সব প্রস্তুতি শেষ, আগামীকাল ঘোষণা এবার বাজেটের আকার হচ্ছে ১ লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা

আগামীকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে আগামী অর্থবছরের জাতীয় বাজেট ঘোষণা করা হবে। ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি শেষ করে আনা হয়েছে। এবার বাজেটের আকার প্রায় ১ লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। বাজেটের এই আকার প্রসঙ্গে আগে থেকেই অর্থমন্ত্রী বলে আসছেন, দিন বদলের সনদ বাস্তবায়নে এই পরিমাণ তেমন বড় নয়। অবশ্য এনিয়ে সাবেক উপদেষ্টা ড. আকবর আলী খান বলেছেন, বাজেটের আকার বড় হলে মানুষের উপর করের বোঝা বাড়ে। বাজেট প্রণয়নে সম্পৃক্ত একাধিক সূত্র থেকে বলা হয়েছে, আসন্ন বাজেটে নতুন নতুন খাত সৃষ্টি, এডিপির আকার বড় করা, প্রাইভেট পাবলিক পার্টনারশিপ (পিপিপি) প্রকল্প গ্রহণ ও এজন্য অর্থ বরাদ্দ, সপ্তম বেতন কমিশন বাস্তবায়ন এবং সামাজিক নিরাপত্তা বলয় বৃদ্ধি করাসহ নানা কারণে বাজেটের আকার চলতি বাজেটের তুলনায় বড় হচ্ছে। উপরে উল্লেখিত আকার কিছুটা বাড়তে বা কমতে পারে বলেও সূত্র জানিয়েছে। তবে তা ১ লাখ ১৫ হাজার কোটি টাকার উপরে উঠবে না। এদিকে এর আগেই বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আকার ৩০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। সূত্র জানায়, এখন অতি গুরুত্ব কিছু সংযোজন বা বিয়োজন হচ্ছে। অর্থ মন্ত্রণালয় ও এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, নতুন বছরের বাজেটে এনবিআরভুক্ত আয়, এনবিআর বহির্ভূত আয়, কর ব্যতীত আয় এবং বিদেশি অনুদানসহ মোট আয় ধরা হয়েছে ৮৪ হাজার ৮০ কোটি টাকা। বাজেটে এনবিআরভুক্ত আয় ধরা হয়েছে ৬১ হাজার কোটি টাকা, এনবিআর বহির্ভূত আয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৯৭৫ কোটি টাকা, কর ব্যতীত আয় ধরা হয়েছে ১৪ হাজার ৯৭৫ কোটি টাকা এবং বিদেশি অনুদান ধরা হয়েছে ৫ হাজার ১৩০ কোটি টাকা। এদিকে নতুন বাজেটে বিদেশি ঋণ ধরা হয়েছে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। আর বাজেটের বাকি ঘাটতি মেটানো হবে দেশীয় ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, দেশি ব্যাংক থেকে সরকার ঋণ নিলে বেসরকারি খাতে কোন সমস্যা হবে না। কারণ বর্তমানে ব্যাংকগুলোতে প্রচুর পরিমাণ অলস অর্থ জমা আছে। তাছাড়া ব্যাংকগুলোর প্রবৃদ্ধিও ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশ। এ অবস'ায় সরকার ১৫ থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিলে কোন সমস্যা হওয়ার কথা না। নতুন বাজেটে সপ্তম বেতন কমিশনের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া এবং বিশ্ব অর্থনীতির চলমান মন্দা থেকে দেশের বিভিন্ন রপ্তানি খাতের ক্ষতিপূরণ দেয়া, সামাজিক নিরাপত্তা বলয় বাড়ানো এবং বাজেটের নতুন খাত পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) কর্মসূচি বাস্তবায়নে বরাদ্দ রাখা হচ্ছে আড়াই থেকে তিন হাজার কোটি টাকা। সব মিলিয়ে বাজেটের আকার চলতি অর্থ বছরের তুলনায় অনেকটাই বড় হচ্ছে। তবে এজন্য করের হার বাড়বে না, বাড়ছে করের ক্ষেত্র। অর্থমন্ত্রী ড. আবুল মাল আব্দুল মুহিত গতকাল এ প্রতিবেদককে বলেন, আমরা দিনবদলের সনদ বাস্তবায়নে এবার বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা, খাদ্য নিরাপত্তা বলয় জোরদার করাসহ পিপিপি বাস্তবায়নে একটা থোকবরাদ্দ রাখছি। বাজেটের আকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, স্বপ্ন বড় করে দেখলেই তা বাস্তবায়নে বড় অংকের অর্থ দরকার হয়। আর এনিয়ে সাবেক উপদেষ্টা ও রেগুলেটরী রিফর্মস কমিশনের চেয়ারম্যান ড.আকবর আলী খান বলেছেন, বাজেটের আকার বড় হলে যে মানুষের ভাগ্যবদল হবে তা ঠিক নয়। অনেক সময় বাজেটের আকার বড় রাখতে গিয়ে সরকারকে করের হার বাড়াতে হয়। তখন প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে এর চাপ জনগণের উপর পড়ে। এবার এর ব্যতিক্রম হবে এমন আশা করছেন না তিনি।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন