পিলখানা হত্যাকাণ্ড : প্রধান কারণ বিডিআর জওয়ানদের ক্ষোভ ।। জঙ্গি সম্পৃক্ততার প্রমাণ মিলেনি ।। সেনা আইনে বিচারসহ তদন্ত কমিটির ২৩ সুপারিশ



বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় গঠিত সরকারি তদন্ত কমিটি সরকারের বিবেচনা ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আটটি স্বল্পমেয়াদী ও ১৫টি দীর্ঘ মেয়াদী সুপারিশ প্রস্তাব করেছে। সুপারিশগুলোর মধ্যে সেনা আইনে অনতিবিলম্বে পিলখানা ঘটনার বিচার কাজ সম্পন্ন করা এবং বিডিআর বিদ্রোহের মূল কুশীলবদের শনাক্তকরণে আরো তদন্তের ব্যবস্থা করার প্রস্তাব দিয়েছে কমিটি।
বিডিআর জওয়ানদের ক্ষোভ কাজে লাগিয়ে পিলখানা হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। এতে কোন জঙ্গি সম্পৃক্ততা নেই বলে মত দিয়েছে তদন্ত কমিটি।
গতকাল বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সরকার গঠিত এই তদন্ত কমিটির চেয়ারম্যান সাবেক সচিব আনিসুজ্জামান খান সাংবাদিকদের সামনে তদন্ত প্রতিবেদনের সার সংক্ষেপ তুলে ধরেন। এ সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ, বিডিআর মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মইনুল ইসলাম উপসি'ত ছিলেন।
রিপোর্টে বলা হয় বিদ্রোহের সময় বিডিআর সদস্যদের দমনে সেনা অভিযান চালালে দেশে গৃহযুদ্ধের মত পরিসি'তি সৃষ্টি হতে পারত। পিলখানা হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগে ২৪ জন বিডিআর কর্মকর্তা ও পরে ঘটনা প্রবাহে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টুসহ একাধিক ব্যক্তির নাম তদন্তে উল্লেখ করা হয়েছে।
গত ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি বিডিআর সদর দপ্তর পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় সরকার গঠিত ১২ সদস্যের তদন্ত কমিটির চেয়ারম্যান সাবেক সচিব আনিসুজ্জামান খান ৩০৯ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন। তদন্ত প্রতিবেদনে বিদ্রোহের ঘটনায় জঙ্গি সম্পৃক্ততা ও অন্য কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের ইন্ধনের তথ্য পাওয়া যায়নি বলে উল্লেখ করা হয়। প্রতিবেদনে বিদ্রোহের পটভূমি,বিদ্রোহে চলমান ঘটনাপ্রবাহ, বিদ্রোহের কারণ এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে। তদন্ত কমিটির চেয়ারম্যান বলেন, বিডিআর বাহিনীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই সেনা নেতৃত্ব মেনে না নেয়ার মানসিকতা, ডালভাত কর্মসূচির অস্বচ্ছতা, সেনা কর্মকর্তাদের বিলাসবহুল জীবনযাপন ও বিডিআর জওয়ানদের অহেতুক শাস্তি দেয়ায় সাধারণ বিডিআর সদস্যদের মনে অসন্তোষের সৃষ্টি করে। তবে এসব বিষয় বিদ্রোহের মূল কারণ কিনা তা নিশ্চিতভাবে জানাতে পারেনি তদন্ত কমিটি।
আনিসুজ্জামান আরো বলেন, বিডিআর সদস্যদের এসব দাবি-দাওয়া সামনে রেখে কিছু ষড়যন্ত্রকারী দেশের সি'তিশীলতা নষ্ট করতে পিলখানার ঘটনা ঘটিয়েছে। সেই সাথে পিলখানা হত্যাযজ্ঞের পর সদস্যদের পালিয়ে যেতে স্থানীয় সন্ত্রাসী লেদার লিটন, বিএনপির ওয়ার্ড কমিশনার ও সাবেক এমপি নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টুসহ আরো কয়েকজন সহায়তা করেছে।
এদিকে তদন্ত রিপোর্টে বলা হয় বিডিআর জওয়ানরা ৯ম সংসদ নির্বাচনের পর তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নুর তাপস ও ফজলুল করিম সেলিমের সাথে সাক্ষাৎ করে ছিলেন। রিপোর্টে বলা হয়, রাজনৈতিকভাবে দাবি-দাওয়া পূরণে ব্যর্থ হয়ে বিডিআর জওয়ানরা নিজেরাই ২৪ ফেব্রুয়ারি রাতে বিদ্রোহের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে। সে অনুযায়ী ডিএডি তৌহিদ, জলিল, হাবিব ও মাসুদসহ কতিপয় সৈনিক ২৫ ফেব্রুয়ারি সকালে পিলখানায় সেনা কর্মকর্তাদের হত্যা করে এবং লাশ গুমের চেষ্টা চালায়। বিডিআর বিদ্রোহে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা ও ৯ জন বিডিআর সদস্য নিহত হয়। তদন্ত প্রতিবেদনে ইলেট্রনিক মিডিয়ার ভূমিকা নিয়েও সমালোচনা করা হয়।

চট্টগ্রাম পলিটেকনিকে ছাত্রলীগ-শিবির দফায় দফায় সংঘর্ষ : আহত ২০



ছাত্রলীগ ও ছাত্রশিবিরের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের পর চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেল তিনটা থেকে শুরু হওয়া এ সংঘর্ষের ঘটনায় দুই ছাত্র সংগঠনের অন্তত বিশজন কর্মী কমবেশি আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে প্রকাশ শিকদার নামে এক ছাত্রের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহতদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করতে আজ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করবে কর্তৃপক্ষ। ঘটনার পর গতকাল রাতে শিবির কর্মীরা ষোলশহর, মুরাদপুর, নাসিরাবাদ ও এর আশপাশের এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে। মিছিলে কয়েকশ শিবির কর্মী অংশ নেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
জানা গেছে, শিবির কর্মীরা বিকেল তিনটার দিকে সিরাজদ্দৌলা হোস্টেলে ‘বায়তুল মাল’ সংগ্রহ করার সময় ছাত্রলীগের কয়েক কর্মী তাতে বাধা দেয়। এতে দু পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি এবং ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে এই সংঘর্ষ পাশের নজরুল হোস্টেলে এবং পর্যায়ক্রমে পুরো ক্যাম্পাসেই ছড়িয়ে পড়ে। লাঠিসোটা ও ইটপাটকেল নিয়ে দু পক্ষ পরস্পরের প্রতি হামলা চালায়। প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে চলে সংঘর্ষ। উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে ছাত্রশিবির অবস'ানগত কারণে কিছুটা সুবিধা পায়। সংঘর্ষের একপর্যায়ে ছাত্রশিবির কর্মীরা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থান নেয়। এ সময় তাদের হাতে লাঠিসোটাসহ অস্ত্রশস্ত্র দেখা যায়।
খবর পেয়ে পুলিশের কোতোয়ালী জোনের সহকারী (এসি) কমিশনার বাবুল আক্তার ঘটনাস'লে যান। এসি বাবুল জানান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিসি'তি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। পরিসি'তি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছে বলে জানান তিনি।
সংঘর্ষের ঘটনায় ইনস্টিটিউট কর্তপক্ষ দু দিনের জন্য ক্লাস বন্ধ ঘোষণার পাশাপাশি অনির্দিষ্টকালের জন্য ছাত্রাবাস বন্ধ ঘোষণা করেছে। গতকাল রাত সাড়ে আটটার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হোস্টেল ছাড়তে বলা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ আব্দুল মালেক গতকাল রাতে দৈনিক আজাদীকে বলেন, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুটি ছাত্র সংগঠনের কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের কারণে ইনস্টিটিউটের ক্লাস দুদিনের জন্য বন্ধ করা হয়েছে। এছাড়া অনির্দিষ্টকালের জন্য হোস্টেল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, ইনস্টিটিউটের তিনটি হোস্টেল থেকে শিক্ষার্থীদের রাত সাড়ে আটটার মধ্যে চলে যেতে বলা হয়। ইতোমধ্যে অধিকাংশ শিক্ষার্থী হোস্টেল থেকে চলে গেছে। অধ্যক্ষ মালেক বলেন, সংঘর্ষের সময় হোস্টেলে এবং খাবার কক্ষে হামলা চালানো হয়েছে। এতে বেশ ক্ষতি সাধিত হয়েছে। তদন্ত কমিটি আজ ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করবে।
ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ জানায়, আগামী দু দিন ক্লাস বন্ধ থাকলেও পূর্বঘোষিত পরীক্ষাসমূহ যথারীতি অনর্ুষ্ঠিত হবে। নতুন করে সংঘর্ষ এড়াতে এবং পরিসি'তি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ক্যাম্পাসে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থী ও পুলিশ জানায়, আহত ছাত্রদের মধ্যে আটজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি প্রকাশের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তার মাথায় প্রচণ্ড আঘাত লেগেছে। আহতদের মধ্যে অপর কয়েকজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। এরা হলেন রিপন, জাহিদুল আলম, শিপন, দসুত, অসীম, সজীব, রুবেল, ইকবাল, বাবুল, জয়, মিজান ও সায়েম।
খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইফতেখার হাসান জানান, ইনস্টিটিউটের কাজী নজরুল এবং সিরাজদ্দৌলা হোস্টেলে ছাত্রলীগ ও ছাত্রশিবিরের কর্মীদের মধ্যে কথাকাটাকাটি ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার জের ধরে কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়। উভয় সংগঠনের কর্মীরা ইটপাটকেল ও লাঠিসোটা নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।
বায়েজীদ বোস্তামী থানা যুবলীগের সহ-সভাপতি মাকসুদ চৌধুরী এ ঘটনার জন্য শিবিরকে দায়ী করে বলেন, তারা বিনা উস্কানিতে, বিনা কারণে ছাত্রলীগের নিরীহ কর্মীদের ওপর হামলা চালায়। তিনি ছাত্র নামধারী শিবির ক্যাডারদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
এদিকে সংঘর্ষের ঘটনায় ছাত্রলীগ ও ছাত্রশিবির পরস্পরকে দায়ী করেছে। হামলার ঘটনায় মহানগর ছাত্রলীগ আজ সকাল ১১টায় দারুল ফজল মার্কেটস্থ কার্যালয়ে প্রতিবাদ সভার আয়োজন করেছে। ছাত্রলীগ নেতা শিবপ্রসাদ দাশ শিবু গতকালের ওই ঘটনায় তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন। ছাত্রশিবির দাবি করেছে, ছাত্রাবাস দখল করার লক্ষ্যে ছাত্রলীগ পরিকল্পিতভাবে বহিরাগতদের নিয়ে নিরীহ ছাত্রদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালায়। এ ঘটনায় এক বিবৃতিতে চট্টগ্রাম মহানগর (উত্তর) ছাত্রশিবিরের সভাপতি মু. কলিম উল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান তীব্র নিন্দা জানান। তারা দোষীদের বিচার দাবি করে অবিলম্বে ছাত্রাবাস খুলে দেওয়ারও দাবি জানান।

খালেদা জিয়ার বাড়ি ছাড়ার নোটিশের কার্যকারিতা ৩ মাসের জন্য স্থগিত ।। তিন সপ্তাহের মধ্যে কারণ দর্শানোর জন্য রুল জারি

খালেদা জিয়ার সেনানিবাসের বাড়ি ছাড়ার নোটিশের কার্যকারিতা তিন মাসের জন্য স্থগিত করে দিয়েছে হাইকোর্ট। পাশাপাশি বাড়িটি ছাড়ার নোটিশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে নাণ্ড আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে তার কারণ দর্শানোর জন্য সরকারের প্রতি রুলনিশি জারি করেছে আদালত।
গতকাল দুপুরে বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ প্রায় সোয়া দুই ঘণ্টার শুনানি গ্রহণ করে এই আদেশ দেন। সরকারের প্রতিরক্ষা সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, সামরিক ভূ-সম্পত্তি ও সেনানিবাস অধিদপ্তরের পরিচালক, সেনা ভূমি প্রশাসক ও সেনা ভূ সম্পত্তি কর্মকর্তাকে এ নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে। আদেশের আগে শুনানিতে আদালত বলেছেন, রিটটিতে গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক ও আইনি প্রশ্ন জড়িত। তাই বিষয়টি পরীক্ষা প্রয়োজন। খবর বিডিনিউজের।
শুনানিতে খালেদার আইনজীবী মওদুদ আহমদ বলেন, “বাড়িটি বরাদ্দের ক্ষেত্রে খালেদা জিয়া কোনোভাবেই জড়িত ছিলেন না। জেনারেল জিয়াউর রহমান যখন সেনা কর্মকর্তা, সেনাবাহিনীর উপ-প্রধান, সেনাবাহিনী প্রধান, এমনকি রাষ্ট্রপতি ছিলেন তখনও এ বাড়িতে ছিলেন। রাষ্ট্রপতি হলেও বঙ্গভবনে ছিলেন না তিনি। যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ায় খালেদা জিয়াকে এই বাড়িটি দেওয়া হয়েছে। একবার কোনো ব্যক্তিকে ভুলভাবে দেওয়া হলেও সরকার সে সম্পত্তি কেড়ে নিতে পারে না।
খালেদার প্রধান কৌঁসুলী টিএইচ খান শুনানিতে উচ্চ আদালতের বিভিন্ন মামলার নজির উপস'াপন করে বলেন, কারও মৌলিক অধিকার কেড়ে নেওয়া যায় না। এর আগে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, চার জাতীয় নেতা, সাত বীর শ্রেষ্ঠ, ভাষা শহীদ ও শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের অবদানের কথা উল্লেখ করে বলেন, “এইসব শহীদদের পরিবারগুলোকে কী দেওয়া হয়েছে। আর খালেদা জিয়াকে বেআইনিভাবে রাজনৈতিক প্রভাবে প্রায় সোয়া আট বিঘা জমি দেওয়া হয়েছে। এভাবে একজনের নামে এত বেশি জমি আইনের প্রক্রিয়া অনুসরণ না করেই কি দেওয়া যায়?
সামরিক ভূমি প্রশাসন আইনের বিভিন্ন ধারা উল্লেখ করে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, বাড়িটি সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা ব্যবহার করতেন। এই জমি আইন অনুযায়ী কোনো বেসামরিক ব্যক্তিকে দেওয়া যায় না। গতকাল দুপুর সোয়া ২টার দিকে এ শুনানি শুরু হয়। এর আগে রিটটি নিয়ে শুনানি মঙ্গলবার দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলার পর বুধবার দুপুর পর্যন্ত মুলতবি করেছিল এ বেঞ্চ।
বাড়ি ছাড়ার নোটিশ চ্যালেঞ্জ করে খালেদা জিয়া গত ৩ মে হাইকোর্টে রিট করেন। পর পর চারটি বেঞ্চ অপারগতা প্রকাশ করার পর গত ১২ মে পঞ্চম এ বেঞ্চ রিটটির শুনানিতে সম্মত হয়। মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়াকে সরকার গত ২০ এপ্রিল ১৫ দিনের সময় দিয়ে বাড়িটি ছেড়ে দিতে প্রথম নোটিশ দেয়। এরপর গত ৭ মে একটি সম্পূরক এবং ২৪ মে তৃতীয় আরেকটি নোটিশ পাঠানো হয় তাকে।

অস্ত্র আটকের পর বাবর ফোনে ধমক দিয়েছিলেন ।। দশ ট্রাক অস্ত্র মামলায় রহিমের জবানবন্দী

দশট্রাক অস্ত্র মামলার সবচেয়ে আলোচিত আসামী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) আবদুর রহিমের জবানবন্দীতে লুৎফুজ্জামান বাবরের নাম এসেছে। জোট সরকারের আলোচিত স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বাবরের নাম উল্লেখ করে গতকাল বুধবার বিকেলে ৮ পৃষ্ঠার জবানবন্দী দিয়েছেন আবদুর রহিম। মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ ওসমান গণি বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত ২ ঘণ্টাব্যাপী ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক এ জবানবন্দী রেকর্ড করেন।
আদালত থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে- ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে বাবরের নাম আসলেও অস্ত্র চোরাচালানের ব্যাপারে তার সম্পৃক্ততার বিষয় আসেনি। যেটুকু এসেছে তা হচ্ছে চট্টগ্রামে অস্ত্র ধরা পড়ার পরদিন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এবং এনএসআইএর তখনকার ডিজি আবদুর রহিমের মোবাইল আলাপের ঘটনা।
এ ব্যাপারে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে আবদুর রহিম বলেন, সিইউএফএল ঘাটে অস্ত্রের চালান ধরা পড়ার পর সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর আমাকে ধমকের স্বরে ফোন করে বলেন চট্টগ্রামে অস্ত্র ধরা পড়েছে শুনছি আপনার গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন জড়িত রয়েছে। এ সময় রহিম প্রতিমন্ত্রীর দাবি সত্য নয় বলে উত্তর দেন।
মোবাইলে কথা বলার সময় আবদুর রহিম দাউদকান্দি ব্রীজের উপর ছিলেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা এলাকায় তার নিজ বাড়িতে যাওয়ার পথে এই আলাপ হয়েছিল বলে জানান তিনি। তবে অস্ত্র আনা নেয়া ও চোরাচালানের সাথে বাবরের সম্পৃক্ততার কথা তার জবানবন্দীতে আসেনি। আইন বিশেষজ্ঞদের ভাষায়- রহিম ‘এক্সকালভেটরী’ ধরনের জবানবন্দী দিয়েছে। অর্থাৎ নিজেকে বাঁচিয়ে জবানবন্দী দিয়েছেন তিনি।
জবানবন্দীতে অনেকের নাম, বিদেশী গ্রুপ, দূতাবাস ও দুবাইয়ের পাকিস্তান প্রবাসীদের সংগঠন এআরওয়াই (আগা রহমান ইউসুফ) এর নাম বলেছেন বলে জানা গেছে। এ আর ওয়াই এর সাথে দুবাই বৈঠকের কথা স্বীকার করলেও দশট্রাক অস্ত্রের ব্যাপারে এই বৈঠক ছিল না বলে জানান রহিম। তবে এই বৈঠকে যোগ দিতে সস্ত্রীক দুবাই গেলে এআরওয়াই গ্রুপ তাদের যাবতীয় খরচ বহন করে। একইভাবে এআরওয়াই গ্রুপের লোকজন বাংলাদেশে এলে তাদের যাবতীয় খরচও আবদুর রহিম বহন করেন। ওই গ্রুপের লোকজনের এদেশে আসার ব্যাপারে আবদুর রহিম জবানবন্দীতে বলেন- একটা টিভি চ্যানেল করার ব্যাপারে সহায়তার বিষয়ে কথা বলতে তারা এখানে আসেন।
ব্যবসায়িক সম্পর্কের সূত্র ধরে এআরওয়াই গ্রুপের লোকাল ব্যবসায়িক এজেন্ট হিসেবে রহিমের সাথে এই গ্রুপের যোগাযোগ। সেতুবন্ধন করে দিয়েছে বিদেশী একটি গোয়েন্দা সংস'ার কর্তাব্যক্তি। জবানবন্দীতে মেজর জেনারেল রেজ্জাকুল হায়দারের (অব.) নাম আসেনি। আর সাবেক মন্ত্রী, এমপিদের ব্যাপারে সরাসরি কোন কথা বলেননি। এদিকে জবানবন্দী উপলক্ষে কড়া নিরাপত্তা প্রহরায় গতকাল দুপুর সোয়া ১২ টায় আদালতে নেয়া হয়। এরপর ম্যাজিস্ট্রেট তাকে চিন্তা করার জন্য তিন ঘন্টা সময় দেন। জবানবন্দী দেয়ার পর কপিটি আবদুর রহিমকে পড়ে শুনান ম্যাজিস্ট্রেট। এরপর নিয়মানুযায়ী তাতে স্বাক্ষর করেন রহিম।
এদিকে গত পরশু রাতে ঢাকায় গ্রেপ্তার হওয়া এনএসআইএর সাবেক উপ-পরিচালক (টেকনিক্যাল) মেজর লিয়াকত হোসেনকে গতকাল সন্ধ্যা ৬টায় মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট এম আসাদুজ্জামানের আদালতে হাজির করে ৫ দিনের রিমান্ড চান তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির সিনিয়র এএসপি মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান চৌধুরী। আজ বৃহস্পতিবার রিমান্ড শুনানী অনুষ্ঠিত হবে। অন্যদিকে গ্রেপ্তারকৃত দুই আসামী এনএসআই কর্মকর্তা মোহাম্মদ আকবর হোসেন ও মোহাম্মদ শাহাবুদ্দীন আহমেদের জামিন চেয়েছেন তার আইনজীবীরা। মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তা নাকচ করে দেন।
গ্রেপ্তারকৃত অপর ডিজি রেজ্জাকুল হায়দারের জামিন আবেদন দাখিল করেছে তার আইনজীবীরা। একই সাথে তার ৬ দিনের রিমান্ড মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও তাকে আদালতে হাজির না করাকে আইনবহির্ভূত বলে উল্লেখ করা হয় ওই আবেদনে। প্রসঙ্গতঃ রহিম ও রেজ্জাককে গত সপ্তাহে বুধবার ৬ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। কিন' রেজ্জাককে এখনও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য টিএফআই সেলে নেয়া হয়নি। এদিকে রেজ্জাকের জামিন শুনানীও আজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এদিকে জবানবন্দী শেষে রহিমকে তৃতীয় তলায় কোর্ট ইন্সপেক্টরের রুমে নেয়া হলে সেখানে অপেক্ষমাণ তার স্ত্রী, মেয়ে ও আত্মীয়স্বজনরা তাকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

ডিজিটাল বাংলাদেশে একখন্ড লিকুইড চট্টগ্রাম



ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়ন নিয়ে চারপাশে তোড়জোড় চললেও চট্টগ্রাম যেন আরো একধাপ এগিয়ে লিকুইড চট্টগ্রামে পরিণত হয়েছে। জোয়ার ভাটার সময় হিসাব করে ব্যবসা এবং শিল্প প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের পাশাপাশি সাধারণ লোকজনকে চলাচল করতে হচ্ছে। জোয়ারের পানির কারণে কারখানার উৎপাদন বন্ধ রাখার মতো ঘটনাও এখানে ঘটছে। মাত্র আধাঘন্টার ভারি বর্ষণে নগরীর ব্যাপক এলাকা তলিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি জোয়ার ভাটার সময় হিসাব কষার নয়া এই জঞ্জাল ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
স্থানীয় বিভিন্ন সূত্র এবং সরজমিনে অনুসন্ধান করে জানা গেছে, বাংলাদেশকে একটি ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য চারপাশে নানা ধরনের কর্মযজ্ঞ শুরু হয়েছে। নয়া এই শ্লোগানের আগেই চট্টগ্রামকে একটি বিশ্বমানের নগরী হিসেবে গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখানো হয়। এই স্বপ্ন বাস্তবায়নে অনেকেই বিভোর। ডিজিটাল থেকে আধুনিক টেকনোলজি হচ্ছে লিকুইড ক্রিস্টাল ডেফিনিশন (এলসিডি)। ফোন বর্তমানে উন্নত বিশ্ব লিকুইড টেকনোলজি আয়ত্ত্ব করে তাদের জীবন যাত্রায় আমুল পরিবর্তন এনেছে। যেমন টাচস্ক্রিন মোবাইল ফোন অবশ্য আরো লেটেস্ট টেকনোলজি হচ্ছে হাই-ডেফিনিশন (এইচ ডি) টেকনোলজি। এত উন্নত প্রযুক্তির স্বপ্ন না দেখে বাংলাদেশ ডিজিটালের স্বপ্নে বিভোর। এতে করে ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়ে চারপাশে তোড়জোড় চললেও দেশের কথিত বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম বিভিন্ন সময় পানিতে তলিয়ে থাকে। ঘন্টা কয়েকের বৃষ্টিতে নগরীর ব্যাপক এলাকা তলিয়ে যাওয়ার প্রেক্ষিতে বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকার এখানকার অবকাঠামোগত উন্নয়নে বেশ কিছু প্রকল্প গ্রহণ করে। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. জিল্লুর রহমান পানিতে তলিয়ে যাওয়া একটি শহর কখনো বিশ্বমানের শহর হতে পারে না এবং বিশ্বমানের শহর ছাড়া বিশ্বমানের বন্দর হতে পারে না বলে মন্তব্য করেছিলেন। এই সময় বেশ কিছু অর্থও বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন কিছু কিছু প্রকল্পও গ্রহন করেছিল। কিন' চট্টগ্রাম মহানগরীর ভাগ্যের কোন পরিবর্তন হয়নি। কিছুক্ষনের বৃষ্টিতেই নগরীর একটি বিস্তৃত এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। বহু এলাকার নিচ তলা পরিত্যক্ত ঘোষিত হয়েছে। শুষ্ক মৌসুমে এই সব বাসা বাড়িতে লোকজন বসবাস করতে পারলেও বর্ষাকালে নরক যন্ত্রনা ভোগ করে।
মাত্র আধাঘন্টার বৃষ্টিতে শহরের বিভিন্ন এলাকা তলিয়ে যাওয়ার যন্ত্রনার সাথে নতুন আপদ হিসেবে দেখা দিয়েছে জোয়ারের পানি। যথাযথভাবে স্লুইচ গেট না থাকার ফলে জোয়ারের পানি লোকালয়ে ঢুকে যায়। নগরীর বিভিন্ন এলাকা রাতে-দিনে দুইবার করে জোয়ারের পানিতে সয়লাব হয়ে যায়। জোয়ারের পানির কারণে কালুরঘাট শিল্পাঞ্চলের অসংখ্য শিল্প কারখানার মালিক এবং কর্মকর্তাদের অফিসে যাতায়ত করতে হচ্ছে জোয়ার ভাটার সময় হিসাব কষে। কালুরঘাট শিল্প এলাকার বিভিন্ন কারখানা পানির কারণে বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। ভিতরে হাঁটু পরিমাণ পানি ছিল। চাক্তাইর বহু ব্যবসায়ী এবং শিল্পপতিও জোয়ারের পানির কারণে অফিসে যাতায়ত করেন পানি আতংকের মধ্য দিয়ে। কারখানার শ্রমিক এবং দোকানের কর্মচারীরা নানাভাবে কষ্ট সহ্য করে কাজে যান। স'ানীয় লোকজন পানি ঠেলে ঠেলে নগরীতে বসবাস করেন। আগ্রাবাদ সিডিএ এবং হালিশহরের ব্যাপক এলাকা জোয়ারের পানিতে সয়লাব হয়। একবিংশ শতাব্দির এই দিনে চট্টগ্রাম মহানগরীর বহু মানুষকে জোয়ার ভাটার সময় দেখে জীবনযাপন করার বিষয়টি বিশ্বমানের নগরীর গড়া কিংবা ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নের ব্যাপারটি প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। অবশ্য গতকাল বেশ কয়েকজন শিল্পপতি এবং ব্যবসায়ী বিদু্রপ করে ব্যাপারটি, ডিজিটালের চেয়ে লেটেস্ট টেকনোলজি লিকুইড চট্টগ্রাম-এ বাস্তবায়ন হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন।

ফৌজদারহাট পর্যন্তই রিং রোড নির্মাণ করা হবে ।। সিডিএ’র আপত্তির মুখে নকশা পরিবর্তন করলো জাইকা



অবশেষে চট্টগ্রাম শহরের রিং রোডের নকশা আবারো পরিবর্তন করে ফৌজদারহাট পর্যন্ত রাস্তা এবং বেড়িবাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সিডিএ’র আপত্তির মুখে জাইকা নকশা পরিবর্তন করে সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার বাড়তি সড়ক এবং বেড়িবাঁধ নির্মাণের প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে। এতে করে পতেঙ্গা থেকে শুরু হওয়া রিং রোড সাগরিকা স্টেডিয়ামের পরিবর্তে ফৌজদারহাট টোল রোডের পাশ দিয়ে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাথে যুক্ত হবে। যা নির্মাণাধীন বায়েজিদ রোডে যুক্ত হয়ে চট্টগ্রামের সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে। মাত্র ৮৪ কোটি টাকা বাড়তি খরচ করে সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার বাড়তি সড়ক নির্মাণ করা হবে।
সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম মহানগরীর চারপাশে একটি রিং রোড এবং শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণের জন্য জাপানের আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা জাইকা’র সাথে বাংলাদেশ সরকার বেশ কিছুদিন আগে চুক্তি করে। চুক্তির অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে প্রথম পর্যায়ে পতেঙ্গা থেকে শুরু করে ফৌজদারহাট পর্যন্ত একটি চার লেনের রাস্তা এবং বিদ্যমান বেড়িবাঁধের চেয়ে দশ ফুট উঁচু বেড়িবাঁধ নির্মাণের প্রকল্প গ্রহন করা হয়েছিল। প্রকল্পটির শুরুতে ফৌজদারহাটের টোল রোড পর্যন্ত সড়ক নির্মাণের কথা বলা হলেও চূড়ান্ত পর্যায়ে এসে বলা হয় যে এই সড়কটি হালিশহরের সাগরিকা স্টেডিয়ামের পাশ দিয়ে সাগরিকা রোডের সাথে যুক্ত হবে। ইতোমধ্যে প্রকল্পটি চূড়ান্ত করা হয়। সম্প্রতি গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রির সামনে প্রকল্পটি উপস'াপনও করা হয়। জাইকার পক্ষ থেকে প্রকল্পটি তৈরী করে উপস'াপন করা হলেও সীতাকুন্ড থেকে নির্বাচিত সাংসদ আলহাজ্ব এবিএম আবুল কাসেম এই প্রকল্পের বিরোধীতা করেন। সিডিএ’র পক্ষ থেকেও আপত্তি করা হয়। যাতে বলা হয় যে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা খরচ করে যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে তা খুব বেশি কাজে আসবে না। বিশেষ করে যানজট নিরসনের লক্ষ্য নিয়ে যে প্রকল্প তৈরী করা হচ্ছে তা নতুন করে যানজটের সৃষ্টি করবে। দৈনিক আজাদী এই সংক্রান্তে বিস্তারিত একটি সংবাদ প্রকাশ করে। ব্যাপারটি নিয়ে নগর বিশেষজ্ঞদের পক্ষ থেকেও মতামত ব্যক্ত করা হয়।
অবশেষে সিডিএ’র আপত্তির মুখে জাইকা নতুন করে প্রস্তাবনা তৈরী করছে। যাতে পতেঙ্গা থেকে শুরু হওয়া রাস্তাটি ফৌজদারহাটের টোল রোডের পাশ দিয়েই ঢাকা চট্টগ্রাম রোডে যুক্ত হবে। এজন্য ১৪.৭ কিলোমিটারের স'লে বাড়তি ৫.৫ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ করতে হবে। অপরদিকে বর্তমানে প্রকল্পটিতে তিনটি ফিডার রোড রাখা হয়েছে। এরমধ্যে একটি ইপিজেড এর পাশ দিয়ে শহরের সাথে যুক্ত থাকবে। অপরটি হালিশহর এলাকা দিয়ে যুক্ত হবে। দুই নম্বর এই ফিডার রোডে টোল রোডের উপর দিয়ে একটি ফ্লাইওভার রাখা হয়েছে। কিন' এরপাশেই একটি আন্ডারপাশ রয়েছে। এক্ষেত্রে ফ্লাইওভার না করে যদি বিদ্যমান আন্ডারপাস দিয়ে গাড়ি চলাচলের ব্যবস'া করা হয় তাহলে ২৩ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়। অপরদিকে সাগরিকা স্টেডিয়ামের পাশ দিয়ে ৩ নম্বর ফিডার নামের যে ফিডার রোডটি নির্মাণ করার প্রকল্প গ্রহন করা হয়েছে তাতে খরচ হবে ৭৮ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। সিডিএ বর্তমানে ফ্লাইওভার না করে ২৩ কোটি টাকা এবং তিন নম্বর ফিডার রোডটি না করে টোল রোডের সাথে রাস্তা লাগিয়ে দিয়ে প্রায় ৭৯ কোটি টাকা সাশ্রয় করার প্রস্তাব করেছে। এই দুইটি ফিডার রোড থেকে সাশ্রয় হওয়া ১০২ কোটি টাকার সাথে বাড়তি ৮৪ কোটি টাকা খরচ করে ১৪.৭ কিলোমিটারের রাস্তাটিকে আরো সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার বাড়িয়ে ফৌজদারহাটে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণে খরচ হবে ১৮৬ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। জাইকার রিং রোড নির্মাণের এই প্রকল্পে সর্বমোট দেড় হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে। এরমধ্যে নয়শ’ কোটি টাকা জাপান প্রদান করলেও বাংলাদেশ সরকারকে যোগান দিতে হবে প্রায় ৬০০ কোটি টাকা। পতেঙ্গা থেকে শুরু করা রাস্তাটি ফৌজদারহাটের টোল রোড পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হলে এটি চট্টগ্রাম মহানগরীর সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন নিয়ে আসবে বলেও সূত্র জানিয়েছে।
জাইকার নকশা পরিবর্তন করে নতুন করে সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার বাড়তি সড়ক নির্মাণের প্রস্তাবনার ব্যাপারে গতকাল চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আবদুচ ছালামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমরা নতুন করে প্রস্তাবনা তৈরী করেছি। বিষয়টি নিয়ে জাইকার সাথে কথা বলেছি। সবকিছু চূড়ান্ত করা হচ্ছে। মানুষ যেন উপকৃত হয়। নতুন এলাকা যেন উন্নয়নের ছোঁয়া পায় তা নিশ্চিত করতে প্রকল্পটিতে যেসব পরিবর্তন আনা দরকার তা আনা হবে বলেও সিডিএ চেয়ারম্যান মন্তব্য করেছেন।

কক্সবাজারে জলোচ্ছ্বাসে ভেসে গেছে ৫ শ’ কোটি টাকার চিংড়ি

ঘূর্ণিঝড় আয়লার প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে ও উপচে কক্সবাজার জেলার উপকূলীয় এলাকার অধিকাংশ চিংড়িঘের তলিয়ে যায়। এতে কক্সবাজার জেলার অন্তত ৫০ হাজার একর জমির ৫শত কোটি টাকার চিংড়ি মাছ ভেসে গেছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ঘূর্ণিঝড় আয়লার প্রভাবে কক্সবাজার জেলার উপকূলীয় এলাকায় স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫/৬ ফুট বেশি পানি হয়। এই জলোচ্ছ্বাসে জেলার উপকূলীয় এলাকার অধিকাংশ চিংড়ি ঘের তলিয়ে যায়। কিছু স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে এবং অধিকাংশ স্থানে বাঁধ উপচে সামুদ্রিক পানির সাথে চিংড়ি ঘের একাকার হয়ে যায়। কক্সবাজার সদর উপজেলায় ৭০ ভাগ চিংড়ি ঘের, মহেশখালীর শতভাগ, চকরিয়া ও পেকুয়ার প্রায় ৫০ভাগ, কতুুবদিয়ার ১০ ভাগ এবং উখিয়া-টেকনাফের প্রায় ৩০ ভাগ চিংড়ি ঘের সামুদ্রিক জোয়ারে তলিয়ে যায়। এতে অন্তত ৫০ হাজার একর জমির ৫ শতাধিক কোটি টাকার চিংড়ি সামুদ্রিক জোয়ারে ভেসে যায়। বেড়ীবাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় প্রায় ৩০ ভাগ চিংড়ি জমিতে এখন জোয়ারের পানি আসা-যাওয়া করছে।

হালদায় আবার ডিম ছেড়েছে মাছ ।। কাল থেকে রেণু বিক্রি শুরু

দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র হালদা নদীতে গতকাল বুধবার মা মাছ পুনরায় ডিম ছেড়েছে। বেলা দুইটায় নদীর কিছু কিছু স্থানে ডিমের নমুনা পাওয়ার সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে ডিম আহরণকারীরা নৌকা ও সরঞ্জাম নিয়ে নদীতে নেমে যায়। তবে ডিম আহরণের পরিমাণ অধিক নয় বলে জানা গেছে। হালদা নদীর মাছুয়া ঘোনা, কাগতিয়ার মুখ, আজিমার ঘাট, আমতুয়া, সোনাইর মুখ ইত্যাদি এলাকায় ডিম পাওয়া যায়। প্রতি নৌকায় এক/দেড় বালতি করে ডিম পাওয়া যায়। গত ২৪ মে দিবাগত রাতে হালদা নদীতে মা মাছ ডিম ছাড়ে রাত দেড়টা থেকে ভোর পর্যন্ত। গত ২ বছরের তুলনায় এবার বেশি পরিমাণ ডিম পাওয়া যায়।
এ মৌসুমে প্রথম দফা ডিম ছাড়ার পর গতকাল প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। এতে নদীতে প্রচণ্ড ঢল হলে দুপুরে মা মাছ পুনরায় ডিম ছাড়ে। এদিকে হালদার পোনা ভেজালকারী চক্রের বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের তথ্য দেয়ার কারণে কামাল উদ্দিন সওদাগর নামে এক ব্যক্তিকে মারধর করা হয়েছে বলে জানা গেছে। আহত কামাল উদ্দিন সওদাগরকে উপজেলা স্বাস'্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। সংবাদ পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস'লে গিয়ে পরিসি'তি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। পোনা ভেজালকারীচক্র এখানে অত্যন্ত শক্তিশালী। তাদের বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলার সাহস পায় না। কেউ এ ব্যাপারে প্রতিবাদ করলে তার রক্ষা নেই। এদিকে ভেজাল পোনা ক্রয় করে প্রতি বছর অসংখ্য নিরীহ মানুষ প্রতারিত হয়। আগামী শুক্রবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে পোনা বিক্রি শুরু করা হবে বলে জানা গেছে। এবার কেজি ৪৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা বিক্রি করা হবে বলে রেণু উৎপাদনকারীরা জানান।

সাবেক উপদেষ্টা মতিনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত হচ্ছে

বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের যোগাযোগ ও নৌ-পরিবহন উপদেষ্টা এম এ মতিনের বিরুদ্ধে অভিজ্ঞতাহীন নতুন একটি কোম্পানিকে কাজ দেওয়ার বিষয়ে জড়িত থাকার অভিযোগ এনেছে নৌ-পরিবহন সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে একটি সর্বদলীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গতকাল বুধবার কমিটির বৈঠকে কন্টেনার ব্যবস্থাপনায় পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকা সত্ত্বেও সাবেক এই উপদেষ্টা বিদায়ের দিন ‘ইসহাক ব্রাদাসর্’ নামের একটি নতুন কোম্পানিকে কাজ দেন বলে অভিযোগ তোলেন সদস্যরা।
বিষয়টি খতিয়ে দেখতে সরকার দলীয় সাংসদ মো. শাহ আলমের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি উপ কমিটি করা হয়। এক মাসের মধ্যে কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, আওয়ামী লীগের শামসুল হক চৌধুরী ও নজরুল ইসলাম এবং বিএনপি’র মোস্তফা কামাল পাশা। খবর বিডিনিউজের।
সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক ফখরুদ্দীন সরকারের বিদায়ের পর এই প্রথম কোনো উপদেষ্টার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্তে কোনো কমিটি গঠন হলো। কমিটির চেয়ারম্যান বলেন, “কমিটির সদস্যরা মনে করেন সাবেক এই উপদেষ্টা অনভিজ্ঞ একটি কোম্পানিকে কাজ পাইয়ে দিতে প্রভাবিত করেছেন। তাই আমরা একটি সর্বদলীয় তদন্ত কমিটি গঠন করেছি।”
নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সাইফ পাওয়ারটেক নামে এক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কন্টেনার ব্যবস্থাপনায় চুক্তির মেয়াদ প্রায় শেষ হয়ে আসায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ প্রথম দফায় একবার দরপত্র আহ্বান করে। ওই দরপত্রে প্রতি কন্টেনার ব্যবস্থাপনায় ৪৪০ টাকা হেঁকে সর্বনিম্ন দরদাতা হয় এভারেস্ট এন্টারপ্রাইজ। পরে কর্তৃপক্ষ সে দরপত্র বাতিল করে আবার দরপত্র আহ্বান করে।
দ্বিতীয় দফায় দরপত্রে একই দর হেঁকে সর্বনিম্ন দরদাতা হয় ইসহাক এন্টারপ্রাইজ। অভিযোগ উঠেছে, এ দফায় দরপত্র জমা দেওয়ার সময় শেষ হওয়ার মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পুরো প্রক্রিয়া শেষ করা হয় তড়িঘড়ি করে। নূর-ই-আলম চৌধুরী বলেন, আমাদের প্রশ্ন- এই উপদেষ্টা দরপত্র বাতিল করে পরবর্তীতে মাত্র চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে কেন আরেকটি কোম্পানিকে কাজটি দিলেন। নৌ-পরিবহন মন্ত্রী আফসারুল আমীন ও কমিটির অন্য সদস্যরা বৈঠকে উপসি'ত ছিলেন।

সংসদীয় কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে টিপাইমুখ নিয়ে সিদ্ধান্ত : প্রধানমন্ত্রী

টিপাইমুখ বাঁধ বিষয়ে সর্বদলীয় সংসদীয় কমিটি গঠন করে তাদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই বাংলাদেশ সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী বুধবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার কার্যালয়ে দেখা করতে গেলে হাসিনা তাকে একথা জানান। সাক্ষাৎ শেষে প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ প্রধানমন্ত্রীর হাসিনার বক্তব্য সাংবাদিকদেরকে অবহিত করেন।
আন্তঃসীমান্ত নদী বরাকের ভারতীয় অংশে টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণ নিয়ে বিএনপিসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল এবং পরিবেশবাদী ও বিশেষজ্ঞদের অনেকে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন এতে দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশের সুরমা ও কুশিয়ারা তথা মেঘনা নদীর অস্তিত্ব বিপন্ন হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্বিতীয় মেয়াদে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করায় মনমোহন সিংকে রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে অভিনন্দন জানান। এছাড়া দ্বিপাক্ষিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়েও তাদের মধ্যে আলোচনা হয়। এ সময় প্রধানমন্ত্রী দুই দেশের সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরো দৃঢ় হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
আবুল কালাম আজাদ বলেন, “শেখ হাসিনা ভারতীয় হাইকমিশনারকে বলেছেন, দারিদ্র্য এ অঞ্চলের প্রধান সমস্যা। এ সমস্যা সমাধানে আঞ্চলিক সহযোগিতার ওপর জোর দিতে হবে।” পিনাকরঞ্জন চক্রবর্তী প্রধানমন্ত্রীর স্বামী এম এ ওয়াজেদ মিয়ার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেন ও সমবেদনা জানান বলে জানান প্রেস সচিব। ভারতীয় হাইকমিশনার তার দেশে সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনের ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পর্কেও শেখ হাসিনাকে অবহিত করেন। এ সময় প্রধান মন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোল্লা ওয়াহিদুজ্জামানও উপস্থিত ছিলেন।

১৫ জুন থেকে ভোটার তালিকা হালনাগাদ শুরু

আগামী ১৫ জুন থেকে সারা দেশে শুরু হচ্ছে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ। নির্বাচন কমিশনের ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহাদাত হোসেন চৌধুরী বুধবার সকালে নির্বাচন কমিশনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান। খবর ফোকাস বাংলার।
তিনি বলেন, সারা দেশকে তিন ভাগে ভাগ করে চারটি পর্যায়ে ভোটার হালনাগাদের কাজ চলবে। প্রথম পর্যায়ে ১৫৩টি উপজেলায় হালনাগাদের কাজ হবে। আগামী ১৫ জুন থেকে ২৪ জুন ওইসব উপজেলায় ভোটারদের তথ্য সংগ্রহ করা হবে। পুরো প্রক্রিয়া শেষ হতে সময় লাগবে দেড় মাস। আর চার পর্যায়ে সারাদেশে হালনাগাদের কাজ শেষ করতে পুরো বছর লেগে যাবে। ঢাকা মহানগরীতে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ আগামী ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে শুরু করা যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন জানান, নতুন করে যারা ভোটার হবার যোগ্য হয়েছেন তাদের নাম অন্তর্ভুক্ত এবং তালিকায় নাম আছে কিন' মারা গেছেন তাদের নাম বাদ যাবে। আর আগে যারা ভোটার হননি তাদেরকে সরাসরি ভোটার করা হবে না। পরিবারের প্রত্যয়নপত্র এবং কেন তালিকাভুক্ত হননি, তার যৌক্তিক কারণ দেখিয়ে ভোটার তালিকায় নাম তুলতে হবে। তিনি জানান, ভোটার তালিকা হালনাগাদের কার্যক্রম পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের প্রশিক্ষণের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে।
নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, মোট চার পর্যায়ে সারা দেশে ভোটার তালিকা হাল নাগাদের কাজ শেষ করতে পুরো বছর সময় লাগতে পারে।

বাংলাদেশের শেষ ৫ ওভারের আক্ষেপ

বাংলাদেশের একেকটা ‘ক্লোজ ম্যাচ’ মানেই অনন্ত আক্ষেপের গল্প। মঙ্গলবার ওয়ার্মসলি ক্রিকেট মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ বল পর্যন্ত ঝুলে থাকা প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচের ভাগ্য বাংলাদেশের বিপক্ষে যাওয়ার পরও তাই হল। অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুলের আফসোসের অনেকটা জুড়েই থাকলো শেষ ৫ ওভারের ব্যাটিং, “মানসম্পন্ন দলের বিপক্ষে দারুণ একটা ম্যাচ খেললাম আমরা। কিন্তু আমার মনে হয় শেষ ৫ ওভারে একদমই ভালো করিনি আমরা। ওই সময়ে এসেছে মাত্র ৩৩ রান। এমন নয় যে আমাদের হাতে উইকেট ছিল না। অথচ ১৫/২০ রান কম হয়ে গেছে।” রান একটু কম হয়ে গেলেও ম্যাচটাকে প্রায় জেতার পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বোলারদের কৃতিত্ব দিতেও ভুলছেন না অধিনায়ক, “পরিকল্পনামতোই এগোচ্ছিল সব। এই যেমন তামিম দারুণ শুরু করেছিল। কিন' ৫ ওভারে ১ উইকেটে ৪০ রান, এমন শুরুটা আমরা আর ধরে রাখতে পারিনি। ১৪৬ রান করে জেতা সহজ নয়, তবুও বোলাররা আমাদের ম্যাচে ফিরিয়ে এনেছিল। যে স্পিরিট দেখিয়ে আমরা শেষ বল পর্যন্ত লড়লাম, তাতে আমি খুশি। অবশ্য সব জায়গাতেই আমাদের উন্নতি করতে হবে। প্র্যাকটিস ম্যাচগুলো তো এজন্যই। তবে শুরুটা ভালোই হয়েছে বলবো। আমরা এখন ঠিক কোথায় আছি, সেটাও মূল্যায়ন করতে সক্ষম হবো।” খবর বিডিনিউজের।
ইংল্যান্ডে যাওয়ার আগে সেখানকার কন্ডিশনের সঙ্গে যতো দ্রুত সম্ভব মানিয়ে নেওয়ার কথা বলে গিয়েছিলেন ক্রিকেটাররা। সেখানে গিয়েও তাদের গতানুগতিক ইংলিশ আবহাওয়ার জাপটা কিছুটা পোহাতে হচ্ছে। ম্যাচের আগের রাতে হালকা বৃষ্টি হয়েছে। আর হাঁড় কাপিয়ে দেওয়া বাতাস তো আছেই। মঙ্গলবার সূর্যের মুখ দেখা গেছে ম্যাচ শুরু হওয়ার পর। সাকিব অবশ্য জানাচ্ছেন, “আমার তো মনে হয় আমরা বেশ ভালোই মানিয়ে নিচ্ছি। এখানে লম্বা ও কঠিন দুটো অনুশীলনের সেশন ছিল আমাদের। উইকেট আর কন্ডিশনও পরিচিত হয়ে উঠছে ক্রিকেটারদের কাছে। এজন্যই তো আমাদের আগেভাগেই ইংল্যান্ডে চলে আসা।”
প্রস্তুতি ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ বলে হারলেও তা দলের আত্মবিশ্বাসের পালে হাওয়া দেবে বলেই বিশ্বাস সাকিবের, “হারটা অবশ্যই হতাশার। কারণ এই ম্যাচটায় জেতারও খুব ভালো সুযোগ ছিল। অবশ্য এই ম্যাচের পর আমরা যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসীও।” কুঁচকির ইনজুরির জন্য বেশ কয়েক মাস মাঠের বাইরে থাকা সাকিব নিজের অবস'া নিয়েও স্বস্তিতে, “দিনকে দিন অবস'ার উন্নতি হচ্ছে। প্রথম বলটা খেলার সময় একটু জড়তা ছিল, কিন' এরপর থেকেই সব স্বাভাবিক হয়ে গেছে। প্রথম ওভারের পর বোলিংটাও ঠিকঠাক হয়ে গিয়েছিল।” প্রথম ওভারে ৭ রান দেওয়া টুয়েন্টি টুয়েন্টির বিবেচনায় বেশি নয়। আর পরের তিন ওভারে তো দুর্দান্ত বোলিংই করেছেন সাকিব। এই বাঁ হাতি স্পিনারের বোলিং ফিগারও তাই দেখার মতো: ৪-০-১৫-১!
অবশ্য দলের বোলিং নিয়ে খুব একটা সন'ষ্ট নন সহ-অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা, “ ইনিংসের মাঝখানে ওরা (কিউইরা) সহজে রান করতে পারছিল না। আমরা আরো ভালো বোলিং করতে পারতাম বলে মনে হয় আমার। এদিন আমরা সঠিক লেনে' বল রাখতে পারিনি তেমন একটা। ফিল্ডিংয়েও কিছু ভুল-ত্রুটি ছিল। তাছাড়া শেষ ওভারে রাসেলের বলে ম্যাককালামের (নাথান) ব্যাটে টপ-এজ হয়ে যে ছক্কাটা হল, সেটা অন্য কোনোদিন হয়তো ক্যাচই হত। কিন' বাতাসের কারণে বল লংঅফ পেরিয়ে গেল।” শেষ ওভারে ১২ রান দরকার ছিল কিউইদের। প্রথম তিন বলে তিনটি সিঙ্গেল, চতুর্থ বলে ম্যাককালামের বাতাসের সহায়তায় পাওয়া ছক্কাটি। শেষ বলে লংঅফে ঠেলে জেতার জন্য প্রয়োজনীয় ২ রান তুলে নেন ম্যাককালাম (১৫)।
আজ বৃহস্পতিবার টাইগাররা অক্সফোর্ডশায়ার থেকে কেন্টে যাবে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে দ্বিতীয় প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে। ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত আটটায়।

ডেকান চার্জার্সের নেতৃত্বের পরিবর্তন দরকার : আফ্রিদী

ভি ভি এস লক্ষণের জায়গায় গিলক্রিস্টকে অধিনায়ক হিসাবে দেখতে চান শহীদ আফ্রিদী। ইনজুরির কারণে লক্ষণ দলের বাইরে থাকায় ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক হিসেবে গিলক্রিস্টকে দায়িত্ব দেয়া হয়। গতবার ডেকানের জার্সি পরে আফ্রিদিও খেলেছিলেন, দলকে ভালো পারফর্মও উপহার দিয়েছেন। তবে মুম্বাই বোমা হামলার কারণে এবার পাকিস্তানের কোনও ক্রিকেটারই দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত আইপিএল’র দ্বিতীয় আসরে অংশ নিতে পারেনি। খবর এনএনবির।
আফ্রিদি বলেন, আমি লক্ষণকে খাটো করছি না। তিনি টেস্টে টপ খেলোয়াড়। লোকে যেন ভুল না বোঝে, কিন' আমার কথা হচ্ছে টি-টুয়েন্টি ক্রিকেটের মতো আক্রমনাতুক অধিনায়ক নন তিনি। লক্ষণের অধীনে গতবার দলের অবস্থা ছিলো করুণ। আর গিলক্রিস্টের কারণে এবারে দলটি এক নম্বরে চলে আসছে। গতবারের দলটি এবারো খেলেছে কিন' অধিনায়কে পরিবর্তন আসায় তারা এই সাফল্য পেয়েছে।
আফ্রিদি আরো বলেন, আমার দেখা গিলক্রিস্ট এক নম্বর অধিনায়ক। দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন তিনি, চাপ থাকা সত্ত্বেও আক্রমনাতুক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। এ বছর আইপিএলে খেলা হয়নি আফ্রিদির। মুম্বাইয়ের বোমা হামলার পর পাকিস্তান সরকার খেলোয়াড়দের ভারতে গিয়ে খেলতে মানা করেছে। পাক এই হার্ড হিটার আরো বলেন, ডেকানের প্রয়োজন ছিলো একজন নেতার। যিনি সবসময় সামনে থেকে মাথায় চাপ নিয়ে দলকে চাপমুক্ত রাখবেন। সে কাজটি লক্ষণের তুলনায় গিলক্রিষ্ট ভালো করেছেন।