অতিঝুঁকিপূর্ণ বসতিতে দু’হাজার পরিবার ।। না সরালে এ বর্ষায়ও জানমালের ব্যাপক ক্ষতির আশংকা



পরপর দুবছর বর্ষাকালে চট্টগ্রাম মহানগরীতে পাহাড় ধসে প্রাণহানির ঘটনা ঘটলেও নগরীর প্রায় ৩০টি পাহাড়ের চূড়া, ঢাল, পাদদেশ এবং আশপাশের এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ বসতি রয়েছে। সম্প্রতি চট্টগ্রাম পরিবেশ অধিদপ্তর জরিপ চালিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এসব বসতি চিহ্নিত করে। পরিবেশ অধিদপ্তর এসব বসতি সরিয়ে নেওয়ারও সুপারিশ করেছে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের জরিপ অনুযায়ী, নগরীর অতি ঝুঁকিপুর্ণ বসতিতে বাস করছে প্রায় দুই হাজার পরিবার। আর কম ঝুঁকিপূর্ণ বসতিতে আছে চার থেকে পাঁচ হাজার পরিবার।
এসব বসতি অবৈধভাবে স্থাপন করা হয়েছে জানিয়ে অধিদপ্তরের পরিচালক আবদুস সোবহান বলেন, “বসতি স'াপনকারীদের সরানো না গেলে জানমালের ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে।” তিনি দাবি করেন, “ছিন্নমূলদের সামনে রেখে কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি পাহাড়ে বসতি গড়েছে।” চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. শহীদুল ইসলাম বলেন, “ঝুঁকিপূর্ণ স'ান থেকে বসতি সরিয়ে নেওয়া না হলে এবারও বর্ষায় বড় ধরনের বিপর্যয় হতে পারে।”
তিনি বলেন, “অতি ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়গুলো থেকে শুধু বসতি সরানো নয়, পাহাড় সুরক্ষারও উদ্যোগ নিতে হবে।” পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, নগরীতে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত ৩০টি পাহাড়ের মধ্যে নয়টি পাহাড়ই ওয়াসা, রেলওয়ে, সিটি করপোরেশন, পুলিশ ও মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের। খবর বিডিনিউজের।
অধিদপ্তরের জরিপ অনুযায়ী বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হল- নগরীর কুসুমবাগ এলাকায় পুলিশ লাইন, গরীবুল্লাহ শাহ হাউজিং সোসাইটি সংলগ্ন পাহাড়, ওয়াসা নিয়ন্ত্রণাধীন মধ্য মতিঝর্ণা পাহাড় ও সংলগ্ন এলাকা, ইস্পাহানি টেক্সটাইল মিল সংলগ্ন গোল পাহাড়, উত্তর পাহাড়তলীর লেকভিউ আবাসিক এলাকা সংলগ্ন পাহাড়, বায়েজীদ এলাকার ট্যাংকির পাহাড়, সিরাজ শাহ কলোনি ও আমিন টেক্সটাইল, মেডিকেল কলেজের স্টাফ কোয়ার্টার সংলগ্ন পাহাড়ের পাদদেশ ও ঢালের বসতি।
কম ঝুঁকিপূর্ণের তালিকায় আছে- বিশ্ব কলোনি, উত্তর কাট্টলী নন্দন হাউজিং, খুলশী ব্রিক ফিল্ড, দক্ষিণ খুলশী জাকির হোসেন সোসাইটি, দক্ষিণ খুলশী আবাসিক এলাকাসহ একই এলাকার আরেকটি পাহাড়, এসবি নগর, খুলশী ভ্যালি আবাসিক এলাকা, সূচনা ভিআইপি আবাসিক এলাকা, ডলফিন, কিং অব চিটাগাং কমিউনিটি সেন্টার সংলগ্ন পাহাড় ও সামারা হিলের পাদদেশসহ আশপাশের বসতি।
২০০৭ সালের ১১ জুন নগরীর লালখান বাজারে মতিঝর্ণা এলাকায় ওয়াসার টাঙ্কির পাহাড়, কুসুমবাগ এলাকা মহানগর পুলিশের নিয়ন্ত্রণাধীন পাহাড়, সেনানিবাস সংলগ্ন কাইচ্যাঘোনা, লেবু বাগানসহ বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় ধসে ১২৮ জনের প্রাণহানি ঘটে। এ ঘটনায় বিভাগীয় কমিশনারের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত ও বিশেষজ্ঞ কমিটি পাহাড় কাটা বন্ধ ও সংশ্লিষ্ট এলাকায় বসতি স্থাপন নিয়ে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ করলেও এখন পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়নি। এসব সুপারিশে নির্বিচারে পাহাড় কাটার সঙ্গে জড়িত প্রভাবশালী ব্যক্তি, সংস'া ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ের পাদদেশ ও ঢাল থেকে বসতি সরিয়ে নিতে বলা হয়।
গত বর্ষা মৌসুমে বিভিন্ন পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বাস করা পরিবারগুলোকে সরিয়ে নিতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসন উদ্যোগ নিলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। স্থানীয় প্রভাবশালীদের সহায়তায় ছিন্নমূলরা সেসব স্থানে বসতি গড়ে তোলে। ২০০৮ সালের ১৮ আগস্ট আবারও টাঙ্কির পাহাড় ধসে ১১ জনের মৃত্যু হয়।
বিভাগীয় কমিশনার এম এন সিদ্দিক বলেন, “অনেক স্থান থেকে ঝুঁকিপূর্ণ বসতি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।” তবে কয়েকটি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় অনেক বসতি স্থাপনের বিষয়টি তিনি শুনেছেন বলে জানান। ঝুঁকিপূর্ণ বসতি চিহ্নিত করা এবং পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক আবদুস সোবহান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ইতোমধ্যে ফয়’স লেক সংলগ্ন উত্তর খুলশী এলাকার পাহাড় থেকে অবৈধ বসতি সরিয়ে নিতে রেলওয়েকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই অন্য পাহাড়গুলো থেকে বসতি সরিয়ে নিতে নোটিশ দেওয়া হবে।”
পাহাড় কাটা আইন দুর্বল হওয়ায় কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া যাচ্ছে না দাবি করে তিনি বলেন, “নোটিশ দেওয়ার পর এসব স্থান থেকে বসতি সরানো না হলে প্রশাসনের সহায়তা নিয়ে উচ্ছেদ করা হবে।” এ বিষয়ে পরিবেশ আন্দোলনের কর্মী শরীফ চৌহান বলেন, “প্রশাসনের যথাযথ উদ্যোগের অভাব এবং স্থানীয় প্রভাবশালীদের কারণে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসতি উচ্ছেদ করা সম্ভব হচ্ছে না।” পাহাড় কাটা আইন সংশোধনসহ এর কঠোর প্রয়োগের জন্য প্রশাসনের প্রতি আহবান জানান তিনি।

আজ সংসদে বাজেট পেশ ।। পাঁচটি খাতকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে

আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারকে মাথায় রেখে বিদ্যমান আর্থ-সামাজিক, রাজনৈতিক সঙ্কট বিবেচনায় পাঁচটি বিষয়ে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে বাজেট তৈরি করেছেন অর্থমন্ত্রী। আজ বৃহস্পতিবার বিকালে জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত নয়া বাজেট পেশ করবেন। এরপর বাজেটের ওপর আলোচনা করে আগামী ৩০ জুন তা সংসদে পাস করা হবে। ২০০৯-১০ অর্থ বছরের বাজেটের আকার হতে পারে ১ লাখ ১৩ হাজার ৮১৪ কোটি টাকা।
অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত খাতগুলোর মধ্যে প্রথমেই রয়েছে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি প্রতিরোধ এবং বিশ্বমন্দা মোকাবেলায় সার্বিক অর্থনৈতিক সি'তিশীলতা নিশ্চিতকরণ। যে পাঁচটি খাতে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে সেগুলো হলোণ্ড বিদ্যুৎ, কৃষি, শিক্ষা, সামাজিক সুরক্ষা এবং যোগাযোগ। ইশতেহারে দেয়া নানা প্রতিশ্রুতির আলোকেই কিছু পরিবর্তন আনা হচ্ছে। কিছু প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন হবে এ অর্থবছরে যার বেশির ভাগই হবে ধাপে ধাপে। এসব কারণে এ বাজেটে বড় আকারের থোক বরাদ্দ রাখা হচ্ছে। প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জন্য বাজেটের আকারও বড় হচ্ছে এবং এ কারণে ঘাটতি বাজেটও বড় হচ্ছে। খবর এনএনবির।
জানা যায়, আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে বলা হয়েছিল, দ্রব্যমূল্যের দুঃসহ চাপ প্রশমনের লক্ষ্যে চাল-ডাল, তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কমিয়ে জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে সি'তিশীল রাখার ব্যবস'া করা হবে। দেশজ উৎপাদন বৃদ্ধিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে সময়মতো আমদানির সুবন্দোবস্ত, বাজার পর্যবেক্ষণসহ বহুমুখী ব্যবস'া গ্রহণ করা হবে। মজুদদারি ও মুনাফাখোরি সিন্ডিকেট ভেঙে দেয়া হবে, চাঁদাবাজি বন্ধ করা হবে। ভোক্তাদের স্বার্থে ভোগ্যপণ্য মূল্য নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ গড়ে তোলা হবে। সর্বোপরি সরবরাহ ও চাহিদার ভারসাম্য সৃষ্টি করে দ্রব্যমূল্য কমানো হবে ও সি'তিশীলতা প্রতিষ্ঠা করা হবে। ইশতেহারের এ নীতি মেনেই বাজেটে নিত্যপণ্যের শুল্কহারে পরিবর্তন আনা হচ্ছে।
আসছে বাজেটে দাম বাড়বে যেসব পণ্য সেগুলো হলোণ্ড নিউজপ্রিন্ট, এয়ারকন্ডিশন, রেফ্রিজারেটর, ফ্রিজ, সেলুলার ফোন, গাড়ি, মোটরসাইকেল, চশমার ফ্রেম, মশার কয়েল, বিস্কুট, গ্লুকোজ, ইমিটেশন জুয়েলারি, স্যুটকেস, ভ্যানিটি ব্যাগ, ব্রিফকেস, স্কুল ব্যাগ, টুথব্রাশ, গৃহস্থালি, কিচেন ও বাথরুম উপকরণ, সব ধরনের টাইলস, ড্রাইসেল ব্যাটারিসহ ১৫২টি পণ্য।
নতুন এ বাজেটে দাম কমার তালিকায় রয়েছে এমন পণ্যের মধ্যে রয়েছেণ্ড শিল্পের কাঁচামাল, ওষুধের কাঁচামাল, রাবার ও প্লাস্টিক, শিক্ষাবিষয়ক বই, ফ্লোরোসেন্ট এনার্জি সেভিং বাল্ব ও যন্ত্রাংশ, ফটোভোল্টিক সেল, ৩০০০ ডিডব্লিউটি ক্ষমতার সাগরে চলাচলের জাহাজ, খাদ্য তৈরির উপকরণ, অর্থোপেডিক চিকিৎসার ওষুধ, পাল্প, ফসফরিক এসিড, হাইব্রিড মোটরকার ইত্যাদি।
সূত্র জানায়, আসছে বাজেটে ১২ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে শূন্য আমদানি শুল্ক করা হচ্ছে। এর মধ্যে চাল-ডাল, আটা, পিঁয়াজ-রসুন, তাজা মাছ ও তাজা সবজি ইত্যাদি রয়েছে। এ ছাড়া ভোজ্যতেল, মাশরুম ও পামতেলসহ ৮ পণ্যে শুল্ক কমানো হচ্ছে। ভোজ্যতেলের দাম কমাতে আমদানি শুল্ক ১৫ শতাংশ থেকে ১২ শতাংশে নামিয়ে আনা হচ্ছে। এ ছাড়া ভোজ্যতেল আমদানিতে ল্যান্ডিং চার্জ আড়াই শতাংশে নামিয়ে আনা হচ্ছে। ভোজ্যতেল আমদানিতে ব্যবসায়ীদের শতকরা ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট দিতে হয়। এর সঙ্গে ক্লিয়ারিং চার্জ, ইন্স্যুরেন্স এবং এলসি কমিশন মিলে আরো প্রায় ৫ শতাংশ ব্যয় হয়। সব মিলিয়ে শতকরা ২০ ভাগ অতিরিক্ত খরচ যোগ হয় এলসি মূল্যের সঙ্গে। নয়া বাজেটে এ দুটি খাতে প্রায় ৫ শতাংশ শুল্ক কমানো হচ্ছে। ভোজ্যতেলের পাশাপাশি পামওয়েলের ক্ষেত্রেও একই হারে শুল্ক নির্ধারণ করা হচ্ছে। এছাড়া সব ধরনের পাখি, মানবদেহের ভ্যাকসিন, গবাদিপশুর খাদ্য, মাশরুম গাছের চারা, মাছের পোনার আমদানি শুল্ক কমানো হচ্ছে।
নিত্যপণ্য ছাড়াও সরকার নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে তথ্যপ্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট যন্ত্রাংশের আমদানি শুল্ক ৩ শতাংশ কমানো হচ্ছে। এসব পণ্যে আমদানি শুল্ক ১৫ শতাংশ থেকে ১২ শতাংশে নামিয়ে আনা হচ্ছে।
কৃষি উৎপাদন বাড়াতে কৃষি উপকরণ যেমন ট্রাক্টর, পাওয়ার টিলার, ধান মাড়াইকলসহ বিভিন্ন ধরনের উৎপাদন সংশ্লিষ্ট পণ্যে আমদানি শুল্ক ৩ শতাংশ কমানো হচ্ছে। তবে এক্ষেত্রে কাস্টম ডিউটি সম্পূরক শুল্ক অব্যাহত রেখে ভ্যাট ১৫ শতাংশ থেকে ১২ শতাংশে নামিয়ে আনার প্রস্তাব করা হয়েছে। উচ্চফলনশীল ধান উৎপাদনে কৃষকদের প্রণোদনা দিতে ধানবীজ আমদানি শুল্ক কমানো হয়েছে।
বাজেটে সংবাদপত্র শিল্পে প্রণোদনা দিতে শূন্য শুল্ক অব্যাহত রাখা হচ্ছে। সংবাদপত্র শিল্প মালিকরা প্রাক-বাজেট আলোচনায় অর্থমন্ত্রীকে এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দেয়। ওই প্রস্তাবনা অনুযায়ী নয়া বাজেটেও নিউজপ্রিন্ট আমদানিতে শূন্য শুল্ক অব্যাহত রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।
এদিকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে শুল্ক কমানোর পাশাপাশি বিলাসী ও স্বাস্থ্যহানিকর পণ্যে শুল্ক বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে নয়া বাজেটে। আসছে বাজেটে কমবেশি ৭৮ বিলাসী পণ্যে ৩ থেকে ৫ শতাংশ শুল্কহার বাড়ছে। বিলাসী পণ্যগুলোর মধ্যে কিছু পণ্যের আমদানি শুল্ক বাড়ছে, আবার কিছু পণ্যে কাস্টম ডিউটি ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর প্রস্তাবনা থাকছে। যেসব পণ্যের শুল্ক বাড়ছে তার মধ্যে টিভি, ফ্রিজ, এয়ারকুলার, গাড়ি, মোবাইল সেট, টেলিফোন সেট, ল্যাম্প হোল্ডার, সব ধরনের কসমেটিকস, হেড ফোন, লাউড স্পিকার, ওয়াকিটকি, অটো জানালা, অটো দরজা, থাই গ্লাস, হেয়ার মেশিন, ঢেউটিন, ট্রান্সফরমার, পার্ট রেজার, স্যানিটারি দ্রব্য, ডায়মন্ড, স্বর্ণের কয়েন, কার্পেট, টাইলস, ফ্যাং টিস্যু, টয়লেট টিস্যু, আর্ট কার্ড, ফ্লোটিং পেপার, মশার কয়েল, সেভিং দ্রব্য, সিডি-ভিসিডি, লেজার ফিল্ম, রঙ, উন্নতমানের জুতা, স্যুট, পোশাক, মাখন, রাবার, ম্যাচ, সব ধরনের আটাজাতীয় দ্রব্য, উন্নত মানের ফাস্টফুড, মিল্ক এবং ক্রিম।
এছাড়া স্বাস্থ্যহানিকর পণ্যের মধ্যে তামাক ও তামাক জাতীয় পণ্যসহ সব ধরনের মদের আমদানি শুল্ক বাড়ানো হচ্ছে। এর মধ্যে কিছু পণ্যের আমদানি শুল্ক ১৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৮ শতাংশ আবার কিছু পণ্যের আমদানি শুল্ক একই রেখে কাস্টম ডিউটি, সম্পূরক শুল্কসহ অন্যান্য চার্জ ৩ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
এদিকে বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার পরিপ্রেক্ষিতে দেশীয় শিল্পে প্রণোদনা দিতে দেশে উৎপাদিত বিলাসী পণ্যের শুল্ক কমানো হচ্ছে। দেশে উৎপাদিত টিভি, ফ্রিজ, মোটরগাড়ির যন্ত্রাংশ ও জেনারেটরসহ বিলাসী পণ্যের শুল্ক কমানোর প্রস্তাবনা থাকবে নয়া বাজেটে।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, আগামী বছরের জন্য মোট রাজস্ব প্রাপ্তি ধরা হয়েছে ৭৯ হাজার ৩৬০ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) খাতে আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬১ হাজার কোটি টাকা। এনবিআর বহির্ভূত খাতে রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৯৫৫ কোটি টাকা এবং কর ব্যতিত প্রাপ্তি ধরা হয়েছে ১৫ হাজার ৫০৬ কোটি টাকা। বৈদেশিক অনুদান প্রাপ্তির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ হাজার ১৩০ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে এনবিআর খাতে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, যা সংশোধিত বাজেটে দাঁড়াচ্ছে ৫৩ হাজার কোটি টাকা। অন্যান্য খাত মিলিয়ে মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৬৯ হাজার ৩৮২ কোটি টাকা, যা পরে সংশোধন করে ৬৯ হাজার ১০০ কোটি টাকা করা হয়।
আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে মোট অনুন্নয়নমূলক ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৭ হাজার ১৪০ কোটি টাকা। এর মধ্যে রাজস্ব ব্যয় ৬৯ হাজার ৫০৪ কোটি টাকা। চলতি বছরের মূল বাজেটে মোট অনুন্নয়নমূলক ব্যয় ৬৬ হাজার ৭৫৬ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে সংশোধিত বাজেটে ৬৭ হাজার ১২৫ কোটি টাকা এবং রাজস্ব ব্যয় ৬২ হাজার ৬৭৬ কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়। সরকারের রাজস্ব ব্যয়ের পরিমাণ ক্রমান্বয়ে বেড়ে যাওয়ায় সংশোধিত বাজেটে অন্য লক্ষ্যগুলোর বাস্তবায়ন ব্যয় সঠিকভাবে না হলেও রাজস্ব ব্যয় বরং বেড়েছে।
চলতি বছরে উন্নয়ন ব্যয় অন্য বছরের তুলনায় কম হয়েছে। বছরের শুরুতে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) ২৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা ধরা হলেও বাস্তবায়ন ব্যর্থতার কারণে সংশোধিত বাজেটে এডিপি বরাদ্দ কমিয়ে ২৩ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে। নতুন বছরের বাজেটে এডিপি চূড়ান্ত করা হয়েছে ৩০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। দেশের চাহিদার কথা বলে সব সরকারের আমলেই এডিপির আকার বাড়িয়ে দেয়া হয়। কিন্তু বছর শেষে তা আর বাস্তবায়ন করা যায় না। এ রকম পরিসি'তিতে নতুন সরকারের এই বিশাল ব্যয়ের বাজেট কিভাবে বাস্তবায়িত হবে সে সংশয় থেকেই যাচ্ছে।
এদিকে সরকারকে ঘাটতি অর্থায়ন নিশ্চিত করতে গিয়ে অভ্যন্তরীণ ঋণ গ্রহণ বাড়াতে হবে। এতে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করার পাশাপাশি মূল্যস্ফীতিকে উস্কে দেয়ার ঝুঁকি থাকে। অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে সরকার এক বছরের কম সময়ের বিভিন্ন মেয়াদি ট্রেজারি বিল, ট্রেজারি বন্ড এবং সঞ্চয়পত্রের ওপর নির্ভরশীল।
অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধেও আগামী বছর সরকারকে বিপুল অর্থ ব্যয় করতে হবে। অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ বাবদ পরিশোধ করতে হবে ১৪ হাজার ৪৭১ কোটি টাকা, যা চলতি বছরের বাজেটে ছিল ১১ হাজার ২৭৪ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার কোটি টাকা। বৈদেশিক ঋণের সুদ বাবদ আগামী বছরে পরিশোধ করতে হবে ১ হাজার ৩৩৭ কোটি টাকা। যা চলতি বছরের মূল বাজেটে ১ হাজার ২৯১ কোটি টাকা ধরা হলেও বছর শেষে দাঁড়াচ্ছে ১ হাজার ৩১১ কোটি টাকায়।
উল্লেখ্য, দুই বছর পর আবার জাতীয় সংসদে বাজেট উত্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী। গত দুই বছর সংসদের বাইরে বাজেট পেশ করা হয়েছিল।

প্রধানমন্ত্রীসহ আ.লীগের শীর্ষ নেতাদের ৬২ মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত




প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১২টি মামলাসহ রাজনৈতিক বিবেচনায় দায়ের করা ৬২টি মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সারা দেশে ব্যাপক সাড়া পড়ায় আবেদনের সময় আবারো ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। তবে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের মামলা প্রত্যাহারের ব্যাপারে এখনো কোন সিদ্ধান্ত হয়নি।
গতকাল বুধবার সচিবালয়ের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে রাজনৈতিক হয়রানি মামলা প্রত্যাহার সংক্রান্ত রিভিউ কমিটির আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান কমিটির চেয়ারম্যান ও আইন প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট কামরুল ইসলাম। খবর এনএনবির।
বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়াসহ শীর্ষ রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও আমলাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং তথ্য গোপনের অভিযোগে ৬৬৭টি মামলা দায়ের করা হয়। এগুলোসহ বিএনপি জোট সরকারের সময় দায়ের করা রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহার করতে ২২ ফেব্রুয়ারি প্রত্যেক জেলায় ও মন্ত্রণালয় পর্যায়ে কমিটি গঠন করে সরকার। এ সুবিধা পেতে দুনেত্রীসহ শীর্ষ রাজনৈতিক নেতারা আবেদন করেছেন। শুধু ঢাকা জেলা যাচাই-বাছাই কমিটির কাছে ২ হাজার ৭৮১টি মামলা প্রত্যাহারের আবেদন পড়েছে। আর সারা দেশে ৪ হাজার ৮৫৯টি আবেদন জমা পড়েছে।
সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত প্রথম দিনের বৈঠকে মোট ১১৩টি মামলা যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। এ মামলাগুলোর মধ্যে রয়েছে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের করা ১২টি মামলাসহ ৬২টি মামলা রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত হয়। মামলাগুলোর মধ্যে রয়েছে- আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য তোফায়েল আহমেদের বিরুদ্ধে ৯টি, সাবেক সাংসদ কামাল আহমেদ মজুমদারের ১৩টি, সাবেক হুইপ আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহর ৬টি, সাবেক প্রতিমন্ত্রী মহিউদ্দিন খান আলমগীরের ২টি, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নানের ১টি, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের ১টি, বাহাউদ্দিন নাসিমের ৪টি এবং মকবুল হোসেনের ১টি।
এই ৬২টির মধ্যে দন্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় দায়ের করা মামলা রয়েছে ৩৬টি, আর দুদকের দায়ের করা ২৬টি। এ পর্যন্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মামলা প্রত্যাহারের মোট আবেদন জমা পড়েছে ৮২৪টি। বৈঠক শেষে আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন রাজনৈতিক হয়রানি মামলা প্রত্যাহারের আবেদনের সময় আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হবে।
কমিটির প্রধান ও আইন প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, বিগত সরকারগুলোর সময়ে রাজনৈতিক বিবেচনায় দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠকে ৬২টি মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই ৬২টির মধ্যে দন্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় দায়ের করা মামলা রয়েছে ৩৬টি, আর দুদকের দায়ের করা ২৬টি। দুদকের দায়ের করা মামলাগুলো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পরবর্তী করনীয় ঠিক করতে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
আইন প্রতিমন্ত্রী আরো জানিয়েছেন, বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের মামলা প্রত্যাহারের আবেদন এখনো বাছাই কমিটির হাতে পৌঁছায়নি। কমিটির কাছে আবেদন আসলে নিয়ম অনুযায়ী বিবেচনা করা হবে। এদিকে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তার দুপুত্রসহ দলের প্রায় অর্ধশতাধিক সিনিয়র নেতা মামলা প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়েছেন। এছাড়াও জামায়াতে ইসলামীর আমীরসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা চারটি মামলা প্রত্যাহারের আবেদন জানানো হয়েছে।

বাজেটের সুবিধা নিতে বন্দরে পৌঁছেছে দুই হাজার গাড়ি বোঝাই জাহাজ

বাজেটের সুবিধা নিতে আমদানি করা প্রায় দুই হাজার গাড়ি বোঝাই এম ভি লিলাক এইচ জাহাজটি গত সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম বন্দরে বহির্নোঙরে পৌঁছেছে। জাপান থেকে আমদানিকৃত বিপুল পরিমাণ রিকন্ডিশন্ড গাড়ি নিয়ে আসা জাহাজটি গতকাল পৌঁছতে পারছে কিনা তা নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে অনিশ্চয়তা বিরাজ করছিল। বেশ কয়েকজন আমদানিকারকের আনা এই বিপুল পরিমাণ গাড়ি যদি ঘন্টা কয়েক পরে বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছতো তাহলে বিপুল পরিমাণ শুল্কে হেরফের হতো বলে মনে করা হচ্ছে। এই অবস্থায় গত সন্ধ্যায় জাহাজটি বহির্নোঙরে পৌঁছার পর তড়িঘড়ি করে গাড়িগুলোর শুল্কায়নের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হচ্ছিল বলেও সূত্র জানিয়েছে। বাজেটের জন্য গতরাত বারোটায় চট্টগ্রাম কাস্টমসে শুল্কায়ন কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। আজ নতুন শুল্কহার পাওয়ার পর এই অর্থবছরের শুল্কায়ন শুরু হবে।

চমেকে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপে ব্যাপক সংঘর্ষ ।। আহতদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা গুরুতর, গ্রেপ্তার ১৪

কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাত ১০ টায় কলেজের প্রধান ছাত্রাবাসে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে বহিরাগত একজনসহ কমপক্ষে ৫ জন আহত হয়েছে। পুলিশ ১৪ জন ডাক্তার ও ছাত্রকে আটক করেছে। আহতরা হলেন- ডা. ধীমান বড়ণ্ডয়া, চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ইমরান, চমেক এমবিবিএস তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ফয়সাল, ইরফান এবং সানি। এদের মধ্যে দুজনের মাথায় গুরুতর আঘাত লাগে। জানা যায়, কমিটিতে প্রাধান্য বিস্তারের জন্য গতকাল সন্ধ্যা থেকে ছাত্রাবাসে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপ শক্তি বৃদ্ধি করে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এক পর্যায়ে রাত ১০টার দিকে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। হকিস্টিক, রামদা ও লাঠি দিয়ে এক পক্ষ আরেক পক্ষের ওপর হামলা চালায়। রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত বিক্ষিপ্তভাবে এই সংঘর্ষ চলে। একটি সূত্রে বলা হয়, সংঘর্ষের শুরুতে পুলিশ ঐ এলাকায় অবস'ান করলেও তারা নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করে। পরবর্তীতে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও র্যােব সদস্য সেখানে মোতায়েন করা হয়। রাত দেড়টায় সর্বশেষ খবরে জানা গেছে, পুলিশ ছাত্রাবাসে তল্লাশি শুরু করেছে। সংঘর্ষের ঘটনায় পুরো এলাকায় থমথমে পরিসি'তি বিরাজ করছিল। এ ব্যাপারে রাত সোয়া একটায় চমেক অধ্যক্ষ ড. গোফরানুল হকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি দৈনিক আজাদীকে বলেন, শিক্ষকদের নিয়ে আমি এখনই জরুরি বৈঠকে বসছি। এ ব্যাপারে বৈঠকে প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। ঘটনার কারণ সম্পর্কে তখনো তিনি সুনির্দিষ্ট কিছু জানেন না বলে জানান।

সব প্রস্তুতি শেষ, আগামীকাল ঘোষণা এবার বাজেটের আকার হচ্ছে ১ লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা

আগামীকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে আগামী অর্থবছরের জাতীয় বাজেট ঘোষণা করা হবে। ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি শেষ করে আনা হয়েছে। এবার বাজেটের আকার প্রায় ১ লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। বাজেটের এই আকার প্রসঙ্গে আগে থেকেই অর্থমন্ত্রী বলে আসছেন, দিন বদলের সনদ বাস্তবায়নে এই পরিমাণ তেমন বড় নয়। অবশ্য এনিয়ে সাবেক উপদেষ্টা ড. আকবর আলী খান বলেছেন, বাজেটের আকার বড় হলে মানুষের উপর করের বোঝা বাড়ে। বাজেট প্রণয়নে সম্পৃক্ত একাধিক সূত্র থেকে বলা হয়েছে, আসন্ন বাজেটে নতুন নতুন খাত সৃষ্টি, এডিপির আকার বড় করা, প্রাইভেট পাবলিক পার্টনারশিপ (পিপিপি) প্রকল্প গ্রহণ ও এজন্য অর্থ বরাদ্দ, সপ্তম বেতন কমিশন বাস্তবায়ন এবং সামাজিক নিরাপত্তা বলয় বৃদ্ধি করাসহ নানা কারণে বাজেটের আকার চলতি বাজেটের তুলনায় বড় হচ্ছে। উপরে উল্লেখিত আকার কিছুটা বাড়তে বা কমতে পারে বলেও সূত্র জানিয়েছে। তবে তা ১ লাখ ১৫ হাজার কোটি টাকার উপরে উঠবে না। এদিকে এর আগেই বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আকার ৩০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। সূত্র জানায়, এখন অতি গুরুত্ব কিছু সংযোজন বা বিয়োজন হচ্ছে। অর্থ মন্ত্রণালয় ও এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, নতুন বছরের বাজেটে এনবিআরভুক্ত আয়, এনবিআর বহির্ভূত আয়, কর ব্যতীত আয় এবং বিদেশি অনুদানসহ মোট আয় ধরা হয়েছে ৮৪ হাজার ৮০ কোটি টাকা। বাজেটে এনবিআরভুক্ত আয় ধরা হয়েছে ৬১ হাজার কোটি টাকা, এনবিআর বহির্ভূত আয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৯৭৫ কোটি টাকা, কর ব্যতীত আয় ধরা হয়েছে ১৪ হাজার ৯৭৫ কোটি টাকা এবং বিদেশি অনুদান ধরা হয়েছে ৫ হাজার ১৩০ কোটি টাকা। এদিকে নতুন বাজেটে বিদেশি ঋণ ধরা হয়েছে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। আর বাজেটের বাকি ঘাটতি মেটানো হবে দেশীয় ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, দেশি ব্যাংক থেকে সরকার ঋণ নিলে বেসরকারি খাতে কোন সমস্যা হবে না। কারণ বর্তমানে ব্যাংকগুলোতে প্রচুর পরিমাণ অলস অর্থ জমা আছে। তাছাড়া ব্যাংকগুলোর প্রবৃদ্ধিও ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশ। এ অবস'ায় সরকার ১৫ থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিলে কোন সমস্যা হওয়ার কথা না। নতুন বাজেটে সপ্তম বেতন কমিশনের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া এবং বিশ্ব অর্থনীতির চলমান মন্দা থেকে দেশের বিভিন্ন রপ্তানি খাতের ক্ষতিপূরণ দেয়া, সামাজিক নিরাপত্তা বলয় বাড়ানো এবং বাজেটের নতুন খাত পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) কর্মসূচি বাস্তবায়নে বরাদ্দ রাখা হচ্ছে আড়াই থেকে তিন হাজার কোটি টাকা। সব মিলিয়ে বাজেটের আকার চলতি অর্থ বছরের তুলনায় অনেকটাই বড় হচ্ছে। তবে এজন্য করের হার বাড়বে না, বাড়ছে করের ক্ষেত্র। অর্থমন্ত্রী ড. আবুল মাল আব্দুল মুহিত গতকাল এ প্রতিবেদককে বলেন, আমরা দিনবদলের সনদ বাস্তবায়নে এবার বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা, খাদ্য নিরাপত্তা বলয় জোরদার করাসহ পিপিপি বাস্তবায়নে একটা থোকবরাদ্দ রাখছি। বাজেটের আকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, স্বপ্ন বড় করে দেখলেই তা বাস্তবায়নে বড় অংকের অর্থ দরকার হয়। আর এনিয়ে সাবেক উপদেষ্টা ও রেগুলেটরী রিফর্মস কমিশনের চেয়ারম্যান ড.আকবর আলী খান বলেছেন, বাজেটের আকার বড় হলে যে মানুষের ভাগ্যবদল হবে তা ঠিক নয়। অনেক সময় বাজেটের আকার বড় রাখতে গিয়ে সরকারকে করের হার বাড়াতে হয়। তখন প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে এর চাপ জনগণের উপর পড়ে। এবার এর ব্যতিক্রম হবে এমন আশা করছেন না তিনি।

নাম পাল্টে ও পাগল সেজেও শেষ রক্ষা হলো না

হ্যান্ডকাপসহ আদালত প্রাঙ্গন থেকে পালিয়ে যাওয়ার দীর্ঘদিন পর অবশেষে ধরা পড়লো একটি মামলায় সাত বছরের সাজাপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মামলার পলাতক আসামী আবু সৈয়দ। নিজের নাম পাল্টে এবং পাগলের বেশ ধরেও তার শেষ রক্ষা হলো না। গতকাল মঙ্গলবার সকালে জমিয়তুল ফালাহ মসজিদের মাঠের পাশ থেকে কোতোয়ালী থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, রাঙ্গুনিয়ার পোমরা এলাকার আবেদুর রহমান প্রকাশ আহমেদুর রহমানের পুত্র আবু সৈয়দ বিভিন্ন মামলার আসামী হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়। গত বছরের ১৩ নভেম্বর পরিবেশ আদালতের একটি মামলায় তাকে আদালতে হাজির করা হয়। হাবিলদার সিরাজুল হক তাকে আদালতে নিয়ে আসেন। আদালতের কাঠগড়ায় তাকে দাড় করালে সেখানে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। বমি করে সে মেঝেতে পড়ে যায়। এই সময় তাকে বাইরে নিয়ে হাতকড়া পরিয়ে বসিয়ে রাখা হয়। কিন্তু এক পর্যায়ে সে সবার অলক্ষে সেখান থেকে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় হাবিলদার সিরাজুল হককে সাসপেন্ড করা হয়। ঘটনার পর থেকে পুলিশ আবু সৈয়দকে হন্য হয়ে খুঁজলেও তার হদিশ মিলছিল না। গতকাল সকালে কোতোয়ালী থানার এসআই মহসীন তাকে গ্রেপ্তার করেন।গ্রেপ্তারের পর আবু সৈয়দ পুলিশকে জানায়, আদালত প্রাঙ্গনে তাকে যখন বসিয়ে রাখা হয়েছিল তখন সে দেখলো যে তার হাতে পরানো হাতকড়াটি নড়বড়ে। টান দিতেই এটি খুলে যায়। অবসস্থা বুঝে সে সেখান থেকে সটকে পড়ে। পরে বাসে চড়ে সীতাকুন্ডে চলে যায়। নিজের নাম বলে নাছির। এভাবে সেখানে কয়েকদিন থাকার পর ইপিজেড এলাকায় চলে আসে। সেখানে সে একটি বিয়েও করে। পরবর্তীতে সে পাগলের বেশ ধরে নগরীর বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করতে থাকে। রাত বিরাতে ঝাপটাবাজিও করতে থাকে। এভাবে তার দিন চলছিল। গতকাল সে ধরা পড়ে যায়। আবু সৈয়দের বিরুদ্ধে চারটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে একটি অস্ত্র মামলায় তার সাত বছরের সাজা হয়েছে। এছাড়া মাদক দ্রব্য আইনে একটি এবং পরিবেশ আইনে দুইটি মামলা রয়েছে। আদালত প্রাঙ্গন থেকে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় তার বিরুদ্ধে একটি মামলা রেকর্ড করা হয়।

দশ ট্রাক অস্ত্র মামলা এনএসআই পরিচালক শাহাবুদ্দীন আবারও রিমান্ডে ॥ জিজ্ঞাসাবাদ শুরু

দশ ট্রাক অস্ত্র মামলায় এনএসআই-এর পরিচালক (নিরাপত্তা) মোহাম্মদ শাহাবুদ্দীন আহমেদকে ৪ দিনের রিমান্ডে বিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে সিআইডি পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর থেকে তাকে দামপাড়াস' সিআইডি কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয় বলে জানা গেছে। এদিকে এনএসআই-এর সাবেক ডিজি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম ও সাবেক উপ-পরিচালক (টেকনিক্যাল) মেজর (অব.) লিয়াকত হোসেনের আইনজীবীরা তাদের মক্কেলের ডিভিশন ও জামিন চেয়েছেন। মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট আবদুর রবের আদালতে আবদুর রহিমের পক্ষে কারাগারে ডিভিশন দেয়ার আবেদন করেন তাঁর আইনজীবীরা। জবাবে জেল কোড অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন বিচারক। অন্যদিকে লিয়াকতের জামিন চেয়ে তার আইনজীবীদের করা আবেদনে সাড়া দেন নি বিচারক। প্রসঙ্গত, গত ৩ জুন বুধবার শাহাবুদ্দীনকে তৃতীয় দফায় ৪ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। এর আগে আরও দু’দফা রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তাকে।

উখিয়ায় গাড়ি থামিয়ে চাঁদাবাজি দুই ভুয়া পুলিশ কর্মকর্তা আটক

কক্সবাজার-ইনানী মেরিন ড্রাইভ রোডে পুলিশের বিশেষ সার্জন ও এনএসআই পরিচালক পরিচয়ে যানবাহন থামিয়ে গাড়ির কাগজপত্র তল্লাশির নামে চাঁদাবাজিকালে পুলিশ দুই চাঁদাবাজ যুবককে গ্রেপ্তার করেছে। সোমবার দিবাগত মধ্যরাতে গ্রেপ্তারকালে তাদের কাছ থেকে একটি চোরাই মোটর সাইকেল, ছিনতাইকৃত মোবাইল ফোন সেট, দুইটি খেলনা পিস্তল ও নগদ টাকা উদ্ধার করেছে। উখিয়া থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উখিয়া সদরের কাজীবাড়ীর অ্যাডভোকেট কাজী গিয়াস উদ্দিনের পুত্র কাজী সালাহ উদ্দিন রুমেল(৩০) ও রাজাপালং গ্রামের মাষ্টার নূরুল কবিরের পুত্র আবু নোমান (২৪)কে সোমবার ৮ জুন দিবাগত রাত দেড়টার দিকে কক্সবাজার-ইনানী সড়কের ইনানী ব্রীজের উপর পণ্যবাহী ট্রাক থামিয়ে চাঁদাবাজিকালে হাতে-নাতে আটক করা হয়। ঘটনার বিবরণে জানা যায়, সোমবার রাত বারোটার দিকে একটি মোটর সাইকেল যোগে উক্ত দুই যুবক রামু থানার হিমছড়ি পুলিশ ফাঁড়িতে গিয়ে রুমেল পুলিশের বিশেষ সার্জেন্ট ও নোমানকে এনএসআই’র পরিচালক বলে পরিচয় দেয়। উক্ত দুই প্রতারক যুবক ফাঁড়িতে পুলিশদের দিয়ে চেয়ার, চা- পানিও আনায় এবং পুলিশের দিয়ে ফাঁড়ির চেক পোষ্টের বাঁশ ফেলে একাধিক যানবাহন তল্লাশী করে নগদ হাতিয়ে নেয়। ফাঁড়ির পুলিশ সন্দেহ করার আগেই প্রতারক যুবকদ্বয় আজকে আর নয় বলে স্থান ত্যাগ করে। উক্ত প্রতারকদ্বয় উখিয়া রেজু ব্রীজের কাছে কক্সবাজারমুখী সিএনজি টেক্সী চালক রামু’র পেঁচার দ্বীপের ছিদ্দিক আহমদকে গালিগালাজ করে ডেকে একজনকে পুলিশ অফিসার ও অন্যজনকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে তার কাছে থাকা ১ টি মোবাইল সেট, নগদ ২৫০ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে সটকে পড়ে। ছিদ্দিক আহমদ তৎক্ষনাৎ পার্শ্ববর্তী হিমছড়ি ফাঁড়িতে জানালে সেখানে পুলিশের সন্দেহ ঘনীভূত হয় এবং পুলিশ ঘটনা উখিয়া সার্কেল এএসপিকে জানায়। এএসপি মিজানুর রহমান মুন্সি দ্রুত উখিয়া থানা, রামু থানা ও হিমছড়ি পুলিশ ফাঁড়িকে প্রতারকদের আটকের নির্দেশ দেয়। অবশেষে সোমবার রাত দেড় টার দিকে উখিয়া থানার ওসি প্রদীপ দাশের নেতৃত্বে পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে উক্ত দুই প্রতারককে আটক করে। এদিকে চাঁদাবাজিকালে ব্যবহৃত মোটর সাইকেলটি বেক্সিমকো ফার্মার উখিয়া মার্কেটিং অফিসার রফিকুল ইসলামের বলে গতকাল মঙ্গলবার উখিয়া থানা পুলিশ সনাক্ত করে। যেটি সোমবার সন্ধ্যায় উখিয়া ষ্টেশন থেকে চুরি করে নিয়ে যায় বলে থানায় অভিযোগ করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত দুই প্রতারক ভুঁয়া পুলিশ সার্জেন্ট ও এনএসআই পরিচালকের বিরুদ্ধে উখিয়া ও রামু থানায় দস্যুতা, চুরি ও প্রতারনার দায়ে ৩টি পৃথক পৃথক মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত দুই প্রতারকই ইসলামী ছাত্রশিবিরের ক্যাডার বলে জানা গেছে।

পরিবেশ সৃষ্টি করার দাবি বাজেট পেশের দিনই সংসদে যেতে চায় বিএনপি


সরকার পরিবেশ সৃষ্টি করলে বাজেট পেশের দিনই সংসদে যোগ দিতে চায় প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সংসদ ভবনের মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপি সাংসদ জমিরউদ্দিন সরকার এবং বিরোধী দলের চিফ হুইপ জয়নাল আবদিন ফারুক এমন আভাস দিয়েছেন। খবর বিডিনিউজের।জমিরউদ্দিন সরকার বলেন,‘‘সরকার পরিবেশ সৃষ্টি করলে আমরা বাজেট অধিবেশনে যেতে চাই। বাজেট অধিবেশনে বিরোধী দল না থাকলে এর সমালোচনা করবে কে ? বিরোধী দল না থাকলে একতরফা বাজেট হবে। তাই বিরোধী দলকে সংসদে ফিরিয়ে আনতে সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে।’’ জয়নাল আবদিন ফারুক বলেন,‘‘বাজেট পেশের এখনো দু’দিন বাকী। স্পিকার আমাদের বিষয়গুলো পুনর্বিবেচনা করলে বাজেট পেশের দিনই অধিবেশনে যেতে চাই আমরা। আমাদের সেরকম প্রস্তুতিও আছে।” তবে সংসদে যাওয়া না যাওয়ার বিষয়ে সংসদীয় দলের সভায় সিদ্ধান্ত হবে বলে জানান তিনি। উল্লেখ করা যেতে পারে, নবম সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশনের প্রথম দিন থেকেই বিরোধী দলের প্রথম সারিতে আসন সংখ্যা বাড়ানোর দাবিতে বিএনপি সংসদ অধিবেশনে যোগ দেওয়া থেকে বিরত রয়েছে। বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ বলেন, “আওয়ামী লীগ সরকারের বাকশালী কায়দায় দেশ ও সংসদ পরিচালনার যে অভ্যাস দেখছি, তাতে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের আন্দোলন করা ছাড়া কোনো বিকল্প থাকছে না।’’ লিখিত বক্তব্যে ফারুক বলেন, সংসদের প্রতিদিনের কার্যসূচি বিরোধী দলীয় নেতার বাসায় পৌঁছাতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে নিরাপত্তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দলের নেতার প্রতি এমন আচরণ অসৌজন্যমূলক। তিনি বলেন, ‘‘সোমবার বাংলাদেশ টেলিভিশনে ‘ফিরে দেখা ’ শীর্ষক এক প্রামাণ্যচিত্রে ঢাকা সেনানিবাসের শহীদ মইনুল সড়কের বাড়িটি সম্পর্কে আপত্তিকর বক্তব্য প্রচার করা হয়েছে। এরকম সংবাদ উচ্চ আদালত অবমাননার শামিল।’’ এক প্রশ্নের জবাবে সাবেক স্পিকার জমিরউদ্দিন সরকার বলেন, বিরোধী দলের নেতা হিসেবে খালেদা জিয়া যা যা পাওয়ার যোগ্য, তা কেড়ে নেওয়া কিংবা তাকে না দেওয়াটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং তাকে হেয় করার জন্য সরকার এটা করছে। এ সময় সাংসদ আবদুল মমিন তালুকদার, নজরুল ইসলাম মঞ্জু, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, আমজাদ হোসেন, রেহেনা আখতার রানু, নীলুফার চৌধুরী মনি, রাশেদা বেগম হিরা, শাম্মী আখতার, আসফিয়া আশরাফী পাপিয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। পরে লিখিত বক্তব্যসহ বিএনপি নেতারা স্পিকার আব্দুল হামিদের সঙ্গে দেখা করে তাদের দাবির কথা জানান। স্পিকার তাদের দাবি পূরণের চেষ্টা করবেন এমন আশ্বাস দেন বলে জানান বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ।

বৃহত্তর চট্টগ্রামের ব্যাপক এলাকায় প্লাবন, হাজার হাজার লোক পানিবন্দি ।।চকরিয়া রামু উখিয়া পেকুয়া নাইক্ষ্যংছড়িতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ, চিংড়ি ঘের নষ্ট



টানা প্রবল বর্ষণ ও বিভিন্ন ছড়া-খাল দিয়ে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে চকরিয়া, রামু, উখিয়া, পেকুয়া ও নাইক্ষ্যংছড়ির বিভিন্ন ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বহু চিংড়ি ঘের প্লাবিত হয়েছে। আজাদীর নাইক্ষ্যংছড়ি প্রতিনিধি মাঈনুদ্দিন খালেদ জানান, পার্বত্য উপজেলা নাইক্ষ্যংছড়ি ও রামুতে মাত্র ৬ ঘণ্টা টানা বর্ষণে সৃষ্ট পাহাড়ি ঢলে কোটি টাকার ১টি ব্রিজ এবং কালর্ভাট, ১০টি বসতঘরসহ শতাধিক গরু, ছাগল, হাস, মুরগি, ধান, চাল, বাঁশসহ কয়েক কোটি টাকার মালামাল ভেসে যায়। বজ্রপাতে নিহত হয় নারীসহ ২ জন, আহত হয় ৮ জন। পাহাড়ি এ ঢলে দু’উপজেলার সাথে সংযুক্ত ৪টি সড়কের সকল ধরনের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায় ২০ ঘণ্টা। পৃথক ঘটনায় কচ্ছপিয়ার মৌলভীরকাটায় ৪র্থ শ্রেণীর এক ছাত্রী মারা যায়। তার নাম আক্তার বেগম (১০), তার মৃত্যু কারণ জানা যায় নি। সব মিলে এলাকায় হঠাৎ নেমে আসে এক অরাজক পরিসি'তি। ৫৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। এ খবর প্রত্যক্ষদর্শী এলাকাবাসী ও দায়িত্বশীল সূত্রের। সূত্র জানায়, সীমান্ত উপজেলাদ্বয়ে গত ৭ জুন রাত ৮টা থেকে রাত ২টা পর্যন্ত টানা বর্ষণে হঠাৎ করে পানি পূর্ণ হয়ে যায় স'ানীয় নদী ও খালগুলো। পাহাড়ি এ ঢলে সৃষ্টি হয় বন্যার। এরই সাথে বজ্রপাতের গর্জন ও আঘাত। অরাজক এ পরিস্থিতে লোকজন জীবন বাঁচাতে মরিয়া ছিল তখন। এ সময় নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী সংযোগ সড়কের থোয়াংগাকাটা নামক স্থানে গর্জনছড়াতে নির্মাণাধীন ুইচ গেটের জমা পানিতে ১০টি বসতবাড়ি, ৬টি গরু, ২টি ছাগলসহ শতাধিক হাঁসমুরগি ভেসে যায়। এ স্লুইচ গেটের পানিতে বন্দি হয়ে পড়ে বাইশারী ইউনিয়নের নাজির বুনিয়াসহ ৫ গ্রামের ৮ হাজার মানুষ। এভাবে উপজেলার বাইশারীতে ভেসে যায় পুনর্বাসন পাড়া সংযোগ সড়কের ২ কিলোমিটার চলাচল পথ। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে বাইশারী-ঈদগাঁও সড়ক, নাইক্ষ্যংছড়ি-চাকঢালা সড়ক, ঘুমধুম-রেজু সংযোগ সড়ক ও বাইশারী-গর্জনিয়া-নাইক্ষ্যংছড়ি সড়ক। উপজেলায় অন্তত অর্ধশত কালভার্ট ভেঙে যায়। এখানকার স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাসহ ৫৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। কোন পড়ালেখা হয়নি। কচ্ছপিয়া কে.জি স্কুল এন্ড কলেজসহ বেশ কয়েকটি পানির নিচে তলিয়ে যায়। একই সময়ে রামু উপজেলার কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের দোছড়ি খালে নবনির্মিত কোটি টাকার ব্রিজটি নির্মাণ ত্রুটির কারণে ভেসে যায়। এতে করে ১০ হাজার মানুষের চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। গর্জনিয়া ইউনিয়নের থিমছড়ি বাজার সংলগ্ন খালে ৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ব্রিজটি নির্মাণের ২ মাসের মাথায় গতকালের পানিতে ভেসে যায়। একই ইউনিয়নের জাউচপাড়ায় বিয়ে বাড়িতে ব্রজপাতে নিহত হয় ২ জন, আহত হয় ২ জন। এছাড়াও ব্রজপাতে নাইক্ষ্যংছড়ি বাইশারীতে স্কুলশিক্ষকসহ আহত হয় আরো ৬ জন। নিহতরা হলো- খতিজা বেগম (৫৫), নূরনবী (৩০)। এরা বিয়ে বাড়ির সদস্য। আহতরা হলো- ছায়েরা খাতুন (২৮), জসিম উদ্দিন (১৯), কে.জি স্কুল শিক্ষক আবু নাসের (৪৫), মনছুর (১৮), আবুল কালাম (২০), সেলিম (১৬), নূরনবী (১৯) ও মোঃ নাজের। উপর্যুপরি ব্রজপাতে হতাহতের ঘটনায় নাইক্ষ্যংছড়িসহ আশপাশের ২শ গ্রামের ৪ লক্ষাধিক মানুষ চরম আতংকে রয়েছে। উল্লেখ্য, ব্রজপাতে এই এলাকায় গত ৫ বছরে ২১ জন নিহত, আহত হয় অর্ধশত। এ বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি ইউএও নওয়াব আসলাম হাবিব জানান- পাহাড়ি ঢলের অনেক জায়গায় ক্ষতি হয়েছে।
চকরিয়া প্রতিনিধি ছোটন কান্তি নাথ জানান, টানা ১০ ঘন্টার প্রবল বর্ষণ ও বিভিন্ন ছড়া খাল দিয়ে দ্রুত নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ঢলের পানির তোড়ে কয়েকটি ইউনিয়নের অন্তত ১৫টি কাঁচা বসতবাড়ি বিধ্বস্ত ও অসংখ্য গ্রামীণ সড়ক ভেঙে গেছে। এছাড়া সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নের ভূট্টা ও সবজি ক্ষেতসহ কয়েক’শ একর জমির সবজি ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। অপরদিকে সামুদ্রিক জোয়ারের অস্বাভাবিক পানির তোড়ে উপকূলীয় এলাকার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের বেড়িবাঁধসহ চিংড়ি ঘেরেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানরা জানিয়েছেন। এদিকে, টানা প্রবল বর্ষণ ও ভয়াবহ বজ্রপাতের কারণে রোববার রাত থেকে গতকাল সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত চকরিয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল। রামু প্রতিনিধি নীল অপূর্ব জানান, কক্সবাজারের রামু উপজেলায় প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে গত রোববার কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের দোছড়ি খালের উপর নির্মিত সেতু ও ফাক্রিকাটা এলাকায় দু’টি সেতু ভেঙ্গে গেছে। এতে রামু সদরের সাথে ওই এলাকার পঞ্চাশ হাজার মানুষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। প্লাবনে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ কয়েক’শ ঘরবাড়ি পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। একাধিক স'ানে বাঁকখালী নদীর পানি প্রবেশ করায় নতুন নতুন ভাঙনের সৃষ্টি হচ্ছে। বাঁকখালী নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় স্রোতে ভেসে গেছে প্রায় ৫০ লাখ টাকার বাঁশ ও গাছ। পেকুয়া প্রতিনিধি মো. ছফওয়ানুল করিম জানান, অতিবৃষ্টির কারণে জোয়ারের পানি ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে পেকুয়ার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে করে ফসলি জমি চিংড়ি ঘেরের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। জানা যায়, অতিবৃষ্টির কারণে পেকুয়া উপজেলার শীলখালী ইউনিয়ন, রাজাখালী, মগনামা, উজানটিয়া ও টৈটং এলাকা প্লাবিত হয়েছে। শীলখালী ও টইটং ইউনিয়ন পাহাড়ি ঢলের পানিতে এবং রাজাখালী, মগনামা ও উজানটিয়া ইউনিয়ন ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি ঢুকে প্লাবিত হয়েছে। স্থানীয়রা জানিয়েছে শীলখালী ইউনিয়নের জারুল বনিয়া সড়ক সহ কমপক্ষে ২০ কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক পানির নীচে তলিয়ে গেছে। এদিকে মগনামা উজানটিয়া ও রাজাখালী ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, বেশ কয়েকটি পয়েন্টে ভাঙ্গা বেড়ী বাঁধের অংশ দিয়ে পানি ঢুকে ব্যাপক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। কমপক্ষে ১৫০ কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক পানির নীচে তলিয়ে যাওয়ায় স্থানীয় জনসাধারণের দুর্ভোগ পোহাতে দেখা গেছে। টইটং ইউনিয়নের কৃষক আবু তালেব, সৈয়দ আলী, আবুল কাশেম, শীলখালীর জব্বর মিয়া, পেকুয়া সদরের রমিজ উদ্দিন ও জহিরুল ইসলাম জানান, পেকুয়া উপজেলার প্রায় সবকটি বীজতলা পানির নীচে তলিয়ে গেছে। দ্রুত পানি না নামলে বীজতলার ব্যাপক ক্ষতি হবে বলে তারা জানান।
উখিয়া প্রতিনিধি রফিকুল ইসলাম জানান, আকস্মিক ঘূর্ণিঝড়ে উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নে চার গ্রামে অর্ধশত বসতঘর, গাছপালা ভেঙে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। গতকাল সোমবার সকাল ছ’টার দিকে এ ঘূর্ণিঝড় বয়ে যায়। গত কয়েক দিনের প্রবল বর্ষণে উখিয়ার সর্বত্র গ্রামীণ রাস্তাঘাট, চিংড়ি ঘের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পালংখালী ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড মেম্বার নুরুল হুদা চৌধুরী, ৩নং ওয়ার্ড গ্রাম পুলিশ নুরুল আলম জানান, পশ্চিম পালংখালী, গয়াল মারা, পুটি বনিয়া ও রাহমতের বিল গ্রামে ঘূর্ণিঝড়ে অর্ধশত বসত ঘর, শত শত গাছপালা উপড়ে ভেঙে ব্যাপক ক্ষতি হয়। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট মৌসুমী বায়োচাপ ও পূর্ণিমার প্রভাবে গত ২/৩ দিন দরে প্রবল বর্ষণ হচ্ছে। বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে অনেক গ্রামে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। অনেক গ্রামীণ রাস্তা-কালভার্ট বিধ্বস্ত হয়েছে, নাফ নদী ও সমুদ্রের জোয়ারের পানিতে নিম্নাঞ্চল ও ৩০টির মত চিংড়ি ঘের প্লাবিত হয়ে চিংড়ি মাছ ভেসে গেছে।

ফলাফলের ভিত্তিতে এইচএসসিতে ভর্তি

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সারা দেশের সরকারি-বেসরকারি কলেজে ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তির নীতিমালা ঘোষণা করেছে। ঘোষিত নীতিমালা অনুযায়ী এ বছর কোন বাছাই বা ভর্তি পরীক্ষা না নিয়ে কেবলমাত্র শিক্ষার্থীর এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে ভর্তি করা হবে। এতে শিক্ষার্থীদের হয়রানি কমবে এবং ভর্তির ক্ষেত্রে বিরাজমান দুর্নীতি হ্রাস পাবে বলে মনে করে মন্ত্রনালয়। ভর্তির এ নিয়মে বিভাগীয় সদর ও জেলা সদরের কলেজগুলোতে শতকরা ৮৮ ভাগ আসন সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে এবং ১২ ভাগ আসন বিভাগীয় ও জেলা সদরের বাইরের শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। তাছাড়াও ঘোষিত নীতিমালায় যাই থাকনা কেন, নিজস্ব প্রতিষ্ঠান হতে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভর্তির সুযোগ পাবে। এইচএসসি প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু হবে আগামী ১২ জুলাই থেকে। খবর এনএনবির। গতকাল সোমবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঘোষিত ভর্তি সংক্রান্ত নীতিমালায় বলা হয়েছে, জিপিএ-৫ প্রাপ্ত প্রার্থীদের ক্ষেত্রে সকল বিষয়ের ওপর সর্বোচ্চ ৪৩ পয়েন্ট ধরে ক্রমান্বয়ে ৪০ পয়েন্ট প্রাপ্ত প্রার্থীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সুযোগ দিতে হবে। বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তির ক্ষেত্রে ৪০ পয়েন্টপ্রাপ্ত প্রার্থীদের মধ্যে সমান পয়েন্ট অর্জনের বিষয়টি নিষ্পত্তির লক্ষ্যে সাধারণ গণিত অথবা উচ্চতর গণিত/জীববিজ্ঞানে ০৫ পয়েন্টপ্রাপ্ত প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। এত করে সমস্যার সমাধান না হলে পর্যায়ক্রমে ইংরেজি, পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়ন বিজ্ঞানে অর্জিত পয়েন্ট বিবেচনায় আনতে হবে। তাতেও সমস্যার সমাধান না হলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঢাকার শিক্ষা বোর্ডের কম্পিউটার কেন্দ্রের সভাপতির কাছ থেকে সংশ্লিষ্ট ছাত্রছাত্রীদের পারস্পরিক মেধাক্রম সংগ্রহপূর্বক প্রার্থী বাছাই করা হবে। সমমেধাসম্পন্ন প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান/পোষ্যদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। ভর্তির ক্ষেত্রে আরো বলা হয়েছে, ২০০৭, ’০৮ ও ’০৯ সালে দেশের যে কোন শিক্ষা বোর্ড এবং বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনুষ্ঠিত এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তির যোগ্য হবে। বিজ্ঞান শাখার শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখায়, মানবিক শাখার শিক্ষার্থীরা মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখার যে কোন একটি এবং ব্যবসায় শিক্ষা শাখার শিক্ষার্থীরা ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক শাখা নির্বাচন করতে পারবেন। কলেজ কর্তৃপক্ষ ভর্তিচ্ছুক প্রার্থীদের কাছ থেকে আবেদনপত্র ফরমের মূল্য বাবদ ১০ টাকা এবং ভর্তি ব্যবস'াপনা ব্যয় নির্বাহের জন্য ৫০ টাকা অর্থাৎ সর্বমোট ৬০ টাকা রশিদ প্রদানসহ গ্রহণ করবে। এ ছাড়া ভর্তির সময় বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত অন্যান্য ফিসহ রেজিস্ট্রেশন ফি ৫০ টাকা, ক্রীড়া ফি ২৫ টাকা, রোভার স্কাউট/গার্লস গাইড ফি ১০ টাকা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফি ৭ টাকা, শাখা /বিষয় পরিবর্তন ফি ২৫ টাকা, পাঠ বিরতি ফি ১০০ টাকা, বিলম্ব ভর্তি ফি ৫০ টাকা গ্রহণ করা যাবে। কলেজসমূহ তাদের ভৌত অবকাঠামো ও শিক্ষক সংখ্যা অনুসারে স্ব স্ব কলেজের আসন সংখ্যা নির্ধারণ করে ভর্তি বিজ্ঞপ্তির আগেই শিক্ষা বোর্ডকে অবহিত করবে এবং বোর্ডগুলো স্ব স্ব অধিক্ষেত্রে অবসি'ত কলেজগুলো এ বিধানের ব্যত্যয় রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস'া গ্রহণ করবে। বোর্ড নির্ধারিত ফিসহ সব ফি, আসন সংখ্যা, ভর্তির যোগ্যতা ইত্যাদি উল্লেখপূর্বক কলেজ কর্তৃপক্ষ কলেজের নোটিশ বোর্ডসহ যথাযথ প্রচারের ব্যবস'া করবে। আবেদনপত্র প্রাপ্তির পর কোন কলেজ এ নীতিমালা অনুযায়ী আসন সংখ্যার সমানসংখ্যক ভর্তিযোগ্য প্রার্থীদের একটি মেধাক্রম তালিকা এবং মোট আসন সংখ্যার নূন্যতম ২৫ শতাংশ অপেক্ষমাণ মেধাক্রম প্রকাশ করবে। ভর্তির সময় প্রার্থীকে মূল একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট/নম্বরপত্র ও প্রতিষ্ঠান প্রধানের প্রশংসাপত্র দাখিল করতে হবে। ভর্তি সংক্রান্ত তথ্যে বলা হয়েছে, ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণীতে বিলম্ব ফি ছাড়া ভর্তি ও ব্যাংক ড্রাফট করার শেষ তারিখ ৭ জুলাই। ক্লাস শুরু হবে ১২ জুলাই। বিলম্ব ফি ছাড়া ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন ফি ও মূল একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট/মার্কশিট বোর্ডে জমা দেয়ার শেষ তারিখ ২০ জুলাই। বিলম্ব ফিসহ রেজিস্ট্রেশন ফি ও মূল একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট বোর্ডে জমা দেয়ার শেষ তারিখ ২৮ জুলাই। ব্যবহারিক ক্লাস শুরু করতে হবে ৩ আগস্ট। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান কর্তৃক শিক্ষার্থীর শাখা/বিষয় পরিবর্তনের ব্যাংক ড্রাফট করার শেষ তারিখ ১১ আগস্ট। শাখা/বিষয় পরিবর্তনকারী শিক্ষার্থীর ব্যাংক ড্রাফটসহ তালিকা বোর্ডে প্রেরণের শেষ তারিখ ১৭ আগস্ট ও পূরণকৃত এসআইএফ শিক্ষা বোর্ডে জমা দানের শেষ তারিখ ২৬ অক্টোবর।

শেষ মুহূর্তে জবানবন্দি দিতে লেয়াকতের অস্বীকৃতি ভেস্তে গেল সিআইডির উদ্যোগ ।। দশ ট্রাক অস্ত্র মামলা


ঢাকায় টিএফআই সেলে জিজ্ঞাসাবাদকালে ১৬৪ ধারায় আদালতিক জবানবন্দি দিতে রাজি হয়েছিলেন মেজর (অব.) লেয়াকত হোসেন। ৬ দিনের রিমান্ড শেষে টিএফআই সেল থেকে এ উপলক্ষে গত পরশু রোববার তাকে চট্টগ্রামে নিয়ে আসে সিআইডি। গতকাল সোমবার বেলা ১২টায় তাকে মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ ওসমান গণির আদালতে নেয়া হয়। নিয়ম অনুযায়ী বিচারক এনএসআই’র সাবেক এই উপ-পরিচালককে (টেকনিক্যাল) জবানবন্দি নেয়ার আগে তিন ঘণ্টা সময়ও দেন। দশ ট্রাক অস্ত্র মামলার আলোচিত এই আসামিকে মনসি'র করার জন্য দেয়া এই তিন ঘণ্টা সময়ের মধ্যেও জবানবন্দি দিতে রাজি লেয়াকত। সবকিছু ঠিকঠাক। বিকেল ৩টায় ওসমান গণির খাস কামরায় ঢুকলেন লেয়াকত। জবানবন্দি দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু। বিচারক ১৬৪-এ জবানবন্দি নেয়ার বিধিবদ্ধ ফরমে উদ্ধৃত প্রশ্নের আলোকে লেয়াকতকে বললেন, আপনার নাম লেয়াকত হোসেন। আপনি দশ ট্রাক অস্ত্র মামলার আসামি আপনাকে গত ২৬ মে গ্রেফতার করা হয়েছে। আপনাকে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। এসব কথার উত্তরে লেয়াকত হ্যাঁ সূচক উত্তর দেন। এর পরের প্রশ্নগুলো ছিলণ্ড আমি পুলিশ নই আমি বিচারক জানেন নাকি। লেয়াকতের উত্তর হ্যাঁ। এরপর বিধিবদ্ধ ফরমের আওতায় বিচারক লেয়াকতকে উদ্দেশ্য করে বলেন, রিমান্ডে আপনাকে নির্যাতন করা হয়েছে কিনা। করলে আমাকে স্পটগুলো দেখাতে পারেন। এ সময় লেয়াকত নির্যাতনের শিকার হন নি বলে বিচারককে জানান। এই পর্যন্ত সবকিছু ঠিকঠাক। উপরের প্রশ্নোত্তরগুলোয় ১৫ মিনিট সময়ও অতিবাহিত হয়। কিন্তু “আপনি ১৬৪ ধারায় নিজের দোষ স্বীকারমূলক জবানবন্দি দিবেন কিনা” বিচারকের এই প্রশ্নেই বেঁকে বসেন লেয়াকত। অথচ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে রাজি হওয়াতেই তাকে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে উপস্থাপন করে সিআইডি। আদালত সূত্র জানায়, বিধিবদ্ধ ফরমের ৬ নম্বর কলামের ৫ নম্বর অনুচ্ছেদ এর একটি প্রশ্নের জবানবন্দি দিতে অস্বীকার করেন লেয়াকত। এই ঘটনায় লেয়াকতকে নিয়ে সিআইডির প্রচেষ্টা প্রথম দফায় ভেস্তে গেল বলে মন্তব্য করেছেন আইন বিশেষজ্ঞরা। এদিকে মামলার অপর আসামি মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরীর জামিন আবেদন নাকচ করেছেন মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট ফজলুল বারী। গতকাল সোমবার তার আইনজীবীরা জামিনের আবেদন জানান। প্রসঙ্গত, রেজ্জাকুল হায়দারকেও ৬ দিনের রিমান্ডে ঢাকায় টিএফআই সেলে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গতকাল আদালতে উপস্থাপন করা হয়। এদিকে আদালত থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, লেয়াকত জবানবন্দি দিতে অস্বীকার করায় তাকে জবানবন্দি না নিয়ে ফেরত পাঠানো হয়। জবানবন্দি ফরমে যে প্রশ্নোত্তরগুলো লিপিবদ্ধ করা হয়েছে সেগুলো হুবহু রেকর্ডে সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে। সর্বশেষ লেয়াকতকে আদালত থেকে কারাগারে ফিরিয়ে নেয়া হয় বিকেল সাড়ে ৩টায়। এ ব্যাপারে তার আইনজীবী আবুল হাসান বলেন, তিনি ঘটনার ব্যাপারে কিছু জানেন না। তিনি অসুস্থ। এ কারণে জবানবন্দি দেন নি। এ ব্যাপারে তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান চৌধুরী, লেয়াকত রাজি ছিলেন বলেই এই পর্যন্ত আনা হয়েছে। জবানবন্দি না দেয়াটা সম্পূর্ণ তার ব্যাপার। প্রসঙ্গত, উল্লেখিত দুইজনকে গত পরশু রোববার টিএফআই সেলে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে চট্টগ্রামে আনা হয়। এর আগে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের (টিএফআই) জন্য ৬ দিনের রিমান্ডে নেয় সিআইডি পুলিশ।

মাঝিরঘাটে রাসায়নিক দ্রব্যের গুদামে অগ্নিকাণ্ড : ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ।। দুই ফায়ার সার্ভিস কর্মীসহ ১০ জন আহত


নগরীর মাঝিরঘাট এলাকায় গতকাল সোমবার সকালে রাসায়নিক দ্রব্যের গুদামে আগুনে প্রায় ১৫০ টন রাসায়নিক সামগ্রী পুড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রায় ৮ ঘণ্টা স্থায়ী এ অগ্নিকাণ্ডে রাসায়নিক পদার্থের পোড়া ধোঁয়া এবং গ্যাসে মাঝিরঘাট ও এর আশপাশের এলাকা ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। এসময় আগুন নেভাতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের দু জন কর্মীসহ কমপক্ষে ১০জন অসুস্থ হয়ে পড়ে। আহতদের মধ্যে চারজনের নাম পাওয়া গেছে। এরা হলেন- দেওয়ান গাজী, তোফাজ্জেল, চাঁন মিয়া এবং আবদুর রউফ। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়। ফায়ার সার্ভিস ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আগুনে কয়েক কোটি টাকার সোডিয়াম সালফেটসহ রাসায়নিক সামগ্রী ভস্মীভূত হয়। অগ্নিকাণ্ডে রাসায়নিক দ্রব্যের গুদামের পাশে রিপাবলিক সল্ট নামে একটি লবণ মিলও ভস্মীভূত হয়। তবে রাত ১০টা পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির চূড়ান্ত হিসাব ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ জানাতে পারে নি। আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিসের কর্মী শাহিদুর রহমান দৈনিক আজাদীকে জানান, মাঝিরঘাটের এভারগ্রিন এন্টারপ্রাইজের গুদাম সংলগ্ন শাহজালাল ট্রেডিংয়ের একটি গুদামে সকাল ৮টা ৪০ মিনিট নাগাদ আগুনের সূত্রপাত হয়। প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার কারণ নির্ধারণ করা যায় নি। এসব গুদামে সোডিয়াম সালফেট, কস্টিক সোডাসহ বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক দ্রব্য ছিল বলে জানান শাহিদ। তিনি জানান, ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিটের ১২টি গাড়ি ঘটনাস'লে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। তবে দুপুর ২টা নাগাদ বাইরের দিকের আগুন নিয়ন্ত্রণে আসলেও সন্ধ্যা পর্যন্ত ভেতরে আগুন জ্বলতে থাকে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, এসকল গুদামে মোস্তফা গ্রুপের শাহজালাল ট্রেডিং ও ইয়াসিন এন্টারপ্রাইজের কয়েক কোটি টাকার প্রায় ১৫০ টন সোডিয়াম সালফেট, কস্টিক সোডাসহ বিভিন্ন রাসায়নিক সামগ্রী ছিল। ইয়াসিন এন্টারপ্রাইজের কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আগুনে ১২ হাজার ব্যাগ সোডিয়াম সালফেট ও কস্টিক সোডা পুড়ে গেছে। এসব কেমিক্যালের দাম প্রায় ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা।

কর্ণফুলী কন্টেনার টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্প লালফিতায় বন্দী

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের কর্ণফুলী কন্টেনার টার্মিনাল (কেসিটি) নির্মাণের প্রকল্প যথারীতি লালফিতার কবলে পড়েছে। বিদ্যমান তিনটি জেটিকে ভেঙে প্রায় সাড়ে আটশ’কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন করে একটি কন্টেনার টার্মিনাল নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হলেও কার্যত কিছু হয় নি। বছরে সাড়ে তিন লাখ টিইইউএস কন্টেনার হ্যান্ডলিং করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে এই টার্মিনালটি নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। লালফিতার কবলে পড়ায় কবে নাগাদ প্রকল্পটি আলোর মুখ দেখবে তা নিয়ে সংশয় ব্যক্ত করা হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেনার হ্যান্ডলিং এর পরিমাণ প্রতিদিনই বাড়ছে। গত বছর চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি রপ্তানি পণ্য বোঝাই ১০ লাখ ২৭ হাজার ৭৪৫ টিইইউএস কন্টেনার হ্যান্ডলিং করা হয়। আগামী ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরে এই সংখ্যা বিশ লাখ টিইইউএস ছেড়ে যাবে। প্রতিবেশি দেশকে ট্রানজিট দেয়ার যে প্রস্তাবনা রয়েছে তা কার্যকর হলে কন্টেনার হ্যান্ডলিং এর পরিমাণ আরো অনেক বেশি বৃদ্ধি পাবে। বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে দুইটি বিশেষায়িত কন্টেনার টার্মিনাল রয়েছে। এরমধ্যে চিটাগাং কন্টেনার টার্মিনালে (সিসিটি) ৪৫০ মিটার দীর্ঘ জেটিসহ পশ্চাদসুবিধা রয়েছে। সিসিটিতে একই সাথে তিনটি কন্টেনার জাহাজ বার্থিং দেয়া যায়। এই টার্মিনালে বছরে তিন লাখ টিইইউএস কন্টেনার হ্যান্ডলিং করা যায়। অপরদিকে ১০০০ মিটার দীর্ঘ জেটিসহ পশ্চাদসুবিধার নিউমুরিং কন্টেনার টার্মিনালও বন্দরের কন্টেনার হ্যান্ডলিং এর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এই টার্মিনালে একই সাথে পাঁচটি জাহাজ বার্থিং দেয়ার সুবিধা রয়েছে। এই টার্মিনালে বছরে ৫ লাখ টিইইউএস কন্টেনার হ্যান্ডলিং এর সুবিধা রয়েছে। দুইটি বিশেষায়িত কন্টেনার টার্মিনালে ৮ লাখ টিইইউএস কন্টেনার হ্যান্ডলিং এর পাশাপাশি বন্দরের কয়েকটি সাধারণ জেটিতেও কন্টেনার হ্যান্ডলিং করা হয়। কন্টেনার হ্যান্ডলিং এর জন্য বিশেষায়িত জেটিগুলোতে হ্যান্ডলিং চালানোর পাশাপাশি বাড়তি চাপ সামাল দিতে বন্দর কর্তৃপক্ষ সাধারণ জাহাজ ভিড়ানোর উপযোগী করে নির্মিত ১১, ১২ এবং ১৩ নম্বর জেটিতেও কন্টেনার হ্যান্ডলিং করে আসছে গত কয়েক বছর ধরে। তবে ১৯৫৪ সালে নির্মিত জেটিগুলোতে কন্টেনার হ্যান্ডলিং এর বিল্ডইন সুবিধা না থাকায় বন্দর কর্তৃপক্ষকে নানা ধরনের সমস্যা মোকাবেলা করতে হয়। বিশেষ করে দীর্ঘ ৫৫ বছরের পুরানো জেটিগুলোর অবস'াও অনেকটা নাজুক। এই অবস'ায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ১১, ১২ এবং ১৩ নম্বর জেটি ভেঙে কর্ণফুলী কন্টেনার টার্মিনাল (কেসিটি) নামের অত্যাধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত একটি কন্টেনার টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করে। এই টার্মিনালে ৬০০ মিটার দীর্ঘ জেটিতে একই সাথে তিনটি মাদার ভ্যাসেলের বার্থিং সুবিধা থাকবে। ৪৫ একর পশ্চাদসুবিধা সম্বলিত এই কন্টেনার টার্মিনালে বছরে সাড়ে তিন লাখ টিইইউএস কন্টেনার হ্যান্ডলিং করা যাবে। প্রকল্পটির সর্বমোট ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৮২০ কোটি টাকা। কনসালটেন্ট নিয়োগ থেকে শুরু করে প্রকল্পটির কাজ শেষ করতে তিন বছর সময় লাগবে। ইতোমধ্যে প্রকল্প সারপত্র তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের জন্য জমা দেয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ নিজস্ব অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। উল্লেখ্য, বন্দর কর্তৃপক্ষের তহবিলে প্রায় ২৭শ’ কোটি টাকা জমা রয়েছে। প্রকল্পটির ডিপিপি (ড্রাফট প্রজেক্ট প্রোফাইল) মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়া হয়েছে। কিন্তু দীর্ঘদিনেও মন্ত্রণালয়ের কোন সাড়া মিলেনি। বন্দর কর্তৃপক্ষের নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়ানাধীন প্রকল্পটির ব্যাপারে কবে নাগাদ অনুমোদন মিলবে তাও বলতে পারছে না কেউ। লালফিতার কবলে পড়া প্রকল্পটির ব্যয় প্রতিদিনই বাড়বে। ৮২০ কোটি টাকা ব্যয় নির্ধারণ করে যে প্রকল্প তৈরি করা হয়েছে আগামী এক বছর পরে সেই প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে কমপক্ষে এক হাজার কোটি টাকা লাগবে। তখন প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য আবারো মন্ত্রণালয়ের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে। কেসিটি প্রকল্পের ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ের উদাসীনতায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বন্দর ব্যবহারকারীদের অনেকেই। তারা বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর নিজস্ব টাকা খরচ করে উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করলেও এখন পর্যন্ত একটি প্রকল্পও লালফিতার দৌরাত্ম্যমুক্ত হয়ে বাস্তবায়িত হয়নি। নিউমুরিং কন্টেনার টার্মিনাল বাস্তবায়নেও বছরের পর বছর ঘুরতে হয়। ক্যাপিটাল ড্রেজিং প্রকল্পও ঝুলে আছে। এখন কেসিটিও ঝুলে গেল।

সংসদে দুটি বিল উত্থাপন, বিএনপি গতকালও যায়নি

জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনের তৃতীয় কার্যদিবসের অধিবেশন শুরু হয়েছে গতকাল সোমবার বিকেল সোয়া ৪টায়। আগের দুই কার্যদিবসের মতো এ দিবসের অধিবেশনেও অংশ নেয়নি প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। স্পিকার আব্দুল হামিদ অধিবেশনে সভাপতিত্ব করছেন। কার্যপ্রণালী বিধি অনুযায়ী প্রথমে প্রশ্নোত্তর পর্ব শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা অধিবেশনে উপসি'ত রয়েছেন। দিনের কার্যসূচিতে আইন সংক্রান্ত দুটি বিল উত্থাপনের কথা রয়েছে। সংসদের কার্যপ্রণালী বিধি সংশোধনের প্রস্তাবও অধিবেশনে উত্থাপন করা হবে। খবর বিডিনিউজের।বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ জয়নাল আবদিন ফারুক রোববার বলেন, “আমরা অধিবেশনে যোগ দেবো কি না তা নিয়ে আগামী সপ্তাহে সংসদীয় দলের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সামনের সারিতে বিএনপির আসন সংখ্যা বর্তমান পরিসি'তিতে আর বাড়ানো সম্ভব নয় বলে এরই মধ্যে স্পিকার আব্দুল হামিদ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন। স্পিকারের চেয়ারের বাঁ পাশে সামনের সারির নয়টি আসনের মধ্যে পাঁচটি বর্তমানের বিএনপির জন্য বরাদ্দ রয়েছে। বিএনপি সামনের সারিতে সাতটি আসন দাবি করলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এর বিরোধিতা করছে। সরকারি দলের ভাষ্য, আসনসংখ্যার অনুপাতে তাদের নায্য আসনই দিয়েছেন স্পিকার।

সারাদেশে আদালত প্রাঙ্গণ ও বিচারকদের নিরাপত্তা জোরদার

জঙ্গি এবং সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হামলার আশঙ্কায় সারা দেশে আদালত অঙ্গনে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। গত রোববার আইন মন্ত্রণালয়ের সুপারিশ পাওয়ার পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ দেয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা গতকাল সোমবার বলেন, “আইন মন্ত্রণালয়ের সুপারিশ পাওয়ার পর আদালত প্রাঙ্গণ এবং বিচারকদের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জেলা পর্যায়ে পাঠানো হচ্ছে।”এদিকে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, সারাদেশে সব সরকারি স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

ওয়াজেদ মিয়ার নামে রংপুরে ৪০ গরুর মেজবান দিচ্ছেন মেয়র

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী ড. ওয়াজেদ মিয়ার নামে ৪০ গরুর মেজবান আয়োজন করেছেন নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিটি মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী। আগামী ১৫ জুন প্রয়াত ওয়াজেদ মিয়ার গ্রামের বাড়ি রংপুরের পীরগঞ্জে উক্ত মেজবান অনুষ্ঠিত হবে। উক্ত মেজবানের প্রস্তুতি নিতে আগামী ১২জুন চট্টগ্রাম থেকে একটি প্রতিনিধিদল রংপুর যাবেন। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, গত ১০ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী বিশিষ্ট পরমানু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়া মারা যাওয়ার পর নগর আওয়ামী লীগ সভাপতি এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী রংপুরের পীরগঞ্জে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবান আয়োজনের আগ্রহ প্রকাশ করেন। এতে নগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা ও সিটি কর্পোরেশনের বেশ কয়েকজন কাউন্সিলর একমত পোষণ করায় সিটি মেয়র উক্ত মেজবান আয়োজনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এই বিষয়ে শুলকবহর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আহমেদুর রহমান সিদ্দিকী বাবু বলেন, নগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে রংপুরে মেজবানের আয়োজন করা হবে। চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবান রান্না করতে চট্টগ্রাম থেকে নেয়া হবে কিনা উক্ত প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাবুর্চি চট্টগ্রাম থেকে নেয়া হবে কিনা সে সিদ্ধান্ত এখনও নেয়া হয়নি।

গাড়ি নিয়ে জাহাজ বন্দরে ভিড়ার আগেই শুল্কায়নের প্রস্তুতি ।। জাহাজটি পৌঁছার সম্ভাবনা বাজেট ঘোষণার পর কিন্তু বর্তমান শুল্ক সুবিধা নেওয়ার তোড়জোড়

প্রায় দুইশ’ কোটি টাকা দামের গাড়ি বোঝাই একটি জাহাজ বন্দরে নোঙর করার আগেই শুল্কায়ন সম্পন্ন করার প্রস্তুতি চূড়ান্ত করা হয়েছে। গাড়িবাহী এম ভি লিলাক এইচ নামের এই জাহাজটি আজ বন্দরে ভিড়ার ঘোষণা দেয়া হলেও এটি আজ আসছে না। জানা গেছে, বাজেট ঘোষণার আগে গাড়িবাহী জাহাজটি বন্দরে ভিড়বে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। কিন' বন্দরে ভিড়ার আগেই বর্তমান শুল্ক হারে গাড়ির নোটিং সম্পন্ন করানোর জন্য তোড়জোড় চলছে।
আগামী ১১ জুন ২০০৯-২০১০ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করার কথা রয়েছে। এবারকার বাজেটে গাড়িসহ বিলাসদ্রব্যের উপর শুল্ক বৃদ্ধির খবরও ইতোমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। এই খবরের প্রেক্ষিতে বাজারে গাড়ি আমদানি অতীতের যে কোন সময়ের তুলনায় বহু বৃদ্ধি পেয়েছে। বেড়েছে গাড়ি বিক্রিও। বাজেট ঘোষণার পর গাড়ির শুল্ক বৃদ্ধি পাবে এই শংকা থেকে গাড়ি আমদানিকারকরা কোটি কোটি টাকার গাড়ি আমদানি করে রাখছেন। বাজেটে শুল্ক বৃদ্ধির ফলে বাজারে গাড়ির দাম বাড়বে। এবং বাজেট পরবর্তী সময়ে বর্ধিত দামে গাড়ি বিক্রি হবে। বর্ধিত দামে গাড়ি বিক্রি করে বাড়তি লাভ করার মানসে আমদানিকারকরা যে যার সামর্থ্য অনুযায়ী জাপান থেকে রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানি করেছেন। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরে গাড়ি রাখার স্থানাভাব দেখা দিয়েছে। মংলা বন্দর দিয়েও খালাস করা হচ্ছে গাড়ি।
সূত্র জানায়, বাজেট ঘোষণার আগে সর্বশেষ একটি গাড়ির চালান দেশে আনার লক্ষ্য নিয়ে ২২০৩টি গাড়ির এলসি খোলা হয়। এসব গাড়ি এম ভি লিলাক এইচ নামের রো রো জাহাজে বোঝাই করা হয়। জাপান থেকে গত ২৯ মে এম ভি লিলাক এইচ জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্দেশে যাত্রা করে। জাহাজটি আগামী ১২ জুন বাজেট ঘোষণার পরদিন চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাজেট ঘোষণার পরদিন এই গাড়িবাহী জাহাজ বন্দরে আসলে আমদানিকারকরা যে সুবিধা লাভের জন্য এত চেষ্টা করছেন তা পাওয়া যাবে না। এতে করে বাজেট ঘোষণার আগেই চলতি শুল্ক সুবিধায় গাড়ি শুল্কায়ন করার জন্য তারা মরিয়া হয়ে উঠেছেন। জাহাজটি বন্দরে ভিড়ার আগেই ২২০৩টি গাড়ির নোটিং সম্পন্ন করার জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।উল্লেখ্য, ইতোপূর্বে বন্দরে জাহাজ ভিড়ার আগেই আমদানিকৃত রডের শুল্কায়ন করে চারদিকে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছিল চট্টগ্রাম কাস্টমস। চট্টগ্রামের গুটিকয়েক আমদানিকারককে শুল্ক সুবিধা দিতে গিয়ে জাহাজ ভিড়ার আগেই রডের শুল্কায়ন করে যে কেলেংকারির জন্ম দেয়া হয়েছিল তার সুরাহা আজো হয় নি। এই অবস্থায় নতুন করে গাড়ি কেলেংকারি জন্ম দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।এম ভি লিলাক এইচ নামের জাহাজটি আজ বন্দরে ভিড়বে বলে ঘোষণা দেয়া হয়েছিল। কিন' গতকাল এই ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে যে জাহাজটি সিংগাপুরে রয়েছে। জাহাজটি ১২ তারিখ নাগাদ চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছতে পারে বলে সূত্র জানিয়েছে। দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞ একজন জাহাজের ক্যাপ্টেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, জাপান থেকে একটি জাহাজ বাংলাদেশে পৌঁছতে কমপক্ষে ১৫ দিন সময় লাগে। এর মধ্যে সিংগাপুরে কার্গো থাকলে কিংবা জ্বালানি তেল সংগ্রহ করতে হলে এই সময় আরো বেশি লাগবে। তবে বাংলাদেশে গাড়ি নিয়ে বর্তমানে যে সব রো রো জাহাজ চলাচল করে সেগুলোর পক্ষে কোন অবস্থাতেই ১৫ দিনের আগে জাপান থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছা সম্ভব নয়। এম ভি লিলাক এইচ জাহাজটি ২৯ মে জাপান থেকে যাত্রা করেছে। স্বাভাবিকভাবে আসলে এটির চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছার কথা ১২ জুন। সিংগাপুর থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছতে একটি জাহাজের পাঁচ দিন সময় লাগে। গত সন্ধ্যায়ও এমভি লিলাক এইচ জাহাজটি সিংগাপুরে অবস্থান করছিল বলে সূত্র জানিয়েছে। এই ব্যাপারে গতকাল জাহাজটির স্থানীয় এজেন্টের সাথে যোগাযোগ করা হলে বলা হয় ১০ জুন জাহাজটি চট্টগ্রামে পৌঁছবে।
জাহাজটি ১০ জুন বন্দরে পৌঁছলেও এটি চলতি শুল্কহারে শুল্কায়ন সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছে একাধিক সিএন্ডএফ এজেন্ট। ১০ তারিখ জাহাজটি পৌঁছতে পৌঁছতে কাস্টমসে নোটিং-এর সময় পার হয়ে যাবে। স্বাভাবিকভাবে সকাল নয়টা থেকে বিকেল তিনটা পর্যন্ত নোটিং চলে। এছাড়া ১০ তারিখ জাহাজটি ভিড়ার পর ১১ জুনের আগে আইজিএম দাখিল করা সম্ভব হবে না। আর বাজেট ঘোষণার কারণে ১১ জুন কাস্টমসের কম্পিউটার লক থাকবে। এই অবস্থায় ১২ জুন নতুন শুল্ক হারেই ২২০৩টি গাড়ি শুল্কায়ন করতে হবে। এই ব্যাপারে চট্টগ্রাম কাস্টমসের সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, জাহাজ ভিড়ার আগে পণ্যের শুল্কায়ন সম্পন্ন করার সুযোগ আর নেই। আগে অন লাইনে আইজিএম দাখিল করার সুযোগ নিয়ে কেউ কেউ ঘাপলা করেছেন। এখন এই ব্যাপারে কাস্টমস অনেক বেশি সতর্ক। তিনি জাহাজটি কবে আসছে বা কেউ কোন কেলেংকারি করতে চাচ্ছেন কিনা সেই ব্যাপারে কিছু জানেন না বলে জানান। নাম প্রকাশ না করার শর্তে উক্ত কর্মকর্তা বলেন, ফাইন্যাল এন্ট্রির আগে কোন নোটিং হবে না।

২০ জুন থেকে নামাজের সময়সূচিতে পরিবর্তন আনা হবে - তৌফিক-ই-এলাহী

প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী বলেছেন, ঘড়ির কাঁটা এক ঘন্টা এগিয়ে আসার কারণে আগামী ২০ জুন থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের সময় সমন্বয় করবে আবহাওয়া অফিস।গতকাল রোববার সচিবালয়ে ডে-লাইট সেভিংস পদ্ধতি নিয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।তৌফিক-ই-এলাহী বলেন, নামাজের সময়সূচিতেও পরিবর্তন আনা হচ্ছে। আগামী ২০ জুন থেকে নামাজের সময়সূচি এক ঘন্টা করে এগিয়ে আনা হবে। ডে-লাইট সেভিং পদ্ধতি চালু হওয়ার পরে নামাজের সময়সূচি নিয়ে যাতে কোনো সমস্যা না হয়, সে জন্য জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। খবর এনএনবির।
তিনি আরো জানান, বৈঠকে ২০ জুন থেকে সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্তের সময়সূচি জানিয়ে দিতে বলা হয়েছে আবহাওয়া অফিসকে। এছাড়া গ্রিনিচমান সময় অনুসরণ করে এয়ারলাইন্সগুলো চলবে। সে কারণে উড়োজাহাজের সময় নিয়ে জটিলতা হবে না বলে জানিয়েছেন তিনি। পরে দুপুরে এ বিষয়ে গণমাধ্যমের সম্পাদকদের সঙ্গেও বৈঠক করেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা। বৈঠকে গণমাধ্যমে ডে-লাইট সেভিং পদ্ধতির ব্যাপক প্রচারণার মাধ্যমে জনগণকে সচেতনতার আহ্বান জানানো হয়।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দু’দেশের সম্পর্ক শীতল করতে পারে : পাকিস্তান

একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বিচার করতে বাংলাদেশ সক্রিয় হয়ে ওঠার প্রেক্ষাপটে পাকিস্তান সতর্ক করে বলেছে, এ প্রক্রিয়া ঢাকা-ইসলামাবাদ সম্পর্ক শীতল করতে পারে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ পর্যায়ের এক কর্মকর্তা বলেন, যুদ্ধাপরাধীর বিচারের বিষয়ে বাংলাদেশের এমন কিছু করা উচিত নয়, যাতে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক শীতল হয়ে পড়ে। গত শনিবার ইসলামাবাদে সফররত বাংলাদেশের সাংবাদিক প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় পাকিস্তানের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল বিষয়ক অতিরিক্ত সচিব মাসুদ খালিদ এ কথা বলেন। খবর বিডিনিউজের।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে বাংলাদেশ সাম্প্রতিক সময়ে যে উদ্যোগ নিয়েছে, সে বিষয়ে পাকিস্তানের মতামত জানতে চাইলে খালিদ বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া দুই দেশের সম্পর্কে প্রভাব ফেলবে। আমরা আশা করছি, আমাদের সম্পর্ক শীতল করে দেওয়ার মতো কিছু করা হবে না। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করার বিষয়টিকে ‘বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ’ বিষয় বলেও উল্লেখ করেন তিনি। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে সংঘটিত নৃশংস ঘটনাকে খালিদ ‘দুখজনক অধ্যায়’ বলে মন্তব্য করেন। দুই দেশের বাণিজ্য বিষয়ে খালিদ বলেন, বাণিজ্য সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রাথমিক দুটি অন্তরায় হলো দুই দেশের মধ্যে সরাসরি জাহাজ চলাচল না থাকা এবং ব্যাংকিং চ্যানেলের জটিলতা। এক্ষেত্রে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি এবং প্রযুক্তিগত সহযোগিতা ও সহায়তার ওপর জোর দেন তিনি।আঞ্চলিক নিরাপত্তার বিষয়ে খালিদ বলেন, সামনে এগোতে হলে পাকিস্তানের জন্য শান্তি বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, ভৌগোলিক দিক থেকে পাকিস্তান দক্ষিণ এশিয়া, মধ্য এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের কেন্দ্রে পড়ে। এর ফলে দেশটি একদিকে যেমন চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে, তেমনি বিভিন্ন সুবিধার মধ্যেও রয়েছে।এ অঞ্চল এখন ক্ষমতার ব্যবহারের জন্য উত্তপ্ত এলাকা বলেও মন্তব্য করেন তিনি।খালেদ আরও বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি ও সি'তিশীলতা পাকিস্তানের জন্য কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে তিনি বলেন, পারস্পরিক সমতার ভিত্তিতে সামনে এগোনোর চেষ্টা করছি আমরা। গত এক বছরে প্রতিবেশী আফগানিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের বেশ উন্নতি হয়েছে জানিয়ে পাকিস্তানি এ কর্মকর্র্তা বলেন, অবকাঠামো বিষয়ক বিনিয়োগের জন্য আমরা একটি চুক্তি করেছি।
খালিদ বলেন, পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদ প্রসারের কারণ আফগান যুদ্ধ। আল কায়দা, তালেবানসহ এ ধরনের সংগঠনগুলোর বিপজ্জনকহারে উত্থান পাকিস্তানের জন্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সোয়াতে সামরিক অভিযানের বিষয়ে পশ্চিমা গণমাধ্যম পক্ষপাতমূলক সংবাদ পরিবেশন করেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। সন্ত্রাস দমনে আঞ্চলিক সহযোগিতার বিষয়ে খালিদ বলেন, ২০০৫ সালে প্রস্তাবিত দ্বিপাক্ষিক সমঝোতা চুক্তির বিষয়ে পাকিস্তান বাংলাদেশের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছে।

নগরীর পাহাড়ে এখনো ঝুঁকিপূর্ণভাবে বাস করছে ৩০ হাজার পরিবার ।। ৫ হাজার পরিবার সরিয়ে নিতে রেলওয়েকে পরিবেশ অধিদপ্তরের চিঠি

চট্টগ্রাম মহানগরীর ন্যাড়া পাহাড়গুলোতে এখনও অবৈধভাবে বসবাস করে ত্রিশ হাজার পরিবার। ২০০৬ সালের ১১ জুন পাহাড় ধসে ১২৬ ব্যক্তি নিহত হওয়ার পরও ঝুঁকিপূর্ণ স্থান থেকে পরিবারগুলোকে সরানো সম্ভব হয়নি। নগরীর উত্তর খুলশী ফয়’স লেক সংলগ্ন রেলওয়ে পাহাড় থেকে ৫ হাজার পরিবারকে সরিয়ে নিতে তিন সপ্তাহ আগে রেলওয়েকে চিঠি প্রদান করেছে চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তর। অথচ এখনো পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগই নেয়া হয়নি। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল জি এম নুর মোহাম্মদ বলেছেন, ২০০৬ সালে গঠিত ‘শক্তিশালী পাহাড় শাসন কমিটি’ প্রদত্ত সুপারিশ অনুযায়ী পাহাড়ে অবৈধ বসবাসকারীদের উচ্ছেদ করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। ঝুঁকিপূর্ণ বসতি সরানোর পাশাপাশি পাহাড় রক্ষায় গত দেড় বছর আগে করা ৩৩টি সুপারিশের একটিও বাস্তবায়িত হয়নি। এদিকে চট্টগ্রামের পাহাড় রক্ষায় গত দুইমাস ধরে চট্টগ্রাম মহানগরীর পাহাড় নিয়ে সমীক্ষা শুরু করেছে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের অর্থায়নে উক্ত সমীক্ষা আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সমাপ্ত হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম মহানগরীর অধিকাংশ পাহাড়ের মালিক বাংলাদেশ রেলওয়ে, চট্টগ্রাম ওয়াসা ও বন বিভাগ। রেলওয়ের মালিকানাধীন উত্তর খুলশী এলাকার পাহাড় এবং চট্টগ্রাম ওয়াসার মালিকানাধীন মতিঝর্ণা ট্যাঙ্কির পাহাড়ে ১০ হাজারের অধিক পরিবার চরম ঝুঁকির মধ্যে বসবাস করে। এছাড়াও ক্যান্টনমেন্ট সংলগ্ন লেবু বাগান, কাচিয়া ঘোনা ও ডেবার পাড় এলাকার কুসুমবাগ এলাকায় দশ হাজারেরও বেশি লোক বসবাস করে। প্রতিবছর বর্ষাকালে পাহাড় ধসে শত শত লোক নিহত হওয়ার পরও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের উচ্ছেদের ব্যাপারে কার্যকর কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। এখন থেকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা না হলে চলতি বর্ষা মৌসুমেও অতিবৃষ্টিতে পাহাড় ধসে সাধারণ মানুষের মৃত্যুর আশংকা করছেন বিশেষজ্ঞরা। এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তর পরিচালক আবদুস সোবহান বলেন, পুরোদমে বর্ষা শুরু হওয়ার আগেই পাহাড়গুলো ঝুঁকিমুক্ত করা জরুরি। এ বিষয়ে আমরা ইতোমধ্যেই রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানিয়েছি। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই ওয়াসাসহ অন্যান্য পাহাড়মালিকদের লিখিতভাবে জানানো হবে। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল জেনারেল ম্যানেজার বলেছেন, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের সমন্বয়ে গঠিত কমিটির নির্দেশ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এদিকে উক্ত কমিটির অন্যতম সদস্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, শক্তিশালী পাহাড় শাসন কমিটি পাহাড় থেকে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের উচ্ছেদ করতে এক বছর পূর্বে ৩৩টি সুপারিশ সম্বলিত প্রতিবেদন সিটি কর্পোরেশন ও সিডিএ কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্টদের নিকট প্রদান করে। এইসব সুপারিশমালার অন্যতম হচ্ছে, প্রত্যেকটি পাহাড়ের জিওলজিক্যাল ও জিও মর্ফোলজিক্যাল সার্ভে করে পাহাড়ের অবস্থান সম্পর্কে অবহিত হওয়া। দ্বিতীয়ত, সিডিএ ও সিটি কর্পোরেশন পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের উচ্ছেদের বিষয়টি তদারকি করার পাশাপাশি এ বিষয়ে নিবিড় পর্যবেক্ষণ করা, ন্যাড়া পাহাড়ে বনায়ন, সরকারি ও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মালিকানাধীন পাহাড় থেকে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের সরিয়ে সেখানে উপযুক্ত বনায়ন করা। ব্যক্তিমালিকানাধীন ও সরকারি পাহাড় কেটে স্থাপনা নির্মাণকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ ইত্যাদি। তিনি বলেন, কমিটি প্রদত্ত সুপারিশ যথাযথ বাস্তবায়িত হলে মহানগরীর পাহাড় ঝুঁকিমুক্ত হবে।
এদিকে চট্টগ্রাম মহানগরীর পাহাড়ের গঠন ও এর অবস্থান নির্ণয় করতে গত দুইমাস থেকে ‘ল্যান্ড াইড রিকস এসিসমেন্ট অব চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সিটি’ শীর্ষক সার্ভে শুরু করেছে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের অর্থায়নে উক্ত সার্ভে কমিটির প্রধান হচ্ছেন, চুয়েট পরিচালিত ভূমিকম্প প্রকৌশল ও গবেষণা কেন্দ্রের সমন্বয়ক ড. জাহাঙ্গীর আলম। কমিটির অন্য দুই সদস্য হচ্ছেন চুয়েট পুরকৌশল বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সোলতান মোহাম্মদ ফারুক ও প্রভাষক দিপুল চন্দ্র মন্ডল। কমিটি আগামী ডিসেম্বরে সমীক্ষা প্রতিবেদন প্রদান করবে।

হৃদয় হত্যা ঘটনা দোষ স্বীকার করে আদালতে শুভ ও ফরহাদের জবানবন্দী

কিশোর হৃদয় হত্যার লোমহর্ষক ঘটনায় ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে আদালতিক জবানবন্দী দিয়েছে অপর দুই কিশোর ফরহাদ ও শুভ। হত্যাকাণ্ডের মূল নায়ক কিশোর পারভেজের জবানবন্দী নেয়া হয় নি। গতকাল সোমবার ম্যাজিস্ট্রেট ওসমান গণির সামনে দুইজন নিজেদের দোষ স্বীকার করে এই জবানবন্দী দেয়। সকাল ১০ টায় তাদেরকে আদালতে নেয়া হলেও জবানবন্দী শেষ হয় বিকেল ৪টায়। জবানবন্দী শুরুর আগে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ম অনুযায়ী দুইজনকে তিনঘণ্টা চিন্তা করার সুযোগ দেন। আদালত থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, শুভ চার পৃষ্ঠার এবং ফরহাদ তিন পৃষ্ঠার জবানবন্দী দিয়েছে। মোস্তফা হাকিম উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র হৃদয়কে সুপরিকল্পিতভাবে হত্যার ব্যাপারে স্বীকারোক্তিতে দুই সহপাঠী ফরহাদ ও শুভ বলেছেন, হত্যার আগে ফরহাদ, পারভেজ ও শুভ ঘটনাটি ঘটানোর নিখুঁত পরিকল্পনা আঁটে। হৃদয়কে হত্যার পর লাশ পানিতে ভাসিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্তদাতা পারভেজ। তাদের ধারণা পানিতে লাশ ভেসে গেলে কোন দিন এই ঘটনা প্রকাশ হবে না। আর তারাও হত্যার দায় থেকে মুক্ত হয়ে যাবে। হত্যাকাণ্ডের আগে নেয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এই ঘটনা তিনজনের কারো মুখ থেকে কোনভাবেই প্রকাশ না করার ব্যাপারে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয় তিনজন। এই কারণে গত ৯ মে লোমহর্ষক এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হলেও এর ২৬ দিন পর্যন্ত এ ঘটনা চেপে রাখতে সক্ষম হয় তারা। অথচ গত ১০ মে ঘটনার একদিন পরই কাট্টলীস' সমুদ্রের পাড় এলাকা থেকে হৃদয়ের লাশ উদ্ধার হয়। এই ঘটনায় নিহতের পরিবার ওই সময় মামলাও দায়ের করে। এদিকে মূল অভিযুক্ত পারভেজকে ১৬৪ ধারার জবানবন্দীর বাইরে রাখার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পাহাড়তলী থানার এসআই বিপ্লব কুমার নাথ বলেন, ঘটনার নায়ক হিসেবে পারভেজ অতিমাত্রায় ধূর্ত। তা ছাড়া ফরহাদ ও শুভ এর জবানবন্দীই যথেষ্ট। প্রসঙ্গত গত শুক্রবার হৃদয় হত্যার নায়ক তারই সহপাঠী পারভেজ, ফরহাদ ও শুভর কথা প্রকাশ হলে চাঞ্চল্য ছড়ায় সর্বত্র।

অস্ত্রের চালান ধরিয়ে দিতে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন শাহাবুদ্দীন : সিআইডি ।। আজ জবানবন্দী দেবেন লিয়াকত হোসেন


আলোচিত দশ ট্রাক অস্ত্র মামলায় ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আজ আদালতিক জবানবন্দী দেবেন এনএসআই এর সাবেক উপ-পরিচালক মেজর (অব.) লিয়াকত হোসেন। আজ সোমবার বিকেলে তাকে আদালতে হাজির করা হবে বলে জানা গেছে। একই সাথে মামলার আরেক আলোচিত আসামী এনএসআই এর সাবেক ডিজি মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরীকেও আদালতে তোলা হবে। তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত রেজ্জাকুল হায়দারকে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দানে সিআইডি রাজি করাতে পারেনি বলে জানা গেছে।সিআইডি জানায় ৬ দিনের রিমান্ডে ঢাকায় টিএফআই সেলে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে উল্লেখিত দুই কর্মকর্তাকে গতকাল রোববার সন্ধ্যা ৬টায় দামপাড়াস' সিআইডি কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়।এদিকে টিএফআই সেলে গোয়েন্দা বিশেষজ্ঞদের জিজ্ঞাসাবাদে রেজ্জাকুল অস্ত্র চোরাচালানের ঘটনা সম্পর্কে তেমন কোন তথ্য না দিলেও লিয়াকত হোসেন দুষেছেন তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিশেষ করে আবদুর রহিম ও এনএসআইএর পরিচালক (নিরাপত্তা) মোহাম্মদ শাহাবুদ্দীন আহাম্মদের ওপর দোষ চাপিয়েছেন তিনি।সিআইডির নির্ভরযোগ্য সূত্রের তথ্য অনুযায়ী অস্ত্রের চালান ধরিয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা এই শাহাবুদ্দীন আহাম্মদের। রহিমের কারণে এই ঘটনা ঘটায় শাহাবুদ্দীন।জানা গেছে দুবাইভিত্তিক পাকিস্তান প্রবাসীদের একটি গ্রুপ (এআরওয়াই) আবদুর রহিমকে মোবাইল মনিটরিং সিস্টেম নামে একটি ডিভাইস দিয়েছিলেন। ব্রিফকেইস সাইজের এই যন্ত্রটির দাম আড়াই কোটি টাকা। এআরওয়াই গ্রুপ (আগা রহমান ইউসুফ) এটি বিনামূল্যে সরবরাহ করলেও আবদুর রহিম এটার জন্য এনএসআই এর কাছ থেকে আড়াই কোটি টাকা বরাদ্দ নেয়। পরবর্তীতে এই টাকা তিনি নিজেই সরিয়ে নেন বলে জানা যায়।এই ঘটনায় নিজের অংশ না পাওয়াতে ক্ষুব্ধ শাহাবুদ্দীন অস্ত্র ধরিয়ে দিতে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছেন বলে তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। প্রসঙ্গতঃ গত ২ জুন ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় দ্বিতীয় দফায় দুই কর্মকর্তা রেজ্জাকুল ও লিয়াকতকে ৬ দিনের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়। ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল গভীর রাতে আনোয়ারার সিইউএফএল ঘাট থেকে দশ ট্রাক অস্ত্রের বিশাল চালান আটক করে কর্ণফুলী থানা পুলিশ।

ভিটামিন এ ক্যাপসুল খেয়ে শত শত শিশু অসুস্থ : রাজবাড়িতে ১ জনের মৃত্যু ।। আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ সরকারের

শনিবার সারাদেশে শিশুদের ভিটামিন এ ক্যাপসুল ও কৃমিনাশক ট্যাবলেট খাওয়ানোর পর বিভিন্ন জেলায় বহু শিশু অসুস' হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন সংবাদ সংস্থার খবরে অসুস্থ শিশুর সংখ্যা শত শত বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে রাজবাড়িতে এক শিশুর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। শিশুদের অসুস্থ হওয়ার খবরে অনেক স্থানেই আতংক ছড়িয়ে পড়ে। এদিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় শিশুদের অসুস্থ হওয়ার খবরে আতংকিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।
এ পর্যন্ত ফরিদপুর, সিরাজগঞ্জ, ঝিনাইদহ, চাঁদপুর, মাদারীপুর, কক্সবাজার, নাটোর, সুনামগঞ্জ, গোপালগঞ্জ ও নড়াইল প্রায় দুশ’ শিশুর অসুস' হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। গতকাল রোববার বিকালে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. আ ফ ম রুহুল হকের বরাত দিয়ে মন্ত্রণালয়ের এক বক্তব্যে বলা হয়েছে, সার্বিক পরিসি'তি বিবেচনা করে মনে হয়েছে শিশুদের অসুস'তা কেবল ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবেই ঘটেনি। এর সঙ্গে অপুষ্টি, অত্যধিক গরম ও পরিবেশগত অন্যান্য কারণও জড়িত।ওষুধের মান ও মেয়াদ নিয়ে কোনও প্রশ্ন বা সংশয় নেই বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়। বিষয়টি সতর্কভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। খবর বিডিনিউজ ও ফোকাস বাংলার।গতকাল রোববার দুপুরে জাতীয় পুষ্টি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক অধ্যাপক পারভীন ফাতেমা চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। কৃমির ওষুধ খেলে বমি বা পাতলা পায়খানা হতে পারে।ফাতেমা পারভীন জানান, পেটে অতিরিক্ত কৃমি থাকলে ওষুধ খাওয়ার পর বমি বা পাতলা পায়খানা হতে পারে।শনিবার সারাদেশে ২ কোটি শিশুকে ভিটামিন এ ক্যাপসুল ও ১ কোটি ৯০ লাখ শিশুকে কৃমির ওষুধ খাওয়ানোর কর্মসূচি পালন করা হয়। জাতীয় পুষ্টি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন, কৃমির ওষুধ খেয়েই শিশুরা বমি ও পাতলা পায়খানা করছে। শনিবার ইউনিসেফের সরবরাহ করা কৃমির ওষুধ ‘এলবেনডাজল’ খাওয়ানো হয়। দেশীয় প্রতিষ্ঠান ইনসেপ্টা এলবেনডাজল এর উৎপাদক। অন্যদিকে ভিটামিন এ ক্যাপসুল সরবরাহ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।পুষ্টি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক অধ্যাপক পারভীন চৌধুরী জানান, ইনসেপ্টার সরবরাহ করা ওই এলবেনডাজল এর মেয়াদ আছে ২০১০ সালের মে মাস পর্যন্ত।তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন জেলার সিভিল সার্জন ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। অনেকেই ভয় পেয়ে শিশুকে পরীক্ষা করতে আনছে।ভিটামিন এ ক্যাপসুল ও কৃমিনাশক ট্যাবলেট খেয়ে রাজবাড়ীতে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। অসুস'তার সংখ্যাও ক্রমেই বাড়ছে। গত ২ দিনে অন্তত ৩ শতাধিক শিশু অসুস্থ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে এখনও শতাধিক শিশু ভর্তি রয়েছে। পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে রবিবার স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক বরাবর একটি প্রতিবেদন পাঠান হয়েছে।
এদিকে, সকালে জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার বাহিরচর দৌলতদিয়ায় হাবিব নামে ৮ বছরের এক শিশু মারা গেছে। তার পিতার নাম নিজাম ফকীর। ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইনে বয়সসীমা না মেনে কৃমিনাশক ট্যাবলেট খাওয়ানোর পর থেকেই সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হলেও রবিবার নিজ বাড়িতে সে মারা যায়।এদিকে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাপসুল ও কৃমিনাশক ট্যাবলেট নিয়ে আতংকিত না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী। তিনি বলেন, ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ার পর শিশুদের পাতলা পায়খানা হতে পারে। এটি মারাত্মক কিছু নয়। এ ক্যাপসুল খেয়ে শিশু মৃত্যুর নজির বিশ্বের কোথাও নেই। গতকাল রোববার বিকেলে গোপালগঞ্জ সার্কিট হাউসে জেলার স্বাস্ত্য ও পরিবার কল্যাণ, সমাজ সেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় উপদেষ্টা এ কথা বলেন।স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ বিষয়ক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সৈয়দ মোদাচ্ছের বলেন, প্রচারণার অভাবে ফরিদপুরসহ দেশের বিভিন্নস্থানে এ ক্যাপসুল খেয়ে শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এ ব্যর্থতার দায় আমাদের। প্রচারণার গাফিলতির বিষয়টি তদন্ত হচ্ছে। দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এইচএসসি উত্তীর্ণদের চাকরির জন্য নতুন প্রকল্প : বাজেটে বরাদ্দ থাকছে

উচ্চ মাধ্যমিক পাস তরুণ-তরুণীদের জন্য চাকরির বন্দোবস্ত করতে জাতীয় সেবা (ন্যাশনাল সার্ভিস) কর্মসূচি নামে নতুন একটি প্রকল্প আগামী বাজেটে থাকছে। প্রাথমিকভাবে কয়েকটি উপজেলায় পরীক্ষামূলকভাবে এটি চালু করা হবে। পরবর্তীতে তা ছড়িয়ে দেয়া হবে সারাদেশে। খবর এনএনবি’র।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এসব তথ্য উল্লেখ করে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ‘আগামী ২০০৯-১০ অর্থবছরের বাজেটেই এ প্রকল্পের জন্য অর্থ বরাদ্দ রাখা হচ্ছে। প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হচ্ছে সরকারের নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির ওয়াদা এবং আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারের কথা মাথায় রেখে।’গতকাল শনিবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী একথা জানান। গত ২-৩ জুন তুর্কমেনিস্তানে অনুষ্ঠিত ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকের (আইডিবি) ৩৪তম বার্ষিক সভা বিষয়ে অর্থমন্ত্রী এ সংবাদ সমেুলন করেন। তিনি সভাতে অংশ নিয়েছিলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘আইডিবির সমেুলন উপলক্ষে তিনদিন দেশের বাইরে ছিলাম। অবসরে ঠাণ্ডা মাথায় বাজেট নিয়ে কিছু চিন্তা করেছি। ওই চিন্তা থেকেই জাতীয় সেবা প্রকল্প চালুর বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’তিনি জানান, জাতীয় সেবা প্রকল্পটি দুই বছর মেয়াদে করা হবে। দুই থেকে তিনটি উপজেলায় পরীক্ষামূলকভাবে তা চালু করা হবে। প্রথমে উচ্চ মাধ্যমিক পাস তরুণ-তরুণীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে ছয় মাস। এরপর দেড় বছরের জন্য সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থায় এদের চাকরির ব্যবস্থা করা হবে। দেড় বছর পর তারা নিজেরা সিদ্ধান্ত নেবে, চাকরিতে থাকবে না পড়াশোনা করবে।
প্রকল্পের পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রতিরক্ষা থেকে কৃষি, যেকোন খাতেই চাকরির ব্যবস্থা থাকবে বলে জানান অর্থমন্ত্রী। তিনি জানান, বিশ্বের অনেক দেশেই নির্দিষ্ট মেয়াদে প্রত্যেক নাগরিকের জন্য রাষ্ট্রকে এ জাতীয় সেবা দেওয়া বাধ্যতামূলক।আগামী অর্থবছর মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা কতণ্ডএমন প্রশ্নের জবাব না দিয়ে অর্থমন্ত্রী জানান, ‘চলতি অর্থবছরের প্রবৃদ্ধির হার হবে পাঁচ দশমিক ৯ শতাংশ।’বাজেট ঘোষণার আগেই গাড়িসহ কিছু বিলাস দ্রব্যের দাম বেড়ে গেছে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রতিবারই বাজেট ঘোষণার আগে এটি ঘটে’।প্রসঙ্গত, আগামী ১১ জুন জাতীয় সংসদে বাজেট ঘোষণা করবেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। মাসব্যাপী এর ওপর আলোচনা চলবে।

কর্ণফুলী বাঁচলে বন্দর বাঁচবে ।। নৌ নিরাপত্তা সপ্তাহ উদ্বোধনকালে বন্দর চেয়ারম্যান

দেশের ইতিহাসে প্রথম বারের মতো নৌ নিরাপত্তা সপ্তাহ উদ্বোধন করা হয়েছে। গতকাল চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীতে বন্দর চেয়ারম্যান কমডোর আর ইউ আহমেদ চট্টগ্রামে নৌ নিরাপত্তা সপ্তাহ উদ্বোধন করেন। এই উপলক্ষে বন্দর কর্তৃপক্ষের নিজস্ব দশটি জলযান দিয়ে এক বর্ণাঢ্য নৌ র্যা লিও বের করা হয়। কর্ণফুলী নদীতে বিভিন্ন শ্লোগান তুলে র্যা লিটি বন্দরের এক নম্বর জেটি এলাকা থেকে শাহ আমানত সেতু এলাকা প্রদক্ষিণ করে।৬ জুন থেকে ১২ জুন পর্যন্ত নৌ নিরাপত্তা সপ্তাহ ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ তাদের দশটি জাহাজ নিয়ে এই উপলক্ষ্যে একটি র্যাুলি বের করে। এই সময় বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমডোর আর ইউ আহমেদ কর্ণফুলীকে রক্ষার উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, এই কর্ণফুলী বাঁচলে বন্দর বাঁচবে। আর বন্দর বাঁচলেই জাতি বাঁচবে। তিনি বলেন, কর্ণফুলী নিরাপদ থাকলে বন্দর নিরাপদ থাকবে, বন্দর নিরাপদ থাকলে দেশ অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হবে। তিনি নিরাপদ নৌ চলাচল নিশ্চিত করার উপর গুরুত্বারোপ করেন। জাহাজে অতিরিক্ত মাল বোঝাই থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, এতে বিপদ আসতে পারে। এই বিপদের খেসারত পুরো জাতিকে দিতে হয়। বে ক্রসিং এর অনুমোদন নেই এমন জাহাজগুলোকে সাগর পাড়ি দেয়া থেকে বিরত রাখার জন্যও তিনি সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। নৌ নিরাপত্তা সপ্তাহ উপলক্ষে বন্দর কর্তৃপক্ষ সড়ক দ্বীপগুলো ব্যানার এবং ফেস্টুন দিয়ে সাজিয়েছে।

আজ ঐতিহাসিক ৭ই জুন

আজ ঐতিহাসিক ৭ই জুন। বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনের এক অবিস্মরণীয় মাইলফলক। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষিত ৬-দফা আন্দোলনের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের সূচনা হয়েছিল ১৯৬৬ সালের ৭ জুন। এ দিন বাঙালির মুক্তিসনদ-৬ দফা আদায়ের লক্ষ্যে আওয়ামী লীগের ডাকে হরতাল চলাকালে নিরস্ত্র জনতার উপর পুলিশ ও তৎকালীন ইপিআর গুলিবর্ষণ করে। এতে ঢাকা এবং নারাণগঞ্জে মনুমিয়া, সফিক ও শামসুল হকসহ অনেকে শহীদ হন। ঐতিহাসিক ৭ জুন উপলক্ষে সারা দেশের মত চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ পৃথক পৃথকভাবে কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
মহানগর আওয়ামী লীগ ॥ ৭ জুন উপলক্ষে আজ রোববার বিকাল ৪টায় চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে দারুল ফজল মার্কেটস্থ দলীয় কার্য্যালয়ে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।
উক্ত আলোচনা সভায় চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের আওতাধীন থানা ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, শ্রমিকলীগ, ছাত্রলীগের সকল নেতা কর্মীদের যথা সময়ে উপস্থিত থাকার জন্য সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কাজী ইনামুল হক দানু অনুরোধ জানিয়েছেন।
উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ ॥ ৭ জুন ছয় দফা দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আলোচনা সভা বিকেল ৫টায় সংগঠনের দোস্তবিল্ডিং কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হবে। এতে যথা সময়ে সবাইকে উপসি'ত থাকার জন্য চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম.এ. সালাম অনুরোধ জানিয়েছেন।

মহিউদ্দীন চৌধুরীর বিরুদ্ধে ২৮ বছর ধরে লড়ছে হকার মার্কেটের সাধারণ দোকান মালিকরা ।। নানা কৌশলে সভাপতির পদ আঁকড়ে থাকার অভিযোগ

পৌর জহুর হকার মার্কেট থেকে সিটি মেয়র এ বি এম মহিউদ্দীন চৌধুরীর কর্তৃত্ব হটাতে দীর্ঘ ২৮ বছর ধরে সংগ্রাম করে যাচ্ছেন সাধারণ দোকান মালিকরা। নিজের কর্তৃত্ব হাতছাড়া হওয়ার পাশাপাশি শতাধিক দোকানের মালিকানাও চলে যাওয়ার আশঙ্কায় দীর্ঘ ত্রিশ বছর এই মার্কেটের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন বর্তমান সিটি মেয়র। ফুটপাত দখল করে অবৈধভাবে দোকান নির্মাণের প্রতিবাদ করতে গিয়ে ১৯৮১ সালে নিহত হয়েছেন অজি উল্লাহ নামের এক ব্যবসায়ী।
পৌর জহুর ব্যবসায়ী কমিটির প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ১৯৭৩ সালে উচ্ছেদকৃত হকারদের পুনর্বাসন করতে হকার মার্কেট প্রতিষ্ঠা লাভ করে। হকারদের মানবিক দিক বিবেচনায় জেলা প্রশাসনের খাস সম্পত্তির উপর মার্কেটটি নির্মিত হয়। ১৯৭৭ সালে তৎকালীন নির্বাচিত কমিটি সমাজ সেবা থেকে চট্টগ্রাম উচ্ছেদকৃত হকার সমিতি নামের সংগঠনটি নিবন্ধন করেন। ১৯৮৮ সালে মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী পৌর জহুর হকার মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতি নামে নতুন একটি সমিতি নিবন্ধন করেন। তখন আমি উচ্ছেদকৃত হকার সমিতির নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক। হকার মার্কেটের নতুন সমিতির রেজিস্ট্রেশন হয়েছে, অথচ আমি সে সম্পর্কে কিছুই জানি না। তখন আমি সমাজ সেবা কার্যালয়ে যোগাযোগ করে জানতে পারলাম সাধারণ সম্পাদকসহ ৪৬৪ জন সাধারণ দোকান মালিক সদস্যের স্বাক্ষর জাল করে সমিতি রেজিস্ট্রেশন করা হয়। উক্ত রেজিস্ট্রেশন বাতিলের জন্য তাৎক্ষণিক ব্যবসায়ীরা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেন। ভুয়া রেজিস্ট্রেশন বাতিল করতে ১৯৮৯ থেকে ২০০২ পর্যন্ত দীর্ঘ ১৩ বছর লড়াই করেছে সাধারণ ব্যবসায়ীরা। সমাজ সেবা অধিদপ্তরের একাধিক ঊর্ধ্বতন তদন্ত টিম তদন্তের মাধ্যমে ২০০২ সালে উক্ত সমিতির রেজিস্ট্রেশন বাতিল করে। মেয়র মহিউদ্দিনের সমিতির রেজিস্ট্রেশন বাতিল করতে হকার মার্কেটের সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির কার্যকরী কমিটির ৪৬৪ সদস্যের স্বাক্ষর সম্বলিত একটি আবেদন সমাজ সেবা কার্যালয়ে প্রদান করা হয়। ২০০২ সালে সিটি মেয়র মহিউদ্দিনের সমিতির রেজিস্ট্রেশন বাতিল করে উচ্ছেদকৃত হকার সমিতির নির্বাচন দেয়ার ঘোষণা দেয় সমাজ সেবা অধিদপ্তর। সমাজ সেবার আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দায়ের করেন বাতিলকৃত হকার মার্কেট ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইউনুস। উক্ত রিটের ভিত্তিতে সমাজ সেবার আদেশ স্থগিত করা হয়। উক্ত পিটিশনের পরিপেক্ষিতে একই সময়ে উচ্ছেদকৃত হকার সমিতির সভাপতি এম এ হাশেম হাইকোর্টে আরেকটি রিট আবেদন দায়ের করেন। যা বর্তমানে বিচারাধীন।
হকার মার্কেটের একাধিক ব্যবসায়ী অভিযোগ করে বলেন, সিটি মেয়র আজীবন সভাপতি থাকতে ১৯৮৮ সালে সমিতি রেজিস্ট্রেশন করেছিলেন। সমিতির রেজিস্ট্রেশন বাতিল হওয়ার পরও আজীবন সভাপতি রয়ে গেছেন মহিউদ্দীন চৌধুরী। হকার মার্কেট ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির অধিকাংশ সদস্য কার্যকরী কমিটির নির্বাচন দাবি করলেও বিগত ২১ বছরে এ মার্কেটে কোন নির্বাচন হতে দেয় নি মেয়র।
জানা যায়, হকার মার্কেটের পশ্চিম পাশে খালিস্থানে ১৯৮৭ সালে দোকান তৈরির চেষ্টা করেন এ বি এম মহিউদ্দিন। চলাচলের রাস্তায় দোকান নির্মাণের বিরোধিতা করেন সাধারণ ব্যবসায়ীরা। বহিরাগত সন্ত্রাসীরা উক্ত স্থানে দোকান নির্মাণের চেষ্টা করলে হকার মার্কেট ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির তৎকালীন নির্বাচিত কমিটির অধিকাংশ সদস্য বাধা প্রদান করেন। সন্ত্রাসীদের হামলায় তৎকালীন সহ-সভাপতি অজি উল্লাহ নিহত হয়। অজি উল্লাহর জীবনের বিনিময়েও উচ্ছেদ করা সম্ভব হয়নি হকার মার্কেটের মুখে অবৈধভাবে গড়ে তোলা ৭১টি দোকান। এদিকে সিটি মেয়রের নামে দাবিকৃত ভাড়া পরিশোধ না করায় ৩৪ ব্যবসায়ীকে হুমকি প্রদান করে চলেছেন ভাড়া দাবিকারী ব্যক্তিরা। গতকাল বিকেলে হকার মার্কেটের পশ্চিম পাশে ৭১ দোকানে গিয়ে দেখা যায় অধিকাংশ দোকানের ব্যবসায়ীরা অনুপসি'ত। কর্মচারীরা জানান, ভাড়া নিয়ে মেয়রের লোকের সাথে গন্ডগোল চলছে তাই মালিকরা গতকাল থেকে দোকানে অনুপস্থিত। উল্লেখ্য, উক্ত ৭১টি দোকান সিটি কর্পোরেশনের তালিকাভুক্ত না থাকায় এগুলো থেকে কোন রাজস্ব সরকার পায় না।ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে জানায়, হকার মার্কেটে নিচের সারিতে মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরীর আটটি দোকান, উপরে জমজম হোটেল এবং লীজভুক্ত ১০টি দোকানসহ মোট ২০টি দোকান রয়েছে। যে সব দোকান থেকে প্রতিমাসে লক্ষাধিক টাকা ভাড়া আদায় করা হয়।

বিএনপিকে সংসদে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছে আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক ॥ জাতীয় কাউন্সিলের তারিখ শীঘ্রই

আওয়ামী লীগের মুখপাত্র সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, এ সপ্তাহেই জাতীয় কাউন্সিলের তারিখ নির্ধারণ করবে আওয়ামী লীগ। দলটির সভাপতিমণ্ডলীর বৈঠকে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। ধানমণ্ডিতে দলীয় সভানেত্রীর কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির চার ঘন্টা বৈঠক শেষে প্রেসব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন। বেলা ১১টায় শুরু হওয়া বৈঠক চলে বিকাল ৩টা পর্যন্ত।
সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘আজকের বৈঠকে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক অবস্থা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আওয়ামী লীগের ৬০ বছরপূর্তি উৎসবের জন্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া গঠনতন্ত্র সংশোধন কমিটি অচিরেই বৈঠকে বসবে। অধিকাংশ জেলা কমিটি আছে। যেসব জেলা কমিটি এখনো হয়নি, জরুরি ভিত্তিতে সেসব জেলা কমিটি গঠন এবং জেলা কাউন্সিল করা হবে। জাতীয় কাউন্সিল করার সব ধরনের প্রস্তুতি আছে। চলতি সপ্তাহে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যদের বৈঠকে সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করা হবে। ওই বৈঠকে জাতীয় কাউন্সিলের তারিখ নির্ধারণ করা হবে।’ বৈঠকে বিএনপিকে সংসদে ফিরে আসার আহ্বান জানানো হয়।বিডিআর বিদ্রোহের তদন্ত রিপোর্ট এবং টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে বিএনপি’র অভিযোগ সম্পর্কে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপি’র মুখে এসব কথা সাজে না। কারণ বিএনপি’র সময়ে যতোগুলো হত্যাকাণ্ড ঘটেছে তার কোনোটারই তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশিত হয়নি। ভারত টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছে বিএনপি’র আমলে। ওই পাঁচ বছর বিএনপি কিছু বলেনি। নীরব ছিল। কিন' আমরা সরকার গঠনের পর পরিসি'তি পর্যালোচনার জন্য সর্বদলীয় সংসদীয় কমিটি করেছি। ওই কমিটি সরেজমিন বাঁধ এলাকা পরিদর্শন শেষে সংসদে রিপোর্ট দেবে। যার মাধ্যমে সারাদেশের মানুষ টিপাইমুখ বাঁধের আসল পরিসি'তি জানতে পারবে। সর্বদলীয় সংসদীয় কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে সরকার যদি মনে করে টিপাইমুখ বাঁধ বাংলাদেশের জন্য ভালো হবে তবেই সমর্থন দেবে। আমরা দেশের স্বার্থে যা করার দরকার তাই করবো।
সংসদের বাজেট অধিবেশনে বিএনপিকে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে সরকারি দলের উদ্যোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘সংসদের স্পিকার এবং চিফ হুইপ পর্যায়ে এ নিয়ে আলোচনা চলছে। আশা করি বিরোধী দল বিএনপি সংসদে ফিরে আসবে। সংসদকে সব কার্যক্রমের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করার জন্য আমরা বিএনপিকে আহ্বান জানাই। আজকের বৈঠক থেকেও তাদের সংসদে ফিরে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে। আজকের বৈঠকে শেখ হাসিনা বলেছেন, বিডিআর বিদ্রোহের সঙ্গে জড়িতদের অচিরেই বিচার কাজ শুরু হবে। দায়ীদের বিচারের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হবে।’প্রেসব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুকুল বোস, দফতর সম্পাদক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট আবদুল মান্নান খান প্রমুখ।

স্কুলছাত্র হৃদয় হত্যা মামলার তিন আসামিএকদিনের রিমান্ডে

সন্তানকে মানুষের মতো মানুষ করে গড়ে তুলতে কোন্‌টি বেশি প্রয়োজন কঠোর শাসন নাকি কোমল আদর? অবারিত সুযোগ সুবিধা নাকি নিয়মের বেড়াজালে আটকে রাখা? গতকাল এ প্রশ্নগুলো ছিল অভিভাবকদের মুখে মুখে। তিন সহপাঠীর হাতে অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র হৃদয়ের খুনের সংবাদটি গতকাল ছিল নগরীর টক অব দ্য টাউন। কেউ কেউ শিউরে উঠেছেন, আপন সন্তানকে হৃদয়ের সাথে তুলনা করে। আবার অনেকে শুভ, পারভেজ কিংবা ফরহাদের মাতা-পিতার আসনে নিজেকে কল্পনা করে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। অনেকেই ফোন করে সমাধান খুঁজতে চেয়েছেন, কেউবা আবার নানা ধরনের মতামত ব্যক্ত করেছেন, এ ঘটনাকে সামাজিক ব্যাধি হিসেবে চিহ্নিত করে কাউন্সিলিংয়ের প্রয়োজনীয়তার কথাও বলেছেন কেউ কেউ।
এদিকে গতকাল স্কুলছাত্র হৃদয় হত্যা মামলার প্রধান তিন আসামি শুভ, ফরহাদ ও পারভেজকে আদালতে হাজির করে তিনদিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়। আদালত একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। এছাড়া ঘটনার প্রধান সাক্ষী আকাশ মণ্ডল গতকাল আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। আজ মামলার প্রধান তিন আসামিকে আদালতে হাজির করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করা হবে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই বিপ্লব জানিয়েছেন, শুভকে রাজসাক্ষী করা হতে পারে। কারণ পুলিশি তদন্তে হত্যার সাথে শুভর জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায় নি।

স্কুলছাত্র হৃদয় হত্যা মামলার তিন আসামিএকদিনের রিমান্ডে

সন্তানকে মানুষের মতো মানুষ করে গড়ে তুলতে কোন্‌টি বেশি প্রয়োজন কঠোর শাসন নাকি কোমল আদর? অবারিত সুযোগ সুবিধা নাকি নিয়মের বেড়াজালে আটকে রাখা? গতকাল এ প্রশ্নগুলো ছিল অভিভাবকদের মুখে মুখে। তিন সহপাঠীর হাতে অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র হৃদয়ের খুনের সংবাদটি গতকাল ছিল নগরীর টক অব দ্য টাউন। কেউ কেউ শিউরে উঠেছেন, আপন সন্তানকে হৃদয়ের সাথে তুলনা করে। আবার অনেকে শুভ, পারভেজ কিংবা ফরহাদের মাতা-পিতার আসনে নিজেকে কল্পনা করে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। অনেকেই ফোন করে সমাধান খুঁজতে চেয়েছেন, কেউবা আবার নানা ধরনের মতামত ব্যক্ত করেছেন, এ ঘটনাকে সামাজিক ব্যাধি হিসেবে চিহ্নিত করে কাউন্সিলিংয়ের প্রয়োজনীয়তার কথাও বলেছেন কেউ কেউ।
এদিকে গতকাল স্কুলছাত্র হৃদয় হত্যা মামলার প্রধান তিন আসামি শুভ, ফরহাদ ও পারভেজকে আদালতে হাজির করে তিনদিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়। আদালত একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। এছাড়া ঘটনার প্রধান সাক্ষী আকাশ মণ্ডল গতকাল আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। আজ মামলার প্রধান তিন আসামিকে আদালতে হাজির করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করা হবে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই বিপ্লব জানিয়েছেন, শুভকে রাজসাক্ষী করা হতে পারে। কারণ পুলিশি তদন্তে হত্যার সাথে শুভর জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায় নি।

সামনের সারিতে বিরোধী দলকে আর কোনো আসন দেয়া হবে না - স্পিকার

প্রধান বিরোধী দল বিএনপিকে জাতীয় সংসদে সামনের সারিতে আর কোনো আসন দেয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন স্পিকার এডভোকেট আব্দুল হামিদ। রাজধানীর একটি হোটেলে জাতীয় সংসদের মহিলা সাংসদদের তিনদিনব্যাপী ওরিয়েন্টশন প্রোগ্রামের উদ্বোধন করতে এসে গতকাল তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান। আব্দুল হামিদ বলেন, জাতীয় সংসদে বিরোধী দলকে সামনের সারিতে আর কোনো আসন বাড়িয়ে দেয়া সম্ভব নয়। তবে নতুনভাবে করা আসন পুনর্বিন্যাসে বিরোধী দল সন'ষ্ট থেকে চলতি বাজেট অধিবেশনে যোগ দেবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন। দ্য ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই) ও বাংলাদেশ এলায়েন্স ফর উইমেন লিডারশিপ যৌথভাবে মহিলা সংসদ সদস্যদের জন্য তিনদিনব্যাপী এই ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামের আয়োজন করে। প্রোগ্রামের আর্থিক সহায়তা দিয়েছে ইউএসএইড। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপসি'ত ছিলেন চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ, ইউএসএইড-এর মিশন ডিরেক্টর ডেনিস এ রোলিনস, অস্ট্রেলিয়ার কুইনসল্যান্ড পার্লামেন্টের সাবেক এমপি ড. লেসলি ক্লার্ক প্রমুখ। এতে জাতীয় সংসদের সরাসরি ও সংরক্ষিত মিলিয়ে ৪২ জন সংসদ সদস্য অংশগ্রহণ করেন।

পরিবেশবান্ধব নীতিমালা অনুসরণ করতে বন্দর ও ওয়াসাকে নোটিশ দেবে পরিবেশ অধিদপ্তর ।। কর্ণফুলীর চর দখল করে গড়ে তোলা হচ্ছে আবাসিক এলাকা ও শিল্প-কারখানা



কর্ণফুলীকে রক্ষা করতে বন্দর কর্তৃপক্ষ ও চট্টগ্রাম ওয়াসাকে পরিবেশবান্ধব নীতিমালা অনুসরণ করে নদী ব্যবহারের জন্য নোটিশ প্রদান করবে পরিবেশ অধিদপ্তর। এদিকে, ভরাট হওয়া চর দখল করে আবাসিক এলাকা ও শিল্প-কারখানা গড়ে তোলা হচ্ছে। পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিশেষজ্ঞরা কর্ণফুলীর দূষণ ও ভরাট হওয়ার তিনটি কারণ চিহ্নিত করেছেন। তাঁরা বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের কারণে কর্ণফুলী নদীতে প্রতিবছর গড়ে দুই হাজার বিদেশী জাহাজ ঢোকে। প্রতিমাসে গড়ে দেড় হাজার ইনল্যান্ড জাহাজ কর্ণফুলীতে চলাচল করে। এসব জাহাজ ব্যাপকভাবে কর্ণফুলীকে দূষিত করছে। দেশী-বিদেশী জাহাজ মেরামতের সময় ধাতব পদার্থ যেমন জিংক, সীসা, ক্যাডমিয়াম পানিতে ফেলা, জাহাজে সঞ্চিত আবর্জনা ও বর্জ্য-তেল নিঃসরণ, বন্দরে ক্লিংকার, জিপসাম, সোডা-এ্যাশ খালাসকালে পানি ও বাতাসে ছড়িয়ে যাওয়া ইত্যাদি দূষণের কারণ। দ্বিতীয়ত, স্যুয়ারেজ প্লান্ট না থাকায় প্রতিদিন কর্ণফুলীতে ১ হাজার ৪৯ দশমিক ৩৫ মেট্রিক টন বর্জ্য মেট্রোপলিটন এলাকার ৫ খাল দিয়ে কর্ণফুলীতে পড়ছে। সে সমস্ত বর্জ্যের মধ্যে রয়েছে শিল্প, ট্যানারি, তেল শোধনাগার, সিমেন্ট কারখানা, জাহাজ নৌযান থেকে নিসৃত তেল, খোলা ল্যাট্রিনের মলমূত্র। মহানগরীতে কোন প্রকার আন্ডারসুয়্যারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট না থাকার কারণে ঐ সমস্ত দূষিত বর্জ্য সরাসরি কর্ণফুলীতে এসে পড়ছে। ঐ সমস্ত দূষিত বর্জ্য কর্ণফুলী নদীর পানি ব্যাপকভাবে দূষিত করার পাশাপাশি নদী ভরাট হয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করছে। তৃতীয়ত, বর্তমানে বৃহত্তর মহানগরীতে ব্যাপক হারে পাহাড় কাটা এবং গাছপালা কেটে ফেলার কারণে প্রতিবছর লক্ষাধিক টন পলিমাটি বর্ষাকালীন ঢলে কর্ণফুলীতে গিয়ে পড়ছে। সূত্রমতে-গত আট বছরে কর্ণফুলীতে পলি জমা হওয়ার পরিমাণ তিনগুণের অধিক বেড়ে গেছে। এছাড়াও কর্ণফুলীর শাখা -হালদা নদী, শিকলবাহা খাল, চানখালিখাল, শিলক খাল, ইছামতি খাল, গশ্চি খালসহ আটটি শাখা প্রশাখা দিয়ে বর্ষা মৌসুমসহ সারা বছর লক্ষাধিক টন পলি এসে কর্ণফুলী নদীর মোহনায় জমা হচ্ছে। যে কারণে বর্তমানে কর্ণফুলীর মোহনা এলাকা শাহ আমানত সেতুর উপরে নীচে, বাংলা বাজার, শিকলবাহা, সদরঘাট, ফিরিঙ্গী বাজার ব্রীজ ঘাটা ও বাকলিয়া এলাকায় ধুধু চর জেগে উঠেছে। চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক আবদুস সোবহান বলেন, কর্ণফুলীকে রক্ষা করতে সম্মিলিত প্রচেষ্টা এখন সময়ের দাবি। বন্দর কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম ওয়াসা, সিটি কর্পোরেশন, শিল্প কারখানা মালিক, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও পরিবেশ অধিদপ্তর একযোগে কাজ করলে কর্ণফুলী দূষণমুক্ত হবে।

ম্যাজিস্ট্রেট ও লোকবল সংকট বকেয়া বিল আদায়ে হিমশিম খাচ্ছে চট্টগ্রাম পিডিবি

গত দুই বছর ধরে চট্টগ্রাম বিদ্যুৎ ভবনে কোন ম্যাজিস্ট্রেট না থাকায় অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ ও বকেয়া বিদ্যুৎ বিল আদায়ে হিমশিম খাচ্ছে পিডিবি কর্তৃপক্ষ। বকেয়া বিল আদায় ঝিমিয়ে পড়ায় বিদ্যুৎ বিতরণ দক্ষিণাঞ্চলে প্রায় ১৪২ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। গত এপ্রিল পর্যন্ত ৬৩৪ কোটি ৫৫ লাখ টাকা বকেয়া বিল আদায় করা হয়েছে। এছাড়াও অসংখ্য অবৈধ সংযোগের কারণে পিডিবির ব্যাপক রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে। জনবল সংকটের কারণে বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকলেও এসব বকেয়া বিল আদায়ে তেমন কোন উদ্যোগ নিতে পারছেনা পিডিবি কর্তৃপক্ষ। চট্টগ্রাম পিডিবি সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত পিডিবি চট্টগ্রাম দক্ষিণাঞ্চলে অভিযান চালিয়ে প্রায় ৭ হাজার খেলাপী বিদ্যুৎ গ্রাহকের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে। সংযোগ বিচ্ছিন্ন এসব গ্রাহকের কাছে প্রায় ৯ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। খেলাপী এসব গ্রাহকদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ২ কোটি ৯ লাখ টাকা আদায় করা হয়েছে। পুনরায় সংযোগ দেয়া হয়েছে ২ হাজার ২ শ’ জন গ্রাহককে। চট্টগ্রাম পিডিবির জনসংযোগ বিভাগ থেকে জানা গেছে, গত দুই বছর ধরে চট্টগ্রাম পিডিবিতে ম্যাজিষ্ট্রেট না থাকায় খেলাপী বড়-বড় শিল্পকারখানায় বকেয়া বিলসহ অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করণের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা যাচ্ছেনা। ২০০৮ সালের জুলাই থেকে ২০০৯ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত গ্রাহকদের মাঝে বকেয়া বিলের পরিমাণ ছিল ১৪১ কোটি ৫৭ লাখ ১২ হাজার টাকা। জানা গেছে, চট্টগ্রাম পিডিবির বিল তৈরি ও বিল আদায়ের সাথে জড়িত অসংখ্য পদ খালি রয়েছে। চট্টগ্রাম মহানগর ও আশপাশের এলাকায় পিডিবির লক্ষ-লক্ষ গ্রাহকের বিল পৌঁছে দেয়ার জন্য ১১৩ জন মিটার রিডারের মাঝে এখন কাজ করছে মাত্র ৭০ জন। প্রযোজনের তুলনায় অপ্রতুল মিটার রিডারের কারণে মিটার পরিদর্শন করে বিল তৈরি করা সম্ভব হচ্ছেনা। গ্রাহকদের মাঝে গড় বিল প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়াও সিনিয়র মিটার পরিদর্শক পদে ৯ জনের বিপরীতে মাত্র তিন জন কর্মরত রয়েছে। ৬ জনের পদ খালি রয়েছে। মিটার পরিদর্শকের ৯টি পদের মধ্যে কর্মরত রয়েছে মাত্র ৩জন। এখানেও ৬টি পদ খালি রয়েছে।জুনিয়র সুপারভাইজার ডাটা পদে তিন জনের মধ্যে ১ জন কর্মরত রয়েছে। ২ জনের পদ খালি। সহকারী সুপার ভাইজারের ৯টি পদের মধ্যে ৩টি পদ খালি রয়েছে। চট্টগ্রাম পিডিবির প্রধান প্রকৌশলী জানান, নিজস্ব ম্যাজিস্ট্রেট না থাকায় খেলাপী বিল আদায়ে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। আমরা এখন জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে অভিযান চালাতে হচ্ছে। গড় বিলের ব্যাপারে তিনি বলেন, গড় বিলের অভিযোগ থাকতে পারে। বিভিন্ন কারণে গড় বিল হয়ে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে মিটার না দেখে বিল করা , অনেক ক্ষেত্রে মিটার খারাপ থাকার কারণে গড় বিল হয়ে থাকে। ম্যাজিস্ট্রেট না থাকার কারণে খেলাপী বিল আদায়ে কিছুটা বিঘ্ন ঘটলেও এখন আমরা নিজস্ব লোক দিয়ে খেলাপী গ্রাহকদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছি।

দেশের নদ-নদীগুলোকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হবে বিশ্ব পরিবেশ দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী

দেশের নদ-নদীগুলোকে যে কোনও মূল্যে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে গতকাল শুক্রবার জাতীয় পরিবেশ পদক-২০০৯ বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি পরিবেশ বিপর্যয় মোকাবেলায় নানামুখী গবেষণার জন্য সরকারের সহযোগিতার আশ্বাসও দেন। খাদ্য নিরাপত্তার অংশ হিসেবে অন্তত ২/৩ বছরের খাদ্য মজুত করার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে সবাইকে তৈরি থাকারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে পরিবেশ অধিদপ্তর, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় সবার অংশগ্রহণের আহ্বানকে সামনে রেখে শুক্রবার সারা বিশ্বে পালিত হচ্ছে পরিবেশ দিবস।এবারের পরিবেশ দিবসের মূল প্রতিপাদ্যণ্ড ‘জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় তোমার পৃথিবী, তোমাকেই চায়’। খবর বিডিনিউজের। প্রধানমন্ত্রী বলেন, পানি ধারণ ক্ষমতা কমে যাওয়া এবং দখল হয়ে যাওয়ায় নদীগুলো প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে। এগুলোকে আগের অবস'ায় ফিরিয়ে আনতে হবে। এটা বিশাল একটা প্রজেক্ট হবে, সময় লাগবে অনেক। কিন্তু এটা আমাদের করতেই হবে। এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক সংস'াগুলোর সহযোগিতা চেয়ে ভালো সাড়া পেয়েছি। সবগুলো নদী এ প্রজেক্টের আওতায় আনা হবে। যমুনা নদী দিয়ে কাজ শুরু হবে। যত টাকাই লাগুক আমাদের এটা করতেই হবে, মানুষকে বাঁচাতে হবে। নদী বাঁচাতে ড্রেজিং, নদী শাসন এবং ভাঙন রোধের ওপর জোর দেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “নদী ভরাট হয়ে যাওয়ায় বর্ষায় পানি এলে নদী ভরে যায়, বন্যা হয়। ড্রেজিং করতে পারলে বন্যা কম হতো। উষ্ণায়নের ফলে বাংলাদেশে যে ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে, ড্রেজিং করে নদীর গভীরতা বাড়াতে পারলে আমরা তা কমাতে পারব। শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বের জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশ চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ঘন ঘন বন্যা, জলোচ্ছ্বাস সহ নানা ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়ে প্রতি বছর ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের মানুষ। বিপর্যয়ের কারণে পরিবর্তিত পরিবেশ, হাইব্রিড ফসল আর জৈব সার নিয়ে নিবিড় গবেষণার আহ্বান জানালেন তিনি। দুর্যোগ মোকাবেলায় খাদ্যের মজুত বাড়ানোর কথাও বললেন প্রধানমন্ত্রী। খাদ্য সমস্যার বিষয়ে তিনি বলেন, বন্যা হবে, ঝড়-বৃষ্টি হবে, ফসলহানি হবেণ্ড এসব মানতেই হবে। তারপরও খাদ্যের অভাব যাতে না হয় তার ব্যবস্থা করতে হবে। ২-৩ বছরের খাদ্য মজুদ রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। যাতে একটা বছর ফসল নষ্ট হলেও কোনো সমস্যা না হয়। জনসংখ্যা বাড়বেই। এর সঙ্গে খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে হবে। নতুন নতুন খাদ্যশস্য উৎপাদনে গবেষণার ওপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, “আশা করছি যে কোনো ধরনের পরিবেশে যাতে ফসল উৎপাদন করা যায় সে জন্য আমাদের বিজ্ঞানীরা গবেষণা করবেন। তবে যাই করা হবে তা যেন পরিবেশবান্ধব হয়। কীটনাশক ব্যবহার না করেই যাতে অধিক ফসল উৎপাদন করা যায় সে বিষয়ে গবেষণার আহ্বান জানান তিনি। পরিবেশ দূষণকারী কল কারখানাগুলোর প্রতি হুঁশিয়ার করে দিয়ে নগরায়নের ক্ষেত্রে পরিবেশগত দিক বিবেচনায় রাখার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান শেখ হাসিনা। শিল্পায়নের ফলে ঢাকার আশপাশের নদী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রতিটি কলকারখানা পরিবেশবান্ধব করার চিন্তা করছি আমরা। এ বিষয় যারা মানবে না তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, “সবুজ বেষ্টনীর সৃষ্টি করতে হবে। সবুজ বেষ্টনী দিয়ে দেশকে সাজাতে পারলে পরিবেশ রক্ষা হবে। ঢাকাসহ দেশের অনেক এলাকায় পানির অভাব রয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। কিন্তু আমরা এ পানি ব্যবহার করতে পারি না। এ পানি ধরে রাখার ব্যবস্থা করতে পারলে পানির অভাব কম হবে।” জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে প্রস্তুত থাকার জন্যও সবার প্রতি আহ্বান জানান তিনি। বিশ্ব পরিবেশ দিবসে এবারই প্রথম জাতীয় পরিবেশ পদক প্রদান করা হয়। একজন ব্যক্তি ও ৩টি প্রতিষ্ঠানকে পদক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এ বছর যে চারটি বিষয়ে পরিবেশ পদক দেওয়া হয় তা হলোণ্ড পরিবেশ সংরক্ষণ, পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ, পরিবেশ বিষয়ক গবেষণা ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং পরিবেশগত শিক্ষা ও প্রচারণা। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি মূলত জনগণকে পরিবেশবান্ধব কাজ করতে সচেতন ও উৎসাহী করতেই করা হচ্ছে। এরপর প্রধানমন্ত্রী পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত দু’দিনব্যাপী পরিবেশ মেলার উদ্বোধন করেন। সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এতে অংশ নিচ্ছে।

বিএনপির আহবায়ক কমিটি ২৫ জনের তালিকা পাঠিয়েছেন তারেক, বিপাকে হাইকমান্ড


অবসর নেয়া বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব ও চেয়ারপারসন বেগম জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান ২৫টি জেলায় দলের আহ্বায়ক করতে তার আশীর্বাদপুষ্ট নেতাদের নামের একটি তালিকা দলের হাইকমান্ডের কাছে পাঠিয়েছেন। আর এ তালিকা নিয়ে বিএনপিতে সৃষ্টি হয়েছে নতুন জটিলতা। বিএনপির হাইকমান্ড তারেকের এই তালিকার কারণে জেলা আহ্বায়কদের নাম ঘোষণা করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছে। এর ফলে শিগগিরই আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছে একটি সূত্র। খবর ফোকাস বাংলার। দলের একজন সিনিয়র নেতা জানান, চেয়ারপারসনের বড় ছেলে, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব (অবসর নেয়া) লন্ডনে চিকিৎসাধীন তারেক রহমান তার অনুসারী ও একসময়কার হাওয়া ভবনের প্রভাবশালী ২৫ নেতার নামের একটি তালিকা পাঠিয়েছেন। তাদেরকে ২৫ জেলায় আহ্বায়ক কমিটির দায়িত্ব দেয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এ নিয়ে স্থায়ী কমিটির সদস্যরা বিপাকে পড়েছেন। ইতোমধ্যে দলের মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন ওই তালিকার বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছেন। কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেছেন, তালিকায় অন্তর্ভুক্তরা প্রায় সবাই দলে নানা কারণে বিতর্কিত। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, মূলত তারেক রহমানের এই তালিকার কারণেই খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন আহ্বায়ক কমিটি নিয়ে এখন আর তেমন মাথা ঘামাচ্ছেন না। এ নিয়ে চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সঙ্গেও তার কিছুটা দূরত্ব তৈরি হয়েছে। সূত্র জানায়, বর্তমান মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের মহাসচিব পদ নিয়েও তারেক রহমানের আপত্তি রয়েছে। তবে দলের সিনিয়র বেশ কিছু নেতা তারেকের এই ধরনের তদারকিকে ভাল ভাবে নিচ্ছেন না। তারেকের এ তালিকার ব্যাপারে কয়েক জন বিএনপি নেতার কাছে জানতে চাইলে তারা এ বিষয় পুরো অস্বীকার করে বলেন, এ বিষয় আমরা জানি না। যদি তিনি (তারেক) তালিকা পাঠান সেটা আমাদের বিষয় নয়, এটা মা-ছেলের ব্যাপার। এ ব্যাপারে তার (তারেক) মতামত থাকতেই পারে। এটা তার রাজনৈতিক অধিকার। তারেক রহমানের তালিকা অনুসরণ করা হবে কিনা জানতে চাইলে নেতারা বলেন, এটা দলের সিদ্ধান্ত। যদি পাঠায় তবে বিবেচনা করা হতে পারে।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা বলেন, দলের মধ্যে কিছু লোক আছে তারা নিজেদের সুবিধা ভোগ করার জন্য তাকে (তারেক) কান পড়া দিচ্ছে। তারেক যদি তালিকা দিয়ে থাকে তবে সে ঠিক করেনি।

মহিলা বাস সার্ভিস বন্ধ হওয়ার পর এবার সিটি কর্পোর নিরাপদ যাত্রী সেবা কাউন্টার ১৫টি গাড়ি নিয়ে আজ উদ্বোধন ॥ কাউন্টার ২৮টি

মহিলা বাস সার্ভিস, মহিলা ও শিশুদের জন্য বাস সার্ভিস, নিরাপদ যাত্রীসেবা নামক সার্ভিস বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর এবার চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন চালু করতে যাচ্ছে নিরাপদ যাত্রীসেবা কাউন্টার সার্ভিস। আজ থেকে নগরীর বহদ্দারহাট বাস টার্মিনালের সামনে থেকে এই সার্ভিস শুরু হবে। চান্দগাঁও পুরাতন থানার সামনে থেকে কাঠগড় পর্যন্ত ১০ নম্বর রুটে এই বাস চলাচল করবে। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন সূত্র জানায়, নিরাপদ যাত্রীসেবা কাউন্টার সার্ভিস নাম ধারণ করেই বাসগুলো পুনরায় চলাচল শুরু করবে। এজন্য পুরনো বাসসহ নতুন বাসসমূহকে চলাচলের উপযোগী করে তোলা হয়েছে। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র এস এম ইকবাল হোসেন গতকাল দৈনিক আজাদীকে বলেন, ১০ নম্বর রুট দিয়েই এই বাস চলাচল শুরু করবে, এজন্য উক্ত রুটে ২৮টি কাউন্টার নির্মাণ করা হয়েছে। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের এই সার্ভিসের তদারকি কর্মকর্তা তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আবুল হাসনাত গতকাল দৈনিক আজাদীকে বলেন, চান্দগাঁও থানার সামনে থেকে কাটগড় পর্যন্ত মোট ভাড়া ২৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সব ভাড়া সরকার নির্ধারিত দামেই ধার্য করা হয়েছে, এজন্য ২৫৪ ধরনের টিকেট ছাপানো হয়েছে। তিনি বলেন, টিকেটে তিনটি অংশ থাকবে। একটি যাত্রীর কাছে, একটি কাউন্টারে, একটি হেলপারের কাছে। যাতে ভাড়ার টাকা সমন্বয় করা যায়। জানা যায়, আদায়কৃত মোট ভাড়ার ৪০ শতাংশ পাবেন পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান, ৬০ শতাংশ পাবেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন। মোট ১৫টি গাড়ি এই সার্ভিসে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চলাচল করবে। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন সূত্র জানায়, ১০ নম্বর রুটের ২৮টি স'ানে যাত্রী নামানো হবে। যাওয়ার সময় ১৪টি এবং আসার সময় ১৪টি কাউন্টারে বাসসমূহ থামবে। নিরাপদ যাত্রীসেবা কাউন্টার সার্ভিস চালু করার আগে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন ডাক ঢোল পিটিয়ে ২০০৭ সালে চালু করেছিল মহিলা বাস সার্ভিস। কিছুদিন চলার পর ভাড়া বেশি হওয়ায় তা বন্ধ হয়ে যায়। এর কিছুদিন পর একই সার্ভিসকে সংকুচিত করে চালু করা হয় মহিলা ও শিশুদের জন্য নিরাপদ বাস সার্ভিস। এরপর নিরাপদ যাত্রী সেবা দিয়ে চলাচল শুরু করার কিছুদিন পর তাও বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘ দুই বছর বিরতির পর আজ শনিবার থেকে পুনরায় চালু হচ্ছে নিরাপদ যাত্রীসেবা কাউন্টার সার্ভিস।

কোন উপলক্ষ নেই, তবুও বেড়েছে মরিচ মসলা ও হলুদের দাম



সাধারণত ঈদ বা কোন পালাপার্বণের আগে মসলার দাম বাড়ার রেওয়াজ ছিল। কিন্তু বছরের এ সময়টাতে কোন কারণ ছাড়াই বিভিন্ন ধরনের মসলার দাম বেড়ে গেছে কেজিপ্রতি দশ থেকে দেড় শ টাকা পর্যন্ত। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে হলুদের দাম। পাইকারি বাজারে দেশি হলুদের দাম কেজিপ্রতি বেড়েছে ৩০ টাকা। এলাচির দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি দেড় শ টাকা। আদা-রসুন, ধনিয়া, মরিচসহ অন্যান্য মসলার দামদরেরও একই অবস্থা। ব্যবসায়ীরা জানান, আমদানি-মূল্য বেড়ে যাওয়ায় মসলার দাম বেড়ে যাচ্ছে। ভারত ও চীনে বুকিংরেট বেড়েছে, তাই দেশীয় বাজারে এর প্রভাব পড়ছে। এ ছাড়া প্যাকেটজাত মসলা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের দৌরাত্ম্যে হঠাৎ মসলার দাম বেড়েছে। মসলা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বছরের এ সময়টাতে একযোগে মসলা সংগ্রহের কাজে নামে। তাই বাজারে বাড়তি চাপ পড়ায় মসলার দাম বেড়েছে বলে মন্তব্য করেন ব্যবসায়ীরা। এ প্রসঙ্গে পাহাড়তলী রেলওয়ে বাজারের ব্যবসায়ী মো. মোজাহের আলম দৈনিক আজাদীকে বলেন, রাঙ্গামাটিতে হলুদের বাম্পার ফলন হয়। সেখানে খোঁজ নিয়ে জেনেছি, মসলা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো সেখান থেকে হলুদ সংগ্রহ করছে। এবার হলুদ সংগ্রহের মাত্রা বেশি হওয়ায় দাম বাড়ছে হলুদের। পাইকারি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এলাচি বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১১শ টাকা করে। খুচরা বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ১২শ টাকা পর্যন্ত। পাইকারি বাজারে ১৫/১৬ দিন আগেও এলাচি বিক্রি হয়েছে সাড়ে ৯শ থেকে এক হাজার টাকা দরে। দেশি হলুদের পাইকারি দর দু সপ্তাহ ধরে চড়া। দেশি হলুদ ৬০ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯০ টাকায়। ভারতীয় হলুদ ৮০ টাকা থেকে বেড়ে গতকাল ১০৫ টাকা দরে বিক্রি হয়। খুচরা বাজারে ১১৫ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরের নিচে কোন হলুদ নেই। বেড়েছে মরিচের দামও। নাজিরহাট বা হাটহাজারীর মরিচের কদর যেমনি বেশি তেমনি নিত্যপ্রয়োজনীয় এ পণ্যটির দামও বেড়েছে বেশ। আগে যেখানে খুচরা বাজারে ১২০ টাকা দিয়ে হাটহাজারীর এক কেজি মরিচ পাওয়া যেত এখন সেক্ষেত্রে লাগছে ১৬০ টাকা। এ ছাড়া রায়পুর বা লক্ষ্মীপুরের মরিচের দামও কেজিপ্রতি ৮-১০ টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯০ থেকে ৯৫ টাকা দরে। পাইকারি বাজারের পাশাপাশি খুচরা বাজারেও আদা, রসুন ও ধনিয়ার দাম বেড়েছে। পাইকারি বাজারে ৩০-৩২ টাকা দরের চায়নিজ আদা এখন বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৪৮ টাকা দরে। খুচরা বাজারে তা গিয়ে ঠেকছে ৬০ টাকায়। ৪৫ টাকা দরের ফরিদপুরী ধনিয়ার দর কেজিপ্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়ে গেছে। খুচরা বাজারে ধনিয়া এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা দরে। রসুনের দাম পাইকারি বাজারে মাত্র ১৩ টাকায় নেমে এসেছিল। সেই রসুনের দাম বেড়ে এখন দাঁড়িয়েছে ২৮ থেকে ৩০ টাকায়। খুচরা বাজারে রসুন বিক্রি হচ্ছে ৩২ থেকে ৩৬ টাকা দরে। কোন উপলক্ষ ছাড়া হঠাৎ করে মসলার দাম বাড়ায় ক্রেতারা ক্ষুব্ধ। এ প্রসঙ্গে একটি বেসরকারি কলেজের শিক্ষক সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়া দিপু বলেন, কোন পণ্যের দাম যদি কোন কারণ ছাড়া হঠাৎ করে কেজিপ্রতি ৪০/৫০ টাকা বেড়ে যায় তাহলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তিও যে বাড়ে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এ ব্যাপারে তিনি সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। মসলাজাত পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি প্রসঙ্গে খাতুনগঞ্জের মেসার্স জনতা ট্রেডার্সের মালিক হাজি মুহাম্মদ মুসা বলেন, আগে বুকিংরেট কম থাকার পাশাপাশি আমদানি বেশি ছিল, তাই রসুনের দাম কমে গিয়েছিল। কিন' সম্প্রতি ভারত ও চীনে আদা এবং রসুনের বুকিংরেট বেড়ে যাওয়ায় এ দুটি পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। এদিকে বাজারে মসলাজাত পণ্যের মধ্যে জিরা ও পেঁয়াজের দাম বাড়ে নি। গতকাল পাইকারি ও খুচরা বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ ১৪ থেকে ১৫ টাকা এবং সিরিয়া-আফগানিস্তানের জিরা ২৪০-২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়।

পাকিস্তানে হলব্রুকের সফরকালে বোমা হামলায় নিহত ৪০

পাকিস্তানের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলের প্রত্যন্ত এলাকার একটি মসজিদে শুক্রবার জুমার নামাজের সময় বোমা হামলায় ৪০ জন নিহত হয়েছে। ওই অঞ্চলের একজন ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা রয়টার্সকে এই তথ্য জানিয়েছেন। পাকিস্তান ও আফগানিস্তান বিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত রিচার্ড হলব্রুকের ইসলামাবাদ সফরকালে এ হামলার ঘটনা ঘটল। উত্তর পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশে সোয়াত উপত্যকার কাছে আপার দির জেলার শীর্ষ কর্মকর্তা আতিফ-উর-রহমান রয়টার্সকে বলেছেন, “নিহতের সংখ্যা ৪০। কতজন আহত হয়েছেন তা এখনো জানি না।” ইসলামাবাদের ২০০ কিলোমিটার উত্তরপশ্চিমে হায়াগাই গ্রামের অধিবাসী উমর রেহমান বলেছেন, “৩০ টি মৃতদেহ সনাক্ত করা হয়েছে। তিনি জানান, মসজিদে লোকজনের ছিন্নবিচ্ছিন্ন দেহ ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকতে দেখা গেছে। দেহের বিচ্ছিন্ন অংশগুলো যারা সনাক্ত হয়েছে তাদের নাকি অন্যদের তা বলতে পারছেন না বলে জানান রেহমান। খবর বিডি নিউজের। প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানি বলেছেন, এ ধরনের ঘটনা সরকারকে সন্ত্রাস নির্মূল করার প্রচেষ্টা থেকে নিবৃত্ত করতে পারবে না। শুক্রবার সকালের দিকে পুলিশ ইসলামাবাদ ও পার্শ্ববর্তী রাওয়ালপিণ্ডি থেকে কয়েকজন আত্মঘাতী বোমাহামলাকারীকে গ্রেপ্তার করে। হলব্রুক এসময় পাকিস্তানের নেতাদের সঙ্গে সোয়াত উপত্যকা থেকে তালেবান নির্মূলে আরো কী করণীয় তা নিয়ে আলোচনা করছিলেন। বৈঠকে গিলানি যুক্তরাষ্ট্রকে পাকিস্তানের ১ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন ডলারের ঋণ মওকুফ করে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মিলিটারি হার্ডঅয়্যার সরবরাহে সহায়তা করা উচিত বলে হলব্রুককে জানিয়েছেন। পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রেহমান মালিক সাংবাদিকদের বলেছেন, ইসলামাবাদ ও রাওয়ালপিন্ডিতে আত্মঘাতী জ্যাকেটসহ কয়েকজন বোমা হামলাকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের সংখ্যা কত তা জানাতে পারেননি রেহমান। তবে দ্য নিউজ ডেইলি এদের সংখ্যা ৪ জন বলে জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার হলব্রুক মারদান জেলায় শরণার্থী শিবির পরিদর্শনের কয়েকঘন্টা পর তালেবান জঙ্গিরা ৫ পুলিশ ও এক সেনাকে হত্যা করে। সেনাবাহিনী জানিয়েছে, এপ্রিলের শেষ দিক থেকে শুরু করা তালেবান বিরোধী অভিযানে এ পর্যন্ত ১২০০ রও বেশি জঙ্গি নিহত এবং ৯০ সেনা নিহত হয়েছে। অন্যদিকে, অভিযান চলার মাঝেই জঙ্গিরা লাহোর, পেশোয়ার ও দেরা ইসমাইল খানে বোমা হামলা চালিয়েছে। ফিন্যান্সিয়াল টাইমস পত্রিকায় শুক্রবার এক সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি বলেছেন, “এটি আমাদের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই। এতে আমরা ব্যর্ত হলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আমাদেরকে মাফ করবে না। আমরা এই যুদ্ধে হারতে পারি না। পরাজয় আমাদের বিকল্প হতে পারে না।”