খাগড়াছড়িতে ডব্লিউএফপি’র বিস্কুট খেয়ে চারশ’ শিক্ষার্থী অসুস্থ।।বিস্কুট বিতরণ বন্ধের নির্দেশ :তদন্ত কমিটি গঠন

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় গতকাল সোমবার সকালে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) বিতরণ করা বিস্কুট খেয়ে অন্তত ৪২৮ জন স্কুল শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছে। দুর্গম মহালছড়ি ও লক্ষীছড়ি উপজেলায় এ ঘটনা ঘটেছে। ডব্লিউএফপি-র ‘ইমার্জেন্সি স্কুল ফিডিং’ প্রকল্পের আওতায় সাড়ে তিন মাসের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে এসব বিস্কুট বিতরণ করা হচ্ছিল। অসুস্থদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে লক্ষ্মীছড়ি, মানিকছড়ি ও মহালছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। কয়েকজনকে পাঠানো হয়েছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।খাগড়াছড়ির সিভিল সার্জন ডা. আবু তাহের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “অসুস্থ শিক্ষার্থীরা পেটের পীড়ায় আক্রান্ত। তাদের পাতলা পায়খানা হচ্ছে।” তিনি জানান, এ ঘটনায় পার্বত্য জেলা পরিষদ, সিভিল সার্জন, ইউএনডিপি ও ইউনিসেফ কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি যৌথ তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে বিস্কুট বিতরণ বন্ধ রাখারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। খবর বিডি নিউজের। লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান রেম্রাচাই মারমা বলেন, উপজেলার মংহাপাড়া, যতীন্দ্রপাড়া, দেবলছড়ি ও জারুলছড়িতে বেশি আক্রান্ত হয়েছে। তিনি জানান, লক্ষ্মীছড়ি মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, যতীন্দ্র কার্বারী পাড়া, জারুলছড়ি, মংহ্লা পাড়া, ফুট্ট্যাছড়ি, মুক্তছড়ি, মগাইছড়ি ও ডিপি পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় তিন শ’ ছাত্র-ছাত্রী অসুস' হয়ে পড়েছে। ছাত্র-ছাত্রীদের বিস্কুট খাওয়ানোর পর তাদের পেট ব্যথা ও মাথা ঘোরা শুরু হয়। উপজেলা চেয়ারম্যান জানান, অসুস'দের মধ্যে ৪৪ জনকে লক্ষ্মীছড়ি এবং ১২০ জনকে পার্শ্ববর্তী মানিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।মহালছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান সোনা রতন চাকমা জানান, তারা উপজেলার এপিবিএ বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২ জন, ক্যাঙ্ঘাট তবলছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১০ জন ও মুড়াপাড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৮ জনের অসুস'তার খবর পাওয়া গেছে। অসুস'রা বমি ও পাতলা পায়খানা করছে বলেও তিনি খবর পেয়েছেন।
ঘটনা জানার পর জেলা সিভিল সার্জন, জেলা প্রশাসক সার্বিক মো. খলিলুর রহমান, পার্বত্য জেলা পরিষদ সুইথি কারবারীসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ঘটনাস'লে ছুটে যান।ডব্লিউএফপি পার্বত্য অঞ্চলের দায়িত্বরত কর্মকর্তা রীতা চাকমা জানান, পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি, বান্দরবান জেলার ৬টি উপজেলায় সাড়ে তিন মাসের জন্য পরীক্ষামূলক ‘ইমার্জেন্সি স্কুল ফিডিং’ প্রকল্পের আওতায় লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার ২১ টি এবং মহালছড়ি উপজেলায় ৫৫টি বিদ্যালয়ে বিস্কুট সরবরাহ করা হয়।তিনি জানান, দরপত্রের মাধ্যমে বিস্কুটগুলো কেনা হয়েছিল। কোম্পানিগুলোর নিজস্ব মান নিয়ন্ত্রণ গবেষণাগারে এসব বিস্কুট পরীক্ষা করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।রীতা চাকমা আরও জানান, খাগড়াছড়ির লক্ষ্মীছড়ি, মহালছড়ি ও দিঘীনালা উপজেলায় বিতরণকৃত বিস্কুট সরবরাহ করেছে নাবিস্কো বিস্কুট কোম্পানি। এখানে বিতরণের দায়িত্বে আছে কাবিদাং নামের একটি বেসরকারি সংস্থা (এনজিও)। রাঙামাটির বিলাইছড়ি উপজেলায় বিতরণ করা বিস্কুট কেনা হয়েছে রেস্কো কোম্পানি থেকে। এখানে বিতরণের দায়িত্বে আছে স্থানীয় এনজিও টংগ্যা। আর বান্দরবানের জন্য বিস্কুট কেনা হয়েছে সিএমসি কোম্পানি থেকে। সেখানেও একটি এনজিও বিস্কুট বিতরণের দায়িত্বে আছে। কাবিদাং এর নির্বাহী পরিচালক লালসা চাকমা জানান, শুধুমাত্র বিস্কুট সরবরাহের দায়িত্ব পালন করে তাদের সংস'া। লক্ষ্মীছড়ি উপজেলায় ২৮ মে বিস্কুট সরবরাহ করা হয়েছিল। সোমবার প্রতিটি স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের বিস্কুট খাওয়ার কথা ছিল। এর মধ্যে অসুস'তার ঘটনা ঘটায় অন্যান্য স্কুলে বিস্কুট বিতরণ বন্ধ রাখা হয়েছে।বিস্কুট খেয়ে বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীদের অসুস্থ হওয়ার খবর শুনে সাংসদ যতীন্দ্র লাল ত্রিপুরা, পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রুইথি কার্বারী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. খলিলুর রহমান, সিভিল সার্জন ডা. আবু তাহের, সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শহীদ তালুকদার ও ডা. রাজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা লক্ষীছড়িতে যান।লক্ষ্মীছড়ির উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগে পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য ও স্বাস্থ্য বিভাগের আহ্বায়ক সানুমং মারমা জানান, বিস্কুট বিতরণ কর্মসূচি বন্ধ রাখার জন্য জরুরিভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। লক্ষ্মীছড়ি মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পলাশ কান্তি নাথ জানান, বিস্কুট খাওয়ার পর শিক্ষার্থীরা বাসা থেকে আনা পানি পান করে। এর ২০ মিনিটের মধ্যে তাদের পেট ব্যথা ও বমি শুরু হয়। এ সময় চারিদিকে কান্নার রোল পড়ে যায়। সবার মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। প্রধান শিক্ষক জানান, প্রথম দিকে রিকশা ভ্যান, ঠেলাগাড়িতে করে অসুস'দের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পরে লক্ষ্মীছড়ি সেনা জোনের সদস্যরা অ্যাম্বুলেন্সে করে অসুস'দের হাসপাতালে নিয়ে যায়।

ট্রেড জালিয়াতির মাধ্যমে রড আমদানিতে একশ’ কোটি টাকার শুল্ক ফাঁকি।।কাস্টমস ও বিএসটিআই’র অসাধু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে খালাস


প্রচলিত শুল্ক আইনের তোয়াক্কা না করে ট্রেড জালিয়াতির মাধ্যমে চট্টগ্রামের হাতে গোনা কয়েকটি প্রতিষ্ঠান বিদেশ থেকে এম এস রড আমদানির আড়ালে একশ’ কোটিরও বেশি টাকার শুল্ক ফাঁকি দিয়েছে। নিজেদের চট্টগ্রামস্থ কারখানার নামে বিদেশ থেকে সিল মেরে রড আমদানি করা হয়েছে। দেশের প্রচলিত আইনে যা নিষিদ্ধ। কিন্তু চট্টগ্রাম কাস্টমস এবং বিএসটিআই’র এক শ্রেণীর অসাধু কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে একের পর এক সেই নিষিদ্ধ রডের চালান খালাস করা হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানগুলোকে আইনের মুখোমুখি করে ফাঁকি দেয়া শুল্ক আদায়ের উদ্যোগ নেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। সূত্র বলেছে, বাংলাদেশ কাস্টমস এ্যাক্ট ১৯৬৯ এর ১৫(ই) ধারায় বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের বাইরে তৈরী বা প্রস্তুতকৃত পণ্য এবং ঐ মালে এমন নাম বা ট্রেড মার্ক ব্যবহৃত হয়েছে যেগুলি বাংলাদেশী প্রস্তুতকারক, ডিলার বা ব্যবসায়ীর নাম বা ট্রেড মার্ক অথবা ঐগুলি দেখতে ঐ রূপ প্রতীয়মান হয়”, যদি না (১) প্রতিটি আবেদনপত্রে নাম ও পণ্য চিহ্নের সাথে বাংলাদেশের বাইরে কোন স্থানে পণ্যটি তৈরী বা প্রস্তুত হয়েছে এরূপ সুনির্দিষ্ট চিহ্ন থাকে ; এবং (২) যে দেশে ঐ সস্থানটি অবস্থিত তা ঐ নাম বা ট্রেড মার্কের মত বড় অক্ষরে এবং স্পষ্টভাবে এবং ঐ নাম বা ট্রেড মার্ক যে ভাষায় এবং যেভাবে লেখা হয়েছে সেভাবে ঐ চিহ্ন দেখান হয়।’ চট্টগ্রামের রড উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বিএসআরএম, কেএসআরএম, জিপিএইচ, জিরি সুবেদার, নাহার স্টিল, কয়েকটি প্রতিষ্ঠান নিজেদের এখানে স্থাপিত কারখানার নামাঙ্কিত করে বিদেশ থেকে রড আমদানি করেছে। এসব রডে বিএসআরএম বা কেএসআরএম কিংবা জিপিএইচ’ এর লোগো ছাড়া কোন দেশে তৈরি হয়েছে বা কোনস্থানে তৈরী হয়েছে সেই সম্পর্কে কোন উল্লেখ নেই। প্রচলিত শুল্ক আইনের ১৫ (ই) ধারা লংঘন করে রডগুলো আমদানি করা হয়েছে। উক্ত ধারা লংঘনের দায়ে রডগুলো জব্দ করার বিধান থাকলেও কাস্টমস এবং বিএসটিআই’র সংঘবদ্ধ একটি অসাধু চক্রকে ম্যানেজ করে চালানগুলো খালাস করে নেয়া হয়েছে। প্রচলিত শুল্ক আইনে আমদানিকৃত রডের কপার এর পরিমাণ ০.৪ শতাংশ ও তার অধিক হয় তাহলে উক্ত পণ্য এইচ এস কোড - ৭২২৮.৩০.০০ এ শ্রেণীবিন্যাসকৃত। এই শ্রেণীর পণ্যের আমদানি শুল্ক ১২ শতাংশ, মূসক ১৫ শতাংশ, পিএসআই ১ শতাংশ এবং এটিভি ১.৫ শতাংশ হারে প্রযোজ্য। অর্থাৎ প্রতিটন রডের মূল্য ৫০০ ডলার হলেও এক্ষেত্রে শুল্ক পরিশোধ করতে হবে ২৯.৫ শতাংশ বা ১৪৭.৫ ডলার। কিন্তু কাস্টমসের অসাধু কর্মকর্তাদের সিন্ডিকেট চালানটি শুল্কায়নের ক্ষেত্রে যথাযথ এইচ এস কোড অনুসরণ করেনি। এতে প্রায় এক লাখ টন রড আমদানির ক্ষেত্রে বিএসআরএম, কেএসআরএম, জিপিএইচ, জিরি সুবেদার, নাহার স্টিল, একশ’ কোটিরও বেশি টাকার শুল্ক পরিশোধ না করেই পণ্য খালাস করে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। চট্টগ্রামে স্থাপিত কারখানার নামাঙ্কিত করে বিদেশ থেকে রড আমদানির বিষয়টি সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষভাবে তদন্তের মাধ্যমে শত কোটি টাকা উদ্ধার করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।

দশ ট্রাক অস্ত্র মামলা টিএফআই সেলে লিয়াকত


আলোচিত দশ ট্রাক অস্ত্র মামলায় টিএফআই সেলে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৬ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে গ্রেপ্তারকৃত মেজর (অব:) লিয়াকত হোসেনকে। গতকাল সোমবার বিকেলে মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুর রহমানের আদালতে তাকে উপস'াপন করে ১০ দিনের রিমান্ড প্রার্থনা করেন তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির এএসপি মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান চৌধুরী। জবাবে বিচারক অত্যন্ত সতর্কতার সাথে মেজর (অব:) লিয়াকতকে জিজ্ঞাসাবাদ করার নির্দেশ দিয়ে ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এ সময় লিয়াকতের আইনজীবীরা তার জামিন ও রিমান্ড আবেদন বাতিলের দরখাস্ত দিয়ে বিচারকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। কিন্তু বিচারক তার জামিন নামঞ্জুর এবং রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন। এদিকে গ্রেপ্তারকৃত এনএসআই-এর পরিচালক (নিরাপত্তা) উইং কমান্ডার মোহাম্মদ শাহাবুদ্দীন আহমেদের জামিনও নাকচ করেছেন একই বিচারক। তার আইনজীবীদের করা এই আবেদনও একই সময় নাকচ হয়ে যায়। মামলা পরিচালনায় যথাযথ দিকনির্দেশনার স্বার্থে আইনজীবীরা শাহাবুদ্দীনের ১৬৪ ধারার স্বীকারোক্তিমূলক আদালতিক জবানবন্দীর কপি চাইলে বিচারক সেই আবেদন গ্রহণ করেন নি। এদিকে লিয়াকতকে রিমান্ডে নিয়ে যাওয়ার আবেদনে যুক্তি উপস্থাপন করতে গিয়ে মহানগর পিপি এডভোকেট কামাল উদ্দিন আহম্মদ আদালতকে বলেন, টিএফআইসেলের জিজ্ঞাসাবাদে শাহাবুদ্দিন ও আবদুর রহিম অস্ত্রের চোরাচালানের সাথে দেশি-বিদেশি সংস্থা, দূতাবাস ও ব্যক্তি জড়িত বলে উল্লেখ করেছিলেন। কিন' নিজেদের জড়িত থাকার কথা কৌশলে এড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন। একই কায়দায় ৪ দিনের পুলিশ রিমান্ডে লিয়াকতও নিজেকে বাঁচিয়ে তথ্য দিয়েছেন। সুতরাং তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে আসল তথ্য বের করা প্রয়োজন। এ সময় তিনি বিচারককে উদ্দেশ্য করে বলেন, আসামি লিয়াকতকে সম্পূর্ণ সুস' অবস্থায় আদালতে উপস'াপন করা হয়েছে। এই অস্ত্রের চালানের সাথে হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। দেশের অস্তিত্বের স্বার্থে এর রহস্য উদ্‌ঘাটন হওয়া দরকার। যারা দেশের সার্বভৌমত্বের পাহারাদার তারা (এনএসআই) যদি এ কাজ করে তা হলে মানুষ কোথায় নিরাপত্তা খুঁজবে? তিনি আরো বলেন, লিয়াকত একজন উপ-পরিচালক (টেকনিক্যাল) হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন। এসব তার জানার কথা নয়। কিন' তিনি শাহাবুদ্দীনকে মোবাইলে অস্ত্র আটকের কথা বলেছিলেন তখন। শাহাবুদ্দীন তখন তৎকালীন ডিজির সাথে এ ব্যাপারে কথা বলার পরামর্শ দেন। অস্ত্রের চোরাচালানের পেছনের শক্তি কারা তা বের করতে লিয়াকতকে টিএফআই সেলে নিয়ে যাওয়া জরুরি। তিনি আগেকার তদন্তকে (জোট সরকারের) তথাকথিত তদন্ত উল্লেখ করে বলেন, এই মামলায় আগে যাদেরকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দেয়া হয়েছিল তারা ছিল সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ। এই অস্ত্রের সাথে তৎকালীন রাষ্ট্রীয়যন্ত্র জড়িত ছিল। এসময় শুনানিতে অংশ নিয়ে লিয়াকতের আইনজীবী আবুল হাসান বলেন, মামলার গতি প্রকৃতি দেখে মনে হচ্ছে তদন্তের গন্তব্য একমাত্র আল্লাহ তায়ালাই জানেন। ২০০৪ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি আমার মক্কেলের চাকরি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হয়। অথচ তাকে অস্ত্রের ঘটনায় এনএসআই-এর দায়িত্বরত কর্মকর্তা হিসেবে দেখানো হচ্ছে। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, একজন ব্যক্তির একই সময় দুই মন্ত্রণালয়ের অধীনে দায়িত্ব পালন করা অযৌক্তিক। ওই সময় তিনি সিলেটে মাজার প্রাঙ্গণে বোমা হামলার ঘটনা তদন্ত করতে আসা স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের সাথে ব্যস্ত ছিলেন। অস্ত্রের সাথে তার কোন ধরনের সম্পৃক্ততার প্রশ্নই আসে না। এসময় তার আইনজীবী পুলিশ হাসপাতালের গত রোববারের রিপোর্ট উপস্থাপন করে বলেন লিয়াকত বোনমেরু সমস্যা, হাইপার টেনশন ও অ্যাজমায় ভুগছেন। এদিকে বিকেল ৩টা ১০ মিনিটে শুনানি শুরু হলে প্রথমে লিয়াকতের আইনজীবীকে ১৫ মিনিট তার সাথে কথা বলার সুযোগ করে দেন। আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়ানো লিয়াকত তার আইনজীবীর সাথে কথা বলতে গিয়ে নিজের সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেন। এসময় তিনি বলেন, গত মঙ্গলবার আমাকে ঢাকায় সিআইডি অফিসে দীর্ঘ ৯ ঘণ্টা বসিয়ে রেখে গ্রেপ্তার করা হয়। অথচ আমিই ওনাদের নিজে ফোন করে বলেছিলাম এ ব্যাপারে যে কোন সহায়তা করব। প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল সিইউএফএল ঘাট থেকে ১০ ট্রাক অস্ত্রের চালান আটক করা হয়।

চবির অভিযুক্ত ছাত্র রাজুর ছাত্রত্ব বাতিল : আজীবনের জন্য বহিষ্কার।।ইভটিজিং-এর প্রতিবাদ করায় ছাত্রী আহতের ঘটনা


ইভটিজিং-এর প্রতিবাদ করায় মাস্টার্সের এক ছাত্রীকে পিটিয়ে আহত করার দায়ে জুনিয়র ছাত্র শামসুল ইসলাম রাজুর ছাত্রত্ব বাতিলসহ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অভিযুক্ত শিক্ষার্থী রাজুর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে এবং ওই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় গতকাল সোমবার উপরোক্ত সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। গতকাল সোমবার বেলা একটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনিক ভবনে অনুষ্ঠিত এক জরুরি সভায় ওই সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। এদিকে ইভটিজিং-এর শিকার হওয়া ছাত্রী রায়হান মারজান বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে (ধারা ১০/৩০) অভিযুক্ত শামসুল ইসলাম রাজুসহ আরও একজন অজ্ঞাতনামা শিক্ষার্থীকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছে। গত রোববার রাত ১০টার দিকে হাটহাজারী থানায় ওই মামলা দায়ের করা হয়। গত শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন নাহার হলের সামনের রাস্তায় ঝুপড়ির নিকট রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী রায়হান মারজানকে টিজ (উত্ত্যক্ত) করেন ব্যবস্থাপনা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শামসুল ইসলাম রাজু। এর প্রতিবাদ করলে রাজু ওই ছাত্রীকে পিটিয়ে আহত করে। এর প্রতিবাদে গত রোববার রায়হান মারজান প্রক্টরের মাধ্যমে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করে। পরবর্তীতে ঘটনার জন্য দায়ী শামসুল ইসলাম রাজুকে গ্রেপ্তারের জন্য র্যা ব ও পুলিশকে অনুরোধ করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু একদিন পার হলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করতে না পারায় অনতিবিলম্বে তার শাস্তির দাবিতে গতকাল সোমবার ক্যাম্পাসের প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও ধর্মঘট পালন করে রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগসহ অন্যান্য বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এর আগে তারা বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করে। দুপুর ১২টার দিকে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অন্যান্য শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেয়। বেলা একটার দিকে উপাচার্য কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক জরুরি সভার মাধ্যমে শামসুল ইসলাম রাজুর ছাত্রত্ব বাতিল করে তাকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করে। উল্লেখ্য, শামসুল ইসলাম রাজু বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০৭-২০০৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তার ক্লাস রোল ৫০০৪, রেজি: নং-০৭৩০২০৬৯। সে গাজীপুর জেলা সদরের শিমুলতলী এলাকার তাজুল ইসলামের ছেলে।

গ্যাসে ময়লা, বিপর্যয়ের মুখে রাউজান বিদ্যুত কেন্দ্র


বিপর্যয়ের মুখে রয়েছে রাউজান তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র। যে কোনো সময় এ কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বর্তমানে বাখরাবাদ থেকে রাউজান তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে যে পরিমাণ গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে তার সাথে প্রচুর পরিমাণ ময়লা মিশ্রিত থাকায় কেন্দ্রের প্রকৌশলীরা এই আশঙ্কা করছেন। প্রতিদিন এসব ময়লা পরিষ্কার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন ঠিক রাখতে প্রকৌশলীদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। গত দুই মাস থেকে গ্যাসের সাথে ময়লা পরিলক্ষিত হচ্ছে বলে জানা গেছে। গ্যাসের সাথে আসা ময়লা অপসারণ করে দৈনিক উৎপাদন ঠিক রাখা কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রকৌশলীদের প্রচেষ্টার কারণে এখনো উৎপাদন ঠিক রয়েছে এবং প্রতিদিন ২৩০ থেকে ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। রাউজান তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রকৌশলীরা জানান, গত দুই মাস থেকে বিদ্যুৎ কেন্দ্রে সরবরাহকৃত গ্যাসের সাথে প্রচুর পরিমাণ তেল এবং জ জাতীয় পদার্থও আসছে। এই ব্যাপারে রাউজান তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী মোঃ আবু তাহের গতকাল দৈনিক আজাদীকে জানান, গ্যাসের সাথে যে পরিমাণ ময়লা পাওয়া যাচ্ছে তা পরিষ্কার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন ঠিক রাখা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিদিন গ্যাসের সাথে তেল এবং জ জাতীয় পদার্থ পাওয়া যাচ্ছে। তিনি জানান, রাউজান তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে যে ফিল্ড থেকে গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে সেই ফিল্ডের গ্যাস ফুরিয়ে যাচ্ছে। গ্যাস ফুরিয়ে আসলে গ্যাসের সাথে ময়লা আসে। বাখরাবাদও এই কথা স্বীকার করেছে। এখন সরবরাহকৃত গ্যাস পরিষ্কার করে উৎপাদন ঠিক রাখতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এত কষ্ট করে মেশিন চালু রাখা যায় না। রাউজান বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দিকে পুরো দেশ তাকিয়ে আছে। তারপরও আমি রাউজান থেকে প্রতিদিন ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করছি। বাখরাবাদ যদি আমাকে মানসম্পন্ন আরো ২০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস দিতে পারতো তাহলে আমি আরো ৮০ মেগাওয়াট বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারতাম। রাউজান বিদ্যুৎ কেন্দ্র ঠিক থাকাতেই চট্টগ্রামে বিদ্যুৎ পরিসস্থিতি মোটামুটি স্বাভাবিক রয়েছে। গ্যাসের সাথে ময়লা আসার ব্যাপারে বাখরাবাদ গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের অপারেশন বিভাগের এক প্রকৌশলী জানান, গ্যাস ফিল্ডে গ্যাসের মজুদ কমে আসলে গ্যাসের সাথে গ্যাস ফিল্ডের বিভিন্ন ময়লাও চলে আসে। এটা গ্যাস ফুরিয়ে যাওয়ার লক্ষণ।চট্টগ্রামে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি ঠিক রাখতে বর্তমানে রাউজান তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রই একমাত্র ভরসা। পানি কমে যাওয়াতে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সবগুলো ইউনিট এক সাথে চালানো যাচ্ছে না। সারাদিন বন্ধ রেখে সন্ধ্যার সময় চালানো হয়। গতকাল এবং গত পরশু সন্ধ্যায় চারটি ইউনিট চালানো হয়েছে। গতকাল রাউজান তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দুটি ইউনিট থেকে ২৫০ মেগাওয়াট এবং কাপ্তাই চারটি ইউনিট থেকে ১০৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে।

১৯ জুন মধ্যরাতে ঘড়ির কাঁটা ১ ঘণ্টা এগিয়ে যাবে

সূর্যের আলো সাশ্রয়ে সরকার আগামী ১৯ জুন রাত ১২টা থেকে ঘড়ির কাঁটা এক ঘণ্টা এগিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গতকাল সোমবার সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ। বৈঠক শেষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, “আগামী ১৯ জুন রাত ১২টায় ঘড়ির কাঁটা এক ঘণ্টা এগিয়ে সূর্যের আলো সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। অর্থাৎ ১৯ জুন রাত ১২টা থেকে ঘড়ির কাঁটা এক ঘণ্টা বাড়িয়ে হিসাব করা হবে।” বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে জানিয়ে আজাদ বলেন, “সূর্যের আলোর বেশি ব্যবহারের জন্য ঘড়ির কাঁটা এগিয়ে আনলে বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে।” খবর বিডিনিউজের। উদাহরণ হিসেবে বিশ্বের ৭০টি দেশে ঘড়ির কাঁটা এগিয়ে আনার এ ব্যবস্থা আছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। তবে কয়মাস এ ব্যবস্থা কার্যকর থাকবে তা জানাননি প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব। তিনি বলেন, “সরকার পরবর্তীতে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।” এর আগে গত ৫ মে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ে এক আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক শেষে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু সাংবাদিকদের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, এ পদ্ধতি এ বছর চালু হলে তা ১৬ জুন থেকে কার্যকর হবে এবং ১ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে। আর আগামী বছর অর্থাৎ ২০১০ সালে চালু হলে তা ১ এপ্রিল থেকে ১ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে। আজাদ জানান, “আর্থসামাজিক উন্নয়নের কারণে বিদ্যুতের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সান্ধ্যকালীন পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা দেখা দেয়। পিক আওয়ারে আটশ’ থেকে এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটতি দেখা দেয়। “মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দিন বড় থাকে। এ সময় সূর্যের আলোও বেশি থাকে। সূর্যের আলো সংরক্ষণের মাধ্যমে ঘাটতি পুরণ সম্ভব।” প্রেস সচিব আরও জানান, বৈঠকে ঘূর্ণিঝড় আয়লায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় আজ (সোমবার) থেকে কৃষিঋণ আদায় স'গিত থাকবে বলেও সিদ্ধান্ত হয়েছে। আয়লা দুর্গত এলাকায় ত্রাণ কার্যক্রম পর্যালোচনার জন্য কয়েকটি জেলায় কয়েকজন মন্ত্রীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। প্রেস সচিব জানান, আয়লার কারণে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখা হবে। আজাদ জানান, আয়লায় ১১ জেলার ৫১টি উপজেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব এলাকায় বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হবে। মন্ত্রিসভায় ইতোমধ্যে নেওয়া বিভিন্ন সিদ্ধান্তের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “সভায় প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তগুলো সর্বাত্মক গুরুত্ব দিয়ে দ্রত পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন।” তিনি জানান, গত ৭ জানুয়ারি থেকে ২৫ মে পর্যন্ত মন্ত্রিসভার ২৩টি বৈঠকে ১২৪টি সিদ্ধান্ত হয়। এর মধ্যে ৬৭টির পূর্ণ বাস্তবায়ন হয়েছে এবং ৫৭টি বাস্তবায়নাধীন রয়েছে।

সাকার শিক্ষাগত যোগ্যতার তথ্য চেয়ে চিঠি দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন

বিএনপির সাংসদ সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর শিক্ষাগত যোগ্যতার তথ্য চেয়ে সংসদ সচিবালয়কে চিঠি দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এছাড়া জাতীয় পার্টির সাংসদ রুহুল আমিন হাওলাদারের দায়ের করা মামলার বিরুদ্ধে লড়ার সিদ্ধান্তও নিয়েছে ইসি। সোমবার নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন ইসি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের একথা জানান। নবম সংসদ নির্বাচনের আগে দেওয়া হলফনামায় সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ‘শিক্ষাগত যোগ্যতা নেই’ এবং রুহুল আমীন হাওলাদার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগ থেকে বিএ (সম্মান) পাস বলে উল্লেখ করেন এবং কেউই কোন সনদ জমা দেননি। খবর বিডিনিউজের। মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন সাংবাদিকদের বলেন, “সাকা চৌধুরী বিগত সরকারের আমলেও সাংসদ ছিলেন। তার শিক্ষাগত যোগ্যতার বিষয়ে সংসদ সচিবালয়ে তথ্য সংরক্ষিত রয়েছে। নির্বাচন কমিশনে তিনি সনদ জমা না দেওয়ায় প্রয়োজনীয় তথ্য আমরা সংসদ সচিবালয়ের সচিবের কাছ থেকে সংগ্রহ করছি।” এদিকে নির্বাচন কমিশনে শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ জমা দেওয়ার যে নিয়ম রয়েছে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন রুহুল আমিন হাওলাদার। এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার বলেন, “ জেনেছি এই সাংসদ মামলা করেছেন, আমরা এর বিরুদ্ধে লড়ব।” নবম সংসদ নির্বাচনের আগে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও রুহুল আমিন হাওলাদারের বিরুদ্ধে হলফনামায় মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অভিযোগ আনেন। ১০ ডিসেম্বর ইসির শুনানিতে এই দুই প্রার্থী যত শিগগির সম্ভব সনদ জমা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। ১৩ এপ্রিল ইসি এজন্য ৩১ মে পর্যন্ত সময় দিলেও এর মধ্যে তারা তা করেননি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছহুল হোসাইন বলেন, “মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে শিগগিরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” নির্বাচনী আইন অনুযায়ী, কেউ হলফনামায় মিথ্যা তথ্য দিলে তিনি সংসদ সদস্য থাকবার ও হবার অযোগ্য হবেন। সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে চট্টগ্রাম-২ আসন থেকে এবং এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বরিশাল-৬ থেকে নির্বাচিত হয়েছেন।

সোহেল তাজের পদত্যাগ নিয়ে ধূম্রজাল




স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সোহেল তাজ পদত্যাগ করেছেন বলে গতকাল দিনভর রাজধানীতে গুজবের সৃষ্টি হয়। রবি ও সোমবার পরপর দু’দিন সোহেল তাজ অফিস না করায় এ গুজব ছড়িয়ে পড়ে। তবে তার পদত্যাগের বিষয়টি কেউ নিশ্চিত করতে পারেন নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোহেল তাজকে ডেকে পাঠিয়েছেনণ্ড এ খবরে রাজধানী জুড়ে গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সোহেল তাজ পদত্যাগ করেছেন। রাত ১টায় বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল বাংলাভিশনকে দেয়া সাক্ষাতকারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এডভোকেট সাহারা খাতুন বলেছেন, প্রতিমন্ত্রীর পদত্যাগের ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না। তবে তিনি কিছু দিনের ছুটিতে গেছেন বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। দুপুর থেকেই সোহেল তাজের পদত্যাগের খবর ছড়িয়ে পড়লেও সরকারি কোনো দায়িত্বশীল সূত্র তার পদত্যাগের খবর নিশ্চিত করে নি। তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনটি বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছে টিভি চ্যানেলগুলো। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গতকাল সকালে সোহেল তাজ ব্যক্তিগত সচিবের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে তার পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন। পদত্যাগপত্রে তিনি ব্যক্তিগত কারণ উল্লেখ করেন। সূত্র জানায়, পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয় নি। বরং প্রধানমন্ত্রী ও সোহেল তাজের পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে পদত্যাগ থেকে নিরস্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। সোহেল তাজের নির্বাচনী এলাকার দলীয় নেতাকর্মীরাও তার পদত্যাগের খবর পেয়ে পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করার জন্য অনুরোধ অব্যাহত রেখেছেন। বাংলাদেশ সরকারের প্রথম প্রধানমন্ত্রী, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম নায়ক শহীদ তাজউদ্দিন আহমদের ছেলে আওয়ামী লীগ নেতা সোহেল তাজ বিগত ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে গাজীপুর ৪ আসন থেকে নির্বাচিত হন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিনবদলের সরকারে তাকে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়া হয়। দায়িত্ব গ্রহণের মাত্র ৫ মাসের মাথায় তার পদত্যাগের খবর সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মহলকে বিস্মিত করেছে।

২২৮ জন আরোহী নিয়ে আটলান্টিকে এয়ার ফ্রান্সের বিমান নিখোঁজ


এয়ার ফ্রান্সের একটি বিমান ২২৮ জন আরোহী নিয়ে আটলান্টিক মহাসাগরের ওপর হারিয়ে গেছে। আরোহীদের মধ্যে ২১৬ যাত্রী ও ১২ জন ক্রু। ধারণা করা হচ্ছে, বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সারকোজি বলেছেন, আরোহীদের কারো বেঁচে থাকার সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীণ। খবরে বলা হয়েছে, বিমানটি যাচ্ছিল ব্রাজিল থেকে প্যারিসে। এটি ৩৫ হাজার ফুট ওপরে এবং ৫২১ মাইল বেগে। আটলান্টিকের ওপরে এটি ঝড়ো আবহাওয়ার কবলে পড়ে। ধারণা করা হচ্ছে বজ্রাঘাতে বিমানটিতে শর্ট সার্কিট হয়ে এটি বিধ্বস্ত হয়েছে। এয়ার ফ্রান্স জানিয়েছে, আরোহীদের মধ্যে ৮০ জন ব্রাজিলের এবং ৭৩ জন ফরাসী নাগরিক। ব্রাজিল বিমানবাহিনী জানিয়েছে, বিমানটি মহাসাগরের ওপর দিয়ে অনেকখানি অগ্রসর হওয়ার পর হারিয়ে যায়। দক্ষিণ আমেরিকা এবং আফ্রিকা দু জায়গা থেকেই বিমানটির খোঁজে বের হয়েছে সামরিক বিমান। এয়ার ফ্রান্সের চীফ এক্সিকিউটিভ পিয়েরে-অরি গরিয়ঁ সাংবাদিকদের কাছে বিমানটি দুর্ঘটনা কবলিত হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। বিমানটি সর্বশেষ অবস'ান সম্পর্কে জানা যায়নি। ব্রাজিলের বিমান বাহিনী জানিয়েছে, তাদের বিমানগুলো ব্রাজিলের উত্তরপূর্ব উপকূলে এয়ার ফ্রান্সের বিমানটির সন্ধান শুরু করেছে। এয়ার ফ্রান্সের একজন মুখপাত্র ঘোষণা করেন, ‘এয়ার ফ্রান্স দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছে ফ্লাইট এএফ ৪৪৭ এর কোনো খবর পাওয়া যাচ্ছে না।’

উখিয়ায় জামায়াত প্রার্থী শাহজালাল চৌধুরী চেয়ারম্যান নির্বাচিত



কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বেসরকারিভাবে জামায়াত সমর্থিত প্রার্থী এডভোকেট শাহজালাল চৌধুরী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। চেয়ার প্রতীক নিয়ে তিনি পেয়েছেন ৩২ হাজার ৫০০ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ৩১ হাজার ৩৩৫ ভোট। এছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) পদে বিএনপি প্রার্থী শাহ আলম মাইক প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৩০ হাজার ৭৫০ ভোট, তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাসদের এডভোকেট অনীল বড়ণ্ডয়া চশমা প্রতীকে পেয়েছেন ১১ হাজার ৪৯৮ ভোট। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন বিএনপির শাহীন আকতার। হাঁস প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ২৭ হাজার ৫৮৯ ভোট, তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী খুরশিদা করীম প্রজাপতি প্রতীকে পেয়েছেন ২৭ হাজার ৪০৮ ভোট। সকাল থেকে উপজেলার ৩৫টি কেন্দ্রে নি্নিদ্র নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে উখিয়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচন সম্পন্ন হয়। বিচ্ছিন্ন ছোটখাটো ঘটনা ছাড়াই কোথাও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে নি। রোববার রাত থেকে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত র্যা ব ও পুলিশ জামায়াত শিবিরের ও স্থানীয় উচ্ছৃঙ্খল যুবকসহ কমপক্ষে ৩৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। ৩৫টি ভোট কেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল অপেক্ষাকৃত কম। গতকাল সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ভারী বৃষ্টি হলেও নারী-পুরুষ ভোটাররা শৃংখলার সাথে লাইনে দাঁড়িয়ে সকাল ৮ টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত ভোট প্রদান করেছেন। ১৮ জন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক র্যাখব, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করেছেন। উখিয়ার রাস্তায় রাস্তায় সার্বক্ষণিক টহল দিয়েছে র্যারব সদস্যরা। অধিক ঝুঁকিপূর্ণ ভোট কেন্দ্রগুলোতে প্রতিটি কেন্দ্রে একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট ছিল। এ ছাড়াও ৫ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ভোট কেন্দ্রগুলোতে সার্বক্ষণিক নজরধারী করেছেন নির্বাচনে প্রায় ৭১ ভাগ ভোট কাস্ট হয়েছে।

বাংলাদেশে রিজিওনাল পোর্ট স্থাপনে বিশ্বব্যাংকের পরামর্শ

বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ অবকাঠামো উন্নয়নসহ আঞ্চলিক যোগাযোগ ব্যবস্থার (রিজিওনাল কানেক্‌টিভিটি) উন্নয়নে অধিকতর সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে।বিশ্বব্যাংকের আঞ্চলিক পরিচালক ড. সাদিক আহমেদ গতকাল সোমবার যোগাযোগ মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের সাথে বাংলাদেশ সচিবালয়ে সাক্ষাৎকালে এ আশ্বাস দেন। খবর ইউএনবির। যোগাযোগ মন্ত্রী বিশ্বব্যাংকের আঞ্চলিক পরিচালককে জানান যে, সরকার ২০১৩ সালের মধ্যে পদ্মা সেতু চালু করবে এবং চালুর প্রথম দিন থেকেই এ সেতুতে রেল চলাচলের ব্যবস্থা রাখা হবে। মন্ত্রী বলেন, ঢাকাণ্ডফতুল্লাণ্ডমাওয়াণ্ডভাংগাণ্ডভাটিয়াপাড়াণ্ডযশোর রুটে নতুন রেল লাইন স্থাপন করা প্রয়োজন এবং এ জন্য প্রায় ৮২০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় হতে পারে। মন্ত্রী এ রেল লাইন স্থাপনে বিশ্বব্যাংকের সহায়তা কামনা করেন। মন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের সাথে মংলা বন্দরেও ‘রেলওয়ে কানেকটিভিটি’র প্রয়োজন আছে। এ প্রসঙ্গে বিশ্বব্যাংকের আঞ্চলিক পরিচালক বলেন, রেলওয়ে কানেকটিভিটিসহ দেশের সমগ্র যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হলে আঞ্চলিক কানকটিভিটি সহজতর হবে। তিনি বলেন, এদেশে রিজিওনাল পোর্ট স্থাপন করা হলে বিভিন্ন দেশ এ পোর্টের আঞ্চলিক কানেকটিভিটি সুবিধা ব্যবহার করে পণ্য পরিবহণ করতে পারবে। ফলে বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে। তিনি বলেন, এ দেশের উন্নয়নে বিশ্বব্যাংক সব রকম সহায়তা দিতে প্রস্তুত আছে।সড়ক ও রেলপথ বিভাগের সচিব এ এস এম আলী কবীর, অতিরিক্ত সচিব শফিক আলম মেহেদী, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মোঃ বেলায়েত হোসেন এবং সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মুন্সী মোস্তাফিজুর রহমান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।