নমুনা পাঠানো হয়েছে থাইল্যান্ডে এবার লামায় বিস্কুট খেয়ে ৫০ শিশু অসুস্থ


বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির বরাদ্দকৃত বিস্কুট খেয়ে এবার বান্দরবান পার্বত্য জেলার লামা উপজেলায় কমপক্ষে ৫০ জন ছাত্রছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েছে। সোমবার ও মঙ্গলবার ২দিনে ৪৫টি সরকারি ও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী ওই কর্মসূচিতে বিতরণকৃত বিস্কুট খেয়ে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়। লামা উপজেলা চেয়ারম্যান গতকাল ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে এসব বিস্কুট বিতরণ বন্ধের নির্দেশ প্রদান করেছেন গতকাল। এদিকে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি জেলায় বিস্কুট খেয়ে শিশুরা অসুস্থ হওয়ার কারণ জানার জন্য নমুনা থাইল্যান্ডে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে লামা উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইসমাইল জানান, লামা উপজেলা সদরের নুনারবিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চেয়ারম্যান পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং লামা আদর্শ বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শনকালে ওইসব বিদ্যালয়ে ১১জন ছাত্রছাত্রী ওই সংস্থার বিস্কুট খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে বলে তিনি সংবাদ পেয়েছেন। ওই ৩টি বিদ্যালয় পরিদর্শনকালে উপজেলা চেয়ারম্যানের সাথে ছিলেন উপজেলা হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এবং বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির পরিচালক। উপজেলা চেয়ারম্যান জানান, বিস্কুট খেয়ে অসুস্থ হওয়া ছাত্রছাত্রীরা ডায়রিয়ার মতো পাতলা পায়খানা করে এবং মাথা ব্যথায় আক্রান্ত হয়। ওইসব ছাত্রছাত্রীকে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে। বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের অসুস্থ হওয়ার খবর জানার পর গতকাল থেকে লামা উপজেলায় ওই সংস্থার বিস্কুট বিতরণ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা চেয়ারম্যান। অপরদিকে এ উপজেলার আরও ৪২টি বিদ্যালয়ের কমপক্ষে ৩৯ জন ছাত্রছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েছে বলেও বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। এ ব্যাপারে ঢাকায় বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির সিনিয়র কর্মকর্তা এনামুল হক জানান, বিস্কুটগুলোর নমুনা পাঠানো হয়েছে থাইল্যান্ডে ২/৩ দিনের মধ্যেই আক্রান্ত হওয়ার কারণ জানা যাবে। তিনি জানান, বান্দরবানে বুধবার মেডিকেল টিম যাচ্ছে।ওই টিম খাগড়াছড়িতে রয়েছে বলে তিনি জানান। বান্দরবানে নিয়োজিত বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির কর্মকর্তা নে উইন ঘটনার বিষয়ে কোনো তথ্য জানাতে রাজি হননি। লামা, আলীকদম, রুমা ও রোয়াংছড়ি উপজেলার সরকারি ও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ইউনিসেফ পরিচালিত পাড়া কেন্দ্রগুলোতে ছাত্রছাত্রীদের মাঝে প্রতি মাসে ২৩ দিন করে এইসব বিস্কুট বিতরণ করা হচ্ছে। ১ জুন থেকে এ জেলায় বিস্কুট বিতরণ শুরু হয়েছে। স'ানীয় এনজিও হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনকে বিস্কুট বিতরণের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। গতকাল সকালে রোয়াংছড়ি সফরকালে প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং পাড়া কেন্দ্রের শিশুদের মধ্যে বিস্কুট বিতরণ করতে দেখা গেছে। জেলা সদরের একজন মেডিকেল অফিসার জানান, অধিক প্রোটিন থাকায় বিস্কুটগুলো খেয়ে শিশুরা অসুস্থ হচ্ছে। এদিকে অভিযোগ পাওয়া গেছে, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির উদ্যোগে এ ধরনের একটি কাজ হাতে নেয়ার ব্যাপারে এলাকার জনপ্রতিনিধি ও নেতৃবৃন্দকে কিছু জানানো হয়নি। উল্লেখ্য, প্রতিটি পলিথিন প্যাকে ৫০ গ্রাম ওজনের ৬টি করে বিস্কুট রয়েছে। প্যাকেটের দুই পাশে ইংরেজি ও বাংলা লেখা। এতে লেখা আছে- জাতিসংঘ বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি এবং ডিএসএম এর অনুদান।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন