প্রধানমন্ত্রীসহ আ.লীগের শীর্ষ নেতাদের ৬২ মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত




প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১২টি মামলাসহ রাজনৈতিক বিবেচনায় দায়ের করা ৬২টি মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সারা দেশে ব্যাপক সাড়া পড়ায় আবেদনের সময় আবারো ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। তবে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের মামলা প্রত্যাহারের ব্যাপারে এখনো কোন সিদ্ধান্ত হয়নি।
গতকাল বুধবার সচিবালয়ের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে রাজনৈতিক হয়রানি মামলা প্রত্যাহার সংক্রান্ত রিভিউ কমিটির আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান কমিটির চেয়ারম্যান ও আইন প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট কামরুল ইসলাম। খবর এনএনবির।
বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়াসহ শীর্ষ রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও আমলাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং তথ্য গোপনের অভিযোগে ৬৬৭টি মামলা দায়ের করা হয়। এগুলোসহ বিএনপি জোট সরকারের সময় দায়ের করা রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহার করতে ২২ ফেব্রুয়ারি প্রত্যেক জেলায় ও মন্ত্রণালয় পর্যায়ে কমিটি গঠন করে সরকার। এ সুবিধা পেতে দুনেত্রীসহ শীর্ষ রাজনৈতিক নেতারা আবেদন করেছেন। শুধু ঢাকা জেলা যাচাই-বাছাই কমিটির কাছে ২ হাজার ৭৮১টি মামলা প্রত্যাহারের আবেদন পড়েছে। আর সারা দেশে ৪ হাজার ৮৫৯টি আবেদন জমা পড়েছে।
সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত প্রথম দিনের বৈঠকে মোট ১১৩টি মামলা যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। এ মামলাগুলোর মধ্যে রয়েছে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের করা ১২টি মামলাসহ ৬২টি মামলা রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত হয়। মামলাগুলোর মধ্যে রয়েছে- আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য তোফায়েল আহমেদের বিরুদ্ধে ৯টি, সাবেক সাংসদ কামাল আহমেদ মজুমদারের ১৩টি, সাবেক হুইপ আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহর ৬টি, সাবেক প্রতিমন্ত্রী মহিউদ্দিন খান আলমগীরের ২টি, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নানের ১টি, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের ১টি, বাহাউদ্দিন নাসিমের ৪টি এবং মকবুল হোসেনের ১টি।
এই ৬২টির মধ্যে দন্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় দায়ের করা মামলা রয়েছে ৩৬টি, আর দুদকের দায়ের করা ২৬টি। এ পর্যন্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মামলা প্রত্যাহারের মোট আবেদন জমা পড়েছে ৮২৪টি। বৈঠক শেষে আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন রাজনৈতিক হয়রানি মামলা প্রত্যাহারের আবেদনের সময় আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হবে।
কমিটির প্রধান ও আইন প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, বিগত সরকারগুলোর সময়ে রাজনৈতিক বিবেচনায় দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠকে ৬২টি মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই ৬২টির মধ্যে দন্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় দায়ের করা মামলা রয়েছে ৩৬টি, আর দুদকের দায়ের করা ২৬টি। দুদকের দায়ের করা মামলাগুলো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পরবর্তী করনীয় ঠিক করতে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
আইন প্রতিমন্ত্রী আরো জানিয়েছেন, বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের মামলা প্রত্যাহারের আবেদন এখনো বাছাই কমিটির হাতে পৌঁছায়নি। কমিটির কাছে আবেদন আসলে নিয়ম অনুযায়ী বিবেচনা করা হবে। এদিকে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তার দুপুত্রসহ দলের প্রায় অর্ধশতাধিক সিনিয়র নেতা মামলা প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়েছেন। এছাড়াও জামায়াতে ইসলামীর আমীরসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা চারটি মামলা প্রত্যাহারের আবেদন জানানো হয়েছে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন