আবারও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে ডা. জাকির হোসেন সিটি কর্পোরেশন হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে অধ্যয়নরত এক হাজার ছাত্রছাত্রীর ভবিষ্যৎ। চট্টগ্রামে ঐতিহ্যবাহী এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির এক হাজার ছাত্রছাত্রী গত ২৮ মে থেকে আন্দোলন করছে স্থায়ী বা অস্থায়ী একটি ক্যাম্পাসের দাবিতে। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেছেন, পূর্বের ক্যাম্পাস ভাঙার সময় সিটি কর্পোরেশন ও কলেজ অধ্যক্ষের রহস্যজনক ভূমিকা ছিল। মেমন হাসপাতালের অস্থায়ী ক্যাম্পাসে ক্লাস বন্ধের ঘোষণা দেওয়ার পরও সিটি মেয়র ও অধ্যক্ষের ভূমিকা রহস্যজনক। অস্থায়ী ক্যাম্পাসে ক্লাস করার সুযোগ দানের পাশাপাশি স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের দাবিতে শিক্ষার্থীরা গতকাল ৪ জুন থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত মানববন্ধন, জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান, মতবিনিময় সভা, সংহতি সমাবেশ, সংবাদ সম্মেলন ও প্রতীকী অনশন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। জানা যায়, ১৯৩০ সালে সদরঘাট রোডে স্থাপিত জাকির হোসেন হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল ক্যাম্পাস আদালতের নির্দেশে গত ১৯ মার্চ ভেঙ্গে ফেলা হয়। আদালতের নির্দেশে পুলিশ ও জায়গার প্রকৃত মালিকগণ ভাঙ্গার সময় হাসপাতালের বিভিন্ন যন্ত্রপাতির ব্যাপক ক্ষতি করে। পরবর্তীতে সিটি কর্পোরেশন নগরীর সদরঘাট রোডস্থ মেমন হাসপাতাল ক্যাম্পাসে জাকির হোসেন কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম অস'ায়ীভাবে পরিচালনার নির্দেশ দেয়। উক্ত ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রম দুই মাস পরিচালিত না হতেই বিকল্প ক্যাম্পাস নির্ধারণ ছাড়া গত ২৮ মে থেকে মেমন হাসপাতালে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করার নির্দেশ দেন মেয়র। ক্যাম্পাসে অধ্যয়নরত এক হাজার শিক্ষার্থী ওইদিন থেকে সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত প্রতিদিন মেমন হাসপাতাল ভবনে অবস্থান ধর্মঘট করতে থাকে। ছাত্রদের আন্দোলনের পরও শিক্ষা কার্যক্রম চালুর ব্যাপারে সিটি কর্পোরেশন নীরব থাকায় আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। তিন দফা বাস্তবায়নের দাবিতে গতকাল প্রেস ক্লাবের সামনে কলেজের ছাত্রছাত্রীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে। তিন দফা দাবি হচ্ছেণ্ড ১. কলেজের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্ধারণ করে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল উপযোগী ভবন নির্মাণ করা। ২. দায়িত্বহীন, অযোগ্য ও দুর্নীতিবাজ অধ্যক্ষের পদত্যাগ। ৩. স্থায়ী ক্যাম্পাস না হওয়া পর্যন্ত বর্তমান অস্থায়ী ক্যাম্পাস মেমন হাসপাতাল ইউনিট-২ এ শিক্ষা কার্যক্রম চালানোর সুযোগ দান। গতকাল প্রেস ক্লাব চত্বরে ছাত্রছাত্রীদের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে মানববন্ধন কর্মসূচিতে বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র ফেডারেশন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন, যুব ইউনিয়ন প্রমুখ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন। মানববন্ধন কর্মসূচি পালন শেষে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করে প্রেস ক্লাব থেকে জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে গিয়ে জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেন। এ ব্যাপারে ডা. জাকির হোসেন হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. রাশেদা আকতার গতকাল দৈনিক আজাদীকে বলেন, সিটি কর্পোরেশনের নির্দেশে এখানে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে। পরবর্তীতে কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন