পৌর জহুর হকার্স মার্কেটের ৭১টি দোকান থেকে সিটি মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরীর নামে বছরে ৩০ লক্ষাধিক টাকা চাঁদা আদায় করছে মার্কেটের কতিপয় ব্যবসায়ী। জহুর মার্কেটের পশ্চিম প্রান্তে উন্মুক্ত এলাকায় স'াপিত এইসব দোকান থেকে গত ১৩ বছরে আদায়কৃত কোটি কোটি টাকা সিটি কর্পোরেশনের তহবিলের বদলে গিয়েছে আদায়কারীদের পকেটে। গত ১৩ বছর ধরে নীরবে দোকান প্রতি বছরে ৩০-৬০ হাজার টাকা প্রদান করে আসছে ব্যবসায়ীরা। এবার উক্ত ভাড়া এক লাফে দশ হাজার টাকা বাড়িয়ে দেয়ায় প্রতিবাদ করে বিপদে পড়েছে ৩৪ ব্যবসায়ী। গত সোমবার রাত ৮টা পর্যন্ত টাকা প্রদানের শেষ সময় ছিল। জহুর হকার্স মার্কেটের ব্যবসায়ী আমিন এন্ড ব্রাদার্সের মালিক আমিন ও জহুর মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক ইউনুস মেয়র মহিউদ্দিনের নামে উক্ত টাকা দাবি করেছেন। জহুর মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইউনুস ও আমিন ব্যবসায়ীদের আল্টিমেটাম দিয়ে বলেছেন, নির্ধারিত সময় দোকান প্রতি তাদের দাবিকৃত টাকা প্রদান করা না হলে তাদের উচ্ছেদ করা হবে। এই ব্যাপারে আমিন বলেন, টাকা আদায় বা আল্টিমেটামের ব্যাপারে আমি কিছুই জানিনা। এই টাকা কার জন্য আদায় করা হচ্ছে উক্ত প্রশ্নের জবাবে তিনি কোন উত্তর দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। গত বছরের ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত ১০ হাজার টাকা প্রদান করতে অনাগ্রহী ব্যবসায়ী জাকির হোসেন জানান, আমিন মেয়রের বাসায় বসে ৩৫জন ব্যবসায়ী থেকে টাকা আদায় করছেন। আজকে আমরা টাকা না দিলে যে কোন সময় দোকান থেকে উচ্ছেদ করা হবে। জেলা প্রশাসনের জায়গায় মেয়রের নামে জোর করে টাকা আদায় চাঁদাবাজি। এই অন্যায় আমরা মানি না। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ১৯৭৩ সালের দিকে হকারদের জন্য এ মার্কেট নির্মাণ করা হয়। তৎকালীন পৌর চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা জহুর আহমদ চৌধুরী নগরীর কোতোয়ালী থানাধীন পরীর পাহাড়ের নিচে কর্পোরেশনের জায়গায় দোকান বেঁধে হকারদের বরাদ্দ দেন নামমাত্র অর্থের বিনিময়ে। এসব দোকান কেনা বেচা বা হস্তান্তর করতে সিটি কর্পোরেশনের অনুমতি নিতে হয়। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী দীর্ঘদিন থেকে জহুর হকার মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি। জানা যায়, মহিউদ্দিন চৌধুরী ১৯৯১ সালে প্রথমবার মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর জহুর হকার মার্কেটের পশ্চিম অংশে খালি মাঠ ও রাস্তার দু’পাশে ছোট ছোট ৭১টি দোকান নির্মাণ করেন। নির্ধারিত টাকা প্রদান পূর্বক দেড়শ টাকা স্ট্যাম্পে সই নিয়ে এইসব দোকান এক বছরের জন্য ভাড়া করা হয়। প্রথমে সভাপতি বরাবরে পে-অর্ডার মূলে এ টাকা প্রদান করা হতো। কিন' ১৯৯১ সালে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর পে-অর্ডারের পরিবর্তে নগদ টাকার মাধ্যমে দোকান লাগিয়ত শুরু হয়। জানা যায়, এসব দোকান থেকে আয়তন ভেদে ৩০ থেকে ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করা হয়। দোকান পরিচালনাকারীদের দাবি মতো ভাড়া আদায় করা না হলে তাৎক্ষণিক উক্ত ব্যবসায়ীকে উচ্ছেদ করা হয়।
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন