দুর্নীতিবাজ কাস্টমস ও বন্দর কর্মকর্তাদের তালিকা হবে এক মাসের মধ্যে - মেয়র


চট্টগ্রাম কাস্টমস, বন্দরসহ শীর্ষ দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের একটি তালিকা আগামী এক মাসের মধ্যে প্রণয়নের ঘোষণা দিয়েছেন সিটি মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী। এসব কর্মকর্তাদের অন্যায়, দুর্নীতি, জুলুম আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বন্ধ করার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন তিনি। এর ব্যতয় ঘটলে প্রয়োজনে কাস্টমস হাউজ ঘেরাও করার ঘোষণা দেন তিনি। গতকাল নগরীর লালদীঘি ময়দানে আয়োজিত চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের জনসভায় তিনি সভাপতির বক্তব্য রাখছিলেন।
মেয়র বলেন, চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে বিদেশ ফেরত যাত্রীরা পদে পদে কাস্টমস কর্মকর্তাদের হয়রানির সম্মুখীন হচ্ছেন। এসব জুলুম আগামী ৭ দিনের মধ্যে বন্ধ করুন, অন্যথায় কাউকেই রেহাই দেয়া হবে না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, নৌ-পরিবহন মন্ত্রী ডা. আফসারুল আমীনসহ আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যসহ নেতৃবৃন্দ এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
সিটি মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, দলের ভেতর অনেকেই মীর জাফরী (বেঈমানী) করছেন। সরকারের মধ্যে থেকে সরকারের উদ্দেশ্য ভণ্ডুল করার ষড়যন্ত্র করছেন, তাদেরকে চিহ্নিত করতে হবে। তারপর প্রতিরোধ। আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন ছাত্রলীগ, যুবলীগ নেতাকর্মীদেরকেও তিনি সতর্ক করে দেন যাতে ষড়যন্ত্রে না জড়ায়।
সিটি মেয়র জনসভায় উপসি'ত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে শুধুমাত্র জনসভায় শ্লোগান দিলে চলবে না, সবাইকে বাধ্যতামূলকভাবে কম্পিউটার শিখতে হবে। মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, খাতুনগঞ্জে যেসব ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট পণ্যের দাম ইচ্ছে করে বাড়িয়ে দিচ্ছেন তাদের প্রতি আমাদের নীরব ভূমিকা আর থাকবে না। চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। সিটি মেয়র বলেন, যে সব কর্মকর্তা সরকারের মধ্যে থেকে সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন আগামী এক মাসের মধ্যে বৈঠক ডেকে তাদের চিহ্নিত করা হবে। তাদের কাউকে রেহাই দেয়া হবে না।

কুমিরা পর্যন্ত বিস্তৃতি লাভ করেছে জাহাজ ভাঙা শিল্প। বাড়ছে লোহা উৎপাদন, রাজস্ব আয় ও কর্মসংস্থান


চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে গড়ে ওঠা দেশের একমাত্র জাহাজ ভাঙা শিল্প ফৌজদারহাট-বারআউলিয়ার সীমানা ছাড়িয়ে এখন কুমিরা পর্যন্ত বিস্তৃতি লাভ করেছে। বিগত এক বছরে বারআউলিয়া এবং কুমিরা অঞ্চলে গড়ে উঠেছে ৬টি শিপইয়ার্ড। প্রক্রিয়াধীন রয়েছে আরো ৭টি। আর শিপইয়ার্ডের সংখ্যা বাড়তে থাকায় লোহা উৎপাদন বেড়ে দেশের নির্মাণ শিল্পে গতিশীলতা ফিরে আসার পাশাপাশি সরকারের রাজস্ব আয় বাড়ছে, আর ঘটেছে ব্যাপক কর্মসংস'ানও। ফলে জাহাজ ভাঙা শিল্প দিন দিন দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। তবে উন্নয়নে প্রতিবন্ধক হয়ে রয়েছে উপকূলীয় বনবিভাগ।
সূত্রে জানা যায়, ৬০ এর দশকে সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট সমুদ্র উপকূলে ঝড়ে আটকে যাওয়া জাহাজ কুইন আল পাইন ভেঙে স্স্থানীয় কয়েকজন পুঁজিপতি এখানে জাহাজ ভাঙা শিল্পের সূচনা করেন। তারপর এ ব্যবসায় ব্যাপক লাভ এবং জাহাজের প্রতিটি সামগ্রীর চাহিদার কথা বিবেচনা করে ব্যবসায়ীরা গড়ে তুলতে থাকে শিপইয়ার্ড। ফলে মাত্র দুই দশক অর্থাৎ ৮০ এর দশকের মধ্যে উপজেলার ফৌজদারহাট থেকে বারআউলিয়া পর্যন্ত দীর্ঘ ২০ কি. মি. এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে জাহাজ ভাঙা শিল্প।
বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স এসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট মোঃ কামাল উদ্দিন এ প্রতিবেদককে জানান ইয়ার্ডগুলো থেকে বার্ষিক প্রায় ১৭ থেকে ১৮ লক্ষ টন লোহা পাওয়া যাচ্ছে এবং সরকার পেয়ে আসছে প্রায় ৮শ কোটি টাকা বার্ষিক রাজস্ব । এছাড়া প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে পাঁচলক্ষ লোকের কর্মসংস'ান করছে এ শিল্প। এদিকে দীর্ঘদিন ধরে এখানে ইয়ার্ড সংখ্যা অপরিবর্তিত থাকলেও বিগত এক বছর সময়ে বারআউলিয়া এবং কুমিরা এলাকায় নতুন করে গড়ে উঠেছে ৬টি শিপইয়ার্ড। এ সময়ে জাহাজ ভাঙা শিল্পের দীর্ঘদিনের ফৌজদারহাট-বারআউলিয়া মানচিত্রের পরিবর্তন ঘটিয়ে কুমিরা এলাকাতেও ছড়িয়ে পড়ে শিপব্রেকিং শিল্প। সরকার এক ঘোষণাপত্রে বড়কুমিরা ইউনিয়নের উত্তর সীমানা পর্যন্ত শিপইয়ার্ড এলাকা ঘোষণা করে, এই ঘোষণার আলোকে কুমিরা এলাকায় বেশ কয়েকটি শিপইয়ার্ড প্রতিষ্ঠা হয়। বড়কুমিরায় রাজা কাশেমের মালিকানায় রাজা শিপব্রেকিং ইয়ার্ড এবং মোজাহের সওদাগরের মালিকানায় নিউ সিক্স স্টারটিও এখন পুরোদমে চলছে। ফলে বর্তমানে সীতাকুণ্ডে শিপব্রেকিং ইয়ার্ডের সংখ্যা ৪২টিতে দাঁড়িয়েছে। অপরদিকে শুধু নতুন ৬টি ইয়ার্ড চালু হওয়া নয়, একই এলাকাতে কমপক্ষে আরো ৭টি ইয়ার্ড খুব শীঘ্রই নির্মাণের প্রক্রিয়া চলছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। আর শিপব্রেকিং ইয়ার্ডের সংখ্যা বাড়তে থাকায় দেশের অর্থনীতিতে তা ইতিবাচক ভূমিকাও রাখছে। নতুন গড়ে উঠা এই ৬টি শিপইয়ার্ডে কর্মসংস'ান হবে আরো প্রায় ৩ হাজার লোকের। তাছাড়া এই ইয়ার্ডগুলো থেকে দেশ পাবে প্রতিবছর আরো ৩ লক্ষ টন লৌহ সহ তামা, পিতল, ফার্নিচারসহ বিভিন্নরকম সামগ্রী। আর সরকার পাবে পৌনে ২শ কোটি টাকা রাজস্ব। প্রক্রিয়াধীন আরো ৭টি ইয়ার্ড গড়ে উঠলে আনুপাতিক হারে লৌহ উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি বাড়বে কর্মসংস'ান এবং রাজস্ব আয়। মো. কামাল উদ্দিন জানান, বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে আমদানি উন্মুক্ত করার ফলে দেশের ভাসমান খনি খ্যাত একমাত্র শিপব্রেকিং শিল্পের প্রসার ঘটেছে খুবই দ্রুত। যার সুফল পাচ্ছে ভোক্তারা। তবে সরকারকে কঠোর তত্ত্বাবধানের মাধ্যমে এ ব্যবসাকে সিন্ডিকেট মুক্ত রাখতে হবে। তা না হলে গুটিকয়েকজন ব্যবসায়ীর কাছে দেশের নির্মাণ শিল্প জিম্মি হয়ে পড়বে।
এদিকে নতুন করে শিপ ইয়ার্ড নির্মাণ করতে কিছু কেওড়া গাছ কাটতে বাধ্য হচ্ছে ইয়ার্ড কর্তৃপক্ষ। কারণ, কেওড়া গাছের মালিক উপকূলীয় বন বিভাগ হলেও ভূমিগুলো ব্যক্তি মালিকানাধীন। ইয়ার্ড কর্তৃপক্ষ জমিগুলো ব্যক্তি মালিকদের কাছ থেকে ক্রয় করেছেন। ঐ জায়গায় বনবিভাগের বপন করা কেওড়া গাছ থাকায় ইয়ার্ড নির্মাণে একটি বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯১ সালের প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ে সীতাকুণ্ড উপকূলীয় এলাকায় বহু লোক প্রাণ হারায়। সে সময় বেড়ি বাঁধ এলাকায় কেওড়া বন না থাকায় এই এলাকার ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়েছে বলে অভিজ্ঞ মহল মতামত প্রদান করায় বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠান ও বন বিভাগ বেড়ি বাঁধ এলাকায় কেওড়া বন গড়ে তোলার জন্য পরিকল্পনা হাতে নেন এবং বন বিভাগ কেওড়া গাছের চারা সরবরাহ করে আর এলাকার লোকজন, সামাজিক সংগঠন বিশেষ করে চক্রবাক ক্লাব, ফুটন্ত গোলাপ, বারআউলিয়াস' একটি ক্লাব সেচ্ছাশ্রমে সে চারাগুলো রোপণ করে। বেড়ি বাঁধের ভিতর জমির মালিকানার উৎস জানতে গিয়ে জানা যায়, ১৯৬৫, ১৯৮৬, ১৯৯১ সালসহ বিভিন্ন সময়ে জলোচ্ছ্বাসে সোনাইছড়ী, কুমিরা উপকূলীয় এলাকায় অনেক বাড়ি ঘর সাগরে ভাসিয়ে নেয়। এর পর এ সব এলাকায় প্রাণের ভয়ে কেউ বাড়ি ঘর করে নি।তারা আরো পূর্ব দিকে এসে বসবাস গড়ে তোলে। পূর্বের ভিটা বাড়ি একবার সাগরে তলিয়ে যায় আবার চর জাগে এভাবেই কেটে যায় যুগ যুগ। এই পরিত্যক্ত জায়গায় বন বিভাগ কেওড়া গাছ লাগানোর সময় জমির মালিকের কাছ থেকে অনুমোদন নেননি। সেই এক সময়ের পরিত্যক্ত জায়গায় শিপইয়ার্ড নির্মাণ করতে চাইলে বাধা হয়ে দাঁড়ায় উপকূলীয় বন বিভাগ। তারা এসব গাছ কাটতে বাধা দিচ্ছে, ইয়ার্ডের মালিকদের বিরুদ্ধে গাছকাটার অপরাধে মামলা দিচ্ছে। পরিবেশ বাদী সংগঠনগুলো বিশেষ করে “বেলা” পরিবেশ বিঘ্ন সৃষ্টির অভিযোগ এনে হাই কোর্টে মামলা দিচ্ছে। এসব জুট ঝামেলায় পড়ে ভূমি মন্ত্রণালয়, ইয়ার্ড নির্মাণে সরকারি জলাশয় ভূমি লিজ প্রদান বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে শিপইয়ার্ড উন্নয়ন, জনবলের কর্ম সংস'ান ও রাজস্ব আহরণের পথে একটি বড় বাধা সৃষ্টি হয়েছে। সীতাকুণ্ড সহকারি কমিশনার (ভূমি) গাউসুল আজম এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি তার অফিসের রেকর্ড পত্র যাচাই করে জানান মধ্য সোনাইছড়ী মৌজার (জে,এল নং ৪৮) বন বিভাগের নামে কোন রেকর্ড প্রচারিত হয়নি এবং মালিকানাও নেই। এই মৌজার ব্যক্তি মালিকানাধীন ভূমি সাগর গর্ভে শুধু বিলীন হয়েছে, নতুন চর জেগে উঠেনি। ফলে বন বিভাগকে সরকারিভাবে মধ্য সোনাইছড়ী মৌজায় (জে এল নং-৪৮-এ) কোন জমি হস্তান্তর করা হয়নি ।
অপরদিকে সীতাকুণ্ড উপকূলীয় বন কর্মকর্তা জান মোহাম্মদ খানের সাথে তার মোবাইলে (০১৭১২-১০১০১৮) যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ে ব্যাপক জান মালের ক্ষতি হলে সকল উপকূলীয় এলাকায় বনায়ন করার জন্য সরকার নির্দেশ দেন। তাছাড়া চট্টগ্রাম কোস্টাল এরিয়ায় ১ লাখ ৯৫ হাজার একর জমি হুকুম দখল করার জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয় যা এখনো প্রক্রিয়াধীন আছে। সেই প্রস্তাবনার আলোকে তখনকার উপকূলীয় জলাশয়ে কেওড়া গাছ লাগানো হয়। সেই বন কর্তনের অভিযোগে ১১টি মামলা হয়েছে।
এলাকাবাসী জানায়, দেশের উন্নয়ন স্বার্থে শিপইয়ার্ড নির্মাণে সকল বাধা নিরসন করা জরুরি। তবে তা আইনের মধ্যে এবং পরিবেশ বান্ধব হতে হবে।

সুন্দরবন থেকে জলোচ্ছ্বাসে ভেসে গেছে ৬১ টি কুমির ও ৫টি হরিণ


ঘূর্ণিঝড় আয়লায় জলোচ্ছ্বাসে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে রাখা লবণ পানির প্রজাতির ছোট-বড় ৬১টি কুমির এবং পাঁচটি চিত্রল হরিণ ভেসে গেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে সংরক্ষণ কেন্দ্রে থাকা পশু ও সরীসৃপ গণনা শেষে এই তথ্য জানিয়েছেন বনকর্মকর্তারা। খবর বিডিনিউজের। পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা (ডিএফও) মিহির কুমার দে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বলেন, আজ সকালে চাঁদপাই রেঞ্জের একমাত্র বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্র করমজলে সরজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে বন্যপ্রাণীর খোঁজ খবর নিয়েছি। তখন বন কর্মীরা বিভিন্ন চৌবাচ্চায় নেমে লবণ পানির কুমিরগুলো ঠিক আছে কিনা দেখতে গিয়ে ছোট-বড় ৬১টি কুমির পাননি।
ভেসে যাওয়া এই কুমিরগুলোর বয়স এক থেকে চার বছরের মধ্যে বলে তিনি জানান। এছাড়া করমজল কেন্দ্রে রাখা চিত্রল হরিণের মধ্যে পাঁচটি হরিণ পাওয়া যায়নি। মিহির কুমার জানান, ঝড়ের আগে করমজলে লবণ পানির প্রজাতির ছোট-বড় ১৩৩টি এবং মিঠা পানির প্রজাতির ৩টি কুমির ছিল। এছাড়া সেখানে অন্তত বারোটি হরিণ, কয়েকটি গুইসাপ ও কিছু বানর ছিল। পরিদর্শনের সময় তার সঙ্গে সুন্দরবনের বন সংরক্ষক মো. আকবর হোসেনও ছিলেন বলে বিভাগীয় বনকর্তা মিহির কুমার জানান।

রাঙ্গুনিয়ায় আদিবাসী মহিলার ক্ষত-বিক্ষত লাশ উদ্ধার


রাঙ্গুনিয়া উপজেলার দুর্গম পাহাড়ি এলাকা বড়খোলা পল্লী থেকে এক আদিবাসী মহিলার ক্ষত-বিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল ২৯ মে শুক্রবার সকালে রাঙ্গুনিয়া থানা পুলিশ এ লাশ উদ্ধার করে। এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার দুর্গম এলাকা জঙ্গল সরফভাটার বড়খোলা আদিবাসী পল্লীর বাসিন্দা ওয়াতুমা মার্মা (৪০) গত বুধবার সকালে জুম চাষের জন্যে ঘর থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি। তার পরিবারের সদস্যগণ বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও তার কোন হদিস পায়নি। এদিকে গতকাল শুক্রবার আদিবাসী পল্লী বড়খোলার দূরবর্তী একটি ছড়া থেকে দুর্গন্ধ বের হলে এলাকাবাসী ওয়াতুমা মার্মার লাশের সন্ধান পায়। পরে খবর পেয়ে থানা পুলিশ উক্ত ছড়া থেকে তার লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্যে মর্গে প্রেরণ করে। পুলিশ জানায় লাশের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এছাড়া পচে যাওয়ার কারণে লাশ ছিল ক্ষত-বিক্ষত। ধারণা করা হচ্ছে তাকে ধর্ষণ শেষে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। তবে এলাকাবাসী বলছে জায়গা জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে তাকে হত্যা করা হতে পারে।

ব্যবসায়ীদের বেসুমার মুনাফা রোধে সরকার তৎপর। রমজানের আগেই টিসিবিকে বাজারে নামানো হচ্ছে


প্রতিবছর রমজান মাস শুরু হলেই নানা অজুহাতে দেশে জিনিষপত্রের দাম বাড়ানো শুরু হয়। সেদিক থেকে রমজান সংযমের মাস হলেও সার্বিকভাবে ব্যবসায়ীদের কাছে এ মাসটি হয়ে যায় বেসুমার মুনাফার মাস। এসব কারণে নানা সংকট মাথায় নিয়ে রমজানের আগেই ব্যবসায়ীর ভূমিকায় নামছে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। পণ্যের কৃত্রিম সংকট তৈরি ও দাম বাড়িয়ে কালোবাজারি ব্যবসায়ীদের মুনাফা করার পথ বন্ধ করতে সরকার এই উদ্যোগ নিয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় বাজারে সিন্ডিকেটের একচেটিয়া ব্যবসা বন্ধে এই কৌশল নেয়া হচ্ছে। সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৫টি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি করবে টিসিবি। রমজানে সরকারি এই প্রতিষ্ঠানটির ভূমিকা হবে ব্যবসায়ীর মতো। বাজারে সরবরাহ ও পণ্যের দাম ঠিক রাখতে সরকার এসব পণ্য বিক্রি করবে সাধারণ ব্যবসায়ীদের মতো। ইতিমধ্যে ভোজ্যতেল, পেঁয়াজ, ছোলা, চিনিসহ বেশ কিছু পণ্য সরাসরি টিসিবির মাধ্যমে আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও কী পরিমাণ পণ্য আনা হচ্ছে, কবে এলসি খোলা হবে সে ব্যাপারে স্পষ্ট কোনো দিকনির্দেশনা দেয়া হয়নি। এসব সিদ্ধান্ত নিতে দেরি হলে সরকারের উদ্দেশ্য সফল হবে না বলে মন্তব্য করেছেন সংশ্লিষ্টরা। এ ছাড়াও টিসিবির রয়েছে নানামুখী সমস্যা। টিসিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলেছেন, সরকারকে পুরোনো ধ্যানধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। দ্রুত নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত নিতে না পারলে টিসিবির কাজে গতি আসবে না। টিসিবির চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন বলেন, রমজানে কী পরিমাণ পণ্য আনা হবে তার কোনো দিকনির্দেশনা সরকারের কাছ থেকে এখনো আমরা পাইনি। এসব বিষয় নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। নেয়া হচ্ছে ব্যাপক প্রস'তি। আশা করা হচ্ছে, দু-একদিনের মধ্যেই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত আসবে। ৩১ মে সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এসব ব্যাপারে আলোচনার কথা ছিল। সংসদীয় কমিটির বৈঠক পিছিয়ে গেছে। খবর এনএনবির।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, টিসিবিকে আধুনিকায়নের জন্য কাজ করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এদিকে টিসিবিকে কোম্পানি করা হবে নাকি সরকারের একটি বিভাগে পরিণত করা হবেণ্ড তা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছে সরকার। টিসিবিকে শক্তিশালী করার বিষয়ে সরকার নীতিগতভাবে সম্মত হলেও কোন প্রক্রিয়ায় সেটি করা হবে তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে দায়িত্বশীল সূত্র থেকে জানা গেছে, টিসিবিকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তরের প্রস্তাবই উঠেছে জোরেশোরে। টিসিবি পুনর্গঠন সংক্রান্ত কমিটি প্রস্তাবটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছে।

ঢাকায় বিপুল পরিমাণ জাল টাকা ও সরঞ্জাম উদ্ধার ॥ গ্রেপ্তার ৫

র‌্যাব সদস্যরা পুরান ঢাকার একটি ফ্লাটে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ জাল টাকা ও জাল টাকা তৈরীর সরঞ্জামাদি উদ্ধার করেছে। এসময় জাল টাকা তৈরীর সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। খবর ফোকাস বাংলা নিউজের। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে পুরান ঢাকার নবাবগঞ্জ রোডের একটি আবাসিক ফ্ল্যাটে র‌্যাব-১০ এর একটি দল অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে।
র‌্যাব সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে জালটাকাসহ এক ব্যক্তিকে কেরানীগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করে র‌্যাব-১০-এর সদস্যরা। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে জাল টাকা তৈরীর কারখানার সন্ধান পায় র‌্যাব। ওই রাতেই গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির তথ্য মতো র‌্যাব-১০ এর একটি দল নবাবগঞ্জ রোডের একটি আবাসিক ফ্লাটে অভিযান চালায়। র‌্যাব সদস্যরা সেখান থেকে গ্রেফতার করে পাঁচ জনকে। র‌্যাব সদস্যরা ফ্লাটটিতে অভিযান চালিয়ে জাল টাকা ছাড়াও অর্ধ লক্ষাধিক টাকা মূল্যমানের জাল ডলার, রুপি, রিংগিত, গুলট্রাম, সৌদি রিয়াল উদ্ধার করে।
জাল টাকা তৈরি চক্রটির অন্যতম হোতা গ্রেফতারকৃত সাজ্জাদ হোসেন রবিন র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, তারা স্থানীয় উপকরণ ব্যবহার করেই কম্পিউটারে স্ক্যানিং করে জাল টাকা তৈরী করে। এক্ষেত্রে সূক্ষ্মভাবে জলছাপ ব্যবহার করা হয়। এসব জাল নোট সচরাচর বড় বড় বান্ডিলের মধ্যে গুঁজিয়ে দিয়ে ব্যবসায়ীদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। দশ হাজার টাকার একটি জাল টাকার বান্ডিল তারা মাত্র দেড় হাজার টাকায় বিক্রি করতো বলে গ্রেফতারকৃতরা জানায়।

১৪১ রানে স্কটল্যান্ডকে গুড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ

নেদারল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের সুখস্মৃতি নিয়ে গতকাল টুয়েন্টি টুয়েন্টি বিশ্বকাপ প্রস্তুতির তৃতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে খেলতে নেমেছে। শুরুতেু অবশ্য টসে জয় পায় বাংলাদেশ অধিনায়ক। আর টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার আমন্ত্রণ জানায় প্রতিপক্ষকে। আর বাংলাদেশের বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের মুখে স্কটিশরা নির্ধারিত ২০ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে সংগ্রহ করে ১৪১ রান। সর্বোচ্চ ৫০ রান করেন ম্যাককালাম। এছাড়া হ্যামিল্টনের ব্যাট থেকে আসে ৪৪ রান। দ্বিতীয় প্রস্তুতি ম্যাচে ৪ উইকেট পাওয়া রুবেল গতকালও বাংলাদেশের হয়ে আগুন ঝড়ানো বোলিং করেন। গতকাল মাত্র ১৬ রান দিয়ে নেন ৫ উইকেট। এছাড়া রিয়াদ এবং মাশরাফি নেন ১টি করে উইকেট। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ ৩ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে সংগ্রহ করেছে ২৫ রান।

এবারের সোনার বল মেসির : পেলে

এই মুহূর্তে তাঁর থেকে খুশি বোধহয় আর কেউ নেই। ফাইনালের আগে ‘নির্ভীক’ ম্যানচেস্টারকে এগিয়ে রেখেছিলেন। বার্সিলোনা রক্ষণে আলভেস, আবিদাল, ফ্লেচারের না-থাকাই কারণ। কিন্তু, প্রিয় দল ট্রফি জেতায় উচ্ছ্বাস যেন আর চেপে রাখতে পারছেন না। ইয়োহান ক্রুয়েফ। ‘ফল কেমন হবে মৌসুমের শুরুতে বোঝা যায় না। তবে, আমরা জানি বার্সেলোনা ভাল ফুটবল খেলে। বুধবারও সে-ভাবেই খেলেছে। এই দলটা অনেক দূর এগোবে। যোগ্য দল হিসেবেই ট্রফিগুলো জিতেছে।’ কোচ গার্দিওলাকে দেখেও মুগ্ধ ক্রুয়েফ। যদিও রাইকার্ডের সঙ্গে তাঁর তুলনা করতে চান না। ‘রাইকার্ডের নিন্দে করার মানে হয় না। এই দলের ফুটবলারদের জন্য অনেক কিছু করেছে। তবে গার্দিওলা একটু অদল-বদল করতেই দলটা দুর্দান্তভাবেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে।’ ফাইনালের প্রথম ১০ মিনিট বার্সেলোনা যে কিছুটা চাপে ছিল, জানাতে ভোলেননি কিংবদন্তি তারকা। ‘হ্যাঁ, শুরুতে দল কিছুটা চাপে ছিল। কিন্তু, সমস্যা কাটিয়ে উঠতেই ছবিটা বদলে গেল। বাকি সময়টা তো বার্সেলোনাই শাসন করল।’ তবে, পেলে অবশ্য বেশি উচ্ছ্বসিত বার্সেলোনার জয়ের নায়ক মেসিকে নিয়েই। এবার ফিফার বর্ষসেরার পুরস্কারটা মেসিরই পাওয়া উচিত, এমন দাবিও তুলে ফেললেন ফুটবল সম্রাট। ‘ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো নয়, এবার সোনার বলটা মেসিরই প্রাপ্য। ওর নির্বাচন নিয়ে সংশয়ের কোনও জায়গাই নেই। রোনালদিনহো, কাকার পর গত বছর রোনালদোর হাতে পুরস্কারটা তুলে দিয়েছি আমি। প্রতিবারই দ্বিতীয় স্থান ছিল মেসি। এবার কিন্তু নিশ্চিতভাবেই পুরস্কারটা ওর হাতেই ওঠা উচিত।’