গ্যাসে ময়লা, বিপর্যয়ের মুখে রাউজান বিদ্যুত কেন্দ্র


বিপর্যয়ের মুখে রয়েছে রাউজান তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র। যে কোনো সময় এ কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বর্তমানে বাখরাবাদ থেকে রাউজান তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে যে পরিমাণ গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে তার সাথে প্রচুর পরিমাণ ময়লা মিশ্রিত থাকায় কেন্দ্রের প্রকৌশলীরা এই আশঙ্কা করছেন। প্রতিদিন এসব ময়লা পরিষ্কার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন ঠিক রাখতে প্রকৌশলীদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। গত দুই মাস থেকে গ্যাসের সাথে ময়লা পরিলক্ষিত হচ্ছে বলে জানা গেছে। গ্যাসের সাথে আসা ময়লা অপসারণ করে দৈনিক উৎপাদন ঠিক রাখা কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রকৌশলীদের প্রচেষ্টার কারণে এখনো উৎপাদন ঠিক রয়েছে এবং প্রতিদিন ২৩০ থেকে ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। রাউজান তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রকৌশলীরা জানান, গত দুই মাস থেকে বিদ্যুৎ কেন্দ্রে সরবরাহকৃত গ্যাসের সাথে প্রচুর পরিমাণ তেল এবং জ জাতীয় পদার্থও আসছে। এই ব্যাপারে রাউজান তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী মোঃ আবু তাহের গতকাল দৈনিক আজাদীকে জানান, গ্যাসের সাথে যে পরিমাণ ময়লা পাওয়া যাচ্ছে তা পরিষ্কার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন ঠিক রাখা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিদিন গ্যাসের সাথে তেল এবং জ জাতীয় পদার্থ পাওয়া যাচ্ছে। তিনি জানান, রাউজান তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে যে ফিল্ড থেকে গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে সেই ফিল্ডের গ্যাস ফুরিয়ে যাচ্ছে। গ্যাস ফুরিয়ে আসলে গ্যাসের সাথে ময়লা আসে। বাখরাবাদও এই কথা স্বীকার করেছে। এখন সরবরাহকৃত গ্যাস পরিষ্কার করে উৎপাদন ঠিক রাখতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এত কষ্ট করে মেশিন চালু রাখা যায় না। রাউজান বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দিকে পুরো দেশ তাকিয়ে আছে। তারপরও আমি রাউজান থেকে প্রতিদিন ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করছি। বাখরাবাদ যদি আমাকে মানসম্পন্ন আরো ২০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস দিতে পারতো তাহলে আমি আরো ৮০ মেগাওয়াট বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারতাম। রাউজান বিদ্যুৎ কেন্দ্র ঠিক থাকাতেই চট্টগ্রামে বিদ্যুৎ পরিসস্থিতি মোটামুটি স্বাভাবিক রয়েছে। গ্যাসের সাথে ময়লা আসার ব্যাপারে বাখরাবাদ গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের অপারেশন বিভাগের এক প্রকৌশলী জানান, গ্যাস ফিল্ডে গ্যাসের মজুদ কমে আসলে গ্যাসের সাথে গ্যাস ফিল্ডের বিভিন্ন ময়লাও চলে আসে। এটা গ্যাস ফুরিয়ে যাওয়ার লক্ষণ।চট্টগ্রামে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি ঠিক রাখতে বর্তমানে রাউজান তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রই একমাত্র ভরসা। পানি কমে যাওয়াতে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সবগুলো ইউনিট এক সাথে চালানো যাচ্ছে না। সারাদিন বন্ধ রেখে সন্ধ্যার সময় চালানো হয়। গতকাল এবং গত পরশু সন্ধ্যায় চারটি ইউনিট চালানো হয়েছে। গতকাল রাউজান তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দুটি ইউনিট থেকে ২৫০ মেগাওয়াট এবং কাপ্তাই চারটি ইউনিট থেকে ১০৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন