ট্রেড জালিয়াতির মাধ্যমে রড আমদানিতে একশ’ কোটি টাকার শুল্ক ফাঁকি।।কাস্টমস ও বিএসটিআই’র অসাধু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে খালাস


প্রচলিত শুল্ক আইনের তোয়াক্কা না করে ট্রেড জালিয়াতির মাধ্যমে চট্টগ্রামের হাতে গোনা কয়েকটি প্রতিষ্ঠান বিদেশ থেকে এম এস রড আমদানির আড়ালে একশ’ কোটিরও বেশি টাকার শুল্ক ফাঁকি দিয়েছে। নিজেদের চট্টগ্রামস্থ কারখানার নামে বিদেশ থেকে সিল মেরে রড আমদানি করা হয়েছে। দেশের প্রচলিত আইনে যা নিষিদ্ধ। কিন্তু চট্টগ্রাম কাস্টমস এবং বিএসটিআই’র এক শ্রেণীর অসাধু কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে একের পর এক সেই নিষিদ্ধ রডের চালান খালাস করা হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানগুলোকে আইনের মুখোমুখি করে ফাঁকি দেয়া শুল্ক আদায়ের উদ্যোগ নেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। সূত্র বলেছে, বাংলাদেশ কাস্টমস এ্যাক্ট ১৯৬৯ এর ১৫(ই) ধারায় বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের বাইরে তৈরী বা প্রস্তুতকৃত পণ্য এবং ঐ মালে এমন নাম বা ট্রেড মার্ক ব্যবহৃত হয়েছে যেগুলি বাংলাদেশী প্রস্তুতকারক, ডিলার বা ব্যবসায়ীর নাম বা ট্রেড মার্ক অথবা ঐগুলি দেখতে ঐ রূপ প্রতীয়মান হয়”, যদি না (১) প্রতিটি আবেদনপত্রে নাম ও পণ্য চিহ্নের সাথে বাংলাদেশের বাইরে কোন স্থানে পণ্যটি তৈরী বা প্রস্তুত হয়েছে এরূপ সুনির্দিষ্ট চিহ্ন থাকে ; এবং (২) যে দেশে ঐ সস্থানটি অবস্থিত তা ঐ নাম বা ট্রেড মার্কের মত বড় অক্ষরে এবং স্পষ্টভাবে এবং ঐ নাম বা ট্রেড মার্ক যে ভাষায় এবং যেভাবে লেখা হয়েছে সেভাবে ঐ চিহ্ন দেখান হয়।’ চট্টগ্রামের রড উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বিএসআরএম, কেএসআরএম, জিপিএইচ, জিরি সুবেদার, নাহার স্টিল, কয়েকটি প্রতিষ্ঠান নিজেদের এখানে স্থাপিত কারখানার নামাঙ্কিত করে বিদেশ থেকে রড আমদানি করেছে। এসব রডে বিএসআরএম বা কেএসআরএম কিংবা জিপিএইচ’ এর লোগো ছাড়া কোন দেশে তৈরি হয়েছে বা কোনস্থানে তৈরী হয়েছে সেই সম্পর্কে কোন উল্লেখ নেই। প্রচলিত শুল্ক আইনের ১৫ (ই) ধারা লংঘন করে রডগুলো আমদানি করা হয়েছে। উক্ত ধারা লংঘনের দায়ে রডগুলো জব্দ করার বিধান থাকলেও কাস্টমস এবং বিএসটিআই’র সংঘবদ্ধ একটি অসাধু চক্রকে ম্যানেজ করে চালানগুলো খালাস করে নেয়া হয়েছে। প্রচলিত শুল্ক আইনে আমদানিকৃত রডের কপার এর পরিমাণ ০.৪ শতাংশ ও তার অধিক হয় তাহলে উক্ত পণ্য এইচ এস কোড - ৭২২৮.৩০.০০ এ শ্রেণীবিন্যাসকৃত। এই শ্রেণীর পণ্যের আমদানি শুল্ক ১২ শতাংশ, মূসক ১৫ শতাংশ, পিএসআই ১ শতাংশ এবং এটিভি ১.৫ শতাংশ হারে প্রযোজ্য। অর্থাৎ প্রতিটন রডের মূল্য ৫০০ ডলার হলেও এক্ষেত্রে শুল্ক পরিশোধ করতে হবে ২৯.৫ শতাংশ বা ১৪৭.৫ ডলার। কিন্তু কাস্টমসের অসাধু কর্মকর্তাদের সিন্ডিকেট চালানটি শুল্কায়নের ক্ষেত্রে যথাযথ এইচ এস কোড অনুসরণ করেনি। এতে প্রায় এক লাখ টন রড আমদানির ক্ষেত্রে বিএসআরএম, কেএসআরএম, জিপিএইচ, জিরি সুবেদার, নাহার স্টিল, একশ’ কোটিরও বেশি টাকার শুল্ক পরিশোধ না করেই পণ্য খালাস করে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। চট্টগ্রামে স্থাপিত কারখানার নামাঙ্কিত করে বিদেশ থেকে রড আমদানির বিষয়টি সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষভাবে তদন্তের মাধ্যমে শত কোটি টাকা উদ্ধার করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন