ঘূর্ণিঝড় আয়লার তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড চারদিক। বিধ্বস্ত জনপদ। যেদিকে চোখ যায় পানি আর পানি। গ্রামে গ্রামে লাশ। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিভিন্ন জেলায় ১৩০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে জানান প্রশাসনের কর্মকর্তারা। নিখোঁজ রয়েছে শতাধিক। জোয়ারে প্লাবিত হয়ে এখনও পানিবন্দি লাখ লাখ মানুষ। পুকুর ও মাছের ঘের ভেসে গেছে। বিধ্বস্ত হয়েছে ঘর বাড়ি। কোথাও কোথাও উদ্ধার কাজ শুরু হলেও অনেক এলাকায় এখনো শুরু হয়নি ত্রাণ তৎপরতা। খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানি সংকটে দুর্ভোগে পড়েছে উপদ্রুত এলাকার মানুষ। খবর ইউএনবির।
ঘূর্ণিঝড় আয়লার তাণ্ডবে সাতক্ষীরায় ৩২ জন, খুলনায় ২৭ জন, নোয়াখালীতে ২৫ জন, ভোলায় ১৩ জন, পটুয়াখালীতে ৯ জন, নরসিংদী ৪, লক্ষ্নীপুরে ৬ জন, বরিশালে ৯ জন, বাগেরহাটে ২ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ২ জন এবং কক্সবাজারে ২ জন, নওগাঁয় ২ জন, রংপুরে ১ জন, রাজশাহীতে ২ জন এবং নাটোর ও মাগুরায় এক জন করে নিহত হয়েছে। খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস'পনা মন্ত্রণালয় কন্ট্রোল রুম ৯১ জন মারা যাওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে।
সাতক্ষীরা: সর্বশেষ পাওয়া খবরে ৩২ টি লাশ পাওয়া গেছে সাতক্ষীরায়। আরো মৃতদেহ পানিতে ভাসছে বলে জানা গেছে। কিন্তু জেলা প্রশাসন বলছে ২৫ জন মারা গেছে। আশাশুনি ও শ্যামনগর উপজেলায় ৮ টি শিশু, ৫ জন মহিলা এবং ১০ জন পুরুষ মারা গেছে।
আয়লার তাণ্ডবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ প্রাণহানি ঘটেছে উপকূলীয় জেলা খুলনায়। গতকাল দুপুর পর্যন্ত জেলা প্রশাসন ২০ জন মারা যাওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে। নিহতদের মধ্যে কয়রা উপজেলায় ১৮ জন এবং দাকোপ ও বটিয়াগাটায় একজন করে।
নোয়াখালী: জেলার হাতিয়া এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় সোমবারের ৩ জন সহ আয়লার তাণ্ডবে গতকাল পর্যন্ত ২৫ জন মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। কিন' হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গতকাল বিকালে ২৫ জন মারা যাওয়ার খবর নিশ্চিত করেছেন। বেসরকারি সূত্র ১৮টি লাশের পরিচয় নিশ্চিত করেছে। তারা হলেন নিজুম দ্বীপের রাহেলা বেগম(২৬) এবং নাজমা(১০)। চর বাশারের পিন্টু(১৫), রিয়াদ(৭), শফি(৬), নাফিস(৭), বাদশা(৩), সালেহা বেগম(৬০), সুমিতা রায়(২৫) এবং মমতা(৪)। বয়ার চরের রাজিব(২৪) এবং আরিফ(১৭)। কেরিং চরের ফাজানা(২৬), জহির(১৬), সাব্বির(১৫), সাজু(৩) এবং অজ্ঞাত ১২ বছরের এক কিশোর এবং চেয়ারম্যান ঘাট আশ্রয় কেন্দ্রে মালেকা খাতুন(৬০)।
নরসিংদীঃ ঝড়ের কবলে পড়ে এ জেলায় গত সোমবার মেঘনা নদীতে একটি যাত্রীবাহী নৌকা ডুবে চারজন মারা গেছেন। তিনজন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।
ভোলা: জেলায় ঘূর্ণিঝড় আয়লার আঘাতে ১৩ জন লোক মারা গেছে কিন' সরকারি কর্মকর্তারা ৯ জন মারা যাওয়ার খবর নিশ্চিত করেছেন। নিহতদের মধ্যে ৮ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন রাসেল(৩০), রিয়া(২), নাজনিন(২৫), মমতাজ(৩৫), শরিফ(৪০), রোজিয়ান(৪), ইদ্রিস মাঝি(৬৫) এবং মোজাম্মেল(৬০)।
পটুয়াখালী: জেলায় আয়লার আঘাতে মৃতের সংখ্যা ৯ জনে দাঁড়িয়েছে। নিহতদের মধ্যে বাউফল উপজেলায় রাজ্জাক(৫৫) গলাচিপা উপজেলায় মইজুন্নেসা(৫৫), সূর্য বানু(৫০), রোমান(১৩) দশমিনা উপজেলায় ডোলি রানী(৯) এবং সদর উপজেলায় সেকেন্দার আকন্দ। লহ্মীপুর: জেলা প্রশাসন নিয়ন্ত্রণ কক্ষ জানায় নিহত ৬ জনের মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ে রামগতি উপজেলায় ঘর বিধ্বস্ত হয়ে ৪ জন এবং সদর উপজেলায় পানিতে ডুবে একজন মারা যায়। নিহতরা হলেন রামগতি উপজেলার আমেনা বেগম(৪৮), শাহিদা বেগম, রাসেল(১৩) এবং তার ভাই হেনজু(৭) এবং সদর উপজেলায় সফিক(৩৫)।
বরিশাল: জেলার মেহেন্দিগঞ্জ ও বাকেরগঞ্জে ৪ জন মারা গেছে। গতকাল সকালে মেহেন্দিগঞ্জে বন্যার পানিতে ডুবে সিতারা(৫৪), আব্দুল লতিফ(৫০), এবং জুলিয়া(৪) মারা যায়।
বাগেরহাট: জেলায় গত সোমবার আয়লা যখন আঘাত হানছিল তখন পানির স্রোতে দুইজন ভেসে যায়। গতকাল তাদের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ: ঘূর্ণিঝড় আয়লার প্রভাবে প্রচণ্ড বর্ষণের কারণে গতকাল সকালে নাচোল উপজেলায় মাটির ঘর ধসে পরে দুইজন মারা গেছে। নিহতরা ফজলু মিয়া(৫৫) এবং তার স্ত্রী মর্জিনা বেগম(৪০)।
কক্সবাজার: জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা এম আব্দুল আজিজ দুই জন মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।
নাটোর: জেলার বাগাতিপাড়া উপজেলার পাকা রামপাড়া গ্রামে ঘূর্ণিঝড় আয়লার তাণ্ডবে ঘর বিধ্বস্ত হয়ে আব্দুল হাকিম নামে একজন মারা যায়।
মাগুরা: জেলার সদর উপজেলায় ঘর বিধ্বস্ত হয়ে সুকুমার বাখতা(৬০) নামের একজন মারা যায়।
ঘূর্ণিঝড় আয়লার তাণ্ডবে বিভিন্ন জেলায় নিহত ১৩০ নিখোঁজ শতাধিক ।। লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন