়ক আশরাফুল এবং মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের অর্ধশতকের উপর ভর করে দু’শর উপরে চলে যায় বাংলাদেশের ইনিংস। আশরাফুল করেন ৬৮ আর রিয়াদের ব্যাট থেকে আসে ৫৪ রান। এছাড়া রকিবুল ২৭ ও মুশফিকুর ২৪ রান করেন। প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচ খেলা মো. মিঠুনের পরিবর্তে গতকাল মাঠে নামেন রকিবুল আর সৈয়দ রাসেলের পরিবর্তে খেলতে নামেন রুবেল হোসেন।
২০৭ রানের বিশাল লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ব্যাট করতে নামা নেদারল্যান্ডের ইনিংস থেমে গেছে ১৪২ রানে। ফলে ৬৪ রানের পরাজয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় তাদেরকে। বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে রুবেল হোসেন ১৯ রান দিয়ে ৪টি উইকেট নেন।

টুয়েন্টি টুয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতই শিরোপা ধরে রাখবে : টেন্ডুলকার

কে হবে এবারের টুয়েন্টি টুয়েন্টি বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন? প্রশ্নটার উত্তর দেয়া ভীষণ কঠিন। ক্রিকেটের আধুনিকতম সংস্করণ টুয়েন্টি টুয়েন্টিতে কোনো দলকে ফেভারিট মনে করা বেশ ঝুুঁকিপূর্ণই বটে! তবে শচীন টেন্ডুলকারের মনে এ সম্পর্কে কোনো সন্দেহ নেই। তার দৃঢ় বিশ্বাস ইংল্যান্ডে ভারতের শিরোপা অক্ষুণ্ন রাখতে তেমন সমস্যা হবে না। মহেন্দ্র ধোনির দলের ভারসাম্য, চাপের মধ্যে অবিচল থাকার দৃঢ়তা আর দুর্দান্ত পেস আক্রমণই এই বিশ্বাসের ভিত গড়ে দিয়েছে সর্বকালের সফলতম ব্যাটসম্যানের মনে। “ভারতই এখন বিশ্বের সবচেয়ে ভারসাম্যপূর্ণ দল। এবং আমরা যে (টুয়েন্টি টুয়েন্টি বিশ্বকাপের) শিরোপা ধরে রাখতে যাচ্ছি সে ব্যাপারে কোনো সন্দেহই নেই। আমাদের দলে অনেক ভালো ক্রিকেটার আছে। আমরা প্রমাণ করেছি যে এই কম্বিনেশনটাই সবচেয়ে ভয়ঙ্কর”ণ্ড ‘ডিএনএ’ পত্রিকার সঙ্গে কথা বলার সময় টেন্ডুলকারের দৃঢ়তা ভরা উচ্চারণ। খবর বিডিনিউজের।
‘লিটল জিনিয়াস’ নিজে অবশ্য ইংল্যান্ডে যাচ্ছেন না। তরুণদের জায়গা করে দিতে তিনি নিজেই সরে দাঁড়িয়েছেন ভারতের টুয়েন্টি টুয়েন্টি দল থেকে। এবং সেই তরুণদের নিয়ে গড়া ‘টিম ইন্ডিয়া’র চাপের সময় লড়াই করার মানসিকতা দেখে টেন্ডুলকার রীতিমতো মুগ্ধ, “আমাদের দলের সবচেয়ে বড় গুণ হলো আমরা যে কোনো ধরনের চাপ সামলে ভালো পারফর্ম করতে পারি। টিম ইন্ডিয়া আসলেই চাপের মুখে অনমনীয়। আমরা এক ধরনের প্যাকেজের মধ্যে দিয়ে এসেছি। আর আমি নিশ্চিত এই প্যাকেজ এই মুহূর্তের সেরা ব্যবসা। এই প্যাকেজটাই সবকিছু। আমাদের আবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য এটাই সবচেয়ে প্রয়োজনীয়।”
টেন্ডুলকারের দৃষ্টিতে জহির খান, ইশান্ত শর্মা, রুদ্র প্রতাপ সিংদের নিয়ে গড়া পেস আক্রমণও ভারতের জন্য এক বিশাল সম্পদ, “সবকিছুর বিচারে এটাই সেরা (পেস আক্রমণ)। জহির, ইশান্ত, রুদ্র প্রতাপ সিং দুর্দান্ত এক কম্বিনেশন গড়েছে। বিশেষ করে ইংলিশ কন্ডিশনের ক্ষেত্রে। আমাদের সিম আক্রমণে অনেক বৈচিত্র্য আছে এবং এ ধরনের কন্ডিশনে তা উপযোগীই হবে। নিজেদের দিনে যে কোনো ব্যাটিং লাইনআপকে ধ্বংস করে দিতে পারি আমরা।”