গত দুই বছর ধরে চট্টগ্রাম বিদ্যুৎ ভবনে কোন ম্যাজিস্ট্রেট না থাকায় অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ ও বকেয়া বিদ্যুৎ বিল আদায়ে হিমশিম খাচ্ছে পিডিবি কর্তৃপক্ষ। বকেয়া বিল আদায় ঝিমিয়ে পড়ায় বিদ্যুৎ বিতরণ দক্ষিণাঞ্চলে প্রায় ১৪২ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। গত এপ্রিল পর্যন্ত ৬৩৪ কোটি ৫৫ লাখ টাকা বকেয়া বিল আদায় করা হয়েছে। এছাড়াও অসংখ্য অবৈধ সংযোগের কারণে পিডিবির ব্যাপক রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে। জনবল সংকটের কারণে বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকলেও এসব বকেয়া বিল আদায়ে তেমন কোন উদ্যোগ নিতে পারছেনা পিডিবি কর্তৃপক্ষ। চট্টগ্রাম পিডিবি সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত পিডিবি চট্টগ্রাম দক্ষিণাঞ্চলে অভিযান চালিয়ে প্রায় ৭ হাজার খেলাপী বিদ্যুৎ গ্রাহকের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে। সংযোগ বিচ্ছিন্ন এসব গ্রাহকের কাছে প্রায় ৯ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। খেলাপী এসব গ্রাহকদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ২ কোটি ৯ লাখ টাকা আদায় করা হয়েছে। পুনরায় সংযোগ দেয়া হয়েছে ২ হাজার ২ শ’ জন গ্রাহককে। চট্টগ্রাম পিডিবির জনসংযোগ বিভাগ থেকে জানা গেছে, গত দুই বছর ধরে চট্টগ্রাম পিডিবিতে ম্যাজিষ্ট্রেট না থাকায় খেলাপী বড়-বড় শিল্পকারখানায় বকেয়া বিলসহ অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করণের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা যাচ্ছেনা। ২০০৮ সালের জুলাই থেকে ২০০৯ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত গ্রাহকদের মাঝে বকেয়া বিলের পরিমাণ ছিল ১৪১ কোটি ৫৭ লাখ ১২ হাজার টাকা। জানা গেছে, চট্টগ্রাম পিডিবির বিল তৈরি ও বিল আদায়ের সাথে জড়িত অসংখ্য পদ খালি রয়েছে। চট্টগ্রাম মহানগর ও আশপাশের এলাকায় পিডিবির লক্ষ-লক্ষ গ্রাহকের বিল পৌঁছে দেয়ার জন্য ১১৩ জন মিটার রিডারের মাঝে এখন কাজ করছে মাত্র ৭০ জন। প্রযোজনের তুলনায় অপ্রতুল মিটার রিডারের কারণে মিটার পরিদর্শন করে বিল তৈরি করা সম্ভব হচ্ছেনা। গ্রাহকদের মাঝে গড় বিল প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়াও সিনিয়র মিটার পরিদর্শক পদে ৯ জনের বিপরীতে মাত্র তিন জন কর্মরত রয়েছে। ৬ জনের পদ খালি রয়েছে। মিটার পরিদর্শকের ৯টি পদের মধ্যে কর্মরত রয়েছে মাত্র ৩জন। এখানেও ৬টি পদ খালি রয়েছে।জুনিয়র সুপারভাইজার ডাটা পদে তিন জনের মধ্যে ১ জন কর্মরত রয়েছে। ২ জনের পদ খালি। সহকারী সুপার ভাইজারের ৯টি পদের মধ্যে ৩টি পদ খালি রয়েছে। চট্টগ্রাম পিডিবির প্রধান প্রকৌশলী জানান, নিজস্ব ম্যাজিস্ট্রেট না থাকায় খেলাপী বিল আদায়ে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। আমরা এখন জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে অভিযান চালাতে হচ্ছে। গড় বিলের ব্যাপারে তিনি বলেন, গড় বিলের অভিযোগ থাকতে পারে। বিভিন্ন কারণে গড় বিল হয়ে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে মিটার না দেখে বিল করা , অনেক ক্ষেত্রে মিটার খারাপ থাকার কারণে গড় বিল হয়ে থাকে। ম্যাজিস্ট্রেট না থাকার কারণে খেলাপী বিল আদায়ে কিছুটা বিঘ্ন ঘটলেও এখন আমরা নিজস্ব লোক দিয়ে খেলাপী গ্রাহকদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছি।
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন